Forums.Likebd.Com

Full Version: দুষ্ট বউ
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
= হ্যালো , [ অামি ]
:- কেমন অাছো বাবু [ হাসি ]
= কে অাপনার বাবু , অার অামি ভালো থাকি অার নাইবা থাকি
অাপনার জানার প্রয়োজন মনে করি না ।
:- তুমি অামার বাবু, অার অামার বাবুটা কেমন অাছে কি করে
সেটার খোঁজ খবর নেওয়া তো অামার দায়িত্ব।
=দেখেন আপনাকে কতবার বলেছি আমাকে ফোন দিবেন না,
আমাকে আর ডিস্টার্ব করবেন না,
অাপনার পাগলামীর কথা শুনতে অামার ভালো লাগে না।
:- অামি তোমাকে ভালোবাসি, তাইতো সব সময় ফোন করি,
তোমার কণ্ঠটা শুনার জন্য, তোমার সাথে কথা বলার জন্য,
জানো তোমার কন্ঠ না শুনলে অামার কিছুই ভালো লাগে না।
= এই মেয়ে এক কথা অাপনাকে কতো বার বলবো, বললাম না
অামি অাপনাকে ভালোবাসি না, কোনদিন
ভালোবাসবো ও না, অার অামার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে
অাপনাকে অাগেও বলছি।
:- বিয়ে ঠিক হয়ছে কিন্তু বিয়েতো হয়নি এখনো তাইনা বাবু ,
= বিয়ে হয়নি তবে হয়ে যাবে, তাতে কোন সমস্যা হবে না।
:- অামি বেঁচে থাকতে তুমি অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে করে ঘরের
বউ করে অানবে, তা অামি কখনো হতে দিবো না,কোনদিনেও
না, তুমি শুদু অামার হবে অামি হবো শুধু তোমার।
= অাপনার মতো মেয়ে কে অামি অামার বউ করবো, তা
কল্পনা করলেন কি করে অাপনি।
:- অামি যদি তোমার ঘরের বউ হতে না পারি, তাহলে
কোন মেয়ে কে তোমার বউ হতে দিবো না অামি।
= এই বেয়াদব মেয়ে, কি শুরু করলি এই সব, তুই মেয়ে মানুষ বলে
সম্মান দিয়ে কথা বলছি, তোর কানে কি কথা গুলো যায়না।
[ অনেক রেগে ]
:- তুমি হঠাৎ রেগে গেলে কেন বাবু , তুই তুই করে বলছো
কেনো, তোমার কি হয়েছে।
= বেয়াদব মেয়ে আবার কথা বলছ, তোর বাবা মা কি তোরে
অাদব কায়দা শিখায় নাই, তোর দেখি কোন লজ্জা শরম
বলতে কিছু নাই, তোকে সামনে পেলে ১০০ টা থাপ্পড় মারতাম
তোর গালে।
:- তুমি এতো রাগছো কেন, বেশি রাগারাগি করলে অসুস্থ হয়ে
যাবে ।
= তুই রাখ ফোন, অামাকে অার কোনদিন কল দিবি না,
বেয়াদব মেয়ে কোথাকার।
---
---
এই বলে ফোন রেখে দিয়ে মোবাইল টা বন্ধ করে রাখি।
অামি জানতাম ছেলেরা মেয়েদের কল করে ডিস্টার্ব করে, এখন
দেখি তার উল্টো টা, মেয়েরা ছেলেদের কল করে ডিস্টার্ব করে
। গত এক মাস ধরে হাসি নামের মেয়েটা সকাল বিকাল সব সময়
কল করে বিরক্ত করে অামায়।
তার একি কথা সে অামাকে নাকি অনেক অাগে থেকে
ভালোবাসে। অামি তার নামটাই জানি শুধু অার কিছু জানি না
তার সম্পকে । বাসার সবাই কে তার সম্পকে জিজ্ঞেস করে
দেখলাম। কিন্তু কেউ তার সম্পকে কিছুই জানে না, অথচে সে
অামার সম্পকে সব কিছুই জানে।
অামার পরিবারের সবার সম্পকে সব কিছুই জানে।
---
---
এদিকে দেড় মাসে অাগে বাবা মা একটা মেয়ে কে দেখে অামার
বিয়ের জন্য কথাবার্তা ফাইনাল করে ফেলে। মেয়েটার নাম
ফারজানা । তিনদিন পরে তার সাথে অামার বিয়ে, তার সাথে
অামার তেমন কথা বলা হয়নি, শুধু এংগেজমেন্ট দিন একটু করে
কথা বলা হয়ে ছিলো ।
---
---
বিয়ে নিয়ে অনেক ঝামেলার মধ্যে অাছি, তার ওপর এই হাসি
নামের মেয়েটা প্রতিদিন ফোন করে বিরক্ত করে,
কতো করে বুঝালাম, অামার বিয়ের কথা বললাম,অনেক অপমান
করলাম। তারপরেও তার কল করা বন্ধ হয়নি।
তার কারনে এক মাসে তিনবার সিম চেঞ্জ করি। কিন্তু
তারপরেও কি করে জানি সে অামার নতুন সিমের নাম্বার
যোগাড় করে কল দেয় । এই জন্য অাজকে মোবাইল বন্ধ করে
রাখি। বিয়ে না হওয়া পযন্ত অার মোবাইল খুলবো না।বিয়ে না
হওয়া পর্যন্ত মোবাইল টা বন্ধই রাখবো ।
---
---
পরের দিন অামার রুমের টেবিলের ওপর দেখি কিছু
চকলেট অার গোলাপ ফুল সাথে একটা চিরকুট।
চিরকুট টা হাতে নিয়ে দেখি তাতে লেখা।
প্রানের চেয়ে অধিক প্রিয় বাবু ওসমান , তুমি মোবাইল বন্ধ
করে রেখেছো তাই তোমার সাথে কোন যোগাযোগ করতে
পারছি না বলে তোমাকে এই পত্র লেখা। তুমি কি ভাবছো তুমি
মোবাইল বন্ধ করে রাখলেই অামি তোমার পিছু ছেড়ে দিবো।
যদি এমন টাই ভাবো তাহলে সেটা তোমার ভুল ধারনা বাবু ।
তোমার ঘরের বউ হয়ে অামিই অাসবো। অন্য কোন মেয়েকে
তোমার ঘরের বউ হতে দিবো না।দেখো তোমাকে অামি
অনেক ভালোবাসি তাই ভালো ভাবে বলছি অামাকে
ভালোবাসো, অামাকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাও। বাবা মা কে
এখনি বলে দেও তুমি হাসি নামের একটা মেয়ে কে ভালোবাসো।
নয়তো কিন্তু অনেক খারাপ হবে, তোমার বিয়ে হতে দিবো না
অামি। প্রয়োজন হলে বিয়ের দিনই তোমার বিয়ে ভেঙে
দিবো। বিয়ে ভাঙ্গতে যতোকিছুই করতে হয়
অামি করবো । অার বেশি কিছু লেখে সময় নষ্ট করলাম না
তোমার। শেষ কথা তুমি বাবা মা কে বলে বিয়েটা ভেঙ্গে দাও।
নয়তো অামাকে কিছু করতে হবে। ইতি তোমার বাবুনী হাসি ।
---
---
পত্র টা পড়ে মাথাটা গরম হয়ে যায়, বাসার সবাই কে জিজ্ঞেস
করি অামার রুমে ফুল অার চকলেট রেখে গেছে কে কিন্তু কেউ
কিছুই জানে না। হাসি এতোদিন কল করে বিরক্ত করতো,
কিন্তু অাজ হুমকি দিলো বিয়ে ভাঙ্গার । এখন অনেক টেনশন
হচ্ছে অামার । সত্যি সত্যি যদি সে বিয়েটা হতে না দেয়।
সবাই কে যদি বলে তার সাথে অামার সম্পর্ক অাছে। তাহলে
তো অামার বারোটা বাজবে। বাবা মা অাত্বীয় স্বজন সবাই
অামাকে অনেক ভালো জানে,এলাকার সবাই বলে ওসমান
ছেলেটা অনেক ভালো। এই মেয়ের কারনে হয়তো সবাই খারাপ
মনে করবে অামায়। তার কারনে হয়তো মান সম্মান সব যাবে
অামার ।
---
---
অবশেষে ঠিকঠাক মতোই ফারজানার সাথে বিয়ে টা হয়ে যায়
অামার । বিয়ের দিন কোন সমস্যা হয়নাই।বিয়ের দিন হাসি
এসে কোনো সমস্যা করে নাই।
কিন্তু বিয়ের দিনটাই অামার জীবনের সবচেয়ে ভয়ানক
দিন ছিলো। সারাদিন ভয়ের মধ্যে ছিলাম, যখনি কোনো মেয়ে
কে অামার দিকে অাসতে দেখতাম।
তখনি অামার হার্টবিট দিগুন বেড়ে যেতো,
মনে হতো এই হাসি এখনি হয়তো কিছু করে বসবে ।
তবে এমন কিছুই হয়নি সুন্দর ভাবে বিয়েটা হয়ে যায়।
---
---
বাসর রাতে রুমে ঢোকার সাথে সাথে ফারজানা এসে পা ধরে
সালাম করলো। তারপর সে বিছানায় গিয়ে বসলো। সে ঘোমটা
দেওয়া তার চেহারা অামি দেখতে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ সে বলে
উঠলো, তোমাকে বলছিলাম না বাবু, অামি তোমার ঘরের বউ
হবো।
অন্য কোন মেয়ে কে তোমার বউ হতে দিবো না।
অামি চমকে উঠলাম কথাটা শুনে, এই কি তাহলে হাসি , অামার
বিয়ে কি হাসির সাথে হয়ছে।
ফারজানা কোথায় তাহলে।মনে হাজার প্রশ্ন নিয়ে অামি তার
কাছে গিয়ে ভয়ে ভয়ে তার ঘোমটা সরালাম দেখি এতো
ফারজানা।
সে হাসতে লাগলো অার অামি বোকা হয়ে তার দিকে ছেড়ে
থাকলাম।কিছু সময় পর সে হাসি থামিয়ে বললো, কিছু বুঝতে
পারো নাই। অামি মাথা নেড়ে না বলি,
তখন সে বলে,
তুমি না অনেক বোকা, অামিই এতোদিন তোমার সাথে কথা
বলছিলাম,তোমার সাথে দুষ্টমি করছিলাম,
অামার নাম হাসি বলে ।
---
---
কথটা শুনার পর অামি কি বলবো তখন কোন ভাষা খুঁজে
পাচ্ছিলাম না, শুধু জিজ্ঞেস করলাম।
---
= কেনো এমন করলে অামার সাথে। [ অামি ]
:- অামি পরিক্ষা করে দেখলাম কোন মেয়ে অামার স্বামী কে
প্রেমের ফাদে ফেলতে পারবে কি না? [ ফারজানা ]
= তো পরিক্ষা করে কি বুঝলে।
:- এখন বুঝলাম অামার স্বামীকে কোন মেয়ে প্রেমের ফাদে
ফেলতে পারবে না, অামার স্বামী শুধু অামাকে ভালোবাসবে।
= একটা কথা জিজ্ঞেস করবো ।
:- হ্যাঁ করো।
= অাচ্ছা অামিতো তোমাকে অামার সম্পকে কিছুই বলি নাই,
অামার ফোন নাম্বার ও দেই নাই। কিন্তু তুমি কি করে অামার
ফোন নাম্বার পেলে , কি করে অামার সম্পকে সব কিছু
জানলে।
:- তোমার সম্পকে সব কিছুই তোমার বোনদের কাছ থেকে
জেনে নিলাম, তোমার নাম্বার টাও বার বার তাদের কাছ থেকে
যোগার করে নিতাম, অার অামি
তাদের কে বলে দিয়েছিলাম তোমাকে না বলার জন্য।
= ও অাচ্ছা ননদ ভাবী মিলে অামাকে বোকা বানাচ্ছিলে
এতোদিন ।
:- হা হা হা, হ্যাঁ একটু করে বোকা বানালাম, অাচ্ছা অামি
একটা কথা বলবো।
= হ্যাঁ বলো।
:- তুমি বলছিলে অামাকে সামনে পেলে ১০০ টা থাপ্পড় মারবে,
এখন তো অামি তোমার সামনে অাছি, ইচ্ছে হলে থাপ্পড়
মারতে পারো অন্যায় যে করেছি শাস্তিতো পেতে হবে।
---
---
এই বলে সে তার গাল অামার সামনে করে রাখে। অামি তখন
তার গালে থাপ্পড় দেওয়ার জায়গায় অালতো করে একটা চুমু
এঁকে দিয়ে বললাম।
এখন থাপ্পড় মারতে ইচ্ছে করে না, ইচ্ছে করে ১০০ বার বলতে
ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।
---
---
উৎসর্গ :- অামার ছোট বোন ফারজানা অাক্তার হাসি ও
তার স্বামী ওসমান কে।
---
ব্রি: দ্র: - গল্পটা কাল্পনিক, তবে অামার বোন ফারজানা
অাক্তার হাসির এরেন্জ ম্যারেজ হয় ওসমানের সাথে,
ফেব্রুয়ারির দুই তারিখে, সবাই তাদের জন্য দোয়া করবেন,
তারা জেনো সুখে শান্তিতে সারা জীবন বসবাস করতে পারে।