02-24-2017, 10:10 AM
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আমাদের জন্য জান্নাত সম্পর্কে ভবিষ্যত বাণী করে গিয়েছেন। আসুন জেনে নেই জান্নাত সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বাণীগুলিঃ
১) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর
উম্মতের মধ্য মধ্য থেকে ৭০ হাজার ব্যক্তি বিনা
হিসেবে জান্নাতে যাবে।- [আহমদ, তিরমিজী,
ইবনে মাজাহ- আবু ওমামা (রা.)]
২) যারা রাতে আরামের বিছানা থেকে নিজেদের
পার্শ্বদেশকে দূরে রেখেছিল, এমন অল্প
সংখ্যক লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ
করবে। অবশিষ্ট সকল মানুষ হতে হিসেব নেয়ার
নির্দেশ করা হবে। [বায়হাকি- আসমা (রা.)]
৩) জান্নাতে জান্নাতবাসীরা প্রতি জুমাবারে
বাজারে মিলিত হবে এবং জান্নাতে
জান্নাতবাসীদের রূপ-সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।
[মুসলিম- আনাস রা.)]
৪) জান্নাতের স্তর হবে ১০০টি এবং জান্নাতের
সর্বোচ্চ স্তর জান্নাতুল ফেরদাউস। যখন
তোমরা আল্লাহর কাছে জান্নাত চাইবে তখন
জান্নাতুল ফেরদাউস চাইবে। [তিরমিজী ওবাই
ইবনে সামেত (রা.)]
৫) জান্নাত সমস্ত পৃথিবী থেকে উত্তম।
(মুয়াত্তা- আবু হুরাইরা (রা.)
৬) জান্নাতবাসীনী কোন নারী (হুর) যদি
পৃথিবীর দিকে উঁকি দেয়, তবে গোটা জগত
আলোকিত হয়ে যাবে এবং আসমান জমীনের
মধ্যবর্তী স্থান সুগন্ধিতে মোহিত হয়ে যাবে।
তাদের মাথার উরনাও গোটা দুনিয়া ও তার সম্পদরাশি
থেকে উত্তম। [বুখারী- আনাস (রা.)]
৭) জান্নাতে একটি চাবুক রাখার পরিমাণ জায়গা গোটা
দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তা থেকে
উত্তম। [মুয়াত্তা- আবু হুরাইরা (রা.)]
৮) জান্নাতের একটি গাছের নিচের ছায়ায় কোন
সাওয়ারী যদি ১০০ বছরও সাওয়ার করে তবুও তার
শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না।
[বুখারী, মুসলিম আবু হুরায়রা (রা.)]
৯) জান্নাতে মুক্তা দিয়ে তৈরী ৬০ মাইল লম্বা
একটি তাঁবু থাকবে। জান্নাতের পাত্র ও সামগ্রী
হবে সোনা ও রুপার। [বুখারী, মুসলিম আবু মুসা
(রা.)]
১০) পূর্ণিমা চাঁদের মতো রূপ ধারণ করে তারা
জান্নাতে প্রবেশ করবে। (ক) তাদের অন্তরে
কোন্দল ও হিংসা বিদ্বেষ থাকবে না। (খ) তারা
কখনো রোগাক্রান্ত হবে না। (গ) তাদের
পেশাব পায়খানা হবে না। (ঘ) তারা থুথু ফেলবে না।
(ঙ) তাদের নাক দিয়ে ময়লা ঝরবে না। (চ)
তাদের চিরুনী হবে সোনার চিরুনী। (ছ)
তাদের ধুনীর জ্বালানী হবে আগরের। (জ)
তাদের গায়ের গন্ধ হবে কস্তুরির মতো সুগন্ধি।
(ঝ) তাদের স্বভাব হবে এক ব্যক্তির ন্যায়। (ঞ)
তাদের শাররীক গঠন হবে (আদী পিতা) আদম
(আ এর ন্যয়। [বুখারী, মুসলিম আবু হুরায়রা (রা.)]
১১) জান্নাতীদের খাবারগুলো ঢেকুর এবং
মিশকঘ্রাণযুক্ত ঘর্ম দ্বারা নি:শেষ হয়ে যাবে।
[বুখারী, মুসলিমযাবির (রা.)]
১২) জান্নাতীরা সুখে শান্তিতে স্বাচ্ছন্দ্যে
ডুবে থাকবে। হতাসা দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা থাকবে না।
পোশাক পরিচ্ছেদ ময়লা হবে না, পুরাতন হবে না।
তাদের যৌবনও নিঃশেষ হবে না। [মুসলিম আবু হুরায়রা
(রা.)]
১৩) জান্নাতবাসীরা সব সময় জীবিত থাকবে।
কখনো মৃত্যুবরণ করবে না। সব সময় যুবক
থাকবে বৃদ্ধ হবে না। [মুসলিম আবু সাঈদ (রা.)]
১৪) জান্নাতে (এমন) এক দল প্রবেশ করবে,
যাদের অন্তর হবে পাখিদের অন্তরের মতো।
[মুসলিম আবু হুরায়রা (রা.)]
১৫) জান্নাতবাসীদের প্রতি আল্লাহ বলবেন,
আমি তোমাদের উপর সন্তুষ্টি দান করেছি,
তোমাদের উপর আর কখনো অসন্তুষ্ট হবো
না। [বুখারী, মুসলিমআবু সাঈদ (রা.)]
১৬) জান্নাতের নহরে পরিণত হবে- সায়হান,
জায়হান, ফোরাত ও নীল নদী। [মুসলিম – আবু
হুরায়রা (রা.)]
১৭) জান্নাতে বান্দার আশা আকাঙ্খার দ্বিগুণ দেয়া
হবে। [মুসলিম – আবু হুরায়রা (রা.)]
১৮) জান্নাতের দরওয়াজা ৪০ বছরের দুরত্বে
সমান, এমন এক দিন আসবে যে তাও ভরপুর হয়ে
যাবে। [মুসলিম-উতবা ইবনে খাজওয়ান (রা.)]
১৯) জান্নাতের ইট স্বর্ণ ও রোপ্য দ্বারা তৈরী।
কঙ্কর হলো মনি মুক্তা, আর মসল্লা হলো
সুগন্ধীময় কস্তুরী। [তিরমিজী – আবু হুরায়রা
(রা.)]
২০) জান্নাতের সকল গাছের কা- হবে সোনার।
[তিরমিজী – আবু হুরায়রা (রা.)]
২১) জান্নাতের ১০০ টি স্তর আছে, দু’স্তরের
মধ্যে ব্যবধান শত বছরের। [(তিরমিজী – আবু
হুরায়রা (রা.)]
২২) জান্নাতের ১০০ স্তরের যে কোন এক
স্তরে সারা বিশ্বের সকল লোক একত্রিত
হলেও তা যথেষ্ট হবে। [তিরমিজী আবু সাঈদ
(রা.)]
২৩) জান্নাতের উচ্চ বিছানা (সুরুরুম মারফুআ) আসমান
জমীনর মধ্যবর্তী ব্যবধানের পরিমাণ- ৫০০ শত
বছরের পথ। [তিরমিজী আবু সাঈদ (রা.)]
২৪) জান্নাত প্রত্যেক ব্যক্তিকে ১০০ পুরুষের
শক্তি দান করা হবে। [(তিরমিজ – আবু হুরায়রা (রা.)]
২৫) জান্নাতবাসীগণ কেশবিহীন দাড়িবিহীন
হবে। তাদের চোক সুরমায়িত হবে। [তিরমিজ –
আবু হুরায়রা (রা.)]
২৬) জান্নাতবাসীগণ ৩০ বা ৩৩ বছর বয়সীর
মতো জান্নাতে প্রবেশ করবে। [তিরমিজী,
ময়াজ ইবনে জাবাল (রা.)]
ছবিঃ প্রতীকী
২৭) জান্নাতে অবস্থিত কাওসার এর পানি দুধ
অপেক্ষা অধিক সাদা এবং মধুর চেয়েও মিষ্টি
হবে। [তিরমিজীআসান (রা.)]
২৮) জান্নাতবাসী উট ও ঘোড়া চাইলে দুটোই
পাবে এবং তা ইচ্ছেমতো দ্রুত উড়িয়ে নিয়ে
যাবে। তাতে তুমি সে সব জিনিস পাবে যা কিছু
তোমার মন চাইবে এবং তোমার নয়ন জুড়াবে।
[তিরমিজী-আবু বুরাইদা (রা.)]
২৯) জান্নাতবাসীদের ১২০ কাতার হবে। তার
মধ্যে ৮০ কাতার হবে এ উম্মতের। অবশিষ্ট ৪০
কাতার হবে অন্যান্য উম্মতের। [তিরমিজী- বুরাইদা
(রা.)]
৩০) জান্নাতে একটি বাজার আছে সেখানে ক্রয়-
বিক্রয় নেই। সেখানে নারী-পুরুষের
আকৃতিসমূহ থাকবে। সুতরাং যখনই কেউ কোন
আকৃতিকে পছন্দ করবে তখন সে সেই আকৃতি
রূপান্তরিত হবে। [(তিরমিজী- আলী (রা.)]
৩১) জান্নাতবাসীদের উপর এক খণ্ড মেঘ
আচ্ছন্ন করে ফেলবে। তাদের উপর এমন
সুগন্ধি বর্ষণ করবে যে, অনুরূপ সুগন্ধি তারা আর
কখনো পায়নি। জান্নাতের বাজারে একজন
আরেকজনের সাথে সাক্ষাত করবে এবং তার
পোশাক পরিচ্ছদ দেখে আশ্চার্যান্নিত হবে।
কিন্তু তার কথা শেষ হতে না হতেই সে অনুভব
করবে যে, তার পোশাক তার চেয়ে আরো
উত্তম হয়ে গেছে। এটা এ জন্য যে,
জান্নাতে দুশ্চিন্তার কোন স্থান নেই। তাদের
স্ত্রীদের কাছে ফিরে আসলে তারা বলবে
তুমি আগের চেয়ে সুন্দর হয়ে ফিরে এসেছ।
[তিরমিজী, ইবনে মাজাহ- সাইধ ইবনে মুসায়েব
(রা.)]
৩২) নিম্নমানের জান্নাতবাসীর জন্যে ৮০ হাজার
খাদেম ও ৭২ জন স্ত্রী হবে। ছোট্ট বয়সী
বা বৃদ্ধ বয়সী লোক মারা গেলে জান্নাতে
প্রবেশের সময় ৩০ বছর বয়সী হয়ে
জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ বয়স কখনো বৃদ্ধি
হবে না। জান্নাতবাসীগণ যখন সন্তান কামনা
করবে, তখন গর্ভ, প্রসব ও তার বয়স চাহিদা
অনুযায়ী মুহূর্তের মধ্যে সংঘটিত হয়ে যাবে।
[তিরমিজী, ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ- আবু সাঈদ
(রা.)]
৩৩) জান্নাতে হুরদের সমবেত সংগীত শুনা
যাবে। এমন সুরে যা আগে কখনো শুনা যায় নি।
তারা বলবে-
আমরা চিরদিন থাকবো, কখনো ধ্বংস হবো না।
আমরা সুখে আনন্দে থাকবো, কখনো দুঃখ
দুশ্চিন্তা হবে না।
আমরা সব সময় সন্তুষ্ট থাকবো, কখনো
নাখোশ হবো না।
সুতরাং তাকে ধন্যবাদ যার জন্যে আমরা এবং
আমাদের জন্য যিনি। [তিরমিজী- আলী (রা.]
৩৪) জান্নাতে রয়েছে, ১. পানির সমূদ্র ২. মধুর
সমুদ্র ৩. দুধের সমুদ্র ৪. শরাবের সমুদ্র। তার পর
তা থেকে আরো বহু নদী প্রবাহিত হবে।-
[তিরমিজী- হাকিম ইবনে মুয়াবিয়া (রা.)]
৩৫) জান্নাতে একজন কৃষি কাজ করতে চাইবে।
তার পর সে বীজ বপণ করবে এবং চোখের
পলকে অংকুরিত হবে, পোক্ত হবে এবং ফসল
কাটা হবে। এমন কি পাহাড় পরিমাণ স্তুপ হয়ে যাবে।
আল্লাহ বলবেন, হে আদম সন্তান! নিয়ে যাও,
কোন কিছুতেই তোমার তৃপ্তি হয়না। [বুখারী –
আবু হুরায়রা (রা.)]
৩৬) জান্নাতে এক ব্যক্তি ৭০টি তাকিয়ায় হেলান
দিয়ে বসবে। এ শুধু তারই স্থান নির্ধারিত থাকবে।
একজন মহিলা এসে সালাম দিয়ে বলবে, “আমি
অতিরিক্তের অন্তর্ভুক্ত” তার পরনে রং বেরং এর
৭০ খানা শাড়ী পরিহিত থাকবে এবং তার ভিতর দিয়েই
তার পায়ের নলার মজা দেখা যাবে। তার মাথার
মুকুটের আলো পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্তের
মধ্যবর্তী স্থান রৌশনী করে দিবে। [আহমদ-
আবু সাঈদ (রা.)]
৩৭) জান্নাতবাসীগণ নিদ্রা যাবে না। নিদ্রাতো
মৃত্যুর সহোদর আর জান্নাতবাসী মরবে না।
[বায়হাকী- যাবের (রা.)]
৩৮) আল্লাহ তায়ালা হিজাব বা পর্দা তোলে
ফেলবেন, তখন জান্নাতবাসীরা আল্লাহর দিদার বা
দর্শন লাভ করবে। আল্লাহর দর্শন লাভ ও তার
দিকে তাকিয়ে থাকার চেয়ে অধিকতর প্রিয়
কোন বস্তুই এযাবত তাদেরকে প্রদান করা হয়নি।
[মুসলিম- সুহায়ব (রা.)]
৩৯) বারা বিন আযেব (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.)
বলেছেন: কবরে মুমিন বান্দার কাছে দু‘জন
ফেরেশতা আসে তাকে উঠিয়ে বসাবেন। তার
পর তাকে জিজ্ঞেস করবেন: তোমার রব
কে? সে উত্তর দেয় আমার রব ‘আল্লাহ’। তারা
জিজ্ঞেস করবেন, তোমার দ্বীন কি? সে
উত্তর দেয়, আমার দ্বীন ‘ইসলাম’। তারা
জিজ্ঞেস করবেন, তোমাদের মাঝে যিনি
প্রেরিত হয়েছিলেন তিনি কে? সে উত্তর
দেয়, তারা উত্তর দেয়, তিনি হলেন ‘আল্লাহর
রাসূল’। তারা জিজ্ঞেস করবেন, তুমি এসব কিভাবে
জানলে? সে উত্তর দেয়, আমি আল্লাহর কিতাব
পড়েছি, তাঁর উপর ঈমান এনেছি ও তাঁকে সমর্থন
করেছি। তখন আকাশ থেকে একজন
ঘোষণাকারী ঘোষণা করবেন- আমার বান্দা সত্য
বলেছে, আমার বান্দার জন্য জান্নাতের একটি
বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাাতের পোশাক
পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাতের একটি দরজা
খুলে দাও। তখন তা খুলে দেয়া হয়। রাসূল (সা.)
বলেন: ফলে তার দিকে জান্নাতের স্নিগ্ধ বাতাস
এবং সুগন্ধি আসতে থাকে। তার জন্য কবরের
স্থানকে দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়।
(আহমদ আবু দাউদ)
৪০) যে ব্যক্তি কুরআন পড়েছে, তাকে
(সমাজে কুরআনের বিধান) প্রতিষ্ঠার চেষ্টা
করেছে, কুরআনে বর্ণিত হালালসমূহকে হালাল
জেনে মেনেছে, হারামগুলোকে হারাম মনে
করেছে। আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ
করাবেন এবং তার পরিবারের জাহান্নামযোগ্য ১০
জনে বিষয়ে সুপারিশ করতে পারবেন। (তিরমিযী
হযরত আলী হতে)
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বাণীগুলিঃ
১) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর
উম্মতের মধ্য মধ্য থেকে ৭০ হাজার ব্যক্তি বিনা
হিসেবে জান্নাতে যাবে।- [আহমদ, তিরমিজী,
ইবনে মাজাহ- আবু ওমামা (রা.)]
২) যারা রাতে আরামের বিছানা থেকে নিজেদের
পার্শ্বদেশকে দূরে রেখেছিল, এমন অল্প
সংখ্যক লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ
করবে। অবশিষ্ট সকল মানুষ হতে হিসেব নেয়ার
নির্দেশ করা হবে। [বায়হাকি- আসমা (রা.)]
৩) জান্নাতে জান্নাতবাসীরা প্রতি জুমাবারে
বাজারে মিলিত হবে এবং জান্নাতে
জান্নাতবাসীদের রূপ-সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।
[মুসলিম- আনাস রা.)]
৪) জান্নাতের স্তর হবে ১০০টি এবং জান্নাতের
সর্বোচ্চ স্তর জান্নাতুল ফেরদাউস। যখন
তোমরা আল্লাহর কাছে জান্নাত চাইবে তখন
জান্নাতুল ফেরদাউস চাইবে। [তিরমিজী ওবাই
ইবনে সামেত (রা.)]
৫) জান্নাত সমস্ত পৃথিবী থেকে উত্তম।
(মুয়াত্তা- আবু হুরাইরা (রা.)
৬) জান্নাতবাসীনী কোন নারী (হুর) যদি
পৃথিবীর দিকে উঁকি দেয়, তবে গোটা জগত
আলোকিত হয়ে যাবে এবং আসমান জমীনের
মধ্যবর্তী স্থান সুগন্ধিতে মোহিত হয়ে যাবে।
তাদের মাথার উরনাও গোটা দুনিয়া ও তার সম্পদরাশি
থেকে উত্তম। [বুখারী- আনাস (রা.)]
৭) জান্নাতে একটি চাবুক রাখার পরিমাণ জায়গা গোটা
দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তা থেকে
উত্তম। [মুয়াত্তা- আবু হুরাইরা (রা.)]
৮) জান্নাতের একটি গাছের নিচের ছায়ায় কোন
সাওয়ারী যদি ১০০ বছরও সাওয়ার করে তবুও তার
শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না।
[বুখারী, মুসলিম আবু হুরায়রা (রা.)]
৯) জান্নাতে মুক্তা দিয়ে তৈরী ৬০ মাইল লম্বা
একটি তাঁবু থাকবে। জান্নাতের পাত্র ও সামগ্রী
হবে সোনা ও রুপার। [বুখারী, মুসলিম আবু মুসা
(রা.)]
১০) পূর্ণিমা চাঁদের মতো রূপ ধারণ করে তারা
জান্নাতে প্রবেশ করবে। (ক) তাদের অন্তরে
কোন্দল ও হিংসা বিদ্বেষ থাকবে না। (খ) তারা
কখনো রোগাক্রান্ত হবে না। (গ) তাদের
পেশাব পায়খানা হবে না। (ঘ) তারা থুথু ফেলবে না।
(ঙ) তাদের নাক দিয়ে ময়লা ঝরবে না। (চ)
তাদের চিরুনী হবে সোনার চিরুনী। (ছ)
তাদের ধুনীর জ্বালানী হবে আগরের। (জ)
তাদের গায়ের গন্ধ হবে কস্তুরির মতো সুগন্ধি।
(ঝ) তাদের স্বভাব হবে এক ব্যক্তির ন্যায়। (ঞ)
তাদের শাররীক গঠন হবে (আদী পিতা) আদম
(আ এর ন্যয়। [বুখারী, মুসলিম আবু হুরায়রা (রা.)]
১১) জান্নাতীদের খাবারগুলো ঢেকুর এবং
মিশকঘ্রাণযুক্ত ঘর্ম দ্বারা নি:শেষ হয়ে যাবে।
[বুখারী, মুসলিমযাবির (রা.)]
১২) জান্নাতীরা সুখে শান্তিতে স্বাচ্ছন্দ্যে
ডুবে থাকবে। হতাসা দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা থাকবে না।
পোশাক পরিচ্ছেদ ময়লা হবে না, পুরাতন হবে না।
তাদের যৌবনও নিঃশেষ হবে না। [মুসলিম আবু হুরায়রা
(রা.)]
১৩) জান্নাতবাসীরা সব সময় জীবিত থাকবে।
কখনো মৃত্যুবরণ করবে না। সব সময় যুবক
থাকবে বৃদ্ধ হবে না। [মুসলিম আবু সাঈদ (রা.)]
১৪) জান্নাতে (এমন) এক দল প্রবেশ করবে,
যাদের অন্তর হবে পাখিদের অন্তরের মতো।
[মুসলিম আবু হুরায়রা (রা.)]
১৫) জান্নাতবাসীদের প্রতি আল্লাহ বলবেন,
আমি তোমাদের উপর সন্তুষ্টি দান করেছি,
তোমাদের উপর আর কখনো অসন্তুষ্ট হবো
না। [বুখারী, মুসলিমআবু সাঈদ (রা.)]
১৬) জান্নাতের নহরে পরিণত হবে- সায়হান,
জায়হান, ফোরাত ও নীল নদী। [মুসলিম – আবু
হুরায়রা (রা.)]
১৭) জান্নাতে বান্দার আশা আকাঙ্খার দ্বিগুণ দেয়া
হবে। [মুসলিম – আবু হুরায়রা (রা.)]
১৮) জান্নাতের দরওয়াজা ৪০ বছরের দুরত্বে
সমান, এমন এক দিন আসবে যে তাও ভরপুর হয়ে
যাবে। [মুসলিম-উতবা ইবনে খাজওয়ান (রা.)]
১৯) জান্নাতের ইট স্বর্ণ ও রোপ্য দ্বারা তৈরী।
কঙ্কর হলো মনি মুক্তা, আর মসল্লা হলো
সুগন্ধীময় কস্তুরী। [তিরমিজী – আবু হুরায়রা
(রা.)]
২০) জান্নাতের সকল গাছের কা- হবে সোনার।
[তিরমিজী – আবু হুরায়রা (রা.)]
২১) জান্নাতের ১০০ টি স্তর আছে, দু’স্তরের
মধ্যে ব্যবধান শত বছরের। [(তিরমিজী – আবু
হুরায়রা (রা.)]
২২) জান্নাতের ১০০ স্তরের যে কোন এক
স্তরে সারা বিশ্বের সকল লোক একত্রিত
হলেও তা যথেষ্ট হবে। [তিরমিজী আবু সাঈদ
(রা.)]
২৩) জান্নাতের উচ্চ বিছানা (সুরুরুম মারফুআ) আসমান
জমীনর মধ্যবর্তী ব্যবধানের পরিমাণ- ৫০০ শত
বছরের পথ। [তিরমিজী আবু সাঈদ (রা.)]
২৪) জান্নাত প্রত্যেক ব্যক্তিকে ১০০ পুরুষের
শক্তি দান করা হবে। [(তিরমিজ – আবু হুরায়রা (রা.)]
২৫) জান্নাতবাসীগণ কেশবিহীন দাড়িবিহীন
হবে। তাদের চোক সুরমায়িত হবে। [তিরমিজ –
আবু হুরায়রা (রা.)]
২৬) জান্নাতবাসীগণ ৩০ বা ৩৩ বছর বয়সীর
মতো জান্নাতে প্রবেশ করবে। [তিরমিজী,
ময়াজ ইবনে জাবাল (রা.)]
ছবিঃ প্রতীকী
২৭) জান্নাতে অবস্থিত কাওসার এর পানি দুধ
অপেক্ষা অধিক সাদা এবং মধুর চেয়েও মিষ্টি
হবে। [তিরমিজীআসান (রা.)]
২৮) জান্নাতবাসী উট ও ঘোড়া চাইলে দুটোই
পাবে এবং তা ইচ্ছেমতো দ্রুত উড়িয়ে নিয়ে
যাবে। তাতে তুমি সে সব জিনিস পাবে যা কিছু
তোমার মন চাইবে এবং তোমার নয়ন জুড়াবে।
[তিরমিজী-আবু বুরাইদা (রা.)]
২৯) জান্নাতবাসীদের ১২০ কাতার হবে। তার
মধ্যে ৮০ কাতার হবে এ উম্মতের। অবশিষ্ট ৪০
কাতার হবে অন্যান্য উম্মতের। [তিরমিজী- বুরাইদা
(রা.)]
৩০) জান্নাতে একটি বাজার আছে সেখানে ক্রয়-
বিক্রয় নেই। সেখানে নারী-পুরুষের
আকৃতিসমূহ থাকবে। সুতরাং যখনই কেউ কোন
আকৃতিকে পছন্দ করবে তখন সে সেই আকৃতি
রূপান্তরিত হবে। [(তিরমিজী- আলী (রা.)]
৩১) জান্নাতবাসীদের উপর এক খণ্ড মেঘ
আচ্ছন্ন করে ফেলবে। তাদের উপর এমন
সুগন্ধি বর্ষণ করবে যে, অনুরূপ সুগন্ধি তারা আর
কখনো পায়নি। জান্নাতের বাজারে একজন
আরেকজনের সাথে সাক্ষাত করবে এবং তার
পোশাক পরিচ্ছদ দেখে আশ্চার্যান্নিত হবে।
কিন্তু তার কথা শেষ হতে না হতেই সে অনুভব
করবে যে, তার পোশাক তার চেয়ে আরো
উত্তম হয়ে গেছে। এটা এ জন্য যে,
জান্নাতে দুশ্চিন্তার কোন স্থান নেই। তাদের
স্ত্রীদের কাছে ফিরে আসলে তারা বলবে
তুমি আগের চেয়ে সুন্দর হয়ে ফিরে এসেছ।
[তিরমিজী, ইবনে মাজাহ- সাইধ ইবনে মুসায়েব
(রা.)]
৩২) নিম্নমানের জান্নাতবাসীর জন্যে ৮০ হাজার
খাদেম ও ৭২ জন স্ত্রী হবে। ছোট্ট বয়সী
বা বৃদ্ধ বয়সী লোক মারা গেলে জান্নাতে
প্রবেশের সময় ৩০ বছর বয়সী হয়ে
জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ বয়স কখনো বৃদ্ধি
হবে না। জান্নাতবাসীগণ যখন সন্তান কামনা
করবে, তখন গর্ভ, প্রসব ও তার বয়স চাহিদা
অনুযায়ী মুহূর্তের মধ্যে সংঘটিত হয়ে যাবে।
[তিরমিজী, ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ- আবু সাঈদ
(রা.)]
৩৩) জান্নাতে হুরদের সমবেত সংগীত শুনা
যাবে। এমন সুরে যা আগে কখনো শুনা যায় নি।
তারা বলবে-
আমরা চিরদিন থাকবো, কখনো ধ্বংস হবো না।
আমরা সুখে আনন্দে থাকবো, কখনো দুঃখ
দুশ্চিন্তা হবে না।
আমরা সব সময় সন্তুষ্ট থাকবো, কখনো
নাখোশ হবো না।
সুতরাং তাকে ধন্যবাদ যার জন্যে আমরা এবং
আমাদের জন্য যিনি। [তিরমিজী- আলী (রা.]
৩৪) জান্নাতে রয়েছে, ১. পানির সমূদ্র ২. মধুর
সমুদ্র ৩. দুধের সমুদ্র ৪. শরাবের সমুদ্র। তার পর
তা থেকে আরো বহু নদী প্রবাহিত হবে।-
[তিরমিজী- হাকিম ইবনে মুয়াবিয়া (রা.)]
৩৫) জান্নাতে একজন কৃষি কাজ করতে চাইবে।
তার পর সে বীজ বপণ করবে এবং চোখের
পলকে অংকুরিত হবে, পোক্ত হবে এবং ফসল
কাটা হবে। এমন কি পাহাড় পরিমাণ স্তুপ হয়ে যাবে।
আল্লাহ বলবেন, হে আদম সন্তান! নিয়ে যাও,
কোন কিছুতেই তোমার তৃপ্তি হয়না। [বুখারী –
আবু হুরায়রা (রা.)]
৩৬) জান্নাতে এক ব্যক্তি ৭০টি তাকিয়ায় হেলান
দিয়ে বসবে। এ শুধু তারই স্থান নির্ধারিত থাকবে।
একজন মহিলা এসে সালাম দিয়ে বলবে, “আমি
অতিরিক্তের অন্তর্ভুক্ত” তার পরনে রং বেরং এর
৭০ খানা শাড়ী পরিহিত থাকবে এবং তার ভিতর দিয়েই
তার পায়ের নলার মজা দেখা যাবে। তার মাথার
মুকুটের আলো পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্তের
মধ্যবর্তী স্থান রৌশনী করে দিবে। [আহমদ-
আবু সাঈদ (রা.)]
৩৭) জান্নাতবাসীগণ নিদ্রা যাবে না। নিদ্রাতো
মৃত্যুর সহোদর আর জান্নাতবাসী মরবে না।
[বায়হাকী- যাবের (রা.)]
৩৮) আল্লাহ তায়ালা হিজাব বা পর্দা তোলে
ফেলবেন, তখন জান্নাতবাসীরা আল্লাহর দিদার বা
দর্শন লাভ করবে। আল্লাহর দর্শন লাভ ও তার
দিকে তাকিয়ে থাকার চেয়ে অধিকতর প্রিয়
কোন বস্তুই এযাবত তাদেরকে প্রদান করা হয়নি।
[মুসলিম- সুহায়ব (রা.)]
৩৯) বারা বিন আযেব (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.)
বলেছেন: কবরে মুমিন বান্দার কাছে দু‘জন
ফেরেশতা আসে তাকে উঠিয়ে বসাবেন। তার
পর তাকে জিজ্ঞেস করবেন: তোমার রব
কে? সে উত্তর দেয় আমার রব ‘আল্লাহ’। তারা
জিজ্ঞেস করবেন, তোমার দ্বীন কি? সে
উত্তর দেয়, আমার দ্বীন ‘ইসলাম’। তারা
জিজ্ঞেস করবেন, তোমাদের মাঝে যিনি
প্রেরিত হয়েছিলেন তিনি কে? সে উত্তর
দেয়, তারা উত্তর দেয়, তিনি হলেন ‘আল্লাহর
রাসূল’। তারা জিজ্ঞেস করবেন, তুমি এসব কিভাবে
জানলে? সে উত্তর দেয়, আমি আল্লাহর কিতাব
পড়েছি, তাঁর উপর ঈমান এনেছি ও তাঁকে সমর্থন
করেছি। তখন আকাশ থেকে একজন
ঘোষণাকারী ঘোষণা করবেন- আমার বান্দা সত্য
বলেছে, আমার বান্দার জন্য জান্নাতের একটি
বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাাতের পোশাক
পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাতের একটি দরজা
খুলে দাও। তখন তা খুলে দেয়া হয়। রাসূল (সা.)
বলেন: ফলে তার দিকে জান্নাতের স্নিগ্ধ বাতাস
এবং সুগন্ধি আসতে থাকে। তার জন্য কবরের
স্থানকে দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়।
(আহমদ আবু দাউদ)
৪০) যে ব্যক্তি কুরআন পড়েছে, তাকে
(সমাজে কুরআনের বিধান) প্রতিষ্ঠার চেষ্টা
করেছে, কুরআনে বর্ণিত হালালসমূহকে হালাল
জেনে মেনেছে, হারামগুলোকে হারাম মনে
করেছে। আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ
করাবেন এবং তার পরিবারের জাহান্নামযোগ্য ১০
জনে বিষয়ে সুপারিশ করতে পারবেন। (তিরমিযী
হযরত আলী হতে)