Forums.Likebd.Com

Full Version: নতুন করে পাওয়া।
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
.
ঢাকা শহরে পড়াশোনা করতে হলে অনেক টাকার
প্রয়োজন।
যাদের বাবার অনেক টাকা আছে তারাই ভালো ভালো
কলেজে পড়াশোনা করছে।
অনেকে ভালো স্টুডেন্ট তবে অার্থিক সমস্যার কারনে
ভালো কলেজে পড়াশোনা করতে পারছে না।
.
কিন্তু আমার বেলাতে সেটা উল্টো। বাবা নেই,অনেক
আগেই চলে গিয়েছেন আমাদের ছেড়ে।
আপন বলতে একমাত্র মা।
মা গ্রামে থাকেন, বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি গুলো
দেখাশোনা করেন।
আর আমি শহরে থাকি, পড়াশোনা করি।অর্নাস ২য় বর্ষে
পড়ি।
পড়াশোনার পাশাপাশি দুইটা টিউশানি করাই।
টিউশানি করিয়ে যেটা পাই সেটা দিয়ে আর বাড়ি
থেকে পাঠানো কিছু টাকা দিয়ে আরাম করেই দিন চলে
যায়।
.
যথারীতি আজকেও টিউশানিতে গেলাম।
ছাত্রীর বাবা মা অনেক ভালো। ওনারা মধ্যবিত্ত
পরিবার।
ওনাদের একটি মাত্র মেয়ে।
কোন ছেলে নেই।
ছাত্রী এবার ইন্টার পরিক্ষা দেবে।
তবুও তাদের মধ্যে সবসময় হাঁসিখুশি ভাব বিরাজিত।
.
বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই ছাত্রীর মায়ের সাথে দেখা।
সালাম দিয়ে ভেতরে গেলাম।
-ভাইয়া আপনি দুমিনিট বসুন,আমি তিনমিনিটের মধ্যে
আসছি। (নিঝুম)
-আচ্ছা যাও (আমি)
টেবিলের উপর রাখা বইগুলো দেখছি,হটাৎ নিঝুমের
আগমন।
-কি ব্যাপার নিঝুম তুমি এতো সাঁজগোজ করে পড়তে
আসো কেনো।
-এমনিতেই আসি।
তবে ভাইয়া আজকে আমাকে দেখতে কেমন লাগছে।
-একদম বিড়ালের মতন।
-কি বললেন, আমাকে দেখতে বিড়ালের মতন লাগছে।
-হ্যাঁ,কারন আমি তো বলিনি কোন বিড়াল।
তোমাকে দেখতে সাদা বিড়ালের মতন লাগছে,
বিড়াল যেমন সাদা, তুমিও দেখতে তেমন সাদা।
-ভাইয়া, এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না।
-তাহলে পড়তে শুরু করো,এটাই ভালো হবে।
-নিঝুম মুখটা গুমড়া করে পড়তে লাগলো।
.
ফোনটা বেজে উঠলো,পকেট থেকে ফোন বের করে
দেখি,আমার ক্লাসমেট রুপা ফোন করেছে।
-হ্যালো রুপা বল।
-দোস্ত কালকে কলেজে দেখা করিস তো।
-কেনো।
-দরকার অাছে।
-আচ্ছা।
.
-কে ফোন করেছিলো( নিঝুম)
-আমার এক ফ্রেন্ড। (আমি)
-ছেলে না মেয়ে।
-মেয়ে।
-আপনি আর ওই মেয়ের সাথে কথা বলবেন না।
-কেনো, তোমার এতে সমস্যা কি।
-আমি বলছি ওই মেয়ের সাথে কথা বলবেন না ব্যাস, আর
যদি বলেন তাহলে এই মাসের বেতন টা আর পাবেন না।
-বেতন না পেলে তো সমস্যা,সেইজন্য বললাম ঠিক অাছে
বলবো না কথা।
-আপনের ফোনটা দেন (নিঝুম)
-কি করবেন।
-একজনকে ফোন দিবো।
-আচ্ছা নাও। তবে উল্টা পাল্টা কিছু করো না কিন্তু।
নিঝুম ফোনটা নিয়ে চলে গেলো।
কিছুক্ষণ পরে এসে বলছে,
সরি ভাইয়া,ফোনটা পানিতে পড়ে গিয়েছে।
আপনাকে আমি নতুন ফোন কিনে দিবো।
-কি বলছো এসব।
-যা বলছি সব সত্তি।
এইযে নিন আপনার বেতন।
বেতন টা নিয়ে মন খারাপ করে চলে আসলাম।
কি আর করবো পুরাতন ফোনটা গেছে এখন নতুন ফোন
পাবো।
এইটা ভেবে অনেক আনন্দ হচ্ছে।
.
পরের দিন টিউশানিতে গিয়ে নিঝুম আমাকে আমার
ফোনটাই দিলো, আর বললো আজকে আর পড়বে না।
নিঝুমের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মুখটা কালো
মেঘের মতন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে ।
কিছু না বলে ফোনটা নিয়ে সোজা ম্যাচে চলে আসলাম।
.
ম্যাচে এসেই শুরু হলো বিপত্তি।
আমার সব বন্ধু ফোন করে মিষ্টি খেতে চাই।
মিষ্টি খাবার কারন জানতে চাইলে বলে আমি নাকি
বিয়ে করেছি।
অামার বউ নাকি ওদের ফোন দিয়ে বিষয় টা বলেছে।
.
পরে বিষয়টা সুন্দর করে বুঝলাম,এটা নিঝুমের কাজ।
নিঝুম মিথ্যা কথা বলে এমন কাজ করেছে।
.
নিঝুমকে ফোন দিলাম,
-কোথাই অাছো এখন ( আমি)
-বাড়িতে আছি।
-এখন তুমি আমার সাথে দেখা করবে,কলেজ মাঠে ।
-কিন্তু ভাইয়া।
-কোন কিন্তু না আমি বসে আছি তারাতারি এসো।
.
কলেজ মাঠে বসে আছি।
অাধাঘন্টা পরে দেখি নিঝুম আসছে।
-কি ব্যাপার এতো জরুরি ভাবে ডেকেছেন কেনো (নিঝুম)
-কোন কথা না বলে নিঝুমের দুই গালে দুইটা চড় মারলাম।
কি পেয়েছো তুমি,সবাইকে বলেছে তুমি আমার বউ।
আমি তোমাকে এমনটা কখনো করতে বলেছি।
সবাই এখন আমাকে কি ভাবছে জানো।
-সরি ভাইয়া।
-সরি বললেই সব সমাধান হয়ে যায়।
-আমার ভুল হয়ে গেছে,আর এমনটা করবো না।
-ঠিক আছে এখন যাও,যেটা করেছে সেটা অন্য কেউ
করলে আস্ত রাখতাম না ।
-একটা কথা বলতাম।
-আচ্ছা বলে বিদায় হও।
-আমি আপনাকে ভালোবাসি,সেই প্রথমদিন থেকেই
আপনার প্রতি মনে এক টুকরো ভালোবাসা জন্মাতে শুরু
করে,সেটা আস্তে আস্তে অনেক বড় হয়ে যায়,যখন কোন
মেয়ে আপনাকে কল দেই তখন আমার শহ্য হয় না, কিন্তু
আমি তখন কিছুই করতে পারিনা।
সেইজন্য আপনার ফোনটা নিয়ে মিথ্যা কথা বলছিলাম।
-আবার একটা কষে চড় মারলাম।
ভালোবাসো বলে এমন করতে হবে।
অন্যরা প্রেম করে না,কই তাঁদের তো এমন করতে দেখিনি
কোনদিন।
যাও মুখের সামনে থেকে দুর হও।
.
নিঝুম কাঁদতে কাঁদতে চলে যাচ্ছে।
লাল সালোয়ার কামিজে নিঝুমকে দুর থেকে ভালই
লাগছে।
এই মেয়েটা আমাকে ভালোবাসো কিন্তু আমি তাকে
এতো অপমান করলাম।
যদি কিছু করে ফেলে।
দৌড়ে দিলাম নিঝুমের সাথে এমন টা করা ঠিক হয়নি।
-পেছন থেকে নিঝুমের হাতটা ধরলাম (আমি)
-নিঝুম থেমে পেছনে তাকালো।
হাত ছাড়ুন (নিঝুম)
-আমি অনেক অনেক সরি নিঝুম।
তুমি আমাকে এতো ভালোবাসো সেটা আমি কখনো
বুঝতে পারি নি।
হ্যাঁ আমিও তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
কথাটি বলতেই নিঝুমের চোখ থেকে পড়তে থাকা জ্বল
গুলো উধাও হয়ে গেলো।
-নিঝুম আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
এখন নিঝুমের মুখে অনেক টা হাঁসি।
-নিঝুম আমি তোমাকে ভালোবাসি এটা সত্ত্যি।
তবে?
-তবে কি,আমাকে ছেড়ে দিয়ে।
-একমাস পরে পরিক্ষা তোমার।
রেজাল্ট ভালো করে ভালো ভার্সিটিতে চান্স নিতে
হবে।
তাহলেই আমাকে পাবে।
-নিঝুম রাজী হয়ে গেলো।
নিঝুমকে বিদায় দিয়ে চলে আসলাম।
.
কিছুদিন পর নিঝুমের পরিক্ষা, এখন যদি ওর মনটা ভেঙ্গে
দিই,তাহলে রেজাল্ট ভালো করতে পারবে না ।
সেইজন্য শর্ত দিয়ে দিলাম।
.
চারমাস পরে,
নিঝুমের বাড়িতে বসে আছি।
সামনে ওর বাবা মা।
ওর আর আমার বিষয়টা ওর বাবা মা জেনে গেছে।
নিঝুম ভালো রেজাল্ট করে ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছে।
তারপরে নিঝুমই তার বাবা মাকে বলে দিয়েছে।
.
দেখো নিলয় আমাদের একমাত্র মেয়েকে আমরা কখনই
অসুখি দেখতে চাই না।
মেয়ের সব ইচ্ছাই আমরা পুরন করার চেষ্টা করেছি।
আমরা চাই তুমি নিঝুমকে বিয়ে করো, নাহলে নিঝুম
নিজেকে শেষ করে ফেলবে।
তোমার কথা মতই সে আজকে ভালো ভার্সিটিতে চান্স
পেয়েছে।
-জ্বী আংকেল,আমি নিজের পায়ে আগে দাড়িয়ে
নিই,তারপরে বিয়ে।
-আচ্চা তাহলে তোমার পরিবারের সাথে আমরা কথা
বলি।
-জ্বী হ্যাঁ বলতে পারেন।
-নিঝুম তার রুমে তোমাকে ডেকেছে।
.
ভয়ে ভয়ে নিঝুমের রুমের দিকে যাচ্ছি।
কারন যদি সেদিনের দেওয়া চড় গুলো ফেরত দেয়
আমাকে।
নিঝুমের রুমে ঢুকতেই নিঝুম রুমের দরজাটা বন্ধ করে
দিলো।
দরজা বন্ধ করার সাথে সাথে নিঝুম দৌড়ে এসে আমাকে
জড়িয়ে ধরলো।
মনে হচ্ছে আমি খুব দামী জিনিষ, যেটাকে ও কখনো
হারাতে চাই না।
যাক নিঝুম আর মানা করলাম না নিজেকে ছাড়িয়ে
নিতে,কারন
আমারতো ভালই লাগছে।