Forums.Likebd.Com

Full Version: অসমাপ্ত ভালোবাসার সমাপ্তি
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
রাস্তা দিয়ে আনমনে হেটে যাচ্ছি।ফোন ভাইব্রেট করাতে
পকেট থেকে বের করে দেখলাম অনন্যার ফোন।ফোন রিসিভ
করার পর জানতে পারলাম ওর বাসা থেকে বিয়ে ঠিক হইছে।
আমি বললাম বিয়ে করে ফেলো।এই মুহুর্তে আমার পক্ষে বিয়ে
করা অসম্ভব।অবশেষে অনন্যা আমার কাছে শেষ কিছু হিসেবে
একটা রাত চাইলো।এমনিতেই আমার অনেকগুলো রাত নিছে
ও,,তো একটা আর এমনকি? আমি বললাম যে সময় আর জায়গা
বলে দিও।
অনন্যার সাথে রিলেশনের সময় বাড়ার সাথে সাথে দাড়িও বড়
হয়েছে।অনন্যার সময় শেষ প্রায়।সামনেই একটা ছেলেকে
সিগারেট বিক্রি করতে দেখলাম।তিনটা হলিউড নিলাম।তিনটা
একসাথে ধরালাম।একসাথে তিনটা টানতে টানতে রাস্তা পার
হচ্ছিলাম।পাবলিকদের অনেকেই অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো
আমার দিকে।জ্যাকেটটাতে ময়লা দেখা যাচ্ছে।এইজন্যেই আমি
কখনো একেবারে কালো আবার একেবারে সাদা কিছু কিনিনা।
এইটা ৫৬নাম্বার গার্লফ্রেন্ড স্নিগ্ধার দেয়া ছিলো।কিছুদিন
ফিজিক্যাল রিলেশন করার পর যখন মন উঠে যায় তখন ওরে
কয়েকপাতা ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়াইয়া মেরে ফেলি।অইটা আমার
শুধু ৫৬তম গার্লফ্রেন্ডই নাহ,৫৬তম খুনও ছিলো। অনন্যা
আমার ৭০তম গার্লফ্রেন্ড।৭০টা মেয়েকে পটানোর পিছনে
সবচেয়ে বড় অবদান বাবার টাকার আর নিজের মেয়ে পটানোর
ক্ষমতার।
.
তো পরেরদিন রাতে অনন্যা আমাকে ওর নিজের বাসাতেই
ইনভাইট করে।আমি বাসাতে যেয়ে অনন্যাকে বললাম যে অনন্যা
আমরা পালাবো।তুমি একটা ছোট চিঠি লিখো যে তুমি
অন্যকাওকে ভালোবাসো আর তাকে ছাড়া অন্যকাওকে বিয়ে
করতে পারবেনা,তাই তাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছো।
অনন্যার মুখে হাসির জ্বলক।অনন্যা ঝটপট করে লিখে
ফেললো।এরপর দীর্ঘক্ষণ শারিরীক সম্পর্ক করার পর আমি
অনন্যার দিকে আমার সাথে করে নিয়ে আসা ঘুমের ট্যাবলেট
মিক্সড করা হুইস্কি এগিয়ে দিলাম।খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই
অনন্যা ঘুমের ঘোরে চলে গেলো।আর তখনই আমি অনন্যার
কাপড়চোপড় আর রুমটা গুছিয়ে ফেললাম।
অতঃপর অনন্যার ওড়না ফ্যানের সাথে বেধে অনন্যাকে ফাসিতে
ঝুলিয়ে দিলাম।এরপর রুমটা চাপিয়ে চলে আসছিলাম এমন সময়
অনন্যার চিৎকারের আওয়াজ শুনছিলাম।কিন্তু আমি জানতান
কিছু করার নাই অনন্যার কারণ ওর হাত বাধা,আর ওর বাসা
থেকে আওয়াজ বাইরে যাবেনা।
.
বাসায় যেয়ে দেয়ালের লাগানো গার্লফ্রেন্ড নামক লিস্টের
৭০তম নাম্বারটি ক্রস চিহ্ন দ্বারা কেটে দিলাম।অনন্যার বাবা
মা আমার সম্পর্কে কিছুই জানেনা।আর কখনো জানতেও
পারবেনা,,সেহেতু ওর খুনীকে খুজে বের করা অবশ্যই কঠিন
হবে।
সেলুনে যেয়ে দাড়ি আর চুল কাটালাম।অনন্যার কথা
একমুহুর্তের জন্যে মনে পড়ছিলো।সেলুন থেকে বাসায় ফিরার
সময় একছোটভাই বললো,শিশির ভাইয়া কাহিনী কি?মেয়ে
আসতে না আসতেই খবর পাইয়া গেছো?
আমি ওর কথার মানে কিছুই বুঝলামনা।পরে বুঝলাম যে আমার
বাসার পাশেই নাকি ভার্সিটির কিছু মেয়ে বাসাভাড়া নিছে
গতকাল।
আমি ছোট ভাইরে বললাম হারামজাদা খাল কেটে কুমির আনতে
যাস কেন? আমিতো কিছুই জানতামনা,তুই জানাইয়া দিলি।
যাক ভালোই করছিস,শেভ করাটা তাহলে বিফলে যায়নাই।
.
এলাকায় ফ্লার্টিংয়ে ভালো নাম আছে আমার।অনেক বয়স্ক
লোকই আমাকে দেখতে পারেনা।পারবে কিভাবে? যে ছেলে শার্ট
প্যান্টের মত মেয়ে ইউজ করে তাকে কে ভালো বলবে?তবে
সত্য ঘটনা যেটা সেটা হলো নিজের এলাকায় কোনো মেয়ের
সাথে প্রেন করিনাই।যা করছি সব বাহিরের এলাকার।রিক্সা
দিয়া ঘুরার সময় কেও না কেও দেখে আর সেই এসে সবাইর কানে
কানপোড়া দিবে শিশিরকে আজ আরেকটা মেয়ের সাথে দেখছি।
এইভাবেই এলাকার সবাই আমার সম্পর্কে জানছে।সে বিষয়ে
কোনো আক্ষেপ নেই।
.
রাতে ড্রিংকস করে হেলে ধুলে মেসেরদিকে যাচ্ছিলাম।মুখে
সিগারেটের ধোয়া রিং বানিয়ে ছাড়ছি।তো একসময় দেখলাম
আমার মেসের পাশের বাসার দুতলায় বাতি জ্বলছে।একটা মেয়ে
বারান্দায় বসে স্টাডি করছে।আমি তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ,
কিন্তু কেনো তা জানা নেই।মাথা ভার ভার ছিলো।এইসময়ে
একটা গার্লফ্রেন্ডের দরকার ছিলো।তো আমি চেঁচিয়ে বললাম
অই মাইয়া এত রাইতে কিসের লেখাপড়া? ভিতরে যাইয়া ল্যাপ
মোড়া দিয়া ঘুম দে। লাইট অফ কর।
মেয়েটা আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকালো।
আমি আবারো বললাম অই কথা কানে যায়না?
মেয়েটাকে দেখলাম উঠে গেলো সেখান থেকে।আশেপাশের
মানুষদের আরো কয়েকজন জানালা খুললো আমার চেঁচামেচি
দেখার জন্যে।আমি জায়গাটাতে বসে পড়লাম।আস্তে আস্তে
রাস্তাতেই হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়লাম।চার হাত পা চারদিকে।
হঠাৎ কে যেনো উপর থেকে এক বালতি পানি ছুড়ে মারলো
আমার দিকে।আমি শরীর ঝাড়া দিয়ে উঠলাম।যেই মেয়েটাকে
কিছুক্ষণ আগে ঝাড়ি দিছিলাম সেই মেয়েটাই।মেয়েটা বললো
ওহ সরি, আমি ভেবেছিলাম কোনো কুকুর রাস্তায় শুয়ে
আছে,আপনি শুয়ে আছেন জানলে আরো এক বালতি বেশী
ঢালতাম।আমি মাতাল অবস্থায় দাড়াতে পারছিলামনা।চোখে
ঝাপসা দেখছিলাম।মেয়েটার কথাগুলো শুধু শুনছিলাম।কিছু
বলার আগেই রাস্তায় ধপাস করে পড়ে গেলাম।মাথায় প্রচন্ড
আঘাত পেলাম।
.
জ্ঞান ফিরার পর দেখলাম আমি আমার নিজের রুমেই।মাথায়
পট্টি করা।এরমানে মাথা ফাটছে।রাতের কথা মনে পড়তেই রুম
থেকে বের হয়ে মেয়েটার বাসার দিকে গেলাম।বাসার ভিতরে
যাওয়া লাগেনাই।মেয়েটা বাসার গেটের সামনে বসে দাঁড়িয়ে
ছিলো।আমায় দেখে হাসতে হাসতে হেসে বললো কেমন
আছেন?নেশা কাটছে?
মেয়েটার কথা এতটাই মিষ্টি যে আমি গালি দিতে যেয়েও
পারলামনা।বরং ভালো আছি বলে উত্তর দিলাম।
মেয়েটা আমায় কোনো রকমের পাত্তা না দিয়েই ভিতরে চলে
গেলো।মেজাজ কেমন জানি করছিলো।মনে হলো কি যেনো
হয়েছে আমার।পরক্ষণেই মনটাকে এইবলে শান্ত করলাম যে ওর
থেকে কত ভালো মেয়ের সাথে রুম ডেট করছি আর ওতো হাতের
ময়লা।তো রুমে যেয়ে শুয়ে পড়লাম।ঘুম আসছিলো বেশী তাই
ঘুমিয়ে পড়লাম।সন্ধ্যায় ঘুম ভাঙ্গার পর বাসার সামনে বসে
সিগারেট টানছিলাম।মেয়েটার রুম দেখা যায় সেখান থেকে।
মেয়েটা সম্ভবত চা নয়তো কফি খাচ্ছিলো।মেয়েটা আমাকে
উদ্দেশ্য করে বললো যে ডাক্তার দেখাইছেন?
আমি বললাম যে আমি ডাক্তার দেখাইনা।
তো মেয়েটা আবারো ভিতরে চলে গেলো।রাতের কথা মনে
পড়তেই সংশয় লাগলো।আবার বালতি ভর্তি পানি আনবে
কিনা! আমি সিগারেট দ্রুত গতিতে টেনে ভিতরে চলে গেলাম।
ভিতরে যাওয়ার পর আবারো ভাবলাম যে মেয়েটাকে ভয় পাই
নাকি অন্যকিছু!আজবতো।গেঞ্জি আর শার্ট চেঞ্জ করে
বাইরের দিকে হাটা দিলাম।শার্টের বোতাম সব খোলা থাকে
আমার।তো বাইরে বের হয়ে রিক্সা নিলাম বাস স্ট্যান্ডের
উদ্দেশ্যে।এলাকা ছাড়বো কিছুদিনের জন্যে।তো রিক্সায় ঠিক
করার পর আমার উঠার সাথে সাথেই মেয়েটা উঠে গেলো।
.
রিক্সাওয়ালাকে বললো মার্কেটের দিকে নিয়ে যেতে।আমি
রিক্সা থেকে নেমে বললাম এইটা কোন ধরনের ফাজলামি।
কথাটা বলেই রিক্সা থেকে নেমে গেলাম।মেয়েটা আমার মাথার
চুলগুলো হাত দিয়ে ধরে আমাকে আবার রিক্সায় উঠায়।আজ
পর্যন্ত আমার বাবাও আমাকে এইরকম ভাবে ধরেনি।মন
মেজাজ অনেক খারাপ।রাস্তার সব মানুষ তাকিয়ে ছিলো।
ডাক্তারের কাছে নিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে আমায় নিয়ে বাসায়
আসছিলো।
বাসায় এসে ঔষুধগুলো কখন কোনটা খাওয়া লাগবে বুঝিয়ে
দিতে লাগলো।আমি শুধু ফুসতে লাগলাম।
পরেরদিন বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা দেয়ার সময় সবাই বলতে
লাগলো যে কিরে শিশির!তোরে নাকি এলাকার কোন মেয়ে
সেইরাম ট্রিট দিতাছে।সবার কানে কানেই একই খবর।বন্ধুদেরকে
বুঝাচ্ছিলাম যে এইসব কিছুইনা।তো এমন সময় মেয়েটা এসে
বললো চলেনতো ডেটে যাবো।
.
আমার অই মুহুর্তে বাশ একটা নিয়ে মেয়েটার মাথায় বারি দিতে
মন চাচ্ছিলো।চুপ করে বসেছিলাম।মেয়েটা আমার হাত ধরে
টেনে নিয়ে আসলো দোকান থেকে।এরপর রিক্সা ডেকে রিক্সায়
উঠালো।সেই মুহুর্তে প্রথম গার্লফ্রেন্ডের কথা মনে পড়ে
যায়।রিক্সা ওর ভার্সিটির সামনে থামে।আমার চিনা অই
ভার্সিটি।সবাই আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলো।মেয়েটা
আমাকে বললো টাকা দেও বাবু।
আমি কোনো কথা না বলেই টাকা বের করে দিয়ে দিলাম
রিক্সাওয়ালাকে।এরপর মেয়েটা আমার ফোন চাইলো।ফোন
দিলাম।তারপর ওর নাম্বারে একটা কল দিলো আমার ফোন
দিয়ে।নাম্বারটা সেভ করেও দিলো।এরপর আমাকে টাটা বলে
ভার্সিটির ভিতর চলে গেলো।আমি আবুলের মত চাহিয়া রইলাম
কিছুক্ষণ তাহার পানে।
অবশেষে ফোনে মেসেজ আসাতে আমার নেশার ঘোর কাটলো।
ভার্সিটির কিছু ছেলে নাকি ওরে ডিস্ট্রাব করে তাই ও এমনটা
করছে।
মেসেজটা পাওয়ার পর আমার রাগ কিছুটা কমে।আমি
ভেবেছিলাম ওয়ো হয়তো সেই প্রথম গার্লফ্রেন্ডের মত।
রাস্তা দিয়ে হাটতে লাগলাম।আমি আগে সবার মতই ভদ্র
ছিলাম।তবে আমার সব ভদ্রতা নষ্ট হয় যেদিন আমার প্রথম
গার্লফ্রেন্ড অনু আমাকে বলেছিলো,তোমার ভিতর ফিলিংস
বলতে কিছু নাই,তোমার ব্যবহার হিজড়াদের মত।
আসলে ও সবসময় চাইতো আমি ওর সাথে ফিজিক্যাল
রিলেশন করি।কিন্তু আমি ওর সাথে কখনো অইসবের চিন্তা
কল্পনাতেও আনিনাই।তবে সেদিন ওর সাথে করেছিলাম।আর
সেদিনই ওকে জঘন্যভাবে খুন করি।ওর শরীরের প্রতিটা অংশ
পিছ পিছ করে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেই।সেদিনের পর থেকে
মাথায় অইরকম ক্যারেক্টারের মেয়েদের দুনিয়াতে বাঁচার
কোনো অধিকার নেই।এরা শুধু নিজেরা না আরো একটা লাইফ
নষ্ট করে।
.
রাতে বন্ধুদের সাথে বসে মেসে ড্রিংকস করছিলাম এমন সময়ে
দরজায় নক করলো মেয়েটা।বন্ধুরা ফান করে বলতে লাগলো
ভাবি আসছে,আমরা যাই তুই মজা নে।
এর আগে ওদের কথাগুলো কখনো খারাপ লাগেনাই,আজ
লাগছে।
মেয়েটা রুমে এসে জিজ্ঞেস করলো ঔষুধ খাইছেন?
আমি উল্টা প্রশ্ন করলাম আপনার নাম কি?
মেয়েটা বললো আজব!আপনের ফোনে আমার নাম্বার আমার
নাম দিয়ে সেভ করা আপনি দেখেন নাই?
আমি বললাম নাম জানতে চাইছি বলেন।তো মেয়েটা বললো
তার নাম তাসপিয়া। তারপর আমার চুলগুলো আবারো হাতে
মুঠি করে ধরলো।এইবার রেগে গেলাম
বলে উঠলাম ওই মেয়ে এত সাহস কে দিছে? আমার বাবাও আজ
পর্যন্ত আমার সাথে এমন ব্যবহার করেনাই আর আপনিতো
কিছুইনা।হাত ঝারা দিয়ে ছাড়িয়ে নিলাম চুলগুলো।মেয়ের
দুইচোখ দেখলাম লাল হয়ে গেছে।ভাবলাম হয়তো কেদে দিবে।
কিন্তু নাহ,মেয়েটা অবাক না হয়ে বরং আমাকে উত্তর দিলো
যে দেখেন আমি আপনার বাপ নাহ,সেহেতু উনার মত ভালো
ব্যবহার আশা করিয়েন নাহ,বুঝছেন?
এইবার আমিই অবাক।আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে ডাইরেক্ট
সেলুনে গেলো।তারপর সামনে দাঁড়িয়ে থেকে ছয় ইঞ্চি চুলগুলো
দেড় ইঞ্চি বানিয়ে দিলো।আসার সময় সেলুনের ছেলেটার গালে
ঠাস ঠাস দুইটা থাপ্পড় দিলাম।যদিও ওর দোষ নাহ,তবে ও না
থাকলে হয়তো চুলগুলো কাটা হতোনা।তাসপিয়া অই দৃশ্য
দেখে রেগে আগুন।আমি যখন মেসের নিকটে চলে আসি তখন
তাসপিয়া আমার কলার ধরে টান দিয়ে ঠাস ঠাস দুইটা থাপ্পড়
লাগায়।আমি কারণ জানতে চাওয়ার আগেই বললো আপনি
ছেলেটাকে সেলুনে দিছেন আর আমি লোকমুখে।
.
সারারাত ঘুমাতে পারিনাই।দুইদিন আগেও আমি কোনো
মেয়েকে পাত্তা দিতামনা আর আজ এমন কেও আমাকে উঠতে
বসতে ঝারি দেয় যাকে ভালোভাবে চিনিইনা! ভাবলাম এইটারো
একটা কিছু করা লাগবে। যেমন ভাবা তেমন কাজ।কয়েকদিন ওর
কথা মতই চলতে লাগলাম।ধীরে ধীরে ওরে ভালোভাবে বুঝতে
লাগলাম।আসলে ও হলো হাসিখুশী টাইপের একটা মেয়ে।
কোনো কিছু সিরিয়াসলি নিতেই চায়না।তো হঠাৎ একদিন রাত
১২টায় আমায় ফোন দিয়ে ওদের বাসার ছাদে যেতে বললো।
আমি ভাবলাম আজ ওর সাথেও সব শেষ করবো।আর
আগাবোনা। তো ছাদে যাওয়ার পর দেখলাম ও অন্যপাশ হয়ে
দাঁড়িয়ে আছে।আমি সামনে যেয়ে ডাক দিতেই দেখলাম একটা
কেক নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।আজ ওর জন্মদিন।আমি অবাক
হলাম আর অবাক হওয়ারই বিষয়।তো আমাকে বললো বার্থডে
গার্লকে কিছু গিফট দিবেন নাহ? আমি বললাম হঠাৎ করে গিফট
কোথেকে আনবো?
তখন সে বললো আমি কিছু চাইবো?
এইপ্রথম তাসপিয়ার চোখে পানি দেখলাম।আমি সেটা দেখে ভয়
পেয়ে যাই।
আমি বললাম চাও।
তখন সে বলল সারাজীবন আমার মনের মানুষ হওয়ার অভিনয়
করবেন?
ওর এইরকম চাওয়ার আশা করিনি কখনো আমি।কেক নিয়ে
এখনো দাঁড়িয়ে ও।আমি পিছনে ঘুরে গেলাম।তাসপিয়া তখন
ডাক দিলো।আমি সেদিকে খেয়াল না করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে
গেলাম।একবন্ধুর সাথে তখন দেখা হলো।
.
ও আমাকে বললো মামা আজ নিয়ে কয়বার?
আগের সবগুলো রিলেশনের কথা বন্ধুদের শেয়ার করতাম।তাই
ওরা সবই জানে।আজ আমার আর তাসপিয়ার সম্পর্ক নিয়েই
ওদের বাকি সবার মতই চিন্তা।আসলে অতীত মানুষের ভবিষ্যৎ
নির্ধারণ করে।আমরা এখন যা করছি কিছুক্ষণ পর সেটাই
আমাদের অতীত হয়ে যাবে।মেসে যেয়ে দরজা আটকিয়ে ঘুম
দিলাম।ঘুম আসছিলোনা।তাই গোসল করেছিলাম।পরেরদিন
সকালে তাসপিয়া ডাকতে এসেছিলো রুমে।দরজায় কড়া
নেড়েছিল। আমি ইচ্ছে করেই খুলিনাই।রাতে একটা ছাদে বসে
ভাবছিলাম অনেকক্ষণ।আমার বন্ধুরা বলতো যে আমি কখনো
ভার্জিন বা ভালো মেয়ে পাবোনা।কারণ আল্লাহ খারাপের
সাথে খারাপই মেশায়।আমি যদি তাসপিয়াকে একসেপ্টও করি
তাহলে ওদের ধারণা থাকবে তাসপিয়া ভালোনা।আর এলাকার
লোকজনও ইদানীং ওরে আমার সাথে চলাফেরা করতে দেখে
খারাপ বলেছে।
ছাদের সাইডের দেয়ালে দাঁড়ালাম। এর আগে অইখানে দাড়াতে
ভয় লাগতো।পা বাড়ালেই নির্ঘাত মৃত্যু।তবে আজ ভয়
লাগছেনা।কারণ আজ লড়াইটাই জীবন দেয়ার।আমার জীবনে
খারাপ কাজের অভাব নাই।তাসপিয়া আমার লাইফে আসলে তার
কিছুটা হলেও ইফেক্ট পড়বে আমার উপরে।তাসপিয়াকে দেখার
পর আরেকটা জিনিষ বুঝেছি।সব মেয়ে এক নাহ।কিছু মেয়ে
একেবারেই ইউনিক হয়।দেয়াল থেকে নামলাম।মেসে যেয়ে
তাড়াতাড়ি ব্যাগ গুছিয়ে বাইরে বেড়িয়ে গেলাম।বাস স্ট্যান্ডে
যেয়ে বাস ধরলাম অজানা উদ্দেশ্যে।
.
ছয়মাস পর,,,,,
.
আজ আর আমি কারো ইজ্জতকে চাহিদা মনে করিনা।তবে
একজনকে মন থেকে ভালোবাসি।তাই তাকে মনের কথা বলতেই
ফিরে যাচ্ছি চিরচেনা ফেলে আসা শহরটাতে।
মনটা খুব ব্যাকুল তাসপিয়া নামক সেই পাগলীটার জন্যে।দেখতে
ইচ্ছে করছে খুব।মোবাইলে নাম্বার আছে।তবে তাকে ফোন
দেয়ার ইচ্ছে নেই।সারপ্রাইজ দিবো তাকে।
এলাকায় যাওয়ার পর অনেকেই চিনছে আবার চিনেনাই।
একজনের কাছে তাসপিয়ার কথা জিজ্ঞেস করতেই বললো সে
নাকি আর এখানে থাকেনা।আমি চলে যাবার কিছুদিনের মধ্যেই
নাকি সে পাগল হয়ে যায়।একদিন বিকালে নাকি তার বাসা থেকে
তার নিথর দেহ বের হয়।দেহের পাশে শুধু একটা কাগজে লিখা
ছিলো আমি তোমার জন্যে অপেক্ষা করতে পারিনি
শিশির,কারণ আমার প্রতিটা মুহুর্ত তোমাকে পাবোনা বলে
কষ্ট দেয়।তাই সময়কেই বিদায় দিলাম।
.
আমি যেনো হতবিম্ব সেই সময়ে।নিজের মেসে যেয়ে দেখলাম
আজ অন্যকেও ওখানে।যারা চিনতো তারা কেমন আছি
জিজ্ঞেস করেছে আবার অনেকে তাসপিয়ার মৃত্যুর জন্যে
গালাগালিও দিয়েছে।রাতে ছাদে যেয়ে বসলাম। একটা ছোট
ভাইকে ফোন দিয়ে বললাম একটা কাগজ আর কলম দিয়ে যেতে।
কাগজটা দিয়ে প্লেন বানালাম আর তার ভিতর লিখলাম "No
matter how much time passes,You will always be
in my heart"
আজ আবারো দেয়ালে দাঁড়ালাম। তবে শুধরাতে নাহ।প্লেনটাকে
ছুড়ে দিলাম আর এক পা বাড়িয়ে দিলাম।