Forums.Likebd.Com

Full Version: কুহু
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
নামটি শুনার পর দাদু যেন কোথায় হারিয়ে

গেল,,

দাদুর জন্ম ব্রিটিশরা যখন উপমহাদেশ ছেড়ে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন।

দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের শুরুর দিকে

দাদুর বাবা ছিলেন সরকারি ব্রিটিশ অফিসার।

তৎকালীন ব্রিটিশ রেলওয়েতে তিনি চাকরী করতেন,,

সে কারণে ওনাদের থাকতে হত দার্জিলিং,,

বর্তমান ভারতের পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যর একটি অংশ দার্জিলিং চায়ের জন্য সে ব্রিটিশ আমল থেকে বিখ্যাত।

দাদু বাবা যেহেতু অফিসার ছিলেন তাই ওনাদের আবাস স্থল ছিল নির্জন একটি বাংলোতে।

দাদুকে দার্জিলিং এ একটি মিশনারি স্কুলে ভর্তি করানো হয়,,

দাদুরা ছিলেন দুই ভাইবোন,

দাদুর বড় বোন আর দাদু।

দাদুর বোনের নাম ছিল কুহু।

কুহু ছিল দাদুর ৬ বছরের বড়।



কুহু ছিল একটি চঞ্চল স্বভাবের,

দার্জিলিং তখন অনেক উপজাতির বাস ছিল তারা অনেক দেব দেবীর পূজা করত,

একদিন রাতে কুহু জানালা দিয়ে দেখতে পেল,,

দূরের পাহাড়ে আগুন জ্বলছে সে তা দেখে সম্মোহিত হয়ে পড়লো সে আগুনের দিকে অগ্রসর হতে লাগলো দাদু তার দিদির পিছু চলতে লাগলো দিদিকে জিঙ্গেস করল কয় যাচ্ছিস??? কিন্তু কুহু কোন উত্তর না দিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছিল,,

.

দাদু অন্ধকারে একটি গাছের সাথে ধাক্কা

খেয়ে জ্ঞান হারালো সকালে যখন তার জ্ঞান ফিরলো তখন দাদু নিজেকে তার বাড়ির বিছানায় আবিষ্কার করল!

.

তিনি কুহুকে দেখতে পেলেন তিনি বললেন দিদি গত রাতে তুই কোথায় গিয়েছিলি??

সে বলল কোথাও যায় নি,,

দাদু তখন ছোট ছিল তিনি ভাবলো হয়তো স্বপ্নে দেখেছিলেন এসব,,



কিন্তু গত কাল সে গাছের সাথে ধাক্কার পর যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছিল তিনি তা লক্ষ করলেন!

পরদিন রাতে কুহু যেন কোথায় চলে যায়।

তাকে খোজে পাওয়া যাচ্ছিল না দাদুর বাবা যেহেতু সরকারি অফিসার ছিলেন তাই ব্রিটিশ পুলিশ দিনরাত তাকে খোজে যাচ্ছিল কিন্তু তার কোন হদিস পাচ্ছিল না,,

.

এরপর দিন ছিল অমাবস্যার ঘোর অন্ধকার দাদু দেখতে পেল সে দূরের পাহাড়ে আজও আগুন জ্বলছে,

দাদু সে আগুনের দিকে সম্মোহিত হয়ে পড়লো আগুন তাকে কাছে ডাকছে!

সে আগুনের দিকে অগ্রসর হতে লাগলো।

কিছুদূর যাওয়ার পর হঠাৎ রাতের আকাশে বিদুৎের জলকানিতে দাদুর ঘোর ভাঙলো।



তিনি সামনে দেখতে পেলেন কিছু লোক যারা খুব অদ্ভুত দেখতে অনেক লম্বা দাড়ি চুল, হাতের নখ তারা সবাই কুহুকে প্রতিমা রূপে বসিয়ে পূজা করছিল।

একটি সাপকে বলি দিয়ে তা কুহুে দিল তা সে খেতে শুরু করল,,



বড় একটি পাথরের ছুরি নিয়ে কুহুকে বলি দেওয়ার একজন উদ্ধত হল ঠিক তখনি একটি বিকট আওয়াজ হল সে লোকটা মাটিতে লুটিয়ে পড়লো,,

পিছন থেকে দেখি কিছু লোক আলো নিয়ে এদিকে আসছে কাছে আসার পর দেখি বাবা আর পুলিশ আর যে আওয়াজটি ছিল সেটা ছিল গুলির আওয়াজ।

সে লোকগুলো দ্রুত জঙ্গলেরর ভিতর লুকিয়ে পড়লো অনেক খোজার পর ও তাদের খোজে পাওয়া গেল না।



জ্ঞানহারা কুহুকে নিয়ে দাদুরা বাংলোতে ফিরলাে,,

কিন্তু তারপর থেকে কুহুর পাগলামি শুরু হয়,

তাকে একটি রুমের ভিতর আটকিয়ে রাখা হয়

,

ডাক্তার বলল ভারত বর্ষে কুহুর treatment করা সম্ভব নয়,

তাকে treatment এর জন্য বিলেতে (বর্তমানUK) পাঠাতে হবে।



দাদার আব্বু যেহেতু সরকারি বড় অফিসার ছিলেন তাই বিলেত পাঠাতে তেমন কষ্ট করতে হল না,,

দাদার আব্বু চাকরির কারণে যেতে পারলেন না।

দাদা আর দাদার মা সাথে কুহুকে নিয়ে তারা বিলেতে যাওয়ার জন্য জাহাজে ওঠলো।

জাহাজের একটি কেবিনে দাদু এবং দাদুর মা,

special কেবিনে রাখা হলো কুহুকে জাহাজ দুইদিন ধরে চলছে,,



জাহাজ সিঙ্গাপুর বন্দরে পৌছে যাত্রা বিরতি করল।

ঈতি মধ্য কুহুর পাগলামি চরম পর্যায়ে পৌছালো,,

দাদুদের সাথে ছিল ডাক্তার সজীব বড়ুয়া

তিনি দাদুদের সাথে কুহুকে নিয়ে বিলেত যাচ্ছেন।

জাহাজ সিঙ্গাপুর বন্দর ত্যাগ করেছে একদিন হল।

ঝড় ওঠলো সমুদ্রে,,

জাহাজ গিয়ে আটকা পড়ল একটি জনমানব শূন্য দ্বীপের চরে।

সবার কপালে হাত এবার কী হবে!

ঈতি মধ্য আরেকটি খারাপ ব্যাপার ঘটে গেল

কুহু জাহাজের ভেতর থেকে পালিয়ে ঐ জনশূন্য দ্বীপের ভিতর চলে গিয়েছে।



থাকে খোজার জন্য জাহাজের নিরাপত্তা কর্মী ও আমি এবং ডাক্তার সজীব রাইফেল নিয়ে দ্রুত অজানা দ্বীপের ভিতরে প্রবেশ করা শুরু করলাম।

বালির ওপর পায়ের চাপ অনুসরণ করে কুহুকে খোজে পেতে কষ্ট হল না।

কিন্তু সেখানে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল সে লোকগুলো যারা আগে কুহুকে বলি দিতে চেয়েছিল।

পুনারায় তারা কুহুকে বলি দেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল।

রক্ষীরা দ্রুত রাইফেল চালালেন গুলির শব্দে সে দ্বীপের নীরবতা ভেঙ্গে গেল।

আগের বারের মত সে লোকগুলো জঙ্গলের ভিতর ভেনিস হয়ে গেল।

আমরা দ্রুত জাহাজে ফিরে এলাম।

জোয়ার আসার কারণে জাহাজ আবার চলতে শুরু করল।



অবশেষে অনেক বিপদ সঙ্কটের পর জাহাজ London গিয়ে পৌছালো, এবং কুহুকে একটি mental hospital এ admit করা হল।



কিন্তু admit হওয়ার পরদিন hospital এর

রুমের ভিতর তার' গলাকাটা আধ খাওয়া লাশ পাওয়া যায় এবং hospital এর জানালা ভাঙ্গা অবস্থায় পাওয়া যায়।



কে মারল বা কিভাবে মারা গেল সেই রহস্য পরে কেউ কোনদিন ভেদ করতে পারেনি,

দাদু আজ অর্ধ শতাব্দী পর কুহুরর নাম শুনে কান্নাকাটি করলেন....