02-22-2017, 11:09 AM
জেসমিনের সাথে আমার প্রথম দেখা হয় ওদের
বাড়িতে,তখন আমার বয়স ছিলো আট বছর আর ওর ছয়।
ওরা আমাদের পাশের ফ্লাটেই ছিলো।আমার মা আর ওর
মায়ের ভীষন মিল ছিলো।আমি বড়া বড়ই ভীষন লাজুক
প্রকৃতির ছিলাম,জেসমিনকে আগে কোনদিন
দেখিনী,একদিন আমার মা ওদের বাসায় আমাকে নিয়ে
গিয়ে গল্প জুরে দেয়,একসময় বলে,
---তাহলে ওই কথাই রইলো ভাবি,আজ থেকে আমরা দুজন
বিয়ান,আমার ছেলের সাথে আপনার জেসমিনের বিয়ে
দিবো।
জেসমিনের মা ও বলেছিলো-
"হ্যা ভাবি।
সে সময় ওর মায়ের পিছন থেকে জেসমিন আমার দিকে
তাকিয়ে ছিলো,আমি ওর দিকে লাজুক চোখো তাকিয়ে
ছিলাম।
.
সেদিন জেসমিন আমাকে বলেছিলো,
"তুমি আমার বর হবে?"
আমি বলেছিলাম,
"হ্যাঁ"
এরপর আমার মায়ের দেয়া গলার চেইনটা লকেট সহ ওকে
খুলে দেই।
[এরকিছুদিন পর জেসমিনের বাবার ট্রান্সফার হওয়ায়
ওরা সেখান থেকে চলে যায়।
এরপর কেটে যায় বারো বছর]
.
.
.বারো বছর পর
.
.
প্রথম প্রথম জেসমিনের কথা অনেক মনে
পড়েছিলো,তারপর এই ব্যাস্ত পৃথিবীতে জেসমিন কে
ভুলেই গিয়েছিলাম।
একদিন ভার্সিটির সামনে বন্ধুদের সাথে আড্ডা
দিচ্ছিলাম,এমন সময় সামনে চেচামেচির আওয়াজ শুনে
বন্ধুরা মিলে এগিয়ে গেলাম।গিয়ে দেখলাম,
একটি মেয়ে একটি ছেলেকে থাপ্পর মারছে।
ঘটনাটা হলো এই যে,
"একটি ছোট ছেলে ফুল বিক্রি করার জন্য একটি ছেলের
পান্জাবি ধরে টান দিয়ে বলেছে,
স্যার ফুল নিবেন??
তাই ছেলেটি ফুল বিক্রেতা ছেলেটিকে থাপ্পর দেয়।
সেই কারনে মেয়েটিও ঐ ছেলেটিকে থাপ্পর দেয়"
এসময় অনেক লোক ই ভির করে।
আমি মেয়েটির চোখের দিকে তাকালাম,দেখলাম দূর্গা
দেবীর মতো অগ্নিশর্মা তার চোখ।আমি এগিয়ে গিয়ে
বলতে ধরলাম,
আসলে.........
মেয়েটি রাগী চোখে আমার দিকে তাকালো আর
চেচিয়ে বললো,
আসলে কি হ্যাঁ,আপনাকেও দিবো নাকী?
,
আমি অনেকটা ভিত হয়ে বললাম,
"না মানে,আসলে ঠিকই করেছেন,আরো কয়েকটা মারুন"
বলে সেখান থেকে বন্ধুদের সাথে অনেকটা দৌরে চলে
আসলাম।
কিছুদুর এসে পিছনে তাকিয়ে দেখি,মেয়েটি মুচকি
হাসছে।
সেদিন মেয়েটিকে দেখার পর,রাতে অনেকবার তাকে
নিয়ে ভেবেছিলাম।চোখে ভেসে আসছিলো তার সেই
চাহনী।
.
কয়েকদিন পর
.
বন্ধুর সাথে একটা মার্কেটে গিয়েছি,গিফ্ট কেনার
জন্য,গিফ্ট দেখতে দেখতে পাশে তাকাতেই দেখতে
পেলাম সেদিনের সেই মেয়েটি।আমি অনেকটা খুশি
হলাম,লাজুক স্বভাবের জন্য তাকে কিছু বলতেও পারলাম
না।একসময় তাকে হায় বলতে যাবো,এমন সময় ওর একটা
বান্ধবী এসে ওকে নিয়ে যায়।
এরপর ওকে ফলো করতে থাকি।ফলো করতে করতে ওর
বাসার সামনে যাই।
.
এরপর থেকে প্রাই ওকে ফলো করতাম,কলেজ,কফিশ
প,লাইব্রেরী সে যখনী আমার দিকে তাকাতো,আমি
অন্যদিকে তাকাতাম,কিংবা বই দিয়ে মুখ ঢাকতাম।ধিরে
ধিরে জানতে পারলাম ওর নাম জেসমিন।
.
সেদিন নিউমার্কেট থেকে জেসমিনকে ফলো করে
যাওয়ার সময়,ও পিছনে তাকাতেই আমি থেমে
যাই,তারপর আবার চলতে শুরু করি।একসময় জেসমিন আমার
কাছে আসে,এবং বলে,
--ব্যাপার কি হ্যাঁ?অনেকদিন থেকেই দেখছি আমার
পিছনে ঘুরঘুর করছো।কাহিনী,কি?"(জেসমিন)
--কই না তো(আমি)
--একটা থাপ্পর মারবো,কি চাই?
--না মানে,বন্ধুত্ব
--সত্যি তো,সুধু বন্ধুত্ব?
--হুম
--ওকে,বন্ধুত্ব ছাড়া যদি অন্য কিছু হয়েছে তো খবর
খারাপ আছে।
০১৭৬*******
এটা আমার নম্বর রাতে ফোন দিও।
.
এরপর থেকে জেসমিনের সাথে সবসময় ঘুরতাম।জেসমিন
কে দুর থেকে যতোটা রাগী মনে হয়,কাছ থেকে তেমন
নয়,অনেক ভালো একটা মেয়ে,সবসময় সবাইকে দান খয়রাত
করে,অসহায় পথশিশু দের আদর করে আইসক্রিম কিনে
দেয়।মুলত জেসমিনের এই কাজ গুলোর প্রতি আমি আরো
মুগ্ধ হয়।
.
একদিন পার্কে ও আর আমি বসে আছি,আমি ওকে বললাম,
--একটা কথা বলবো?(আমি)
--বলো(জেসমিন)
--রাগ করবে না তো?
--রাগ করার মতো কথা হলে তো রাগ করবোই
--তাহলে বলবোনা
--আচ্ছা বাবা ঠিক আছে বলো
--না মানে,আমি তোমাকে ভালোবাসি
[জেসমিন কিছু বললো না,ফান ভেবে হাসতে শুরু করলো]
--আমি সত্যি বলছি জেসমিন(আমি)
[এবার সে হাসি থামালো,তার চেহারার কিছু পরিবর্তন
ঘটলো]
সে বললো,
--একটা থাপ্পর লাগাবো,বলেছিলাম না,যাষ্ট বন্ধুত্ব?
আমি একজনকে অনেক ভালোবাসি জিসান,আর কখনো
আমার সাথে যোগাযোগ করবেনা।আমার মাথা ব্যাথা
করছে,আমি গেলাম।
[বলে সে উঠে চলে যেতে লাগলো।আমি তাকে
আটকানোর জন্য ওর হাত টেনে ধরলাম,ও রেগে আমাকে
একটি থাপ্পর দিয়ে চলে গেলো।
বাসায় গিয়ে,অনেক মন খারাপ হয়েছিলো।নিজের
ভাগ্যের প্রতি অনেক দোষ দিতে লাগলাম।আর বার বার
মনে হতে লাগলো,জেসমিনের সেই কথা,
"আমি একজন কে অনেক ভালোবাসি"]
.
.
কয়েকদিন পর
.
.
জেসমিন আমাকে পার্কে ডেকে পাঠায়।আমি সেখানে
যাই।
অতঃপর জেসমিন বলতে শুরু করে,
---"সেদিনের জন্য আমাকে ক্ষমা করো জিসান।
ছোটবেলায় আমাদের পাশের ফ্লাটের এক আন্টির
ছেলের সাথে আম্মু আমার বিয়ে ঠিক করে রেখেছিল।
এরপর আমরা ওখান থেক চলে আসি।
চার বছর আগে আমার আম্মু মারা যায়।ছোটবেলা থেকেই
ঐ ছেলেটিকে আমি মনে রেখেছি,ও আমাকে
একটা,চেইন সহ লকেট দিয়েছিলো,এই দেখো [গলা থেকে
বের করে]
আমি আজো বিশ্বাস করি তাকে খুজে পাব"(জেসমিন)
,
এরপর আমি ওকে কিছু না বলে বাসায় চলে যাই,
বাসায় গিয়ে পাগলের মতো আমার আলমারি হাতাতে
থাকি।
একসময়,জেসমিনের নুপুরটা খুজে পাই।এরপর আমার মনে
পড়ে,
"জেসমিন ছোটবেলায় ওখান থেকে চলে আসার সময়
আমাকে ওর একটা নুপুর দিয়েছিলো,তখন কিছু বুজিনী
ভেবেছিলাম নুপুর টাতো ওর পায়ে বড় হয় তাই হয়ত
আমাকে দিয়েছে,এরপর আমার আলমারিতে ফেলে রেখে
ছিলাম"
.
সেদিন রাতে জেসমিনকে,ফোন দিয়ে পরেরদিন আসতে
বলি।সারারাত অনেক অস্থিরতায় কাটাই প্রহর গুনতে
থাকি কখন সকাল হবে।
পরেরদিন ছিলো "ভ্যালেন্টাইন্স ডে"
জেসমিন একটি লাল শাড়ি পরে এসেছে।
সে বললো,
"বলো কেন ডেকেছো?"
,
আমি বললাম,
"হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন্স ডে জেসমিন"
বলে ওর নুপুরটা ওর দিকে বাড়িয়ে দিলাম।
,
ও অবাক হয়ে গেল,বলতে লাগলো,
জিসান তু....
,
হ্যা জেসমিন আমি ই সেই জিসান(আমি)
,
জেসমিন বললো,
"এতো কাছে থেকেও আমি তোমাকে চিনতে
পারিনী,আমি জানতাম তোমাকে খুজে পাবো"
বলে আমাকে জরিয়ে ধরলো,আমিও ওকে জরিয়ে ধরলাম।
.
.
পাঠক নিশ্চই ভাবছে গল্পের শেষ এখানেই তাইনা?
আমিও অনেক হ্যাপি হতাম যদি আমার গল্পটা এখানেই
শেষ হতো,কিন্তু হয়নী,ভাগ্য যেন আমাকে নিয়ে খেলতে
চেয়েছিলো।
.
সেদিন জেসমিন আমাকে জরিয়ে ধরার পর,আমিও তাকে
জরিয়ে ধরি।এরপর সেই নুপুরটা ওর পায়ে পরিয়ে দিতে
যাই ঠিক সেই সময় ও মাটিতে পড়ে যায়।আমি পাগলের
মতো ওকে নিয়ে হসপিটালে ছুটতে শুরু করি,হসপিটালে
গিয়ে ওকে আই.সি.ইউ তে ভর্তি করানো হয়।আমি ওর
ফোন থেকে ওর বাবা কে ফোন করি,ওর বাবা হসপিটালে
আসে।
অতঃপর ডক্টর কিছু টেষ্ট করার পর রিপোর্ট দেয়।
রিপোর্ট টা শুনে আমার মাথায় যেন বাজ ভেঙ্গে
পরে,জেসমিনের "ব্রেইন্ড টিউমার"
যত তারাতারি সম্ভব অপারেশন করতে হবে।
একথা শুনে ভাগ্যের উপর দোষ দিতে লাগলাম।
জেসমিনের বাবাও অনেকটা ভেঙ্গে পড়লেন।পড়ে ডক্টর
কে অপারেশন করার অনুমতি দিলেন।পরদিন সকাল ১০টায়
অপারেশন শুরু হলো।
.
.
তিন মাস পর
.
.
সেদিন অপারেশন করানোর পর,ভাগ্য আমাদের সহায়
হয়েছিলো,তাই জেসমিনের অপারেশন সাকসেস্
হয়েছিলো,আজ জেসমিন পুরোপুরি সুস্থ।ওকে আজ বাড়ি
নিয়ে যাওয়া হবে।
কেবিনে ও বিছানার উপর বসে আছে।আমি ওর কাছে
গেলাম ওর পায়ে নুপুরটা পরিয়ে দিলাম,আর বললাম
বালোবাসি ভালোবাসবো সারাজীবন
জেসমিন ভালবেসে ওর হাতটা আমার হাতের উপর
রাখলো।
এবার আর কোন কিছুতেই ওকে হারাতে দিবো না।
-----Golpo Bolte Asesi
বাড়িতে,তখন আমার বয়স ছিলো আট বছর আর ওর ছয়।
ওরা আমাদের পাশের ফ্লাটেই ছিলো।আমার মা আর ওর
মায়ের ভীষন মিল ছিলো।আমি বড়া বড়ই ভীষন লাজুক
প্রকৃতির ছিলাম,জেসমিনকে আগে কোনদিন
দেখিনী,একদিন আমার মা ওদের বাসায় আমাকে নিয়ে
গিয়ে গল্প জুরে দেয়,একসময় বলে,
---তাহলে ওই কথাই রইলো ভাবি,আজ থেকে আমরা দুজন
বিয়ান,আমার ছেলের সাথে আপনার জেসমিনের বিয়ে
দিবো।
জেসমিনের মা ও বলেছিলো-
"হ্যা ভাবি।
সে সময় ওর মায়ের পিছন থেকে জেসমিন আমার দিকে
তাকিয়ে ছিলো,আমি ওর দিকে লাজুক চোখো তাকিয়ে
ছিলাম।
.
সেদিন জেসমিন আমাকে বলেছিলো,
"তুমি আমার বর হবে?"
আমি বলেছিলাম,
"হ্যাঁ"
এরপর আমার মায়ের দেয়া গলার চেইনটা লকেট সহ ওকে
খুলে দেই।
[এরকিছুদিন পর জেসমিনের বাবার ট্রান্সফার হওয়ায়
ওরা সেখান থেকে চলে যায়।
এরপর কেটে যায় বারো বছর]
.
.
.বারো বছর পর
.
.
প্রথম প্রথম জেসমিনের কথা অনেক মনে
পড়েছিলো,তারপর এই ব্যাস্ত পৃথিবীতে জেসমিন কে
ভুলেই গিয়েছিলাম।
একদিন ভার্সিটির সামনে বন্ধুদের সাথে আড্ডা
দিচ্ছিলাম,এমন সময় সামনে চেচামেচির আওয়াজ শুনে
বন্ধুরা মিলে এগিয়ে গেলাম।গিয়ে দেখলাম,
একটি মেয়ে একটি ছেলেকে থাপ্পর মারছে।
ঘটনাটা হলো এই যে,
"একটি ছোট ছেলে ফুল বিক্রি করার জন্য একটি ছেলের
পান্জাবি ধরে টান দিয়ে বলেছে,
স্যার ফুল নিবেন??
তাই ছেলেটি ফুল বিক্রেতা ছেলেটিকে থাপ্পর দেয়।
সেই কারনে মেয়েটিও ঐ ছেলেটিকে থাপ্পর দেয়"
এসময় অনেক লোক ই ভির করে।
আমি মেয়েটির চোখের দিকে তাকালাম,দেখলাম দূর্গা
দেবীর মতো অগ্নিশর্মা তার চোখ।আমি এগিয়ে গিয়ে
বলতে ধরলাম,
আসলে.........
মেয়েটি রাগী চোখে আমার দিকে তাকালো আর
চেচিয়ে বললো,
আসলে কি হ্যাঁ,আপনাকেও দিবো নাকী?
,
আমি অনেকটা ভিত হয়ে বললাম,
"না মানে,আসলে ঠিকই করেছেন,আরো কয়েকটা মারুন"
বলে সেখান থেকে বন্ধুদের সাথে অনেকটা দৌরে চলে
আসলাম।
কিছুদুর এসে পিছনে তাকিয়ে দেখি,মেয়েটি মুচকি
হাসছে।
সেদিন মেয়েটিকে দেখার পর,রাতে অনেকবার তাকে
নিয়ে ভেবেছিলাম।চোখে ভেসে আসছিলো তার সেই
চাহনী।
.
কয়েকদিন পর
.
বন্ধুর সাথে একটা মার্কেটে গিয়েছি,গিফ্ট কেনার
জন্য,গিফ্ট দেখতে দেখতে পাশে তাকাতেই দেখতে
পেলাম সেদিনের সেই মেয়েটি।আমি অনেকটা খুশি
হলাম,লাজুক স্বভাবের জন্য তাকে কিছু বলতেও পারলাম
না।একসময় তাকে হায় বলতে যাবো,এমন সময় ওর একটা
বান্ধবী এসে ওকে নিয়ে যায়।
এরপর ওকে ফলো করতে থাকি।ফলো করতে করতে ওর
বাসার সামনে যাই।
.
এরপর থেকে প্রাই ওকে ফলো করতাম,কলেজ,কফিশ
প,লাইব্রেরী সে যখনী আমার দিকে তাকাতো,আমি
অন্যদিকে তাকাতাম,কিংবা বই দিয়ে মুখ ঢাকতাম।ধিরে
ধিরে জানতে পারলাম ওর নাম জেসমিন।
.
সেদিন নিউমার্কেট থেকে জেসমিনকে ফলো করে
যাওয়ার সময়,ও পিছনে তাকাতেই আমি থেমে
যাই,তারপর আবার চলতে শুরু করি।একসময় জেসমিন আমার
কাছে আসে,এবং বলে,
--ব্যাপার কি হ্যাঁ?অনেকদিন থেকেই দেখছি আমার
পিছনে ঘুরঘুর করছো।কাহিনী,কি?"(জেসমিন)
--কই না তো(আমি)
--একটা থাপ্পর মারবো,কি চাই?
--না মানে,বন্ধুত্ব
--সত্যি তো,সুধু বন্ধুত্ব?
--হুম
--ওকে,বন্ধুত্ব ছাড়া যদি অন্য কিছু হয়েছে তো খবর
খারাপ আছে।
০১৭৬*******
এটা আমার নম্বর রাতে ফোন দিও।
.
এরপর থেকে জেসমিনের সাথে সবসময় ঘুরতাম।জেসমিন
কে দুর থেকে যতোটা রাগী মনে হয়,কাছ থেকে তেমন
নয়,অনেক ভালো একটা মেয়ে,সবসময় সবাইকে দান খয়রাত
করে,অসহায় পথশিশু দের আদর করে আইসক্রিম কিনে
দেয়।মুলত জেসমিনের এই কাজ গুলোর প্রতি আমি আরো
মুগ্ধ হয়।
.
একদিন পার্কে ও আর আমি বসে আছি,আমি ওকে বললাম,
--একটা কথা বলবো?(আমি)
--বলো(জেসমিন)
--রাগ করবে না তো?
--রাগ করার মতো কথা হলে তো রাগ করবোই
--তাহলে বলবোনা
--আচ্ছা বাবা ঠিক আছে বলো
--না মানে,আমি তোমাকে ভালোবাসি
[জেসমিন কিছু বললো না,ফান ভেবে হাসতে শুরু করলো]
--আমি সত্যি বলছি জেসমিন(আমি)
[এবার সে হাসি থামালো,তার চেহারার কিছু পরিবর্তন
ঘটলো]
সে বললো,
--একটা থাপ্পর লাগাবো,বলেছিলাম না,যাষ্ট বন্ধুত্ব?
আমি একজনকে অনেক ভালোবাসি জিসান,আর কখনো
আমার সাথে যোগাযোগ করবেনা।আমার মাথা ব্যাথা
করছে,আমি গেলাম।
[বলে সে উঠে চলে যেতে লাগলো।আমি তাকে
আটকানোর জন্য ওর হাত টেনে ধরলাম,ও রেগে আমাকে
একটি থাপ্পর দিয়ে চলে গেলো।
বাসায় গিয়ে,অনেক মন খারাপ হয়েছিলো।নিজের
ভাগ্যের প্রতি অনেক দোষ দিতে লাগলাম।আর বার বার
মনে হতে লাগলো,জেসমিনের সেই কথা,
"আমি একজন কে অনেক ভালোবাসি"]
.
.
কয়েকদিন পর
.
.
জেসমিন আমাকে পার্কে ডেকে পাঠায়।আমি সেখানে
যাই।
অতঃপর জেসমিন বলতে শুরু করে,
---"সেদিনের জন্য আমাকে ক্ষমা করো জিসান।
ছোটবেলায় আমাদের পাশের ফ্লাটের এক আন্টির
ছেলের সাথে আম্মু আমার বিয়ে ঠিক করে রেখেছিল।
এরপর আমরা ওখান থেক চলে আসি।
চার বছর আগে আমার আম্মু মারা যায়।ছোটবেলা থেকেই
ঐ ছেলেটিকে আমি মনে রেখেছি,ও আমাকে
একটা,চেইন সহ লকেট দিয়েছিলো,এই দেখো [গলা থেকে
বের করে]
আমি আজো বিশ্বাস করি তাকে খুজে পাব"(জেসমিন)
,
এরপর আমি ওকে কিছু না বলে বাসায় চলে যাই,
বাসায় গিয়ে পাগলের মতো আমার আলমারি হাতাতে
থাকি।
একসময়,জেসমিনের নুপুরটা খুজে পাই।এরপর আমার মনে
পড়ে,
"জেসমিন ছোটবেলায় ওখান থেকে চলে আসার সময়
আমাকে ওর একটা নুপুর দিয়েছিলো,তখন কিছু বুজিনী
ভেবেছিলাম নুপুর টাতো ওর পায়ে বড় হয় তাই হয়ত
আমাকে দিয়েছে,এরপর আমার আলমারিতে ফেলে রেখে
ছিলাম"
.
সেদিন রাতে জেসমিনকে,ফোন দিয়ে পরেরদিন আসতে
বলি।সারারাত অনেক অস্থিরতায় কাটাই প্রহর গুনতে
থাকি কখন সকাল হবে।
পরেরদিন ছিলো "ভ্যালেন্টাইন্স ডে"
জেসমিন একটি লাল শাড়ি পরে এসেছে।
সে বললো,
"বলো কেন ডেকেছো?"
,
আমি বললাম,
"হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন্স ডে জেসমিন"
বলে ওর নুপুরটা ওর দিকে বাড়িয়ে দিলাম।
,
ও অবাক হয়ে গেল,বলতে লাগলো,
জিসান তু....
,
হ্যা জেসমিন আমি ই সেই জিসান(আমি)
,
জেসমিন বললো,
"এতো কাছে থেকেও আমি তোমাকে চিনতে
পারিনী,আমি জানতাম তোমাকে খুজে পাবো"
বলে আমাকে জরিয়ে ধরলো,আমিও ওকে জরিয়ে ধরলাম।
.
.
পাঠক নিশ্চই ভাবছে গল্পের শেষ এখানেই তাইনা?
আমিও অনেক হ্যাপি হতাম যদি আমার গল্পটা এখানেই
শেষ হতো,কিন্তু হয়নী,ভাগ্য যেন আমাকে নিয়ে খেলতে
চেয়েছিলো।
.
সেদিন জেসমিন আমাকে জরিয়ে ধরার পর,আমিও তাকে
জরিয়ে ধরি।এরপর সেই নুপুরটা ওর পায়ে পরিয়ে দিতে
যাই ঠিক সেই সময় ও মাটিতে পড়ে যায়।আমি পাগলের
মতো ওকে নিয়ে হসপিটালে ছুটতে শুরু করি,হসপিটালে
গিয়ে ওকে আই.সি.ইউ তে ভর্তি করানো হয়।আমি ওর
ফোন থেকে ওর বাবা কে ফোন করি,ওর বাবা হসপিটালে
আসে।
অতঃপর ডক্টর কিছু টেষ্ট করার পর রিপোর্ট দেয়।
রিপোর্ট টা শুনে আমার মাথায় যেন বাজ ভেঙ্গে
পরে,জেসমিনের "ব্রেইন্ড টিউমার"
যত তারাতারি সম্ভব অপারেশন করতে হবে।
একথা শুনে ভাগ্যের উপর দোষ দিতে লাগলাম।
জেসমিনের বাবাও অনেকটা ভেঙ্গে পড়লেন।পড়ে ডক্টর
কে অপারেশন করার অনুমতি দিলেন।পরদিন সকাল ১০টায়
অপারেশন শুরু হলো।
.
.
তিন মাস পর
.
.
সেদিন অপারেশন করানোর পর,ভাগ্য আমাদের সহায়
হয়েছিলো,তাই জেসমিনের অপারেশন সাকসেস্
হয়েছিলো,আজ জেসমিন পুরোপুরি সুস্থ।ওকে আজ বাড়ি
নিয়ে যাওয়া হবে।
কেবিনে ও বিছানার উপর বসে আছে।আমি ওর কাছে
গেলাম ওর পায়ে নুপুরটা পরিয়ে দিলাম,আর বললাম
বালোবাসি ভালোবাসবো সারাজীবন
জেসমিন ভালবেসে ওর হাতটা আমার হাতের উপর
রাখলো।
এবার আর কোন কিছুতেই ওকে হারাতে দিবো না।
-----Golpo Bolte Asesi