01-30-2017, 02:41 PM
প্রয়োজনমত ঘর থেকে বের হওয়া নারীদের জন্য
জায়েয। তবে শরয়ী পর্দার সাথে বের হতে হবে।
শরয়ী পর্দা সম্পর্কে কিছু মৌলিক কথা এখানে বলা হচ্ছে-
১. চাদর বা বোরকা দিয়ে পুরো শরীর ঢাকা থাকবে -
প্রথম কথা হল, ঘর থেকে বের হওয়ার সময় মোটা বড় চাদর
বা বোরকা দ্বারা ভালভাবে আবৃত হয়ে বের হবে। রাস্তা
দেখার জন্য শুধু চোখ খোলা রাখার অনুমতি আছে। উত্তম
হল, চেহারার উপর এমন নেকাব দিয়ে দেবে যার দ্বারা পর্দাও
হয়ে যায়, রাস্তাও দেখা যায়।
২. চাদর ও বোরকা মোটা হওয়া -
চাদর বা বোরকা এতটুকু লম্বা ও মোটা হবে, যাতে মাথা
থেকে পা পর্যন্ত শরীর বা পোশাকের কোনো অংশ
বের না হয়। বোরকা পাতলা হলে শরীর ও পোশাক দেখা
যাবে। এর দ্বারা পর্দার উদ্দেশ্য অর্জন হবে না। আর চাদর বা
বোরকা কালো রঙেরও হতে পারে, সাদা রঙেরও হতে
পারে। কোনো বিশেষ রঙ জরুরী নয়।
৩. বোরকা সুসজ্জিত না হওয়া -
বোরকা বা চাদর চমকদার ও কারুকার্যখচিত না হওয়া উচিত। কেননা
নারীদের আদেশ দেওয়া হয়েছে, ঘর থেকে বের
হওয়ার সময় নিজের সজ্জা ও সৌন্দর্য আবৃত করে বের হওয়ার।
সাধারণত নারীর লেবাস-পোষাকও সুন্দর হয়, অলংকারাদিও সুন্দর
হয়, বেশভ‚ষাও সুন্দর হয়। এই সবকিছুকে ঢেকে বের
হওয়ার আদেশ করা হয়েছে। তাই বোরকার কাপড় খুব সুন্দর
ও ফুল দ্বারা ডিজাইন করা না হওয়া চাই। বরং বোরকা একেবারে
সাদাসিদা হওয়া চাই। আর তা এতটুকু বড় হওয়া চাই যে, মাথা থেকে
পা পর্যন্ত সমস্ত শরীর আবৃত হয়।
৪. বোরকা ঢিলেঢালা হওয়া -
বোরকা এতটুকু ঢিলেঢালা হতে হবে, দেহের বা অঙ্গ-
প্রত্যঙ্গের গঠন বোঝা না যায়। বোরকা টাইট হলে পর্দার
উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হয়। শরীরের গঠন, অবয়ব ফুটে ওঠে
ফলে পর্দার উদ্দেশ্য পূরণ হয় না। তাই বোরকা খুবই
ঢিলেঢালা হওয়া চাই।
৫. সুগন্ধি মাখানো থাকবে না -
বোরকার উপরে বা ভিতরের পোশাকে বা শরীরে সুগন্ধি
ব্যবহার না করা। হাঁ, যদি এমন কিছু ব্যবহার করা হয় যার সুবাস ছড়ায় না
তাহলে সমস্যা নেই। যে সুগন্ধি বাইরে ছড়ায় তা ব্যবহার করে
বাইরে গমনকারী নারীদের ব্যাপারে কঠিন হুশিয়ারি এসেছে।
তাই এরকম খোশবু লাগিয়ে বাইরে বের হওয়া জায়েয নয়।
এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে
ব্যভিচারিনী বলেছেন। Ñজামে তিরমিযী, হাদীস ২৭৮৬
মোটকথা, উপরের পাঁচটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রেখে নারীরা
প্রয়োজনের সময় ঘর থেকে বের হতে পারবে; যখন
বাহিরের জরুরি কাজ করে দেওয়ার মত কোনো পুরুষ ঘরে
না থাকে।
হজ্বের সফরে মাহরাম থাকা অত্যাবশ্যক দেখুন, কোনো
নারীর উপর যদি হজ্ব ফরয হয় কিন্তু হজ্বের সফরের জন্য
তার কোনো মাহরাম না থাকে, যেমন স্বামী যাওয়ার জন্য
প্রস্তুত নয়। অথবা তার মাহরাম যেমন বাপ, ভাই, আপন ভাতিজা,
আপন ভাগিনা থাকে কিন্তু তাদের কেউই যাওয়ার জন্য প্রস্তুত
নয় কিংবা তাদেরকে নিয়ে যাওয়ার মত অর্থও মহিলার কাছে
নেই। এমতাবস্থায় শরীয়তের দৃষ্টিতে ঐ মহিলার হজ্বে
যাওয়ার অনুমতি নেই। কেননা এই অবস্থায় তার জিম্মায় হজ্ব
আদায় করাই জরুরি নয়। তার জন্য শরয়ী বিধান হল, মাহরামের
অপেক্ষা করবে। যদি মাহরাম মিলে যায় কিংবা স্বামী সাথে
যাওয়ার জন্য তৈরি হয় তাহলে তার সাথে হজ্ব করতে যাবে। যদি
মাহরাম পাওয়া না যায় তাহলে তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করার
ওসিয়ত করে যাবে যে, আমার উপর হজ্ব ফরয ছিল কিন্তু আমি
হজ্ব করার জন্য সাথে মাহরাম পাইনি। তাই আমি ওসিয়ত করছি, আমার
মৃত্যুর পর আমার সম্পদ থেকে বদলি হজ্ব করানো হবে।
এটা হল, শরীয়তের বিধান। শরীয়ত এটা বলেনি যে, যখন
তোমার উপর হজ্ব ফরয এবং তুমি মাহরাম পাচ্ছ না, তাহলে মাহরাম
ছাড়াই হজ্বে চলে যাও। এই সকল সতর্কতা ও পরিপূর্ণ পর্দার
বিধান এজন্যই দেওয়া হয়েছে যাতে মহিলার ইজ্জত আব্রুর
পরিপূর্ণ হেফাযত হয়।
পর্দাহীনতার উপর কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি
এ কারণে যে সকল নারী ঘরের ভিতরের গাইরে মাহরাম
পুরুষদের সাথে পর্দা করে না কিংবা যে সকল নারী ঘর
থেকে বের হওয়ার সময় পর্দা করে না তাদের ব্যাপারে
হাদীসে অনেক কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি এসেছে। তারা যেন
সেগুলো পড়ে এবং বেপর্দার গুনাহ থেকে বেঁচে
থাকে এবং শরয়ী পর্দার পুরোপুরি এহতেমাম করে। আল্লাহ
তাআলা তাওফীক দান করুন।
আমীন।
জায়েয। তবে শরয়ী পর্দার সাথে বের হতে হবে।
শরয়ী পর্দা সম্পর্কে কিছু মৌলিক কথা এখানে বলা হচ্ছে-
১. চাদর বা বোরকা দিয়ে পুরো শরীর ঢাকা থাকবে -
প্রথম কথা হল, ঘর থেকে বের হওয়ার সময় মোটা বড় চাদর
বা বোরকা দ্বারা ভালভাবে আবৃত হয়ে বের হবে। রাস্তা
দেখার জন্য শুধু চোখ খোলা রাখার অনুমতি আছে। উত্তম
হল, চেহারার উপর এমন নেকাব দিয়ে দেবে যার দ্বারা পর্দাও
হয়ে যায়, রাস্তাও দেখা যায়।
২. চাদর ও বোরকা মোটা হওয়া -
চাদর বা বোরকা এতটুকু লম্বা ও মোটা হবে, যাতে মাথা
থেকে পা পর্যন্ত শরীর বা পোশাকের কোনো অংশ
বের না হয়। বোরকা পাতলা হলে শরীর ও পোশাক দেখা
যাবে। এর দ্বারা পর্দার উদ্দেশ্য অর্জন হবে না। আর চাদর বা
বোরকা কালো রঙেরও হতে পারে, সাদা রঙেরও হতে
পারে। কোনো বিশেষ রঙ জরুরী নয়।
৩. বোরকা সুসজ্জিত না হওয়া -
বোরকা বা চাদর চমকদার ও কারুকার্যখচিত না হওয়া উচিত। কেননা
নারীদের আদেশ দেওয়া হয়েছে, ঘর থেকে বের
হওয়ার সময় নিজের সজ্জা ও সৌন্দর্য আবৃত করে বের হওয়ার।
সাধারণত নারীর লেবাস-পোষাকও সুন্দর হয়, অলংকারাদিও সুন্দর
হয়, বেশভ‚ষাও সুন্দর হয়। এই সবকিছুকে ঢেকে বের
হওয়ার আদেশ করা হয়েছে। তাই বোরকার কাপড় খুব সুন্দর
ও ফুল দ্বারা ডিজাইন করা না হওয়া চাই। বরং বোরকা একেবারে
সাদাসিদা হওয়া চাই। আর তা এতটুকু বড় হওয়া চাই যে, মাথা থেকে
পা পর্যন্ত সমস্ত শরীর আবৃত হয়।
৪. বোরকা ঢিলেঢালা হওয়া -
বোরকা এতটুকু ঢিলেঢালা হতে হবে, দেহের বা অঙ্গ-
প্রত্যঙ্গের গঠন বোঝা না যায়। বোরকা টাইট হলে পর্দার
উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হয়। শরীরের গঠন, অবয়ব ফুটে ওঠে
ফলে পর্দার উদ্দেশ্য পূরণ হয় না। তাই বোরকা খুবই
ঢিলেঢালা হওয়া চাই।
৫. সুগন্ধি মাখানো থাকবে না -
বোরকার উপরে বা ভিতরের পোশাকে বা শরীরে সুগন্ধি
ব্যবহার না করা। হাঁ, যদি এমন কিছু ব্যবহার করা হয় যার সুবাস ছড়ায় না
তাহলে সমস্যা নেই। যে সুগন্ধি বাইরে ছড়ায় তা ব্যবহার করে
বাইরে গমনকারী নারীদের ব্যাপারে কঠিন হুশিয়ারি এসেছে।
তাই এরকম খোশবু লাগিয়ে বাইরে বের হওয়া জায়েয নয়।
এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে
ব্যভিচারিনী বলেছেন। Ñজামে তিরমিযী, হাদীস ২৭৮৬
মোটকথা, উপরের পাঁচটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রেখে নারীরা
প্রয়োজনের সময় ঘর থেকে বের হতে পারবে; যখন
বাহিরের জরুরি কাজ করে দেওয়ার মত কোনো পুরুষ ঘরে
না থাকে।
হজ্বের সফরে মাহরাম থাকা অত্যাবশ্যক দেখুন, কোনো
নারীর উপর যদি হজ্ব ফরয হয় কিন্তু হজ্বের সফরের জন্য
তার কোনো মাহরাম না থাকে, যেমন স্বামী যাওয়ার জন্য
প্রস্তুত নয়। অথবা তার মাহরাম যেমন বাপ, ভাই, আপন ভাতিজা,
আপন ভাগিনা থাকে কিন্তু তাদের কেউই যাওয়ার জন্য প্রস্তুত
নয় কিংবা তাদেরকে নিয়ে যাওয়ার মত অর্থও মহিলার কাছে
নেই। এমতাবস্থায় শরীয়তের দৃষ্টিতে ঐ মহিলার হজ্বে
যাওয়ার অনুমতি নেই। কেননা এই অবস্থায় তার জিম্মায় হজ্ব
আদায় করাই জরুরি নয়। তার জন্য শরয়ী বিধান হল, মাহরামের
অপেক্ষা করবে। যদি মাহরাম মিলে যায় কিংবা স্বামী সাথে
যাওয়ার জন্য তৈরি হয় তাহলে তার সাথে হজ্ব করতে যাবে। যদি
মাহরাম পাওয়া না যায় তাহলে তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করার
ওসিয়ত করে যাবে যে, আমার উপর হজ্ব ফরয ছিল কিন্তু আমি
হজ্ব করার জন্য সাথে মাহরাম পাইনি। তাই আমি ওসিয়ত করছি, আমার
মৃত্যুর পর আমার সম্পদ থেকে বদলি হজ্ব করানো হবে।
এটা হল, শরীয়তের বিধান। শরীয়ত এটা বলেনি যে, যখন
তোমার উপর হজ্ব ফরয এবং তুমি মাহরাম পাচ্ছ না, তাহলে মাহরাম
ছাড়াই হজ্বে চলে যাও। এই সকল সতর্কতা ও পরিপূর্ণ পর্দার
বিধান এজন্যই দেওয়া হয়েছে যাতে মহিলার ইজ্জত আব্রুর
পরিপূর্ণ হেফাযত হয়।
পর্দাহীনতার উপর কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি
এ কারণে যে সকল নারী ঘরের ভিতরের গাইরে মাহরাম
পুরুষদের সাথে পর্দা করে না কিংবা যে সকল নারী ঘর
থেকে বের হওয়ার সময় পর্দা করে না তাদের ব্যাপারে
হাদীসে অনেক কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি এসেছে। তারা যেন
সেগুলো পড়ে এবং বেপর্দার গুনাহ থেকে বেঁচে
থাকে এবং শরয়ী পর্দার পুরোপুরি এহতেমাম করে। আল্লাহ
তাআলা তাওফীক দান করুন।
আমীন।