02-20-2017, 06:27 PM
অভ্রের সাথে আমার যখন বিয়েটা হয়, বুঝতেই পারিনি কি হতে
যাচ্ছে। খুব হঠাৎ করে আর খুবই সাধারণভাবে আমাদের
বিয়েটা হয়ে গেল। সাধারণ বলতে আসলে অনুষ্ঠানটার কথা
বলতে চাচ্ছিনা, অনুষ্ঠান একটা হয়েছে মাশাল্লাহ, কিছুরই
অভাব ছিল না। বলছিলাম পুরো প্রক্রিয়াটার কথা । কোথায়
কেউ এসে আমাকে একটু খোঁচা দেবে…” আপু, বরটা তো সে
রকম পেয়েছেন”।অথবা বিয়ের পর কি কি হবে সেসব নিয়ে
দু’একটা কথা বলতে ছাড়বে না, এমন কিছুই হয়নি। বিয়ের
আগে থেকে শেষ পর্যন্ত এমন একটা ভাব ছিল সবার, সব
গরজ মিথিলার, ওর বর কেমন হবে তা নিয়ে আমাদের
মাথাব্যথা করে ফাটিয়ে ফেলার কি দরকারটা শুনি!
খুবই হতাশার সাথে বিয়ের দিন লক্ষ করলাম, পাশে বসা
ছেলেটাকে আমি বিন্দুমাত্র চিনি না। নামটাই জানি শুধু,
একবার যে ডিজিটাল যুগে ফোন করে একটু কথাটথা বলে নিব
সেই কাজটাও করিনি। আমার বান্ধবীরা সব প্রেম করে বিয়ে
করছে, বিয়ের দিন জামাইয়ের সাথে ঢলে ঢলে ছবি তুলছে,তাদের
সে কি হাসি! মাঝে মাঝে আমরা শালীরাও ঢলে ঢলে ছবি
তুলেছি……
আর আমার ক্ষেত্রে! একবার অভ্র আমাকে দেখতে আসল ,
আর একবার অভ্রের হাতে আংটি পরিয়ে ওকে নিজের সম্পত্তি
বানিয়ে ফেললাম। সম্পত্তি হল ঠিক, এমনই সম্পত্তি যার
সম্পর্কে কিছুই জানা হল না।
আমি খুবই লুতুপুতু টাইপের মেয়ে , ভালবাসতে বাসতে লাল করে
ফেলি এমন । সারাদিন কাঁদিয়ে আধমরা করে ফেলা টাইপ
বইপত্র পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে যাই, আমার মন ক্লান্ত
হয়না। বন্ধুদের তাড়া দি, ” এই ওই রোমান্টিক ছবিটা
আমাকে কখন দিবি বলতো?” আমার চারপাশের মানুষ আমার
জ্বালায় এককথায় অতিষ্ঠ । আমার খুব প্রিয় বান্ধবী আমাকে
বলে, এত বইপত্রের হিমালয় না জমিয়ে তোরই মত , বা আরও
এক কাঠি বাড়া লুতুপুতু টাইপ একটা ছেলেকে বিয়ে করে ফেল,
আমরাও বাঁচি তোর ঘ্যানঘ্যানানি থেকে , আর তোরও একটা
গতি হোক। নাহলে যেই হারে বই কিনছিস আঙ্কেলকে
কিছুদিন পর ব্যাংকরাপ্ট এর মামলা খেতে হবে।
আমার কি দোষ? প্রেম করতে পারব না জানি, প্রেম করার
সাহস বা ধৈর্য কোনটাই আমার নেই। তাই এই প্রেমের
স্বর্গরাজ্যে হানা দেয়া। আমি গর্তের মানুষ। গর্ত থেকে
আমাকে নিশ্চয়ই কেউ একদিন না একদিন টেনে বের করবে।
আমি তো শুধু স্বপ্ন দেখে যাব, এক রাজপুত্র আসবে,
আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে, সাদা শুভ্র আমি হারিয়ে যেতে চাই
সেই স্বপ্নের মাঝে।
হায় পোড়া কপাল, এসব কি হচ্ছে আজকে !
চিনিনা , জানিনা, এই ছেলেকে আমি বিয়ে করে ফেললাম।
একটা দিন প্রেম করার সুযোগটা পর্যন্ত দিলাম না নিজেকে।
সত্যি বলতে, বিয়ের দিন আমি যতটা না কাঁদলাম বাবা মায়ের
জন্য, তার থেকে বেশি কাঁদলাম নিজেকে নিয়ে । গাধী একটা ।
বলল , আর বিয়ে করে ফেলতে হবে !! রাগ লাগছে এখন, সব
ভেঙ্গেচুড়ে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই
ছেলেটার মাথায়ই ।
আহারে, আমার এই বর , এখনো জানেই না, তার সদ্য
বিবাহিত বউ তাকে নিয়ে কি সব বিধ্বংসী চিন্তাভাবনাই না
করছে । আমি তাকাচ্ছি বারবার ওর দিকে , কিন্তু এই হাঁদারাম
একবারও আমার চাঁদবদন মুখটার দিকে তাকানোর কসরত
পর্যন্ত করছে না । ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছ
ভাল কথা বাবা, যন্ত্রপাতি ছাড়া আর কি কিছু চোখে পড়ে
না !!
হাঁদারাম !
যা ভাবলাম তাই, আমি পুরা একটা হাঁদারামকে বিয়ে করেছি ।
বিয়ের প্রথম রাতটাই তার প্রমাণ । কেউ বিশ্বাস করবে না,
কিন্তু এই ছেলের সাথে …” আপনি ভাল আছেন মিথিলা?…জি
আমি ভাল আছি…” এই দুই বাক্য ছাড়া আর কোন কথাই হয়
নি ।
মিথিলা, তুমি মরেছ । তোমার আজীবনের সাধ , তুমি এখন
পাটায় পিষে খেয়ে ফেলতে পার ।
জানিনা, আমার আশাভঙ্গের আর জীবন পাল্টে দেয়া সেই
রাতটায় আমি কেমন করে ঘুমালাম । দু’ চোখের পাতাতো এক
হওয়াই উচিৎ না, অথচ আমি ঘুমালাম । এমন ভাব, জীবনেও
ঘুমাইনি, আর কখনো সুযোগও হবে না , যা ঘুমিয়ে নেয়ার
আজকেই ঘুমিয়ে নাও । সকালে ঘুম ভাঙতে যে আরও বিপদে
পরবো , বুঝিনি । মাথাটা এখনো অভ্যস্ত হয় নি, আমি এখন
আর আমার বাসায় নেই, আমকে এখন আর মা আদর করে
ডেকে দিবে না । আমাকে এখন নিজে নিজেই উঠতে হবে,
পারলে বাড়িসুদ্ধ মানুষকে ঘণ্টি বাজিয়ে ডেকে তুলতে হবে,
আরও কতকি!!
সকালের রোদটা আমার একেবারে চোখে এসে পড়লো । আর
ঘুমাতে পারলাম না , চোখ খুলতেই হল। মিটিমিটি চোখে
তাকাচ্ছি চারপাশে , অচেনা অজানা একটা রুম।
মানুষটা কোথায় গেল ? ইসস…আমি মনে হয় বেশি দেরি করে
ফেলেছি ।
কাউকে খুঁজে পেলাম না ঘরটায় । আজব ছেলে, একটাবার যে
আমাকে ডেকে দিয়ে যাবে, সেটাও করল না । ধ্যাত। হাঁদারাম
পুরা ।
আমি টেবিল ঘড়িটার দিকে হাত বাড়ালাম । এই রুমে কোন বড়
ঘড়ি নেই। ঘড়ি ধরতে গেলাম ঠিক , কিন্তু হাতে ঠেকল অন্য
কিছু, গরম কিছু।
একটা কফির মগ । আর একটা ছোট্ট চিরকুট ।
“মিথিলা,
ঘুমাচ্ছিলেন। তাই আর জাগালাম না । চিন্তা করবেন না ,
আমার বাসার মানুষজন এক
যাচ্ছে। খুব হঠাৎ করে আর খুবই সাধারণভাবে আমাদের
বিয়েটা হয়ে গেল। সাধারণ বলতে আসলে অনুষ্ঠানটার কথা
বলতে চাচ্ছিনা, অনুষ্ঠান একটা হয়েছে মাশাল্লাহ, কিছুরই
অভাব ছিল না। বলছিলাম পুরো প্রক্রিয়াটার কথা । কোথায়
কেউ এসে আমাকে একটু খোঁচা দেবে…” আপু, বরটা তো সে
রকম পেয়েছেন”।অথবা বিয়ের পর কি কি হবে সেসব নিয়ে
দু’একটা কথা বলতে ছাড়বে না, এমন কিছুই হয়নি। বিয়ের
আগে থেকে শেষ পর্যন্ত এমন একটা ভাব ছিল সবার, সব
গরজ মিথিলার, ওর বর কেমন হবে তা নিয়ে আমাদের
মাথাব্যথা করে ফাটিয়ে ফেলার কি দরকারটা শুনি!
খুবই হতাশার সাথে বিয়ের দিন লক্ষ করলাম, পাশে বসা
ছেলেটাকে আমি বিন্দুমাত্র চিনি না। নামটাই জানি শুধু,
একবার যে ডিজিটাল যুগে ফোন করে একটু কথাটথা বলে নিব
সেই কাজটাও করিনি। আমার বান্ধবীরা সব প্রেম করে বিয়ে
করছে, বিয়ের দিন জামাইয়ের সাথে ঢলে ঢলে ছবি তুলছে,তাদের
সে কি হাসি! মাঝে মাঝে আমরা শালীরাও ঢলে ঢলে ছবি
তুলেছি……
আর আমার ক্ষেত্রে! একবার অভ্র আমাকে দেখতে আসল ,
আর একবার অভ্রের হাতে আংটি পরিয়ে ওকে নিজের সম্পত্তি
বানিয়ে ফেললাম। সম্পত্তি হল ঠিক, এমনই সম্পত্তি যার
সম্পর্কে কিছুই জানা হল না।
আমি খুবই লুতুপুতু টাইপের মেয়ে , ভালবাসতে বাসতে লাল করে
ফেলি এমন । সারাদিন কাঁদিয়ে আধমরা করে ফেলা টাইপ
বইপত্র পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে যাই, আমার মন ক্লান্ত
হয়না। বন্ধুদের তাড়া দি, ” এই ওই রোমান্টিক ছবিটা
আমাকে কখন দিবি বলতো?” আমার চারপাশের মানুষ আমার
জ্বালায় এককথায় অতিষ্ঠ । আমার খুব প্রিয় বান্ধবী আমাকে
বলে, এত বইপত্রের হিমালয় না জমিয়ে তোরই মত , বা আরও
এক কাঠি বাড়া লুতুপুতু টাইপ একটা ছেলেকে বিয়ে করে ফেল,
আমরাও বাঁচি তোর ঘ্যানঘ্যানানি থেকে , আর তোরও একটা
গতি হোক। নাহলে যেই হারে বই কিনছিস আঙ্কেলকে
কিছুদিন পর ব্যাংকরাপ্ট এর মামলা খেতে হবে।
আমার কি দোষ? প্রেম করতে পারব না জানি, প্রেম করার
সাহস বা ধৈর্য কোনটাই আমার নেই। তাই এই প্রেমের
স্বর্গরাজ্যে হানা দেয়া। আমি গর্তের মানুষ। গর্ত থেকে
আমাকে নিশ্চয়ই কেউ একদিন না একদিন টেনে বের করবে।
আমি তো শুধু স্বপ্ন দেখে যাব, এক রাজপুত্র আসবে,
আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে, সাদা শুভ্র আমি হারিয়ে যেতে চাই
সেই স্বপ্নের মাঝে।
হায় পোড়া কপাল, এসব কি হচ্ছে আজকে !
চিনিনা , জানিনা, এই ছেলেকে আমি বিয়ে করে ফেললাম।
একটা দিন প্রেম করার সুযোগটা পর্যন্ত দিলাম না নিজেকে।
সত্যি বলতে, বিয়ের দিন আমি যতটা না কাঁদলাম বাবা মায়ের
জন্য, তার থেকে বেশি কাঁদলাম নিজেকে নিয়ে । গাধী একটা ।
বলল , আর বিয়ে করে ফেলতে হবে !! রাগ লাগছে এখন, সব
ভেঙ্গেচুড়ে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই
ছেলেটার মাথায়ই ।
আহারে, আমার এই বর , এখনো জানেই না, তার সদ্য
বিবাহিত বউ তাকে নিয়ে কি সব বিধ্বংসী চিন্তাভাবনাই না
করছে । আমি তাকাচ্ছি বারবার ওর দিকে , কিন্তু এই হাঁদারাম
একবারও আমার চাঁদবদন মুখটার দিকে তাকানোর কসরত
পর্যন্ত করছে না । ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছ
ভাল কথা বাবা, যন্ত্রপাতি ছাড়া আর কি কিছু চোখে পড়ে
না !!
হাঁদারাম !
যা ভাবলাম তাই, আমি পুরা একটা হাঁদারামকে বিয়ে করেছি ।
বিয়ের প্রথম রাতটাই তার প্রমাণ । কেউ বিশ্বাস করবে না,
কিন্তু এই ছেলের সাথে …” আপনি ভাল আছেন মিথিলা?…জি
আমি ভাল আছি…” এই দুই বাক্য ছাড়া আর কোন কথাই হয়
নি ।
মিথিলা, তুমি মরেছ । তোমার আজীবনের সাধ , তুমি এখন
পাটায় পিষে খেয়ে ফেলতে পার ।
জানিনা, আমার আশাভঙ্গের আর জীবন পাল্টে দেয়া সেই
রাতটায় আমি কেমন করে ঘুমালাম । দু’ চোখের পাতাতো এক
হওয়াই উচিৎ না, অথচ আমি ঘুমালাম । এমন ভাব, জীবনেও
ঘুমাইনি, আর কখনো সুযোগও হবে না , যা ঘুমিয়ে নেয়ার
আজকেই ঘুমিয়ে নাও । সকালে ঘুম ভাঙতে যে আরও বিপদে
পরবো , বুঝিনি । মাথাটা এখনো অভ্যস্ত হয় নি, আমি এখন
আর আমার বাসায় নেই, আমকে এখন আর মা আদর করে
ডেকে দিবে না । আমাকে এখন নিজে নিজেই উঠতে হবে,
পারলে বাড়িসুদ্ধ মানুষকে ঘণ্টি বাজিয়ে ডেকে তুলতে হবে,
আরও কতকি!!
সকালের রোদটা আমার একেবারে চোখে এসে পড়লো । আর
ঘুমাতে পারলাম না , চোখ খুলতেই হল। মিটিমিটি চোখে
তাকাচ্ছি চারপাশে , অচেনা অজানা একটা রুম।
মানুষটা কোথায় গেল ? ইসস…আমি মনে হয় বেশি দেরি করে
ফেলেছি ।
কাউকে খুঁজে পেলাম না ঘরটায় । আজব ছেলে, একটাবার যে
আমাকে ডেকে দিয়ে যাবে, সেটাও করল না । ধ্যাত। হাঁদারাম
পুরা ।
আমি টেবিল ঘড়িটার দিকে হাত বাড়ালাম । এই রুমে কোন বড়
ঘড়ি নেই। ঘড়ি ধরতে গেলাম ঠিক , কিন্তু হাতে ঠেকল অন্য
কিছু, গরম কিছু।
একটা কফির মগ । আর একটা ছোট্ট চিরকুট ।
“মিথিলা,
ঘুমাচ্ছিলেন। তাই আর জাগালাম না । চিন্তা করবেন না ,
আমার বাসার মানুষজন এক