02-24-2017, 10:11 AM
এটা একটা কমন সমস্যা যে ধর্ম আর
বিজ্ঞানের সংঘাত নিয়ে অনেকেই
চিন্তিত থাকেন। অনেকে “ইসলাম
একটা বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম”
বুলি আওড়িয়ে থাকেন বটে কিন্তু
সেটা কতটা মন থেকে বলেন, সে প্রশ্ন রয়ে যায়। আমরা নাস্তিকদের
কথাবার্তায় লক্ষ করি তারা প্রায়ই
বিজ্ঞানের আশ্রয় নিয়ে ধর্মকে অসার
প্রমাণের চেষ্টা করে। এখন
কথা হচ্ছে ধর্ম আর
বিজ্ঞানকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রবণতা কেন এবং এ ক্ষেত্রে আমাদের
বিশ্বাসের মানদণ্ড কী হওয়া উচিত। প্রথমত, মানুষের একটা সহজাত
প্রবণতা আছে যে সে যা দেখে-সেটাই
বিশ্বাস করে। “আমি নিজের
চোখে দেখেছি”-বাক্যটা নিজের
কথাকে জাস্টিফাই করার একটা কমন
হাতিয়ার। একটা সহজ উদাহরণ দেওয়া যায়। যেসব ধর্মে মূর্তিপূজার
বিধান আছে তারা যেসব দেবদেবীর
পূজা করে তাদের মূর্তিগুলো মানুষের
মত বা কোন জানোয়ারের মত করেই
নির্মাণ করে। কেন? কারণ মানুষ
কল্পনা করে নেয় আরাধ্য দেবদেবী এইরকমই হবে, যেহেতু
সে নিজের চোখে নিজের দেহের
আকৃতি বা পশুপাখির
আকৃতি ছাড়া অন্যকিছু
দেখতে পাচ্ছে না। নিরাকার
স্রষ্টাকে যদি আকার দিতে চায় তবে মানুষ নিজের চোখের
দৃষ্টিসীমার
মধ্যে যা দেখে তা দিয়েই স্রষ্টার
আকার কল্পনা করতে চায়-মূল
ব্যাপারটা এ ই। এখন চোখের দেখায় যা বোঝা যায়
তার বাইরে কোন মত
গেলে স্বাভাবিকভাবেই
তা মেনে নিতে কষ্ট হয়। অ্যারিস্টটল
যখন বললেন সূর্য পৃথিবীর
চারদিকে ঘোরে, তখন তা নিয়ে লোকে আপত্তি করে নি, কারণ
চোখের দেখায় এটাই সত্য
বলে মনে হয়। কিন্তু কোপারনিকাস
যখন বললেন পৃথিবী সূর্যের
চারদিকে ঘোরে, তখন ঘোর আপত্তি শুরু
হল। কারণ এ কথা মানুষের সহজাত প্রবণতার বিরুদ্ধে যাচ্ছে। কিন্তু
যখন ব্রুনো, গ্যালিলিওরা এর
স্বপক্ষে যুক্তি দিলেন তখন মানুষ
দেরিতে হলেও
সত্যকে মেনে নিতে বাধ্য হল। বিজ্ঞানের রূপ এটাই। বিজ্ঞান
সত্যের অনুসন্ধান করে, সত্যের
মানদণ্ড নির্ধারণ করে না।
অ্যারিস্টটল যা বলেছিলেন তখন
সেটাই ছিল বিজ্ঞান, আজ
আইনস্টাইনের কথাকে আমরা সত্য মানি, কাল হয়তো দেখা যাবে তা ছিল
ভুল। যে জিনিস পরিবর্তনশীল
তা থেকে বিশুদ্ধ জ্ঞান আহরণ সম্ভব
নয়। কাজেই
আল্লাহকে চিনতে হলে দরকার
অপরিবর্তনশীল জ্ঞানের উৎস। কিতাবুল্লাহর দরকার সেই কারণেই
ছিল। তাহলে প্রচলিত বিজ্ঞান কি স্রষ্টার
অস্তিত্ব অস্বীকার করে?
এখানে আমাদের মনে রাখতে হবে,
প্রচলিত বিজ্ঞান যা ই বলুক
সেটা আমাদের কনসার্ন না,
কেননা আমরা কুরআনকে জ্ঞানের বিশুদ্ধতম উৎসরূপে স্বীকার
করে নিয়েছি। তবু
আমরা দেখি বিজ্ঞান
স্রষ্টাকে স্বীকার
করছে কি করছে না। ২ আমরা একটু লক্ষ করলে দেখতে পাব,
বিজ্ঞানীরা যখন বস্তুর কোন ধর্মের
কারণ নির্ণয়ে ব্যর্থ হন তখন
সেটাকে “মৌলিক ধর্ম” বলে প্রচার
করেন। যেমন মহাকর্ষ বল।
মহাবিশ্বের যেকোন দুটি বস্তুর মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ কেন থাকবে,
সেটার যথার্থ কারণ ব্যাখ্যা সম্ভব
হয়নি। আসলে একটা বৈজ্ঞানিক
ঘটনা ব্যাখ্যা করতে গেলে আরেকটির
রেফারেন্স লাগে। সেটার ব্যখ্যায়
লাগে আরেকটির রেফারেন্স। এভাবে শেষ পর্যন্ত একটা জায়গায়
গিয়ে আর ব্যাখ্যা দেওয়া যায়
না বলেই এই “মৌলিক ধর্ম” নামক
টার্মের উৎপত্তি। ক্লাস নাইনের ফিজিক্স
বইয়ে লেখা ছিল পরমাণুর
উৎপত্তি নাকি কত কোটি বছর আগে এক
গ্রহে। আমি আমার এক শিক্ষককে প্রশ্ন
করেছিলাম, তাহলে ঐ
গ্রহটা কী দিয়ে তৈরি ছিল? সেটা কি পরমাণুর তৈরি নয়? আমার
শিক্ষক হেসেছিলেন। আসলে বিজ্ঞান
নিজেকে যতই স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবুক
না কেন, সে একটা গিয়ে থেমে যায়ই।
সে তখনই এসব প্রশ্নের উত্তর
দিতে পারে যখন সে একজন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব স্বীকার
করে নেয়। মৌলিক ধর্মই হোক, আর
পরমাণুই হোক, মূলে গিয়ে একজন মহান
সত্ত্বার সৃষ্টি হিসেবেই
একে মেনে নিতে হবে, নতুবা অবান্তর
সব উত্তর খুঁজে নিয়ে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে হবে। আপনি পৃথিবীর কোন
দেশে গিয়ে যদি দেখেন এমন কোন
নিয়ম সবাই মানছে, যেটা আপনার
দেশে নেই, বুঝতে পারবেন
এটা ওদেশের আইন। যেমন আমাদের
দেশে গাড়ি চলে রাস্তার বামপাশ দিয়ে, আমেরিকায় চলে ডানপাশ
দিয়ে। আপনি বুঝবেন এটা আমেরিকায়
আইন করে দেওয়া হয়েছে, যা সবাই
মানতে বাধ্য। যদি কেউ
আইনটা নির্দিষ্টরূপে তৈরি না করত,
তবে ধনী-গরিব-সাদা- কালো নির্বিশেষে সবাই একই
নিয়মে গাড়ি চালাত না, কখনোই না। তাহলে এবার ভেবে দেখুন, অনেক
বৈজ্ঞানিক সূত্র পৃথিবীর সব বস্তুর
ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
এটা কীভাবে সম্ভব হতে পারে??
যেমন F=ma সূত্র মানুষের
ক্ষেত্রে সত্য, তেমনি একটা লোহার টুকরার ক্ষেত্রেও সত্য।
একটা পিঁপড়াকে পাহাড়ের উপর
থেকে ছেড়ে দিলে সে g ত্বরণে পড়বে,
আবার একটা হাতিকে ফেলে দিলেও
সে একই ত্বরণে পড়বে। কী আশ্চর্য
তাইনা?? এই আইনের কি স্রষ্টা নেই? কোন সে মহান সত্ত্বা যিনি এমন আইন
তৈরি করলেন যা আকৃতি-ওজনে আকাশ-
পাতাল পার্থক্যের হাতি আর
পিঁপড়াকে একই সাথে মানতে বাধ্য
করল? তিনিই কি আল্লাহ নন? বিজ্ঞান সত্যের অনুসন্ধানের
চেষ্টা করে বলে বিজ্ঞানের
ছাত্রদের বেশি সত্যসন্ধানী হওয়ার
কথা। কিন্তু কিছু মূর্খ নিজেদের
অবিশ্বাসকে বিজ্ঞান
দিয়ে ঢাকতে চায়। তারা না বোঝে বিজ্ঞান,
না বোঝে ধর্ম, না বোঝে দর্শন। এদের
সাথে খুব বেশি যুক্তিতর্কে লিপ্ত
হওয়া তাই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
তারা প্রথমে নিজেদের অবিশ্বাসের
পক্ষে যুক্তি দিতে চাইবে। সাধারণত এদের কুযুক্তি বেশিক্ষণ
ধোপে টেকে না। তারপর
তারা ব্যক্তিগত আক্রমণ
করে বসে এবং অপ্রাসংগিক
কথা টেনে গালিগালাজ
করে আপনাকে ট্র্যাক থেকে সরাতে চেষ্টা করে।
আমি একসময় ব্লগিং করা শুরু
করেছিলাম। নাস্তিকদের
সাথে যুক্তি দিতে গিয়ে এই
ব্যাপারগুলো লক্ষ করে সেখান
থেকে সরে আসি। কেননা যে নিজের মত গায়ের জোর
দিয়ে চাপাতে চাইবে আর অশালীন
কথা বলে প্রসঙ্গ
পাল্টাতে চাইবে তাদের
সাথে বেশিক্ষণ যুক্তি দেওয়া কেবল
সময়ের অপচয়, অন্তত আমি তা ই বিশ্বাস করি। ৩ এবার আসি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
আলোচনায়। বিজ্ঞান ও ধর্মের
তর্কে আমাদের অবস্থান কী হবে? আমরা জানি কিছুদিন
আগে জগদ্বিখ্যাত
পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন
হকিং স্রষ্টাকে অস্বীকার
করে বসলেন। তিনি বললেন-পরকাল
বলতে কিছু নেই, এটা রূপকথা মাত্র। এই নিয়ে আমাদের দেশের অনেক
মুসলিমের মধ্যে হা-হুতাশ শুরু হল।
অতবড় বিজ্ঞানী এমন মারাত্মক ভুল
কী করে করলেন-অনেকের বোধগম্য হল
না। ব্যাপারটা খুব সহজ। আপনি সত্যের
সন্ধান কতটুকু পাচ্ছেন তা নির্ভর
করছে আপনার জ্ঞান আহরণের উৎস কী।
এখন বিজ্ঞানীরা ততক্ষণ পর্যন্ত কোন
বিষয়কে স্বীকার করে নেবেন
না যতক্ষন এর স্বপক্ষে প্রমাণ না পান। (যদিও ডারউইনবাদ মূলত
অনুমানের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত
হয়েছিল বলে জানা যায়)।
এখন হকিং সাহেব তার দীর্ঘ
জীবনে পরকালের অস্তিত্বের কোন
প্রমাণ পান নি বলে তিনি একে বিশ্বাস
করতে না ই পারেন। এতে খুব
বেশি অবাক হওয়ার কোন কারণ
আমি দেখি না। আমরা স্রষ্টার অস্তিত্বকে কোন
বৈজ্ঞানিকের কথায় মেনে নেই নি।
ইসলামের জ্ঞান এসেছে রিসালাতের
ধারার মাধ্যমে, কোন সায়েন্স
জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধের
সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নয়। কাজেই জ্ঞানের উৎসের ক্ষেত্রেই হকিং ও
আমাদের মধ্যে একটা বিরাট পার্থক্য
হয়ে যাচ্ছে।
এতে করে সিদ্ধান্তে যে ভিন্নতা থাকবে,
তা খুবই স্বাভাবিক। প্রশ্ন হল বিশুদ্ধতম উৎসের প্রয়োজন
কেন হল। এখানে আমাদের
মনে রাখতে হবে, বিজ্ঞান হল
স্বতঃলব্ধ জ্ঞান। একটা গাড়ির
চাকা কীভাবে বানালে গাড়িটা দ্রুত
চলবে সেটার জন্য মানুষ তার নিজের জ্ঞানবুদ্ধি ও যুক্তি ব্যবহার
করে নানা পরীক্ষানিরীক্ষার
মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছায়।
কিন্তু স্রষ্টার স্বরূপের ক্ষেত্রেও
যদি মানুষ নিজের
বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে যেত তবে কখনোই সে পূর্ণ ধারণা পেত না।
তাই সে জ্ঞানের জন্য স্বতঃলব্ধতা নয়
বরং স্রষ্টার নিজের প্রেরিত
জ্ঞানের প্রয়োজন ছিল। আর
সে কারণেই রিসালাতের ধারার
সূচনা। যেহেতু স্বতঃলব্ধ জ্ঞান মানসিকতার সাথে পরিবর্তন হয়, তাই
বিজ্ঞানের পরিবর্তনশীলতা চলমান।
কিন্তু স্রষ্টার জ্ঞান শুরু থেকেই পূর্ণ,
তাই তাঁর প্রেরিত জ্ঞানের পরিবর্তন
মানুষের সাধ্যের বাইরে। তাহলে কি স্রষ্টার বিধান
অপরিবর্তনীয়? না, অপরবর্তনীয় নয়।
এখন স্রষ্টার জ্ঞান পূর্ণ হলেও
বিশুদ্ধতম জ্ঞান আহরণের সামর্থ্য সব
যুগের মানুষের সমান ছিল না। তাই
ভিন্নভিন্ন যুগের বিধান এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যা সেই
যুগের মানুষের জন্য উপযুক্ত ছিল। আদম
(আ) এর সময়ের মানুষের
কাছে যদি ইনযিল বা কুরআন নাযিল
হত তবে তারা সেটা অনুধাবন
করতে সমর্থ হত না। তাই মানুষের মানসিক বিকাশ যত বেড়েছে,
রিসালাতের ধারার জ্ঞান ও বিধান
তত আপগ্রেডেড হয়েছে। এই ধারার
সমাপ্তি কুরআনের মাধ্যমে,
যেটা পূর্ণাঙ্গ এবং তাই
ইসলামী শরীয়াহ এর এক্সপায়ারি ডেট আল কিয়ামাহ।
রিসালাতের ধারার
পরিপূর্ণতা দানের মাধ্যমে ইসলামের
বিধানের পরিবর্তনশীলতা রহিত
হয়ে গেছে। তদ্রুপ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, রাজনীতি,
রাষ্ট্রব্যবস্থা, পররাষ্ট্রনীতিসহ
যাবতীয় তাত্ত্বিক বিষয়ে মানুষের
স্বতঃলব্ধ জ্ঞানের প্রয়োগ
রিসালাতের ধারার মাধ্যমে বন্ধ
করা হয়েছে। কেননা এইসকল বিষয়ে মানুষ নিজের জ্ঞান-
বুদ্ধি দ্বারা তত্ত্ব আবিষ্কারে মগ্ন
হলে তা মানবজাতির জন্য প্রভূত
অকল্যাণ নিয়ে আসবে। যুদ্ধ-বিগ্রহ আর
হানাহানির মূলে আছে মানুষের এই
বিশুদ্ধতম জ্ঞানের উৎসকে অবহেলা করা। ইসলামের
অর্থনীতিকে গ্রহণ না করায় উদ্ভুত
পুঁজিবাদী ব্যবস্থার শোষণ
আমরা বিশ্বজুড়ে আজ প্রত্যক্ষ করছি।
ইসলামের রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ
না করায় সাম্রাজ্যবাদের করাল গ্রাসের স্বীকার আজ মানবজাতি। এর
মূল কারণ একটাই, নিজেদের অপূর্ণাঙ্গ
জ্ঞানের উপর অতিনির্ভরশীলতা।
আল্লাহ্ যে বিধান দিয়েছেন, তার
মধ্যেই কল্যাণ আছে-এ বিশ্বাসটুকু
করতে না পারা। ৪ এতক্ষণ আলোচনায় আমরা এটাই
বোঝাতে চেষ্টা করলাম, আল্লাহ্র
থেকে আগত জ্ঞান পূর্ণ, আর মানুষের
স্বতঃলব্ধ জ্ঞান অপরিপূর্ণ। আমাদের
মনে রাখতে হবে যে, ইসলামের
ভিত্তি যুক্তি নয়; বিজ্ঞান নয়, বিশ্বাস। কাজেই বিজ্ঞান
বা যুক্তি ইসলামের পক্ষে যাক
বা যাক, সেসবকে আমরা কেয়ার
করি না। এটাই ঈমানের প্রথম
এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কথা। রাসূল (সা) এর মিরাজের
ঘটনা অবিশ্বাসীরা এককালে ‘অবাস্তব’
বলে উড়িয়ে দিলেও আইনস্টাইনের
থিওরি অফ রিলেটিভিটি আজ এই
ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দাঁড়
করাতে সমর্থ হয়েছে। তার মানে এই না যে, আধুনিক বিজ্ঞান এই
ঘটনাকে প্রমাণ করতে ব্যর্থ
হলে আমরা তাতে বিশ্বাস আনতাম না।
আগেই বলেছি, ইসলামের
ভিত্তি বিজ্ঞান নয়, বিশ্বাস। আবু
বক্বর (রা) কে মক্কার কাফিররা মিরাজের ঘটনার উল্লেখ
করে বলল-“এখন কি তুমি এই অবাস্তব
গাঁজাখুরি কাহিনীও বিশ্বাস
করবে??” আবু বক্বর কিন্তু
বলেননি-“নিশ্চয়ই এর পেছনে কোন
যুক্তি আছে”, তিনি বলেছেন-“রাসূল (সা) যদি এই কথা বলে থাকেন,
তবে আমি তা বিশ্বাস করলাম”। এটাই ঈমানের মূল কথা। আমরা যেন
আল্লাহ্র বিধানকে নিজেদের মত
করে প্রমাণের
চেষ্টা করে না বলি-“এটা যুক্তিযুক্ত
কাজেই আমি বিশ্বাস করলাম”।
বরং আমরা বলব-“আল্লাহ বলেছেন কাজেই এটা শতভাগ সঠিক, এর
পেছনে যুক্তি খুঁজে পাই আর না ই
পাই”। ইসলামের ভিত্তি যদি বিজ্ঞানই হত
তাহলে মিরাজের বৈজ্ঞানিক
ব্যাখ্যা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার
সাথে সাথে এর উপরে কাফিররা ঈমান
আনত, তাই নয় কি? কিন্তু তবু
ওরা বলবে, ওই বোরাক আবার কীরকম জন্তু !! অমনটা তো কোনদিন দেখিনি !! লেখার শুরুতে বলেছিলাম, মানুষ
সাধারণত চোখে যা দেখে তা ই
বিশ্বাস করতে চায়। সে বোরাকের মত
কোন জন্তু দেখেনি বলে তা বিশ্বাস
করতে চায় না। সে জান্নাত-
জাহান্নাম দেখেনি বলে তা বিশ্বাস করতে চায় না। এখন
চিন্তা করে দেখুন,
ম্যাজিশিয়ানরা স্টেজে যে ম্যাজিক
দেখায়, তার আড়ালে কত কৌশল থাকে,
যা আমরা চোখে দেখে বুঝতে পারি না।
কিন্তু আমরা জানি এর পেছনে কোন কৌশল আছে, তাই কোন ম্যাজিক
দেখে অভিভূত হলেও আমরা বলি-“এর
পেছনে কোন মারাত্মক
চালাকি আছে নিশ্চয়ই”। অথচ সেই আমরাই যখন আল্লাহ্র কোন
বিধান মনঃপূত হয় না তখন
সেটাকে বিজ্ঞানের অপূর্ণ জ্ঞানের
কষ্ঠিপাথরে যাচাই করতে বসি, অথচ
এটা ভাবতে পারি না-“আল্লাহ যখন
বলেছেন এর পেছনে নিশ্চয়ই কল্যাণ আছে”, যে কথা ম্যাজিশিয়ানের
ক্ষেত্রে ভেবে থাকি। অর্থাৎ
আমরা আল্লাহ্র
কৌশলকে ম্যাজিশিয়ানের কৌশলের
চেয়ে কম শক্তিধর ভেবে বসছি !! কত
মূর্খ আমরা, ভাবতে পারেন?? আর নিজের চোখে না দেখা জিনিস
বিশ্বাস না করা মানে চরম
অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দেওয়া। ম্যাজিক
দেখতে স্টেজে উঠে প্রতিনিয়ত
বিভ্রান্ত হয় মানুষ, চোখের
দৃষ্টি আড়ালের কলাকৌশলকে ধরতে পারে না, সেই
মানুষ কিভাবে এই দুর্বল
দৃষ্টিকে জ্ঞানের উৎস
হিসেবে স্বীকার করতে পারে !! আমাদের অনেকেরই
প্রবণতা আছে ইসলামের
বিধানকে প্রচলিত বিজ্ঞান
দ্বারা ব্যাখ্যা করে একে “বিজ্ঞানসম্মত”
বলে প্রচার করা। এ স্বভাব বর্জনীয়।
কারণ এতে দুটো বড় সমস্যা আছে। প্রথমত, ইসলামের বিধানকে বিজ্ঞান
দিয়ে ব্যাখ্যা করে সেটাকে “যুক্তিযুক্ত”
বলার
মানে হচ্ছে পরোক্ষভাবে ইসলামকে অপূর্ণ
বলে স্বীকার করা। কেননা বিজ্ঞান
একটা অপূর্ণ বিষয়, আর একটা অপূর্ণাঙ্গ বিষয়
দিয়ে একটা পূর্ণাঙ্গ বিষয়ের
ব্যাখ্যা করা মানে পূর্ণাঙ্গ
বিষয়টাকে অপমান করা। দ্বিতীয়ত, ইসলামের
প্রতিটি বিধানকে বিজ্ঞানের আওতায়
আনার চেষ্টা করার অভ্যাস
হয়ে গেলে হঠাৎ একটা বিধান
প্রচলিত বিজ্ঞানের তত্ত্বের
সাথে খাপ না খেলে সে বিধানের ব্যাপারে একটা সংশয় চলে আসবে,
যা ঈমানের একটা মারাত্মক ত্রুটি। কাফিররা আমাদের কাছে ঠিক এটাই
চায়। তারা চায় ধর্ম পালনের
ক্ষেত্রে আমরা যেন
বিজ্ঞানকে সত্যের মানদণ্ড
ধরে ইসলামকে বিজ্ঞান দিয়ে বোঝার
চেষ্টা করি, যাতে বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে কোন বিধান
বোধগম্য
না হলে আমরা সেটাকে ছুড়ে ফেলে দিই
(নাঊযুবিল্লাহ)।
সেক্ষেত্রে তারা অনেকটা সফল। তাই
দেখা যায় পাঁচওয়াক্ত নামাযের খবর না থাকলেও হিজাব কেন
“বিজ্ঞানসম্মত” সে কথা প্রমাণে আজ
মুসলিমরা ব্যস্ত। তেমনি কাফিরদের
আবিষ্কৃত “গণতন্ত্র”, “পুঁজিবাদ”,
“ধর্মনিরপেক্ষতা”
ইত্যাদিকে “বিজ্ঞানসম্মত” বলে মেনে নিয়ে আল্লাহ্র দ্বীন
থেকে দূরে সরে গিয়ে তাদের
গোলামি করছি। যেহেতু ইসলাম পূর্ণ আর বিজ্ঞান
অপূর্ণ, তাই ইসলামের
ক্ষেত্রে “বিজ্ঞানসম্মত”
কথাটা অর্থহীন। “বিজ্ঞানসম্মত”
মানে বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত।
এখন কথা হল যেটা নিজেই অপূর্ণ সেটা একটা পূর্ণ বিষয়কে প্রমাণ
করার কে? ইসলামকে “বিজ্ঞানসম্মত”
বলা মানে কি ইসলামের
জাস্টিফিকেশনের ভারটা বিজ্ঞানের
উপর ন্যাস্ত করা হয়ে যায় না??? একটা উদাহরণ দেই। আলফাজ
বাংলাদেশের একজন ফুটবলার। কথিত
আছে, এক ধারাভাষ্যকার
বলেছিলেন-“মেসির মধ্যে আলফাজের
ছায়া খুঁজে পাই”।
কথাটা ব্যাপক হাস্যরসিকতার উদ্ভব করেছিল। কেন? কারণ আলফাজের
চেয়ে মেসি অনেক উচুমানের
খেলোয়াড় কাজেই
মানদণ্ডটা আলফাজের খেলা না,
মেসির খেলাই হওয়া উচিত।
ভাষ্যকারের কথাটা এমন মিন করে-“আলফাজের মত হওয়ার
পথে এগিয়ে যাচ্ছেন মেসি” তাই নয়
কি? এটা কি মেসির অপমান নয়? ঠিক
তেমনি সত্যের মাপকাঠি ইসলাম
এবং পক্ষান্তরে বিজ্ঞান অপূর্ণাঙ্গ
হওয়া সত্ত্বেও “ইসলাম একটি বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম”
বলাটা মেসির মধ্যে আলফাজের
ছায়া খুঁজে পাওয়ারই নামান্তর। কাফির-নাস্তিক-ইসলামবিদ্বেষীদের
সাথে তর্ক হলে আমরা যেন ডিফেনসিভ
না হয়ে যাই। তাদের কথামত
ইসলামের প্রতিটি বিধানের
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে যেন
ইসলামকে খাট না করি, এ ধরনের উত্তর দিয়ে যেন তাদের এন্টারটেইন
না করি। “বিজ্ঞানের
ভিত্তিতে পরকালের অস্তিত্ব প্রমাণ
করুন” এই কথা শুনে আমরা যেন
আইনস্টাইন-ম্যাক্সওয়েল
ঘেঁটে পরকালের পক্ষে যুক্তি না খুঁজি, বরং তাদের পালটা প্রশ্ন
করি-“আপনি আগে বিজ্ঞানের
ভিত্তিতে পরকালকে অসার প্রমাণ
করুন”।
যুক্তির ভিত্তিতে নয়,
বরং নির্দ্বিধায় আল্লাহ্র হুকুম মেনে নেওয়ার মধ্যেই
আছে সত্যিকারের সাফল্য। আল্লাহ্ আমাদের মাফ করুন ও ঈমানের
সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছানোর সামর্থ্য
দান করুন। পুনরুত্থানে অবিশ্বাসী বস্তুবাদীরা,
যারা বলত : “আমাদের এ পার্থিব জীবনই জীবন,
আমাদেরকে পুনরায় জীবিত
হতে হবে না।” (সুরা আন’আম, ৬ : ২৯) “যেদিন মানুষ প্রত্যক্ষ
করবে যা সে সামনে প্রেরণ
করেছে এবং অবিশ্বাসীরা বলবেঃ হায় !
আফসোস !
আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম !!” (সূরা নাবা,
৭৮ : ৪০) “কারও প্রতি জুলুম
করা হবে না এবং তোমরা যা করবে,
কেবল তারই প্রতিদান
পাবে।” (সুরা ইয়াসীন, ৩৬ : ৫৪)
বিজ্ঞানের সংঘাত নিয়ে অনেকেই
চিন্তিত থাকেন। অনেকে “ইসলাম
একটা বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম”
বুলি আওড়িয়ে থাকেন বটে কিন্তু
সেটা কতটা মন থেকে বলেন, সে প্রশ্ন রয়ে যায়। আমরা নাস্তিকদের
কথাবার্তায় লক্ষ করি তারা প্রায়ই
বিজ্ঞানের আশ্রয় নিয়ে ধর্মকে অসার
প্রমাণের চেষ্টা করে। এখন
কথা হচ্ছে ধর্ম আর
বিজ্ঞানকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রবণতা কেন এবং এ ক্ষেত্রে আমাদের
বিশ্বাসের মানদণ্ড কী হওয়া উচিত। প্রথমত, মানুষের একটা সহজাত
প্রবণতা আছে যে সে যা দেখে-সেটাই
বিশ্বাস করে। “আমি নিজের
চোখে দেখেছি”-বাক্যটা নিজের
কথাকে জাস্টিফাই করার একটা কমন
হাতিয়ার। একটা সহজ উদাহরণ দেওয়া যায়। যেসব ধর্মে মূর্তিপূজার
বিধান আছে তারা যেসব দেবদেবীর
পূজা করে তাদের মূর্তিগুলো মানুষের
মত বা কোন জানোয়ারের মত করেই
নির্মাণ করে। কেন? কারণ মানুষ
কল্পনা করে নেয় আরাধ্য দেবদেবী এইরকমই হবে, যেহেতু
সে নিজের চোখে নিজের দেহের
আকৃতি বা পশুপাখির
আকৃতি ছাড়া অন্যকিছু
দেখতে পাচ্ছে না। নিরাকার
স্রষ্টাকে যদি আকার দিতে চায় তবে মানুষ নিজের চোখের
দৃষ্টিসীমার
মধ্যে যা দেখে তা দিয়েই স্রষ্টার
আকার কল্পনা করতে চায়-মূল
ব্যাপারটা এ ই। এখন চোখের দেখায় যা বোঝা যায়
তার বাইরে কোন মত
গেলে স্বাভাবিকভাবেই
তা মেনে নিতে কষ্ট হয়। অ্যারিস্টটল
যখন বললেন সূর্য পৃথিবীর
চারদিকে ঘোরে, তখন তা নিয়ে লোকে আপত্তি করে নি, কারণ
চোখের দেখায় এটাই সত্য
বলে মনে হয়। কিন্তু কোপারনিকাস
যখন বললেন পৃথিবী সূর্যের
চারদিকে ঘোরে, তখন ঘোর আপত্তি শুরু
হল। কারণ এ কথা মানুষের সহজাত প্রবণতার বিরুদ্ধে যাচ্ছে। কিন্তু
যখন ব্রুনো, গ্যালিলিওরা এর
স্বপক্ষে যুক্তি দিলেন তখন মানুষ
দেরিতে হলেও
সত্যকে মেনে নিতে বাধ্য হল। বিজ্ঞানের রূপ এটাই। বিজ্ঞান
সত্যের অনুসন্ধান করে, সত্যের
মানদণ্ড নির্ধারণ করে না।
অ্যারিস্টটল যা বলেছিলেন তখন
সেটাই ছিল বিজ্ঞান, আজ
আইনস্টাইনের কথাকে আমরা সত্য মানি, কাল হয়তো দেখা যাবে তা ছিল
ভুল। যে জিনিস পরিবর্তনশীল
তা থেকে বিশুদ্ধ জ্ঞান আহরণ সম্ভব
নয়। কাজেই
আল্লাহকে চিনতে হলে দরকার
অপরিবর্তনশীল জ্ঞানের উৎস। কিতাবুল্লাহর দরকার সেই কারণেই
ছিল। তাহলে প্রচলিত বিজ্ঞান কি স্রষ্টার
অস্তিত্ব অস্বীকার করে?
এখানে আমাদের মনে রাখতে হবে,
প্রচলিত বিজ্ঞান যা ই বলুক
সেটা আমাদের কনসার্ন না,
কেননা আমরা কুরআনকে জ্ঞানের বিশুদ্ধতম উৎসরূপে স্বীকার
করে নিয়েছি। তবু
আমরা দেখি বিজ্ঞান
স্রষ্টাকে স্বীকার
করছে কি করছে না। ২ আমরা একটু লক্ষ করলে দেখতে পাব,
বিজ্ঞানীরা যখন বস্তুর কোন ধর্মের
কারণ নির্ণয়ে ব্যর্থ হন তখন
সেটাকে “মৌলিক ধর্ম” বলে প্রচার
করেন। যেমন মহাকর্ষ বল।
মহাবিশ্বের যেকোন দুটি বস্তুর মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ কেন থাকবে,
সেটার যথার্থ কারণ ব্যাখ্যা সম্ভব
হয়নি। আসলে একটা বৈজ্ঞানিক
ঘটনা ব্যাখ্যা করতে গেলে আরেকটির
রেফারেন্স লাগে। সেটার ব্যখ্যায়
লাগে আরেকটির রেফারেন্স। এভাবে শেষ পর্যন্ত একটা জায়গায়
গিয়ে আর ব্যাখ্যা দেওয়া যায়
না বলেই এই “মৌলিক ধর্ম” নামক
টার্মের উৎপত্তি। ক্লাস নাইনের ফিজিক্স
বইয়ে লেখা ছিল পরমাণুর
উৎপত্তি নাকি কত কোটি বছর আগে এক
গ্রহে। আমি আমার এক শিক্ষককে প্রশ্ন
করেছিলাম, তাহলে ঐ
গ্রহটা কী দিয়ে তৈরি ছিল? সেটা কি পরমাণুর তৈরি নয়? আমার
শিক্ষক হেসেছিলেন। আসলে বিজ্ঞান
নিজেকে যতই স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবুক
না কেন, সে একটা গিয়ে থেমে যায়ই।
সে তখনই এসব প্রশ্নের উত্তর
দিতে পারে যখন সে একজন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব স্বীকার
করে নেয়। মৌলিক ধর্মই হোক, আর
পরমাণুই হোক, মূলে গিয়ে একজন মহান
সত্ত্বার সৃষ্টি হিসেবেই
একে মেনে নিতে হবে, নতুবা অবান্তর
সব উত্তর খুঁজে নিয়ে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে হবে। আপনি পৃথিবীর কোন
দেশে গিয়ে যদি দেখেন এমন কোন
নিয়ম সবাই মানছে, যেটা আপনার
দেশে নেই, বুঝতে পারবেন
এটা ওদেশের আইন। যেমন আমাদের
দেশে গাড়ি চলে রাস্তার বামপাশ দিয়ে, আমেরিকায় চলে ডানপাশ
দিয়ে। আপনি বুঝবেন এটা আমেরিকায়
আইন করে দেওয়া হয়েছে, যা সবাই
মানতে বাধ্য। যদি কেউ
আইনটা নির্দিষ্টরূপে তৈরি না করত,
তবে ধনী-গরিব-সাদা- কালো নির্বিশেষে সবাই একই
নিয়মে গাড়ি চালাত না, কখনোই না। তাহলে এবার ভেবে দেখুন, অনেক
বৈজ্ঞানিক সূত্র পৃথিবীর সব বস্তুর
ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
এটা কীভাবে সম্ভব হতে পারে??
যেমন F=ma সূত্র মানুষের
ক্ষেত্রে সত্য, তেমনি একটা লোহার টুকরার ক্ষেত্রেও সত্য।
একটা পিঁপড়াকে পাহাড়ের উপর
থেকে ছেড়ে দিলে সে g ত্বরণে পড়বে,
আবার একটা হাতিকে ফেলে দিলেও
সে একই ত্বরণে পড়বে। কী আশ্চর্য
তাইনা?? এই আইনের কি স্রষ্টা নেই? কোন সে মহান সত্ত্বা যিনি এমন আইন
তৈরি করলেন যা আকৃতি-ওজনে আকাশ-
পাতাল পার্থক্যের হাতি আর
পিঁপড়াকে একই সাথে মানতে বাধ্য
করল? তিনিই কি আল্লাহ নন? বিজ্ঞান সত্যের অনুসন্ধানের
চেষ্টা করে বলে বিজ্ঞানের
ছাত্রদের বেশি সত্যসন্ধানী হওয়ার
কথা। কিন্তু কিছু মূর্খ নিজেদের
অবিশ্বাসকে বিজ্ঞান
দিয়ে ঢাকতে চায়। তারা না বোঝে বিজ্ঞান,
না বোঝে ধর্ম, না বোঝে দর্শন। এদের
সাথে খুব বেশি যুক্তিতর্কে লিপ্ত
হওয়া তাই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
তারা প্রথমে নিজেদের অবিশ্বাসের
পক্ষে যুক্তি দিতে চাইবে। সাধারণত এদের কুযুক্তি বেশিক্ষণ
ধোপে টেকে না। তারপর
তারা ব্যক্তিগত আক্রমণ
করে বসে এবং অপ্রাসংগিক
কথা টেনে গালিগালাজ
করে আপনাকে ট্র্যাক থেকে সরাতে চেষ্টা করে।
আমি একসময় ব্লগিং করা শুরু
করেছিলাম। নাস্তিকদের
সাথে যুক্তি দিতে গিয়ে এই
ব্যাপারগুলো লক্ষ করে সেখান
থেকে সরে আসি। কেননা যে নিজের মত গায়ের জোর
দিয়ে চাপাতে চাইবে আর অশালীন
কথা বলে প্রসঙ্গ
পাল্টাতে চাইবে তাদের
সাথে বেশিক্ষণ যুক্তি দেওয়া কেবল
সময়ের অপচয়, অন্তত আমি তা ই বিশ্বাস করি। ৩ এবার আসি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
আলোচনায়। বিজ্ঞান ও ধর্মের
তর্কে আমাদের অবস্থান কী হবে? আমরা জানি কিছুদিন
আগে জগদ্বিখ্যাত
পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন
হকিং স্রষ্টাকে অস্বীকার
করে বসলেন। তিনি বললেন-পরকাল
বলতে কিছু নেই, এটা রূপকথা মাত্র। এই নিয়ে আমাদের দেশের অনেক
মুসলিমের মধ্যে হা-হুতাশ শুরু হল।
অতবড় বিজ্ঞানী এমন মারাত্মক ভুল
কী করে করলেন-অনেকের বোধগম্য হল
না। ব্যাপারটা খুব সহজ। আপনি সত্যের
সন্ধান কতটুকু পাচ্ছেন তা নির্ভর
করছে আপনার জ্ঞান আহরণের উৎস কী।
এখন বিজ্ঞানীরা ততক্ষণ পর্যন্ত কোন
বিষয়কে স্বীকার করে নেবেন
না যতক্ষন এর স্বপক্ষে প্রমাণ না পান। (যদিও ডারউইনবাদ মূলত
অনুমানের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত
হয়েছিল বলে জানা যায়)।
এখন হকিং সাহেব তার দীর্ঘ
জীবনে পরকালের অস্তিত্বের কোন
প্রমাণ পান নি বলে তিনি একে বিশ্বাস
করতে না ই পারেন। এতে খুব
বেশি অবাক হওয়ার কোন কারণ
আমি দেখি না। আমরা স্রষ্টার অস্তিত্বকে কোন
বৈজ্ঞানিকের কথায় মেনে নেই নি।
ইসলামের জ্ঞান এসেছে রিসালাতের
ধারার মাধ্যমে, কোন সায়েন্স
জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধের
সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নয়। কাজেই জ্ঞানের উৎসের ক্ষেত্রেই হকিং ও
আমাদের মধ্যে একটা বিরাট পার্থক্য
হয়ে যাচ্ছে।
এতে করে সিদ্ধান্তে যে ভিন্নতা থাকবে,
তা খুবই স্বাভাবিক। প্রশ্ন হল বিশুদ্ধতম উৎসের প্রয়োজন
কেন হল। এখানে আমাদের
মনে রাখতে হবে, বিজ্ঞান হল
স্বতঃলব্ধ জ্ঞান। একটা গাড়ির
চাকা কীভাবে বানালে গাড়িটা দ্রুত
চলবে সেটার জন্য মানুষ তার নিজের জ্ঞানবুদ্ধি ও যুক্তি ব্যবহার
করে নানা পরীক্ষানিরীক্ষার
মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছায়।
কিন্তু স্রষ্টার স্বরূপের ক্ষেত্রেও
যদি মানুষ নিজের
বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে যেত তবে কখনোই সে পূর্ণ ধারণা পেত না।
তাই সে জ্ঞানের জন্য স্বতঃলব্ধতা নয়
বরং স্রষ্টার নিজের প্রেরিত
জ্ঞানের প্রয়োজন ছিল। আর
সে কারণেই রিসালাতের ধারার
সূচনা। যেহেতু স্বতঃলব্ধ জ্ঞান মানসিকতার সাথে পরিবর্তন হয়, তাই
বিজ্ঞানের পরিবর্তনশীলতা চলমান।
কিন্তু স্রষ্টার জ্ঞান শুরু থেকেই পূর্ণ,
তাই তাঁর প্রেরিত জ্ঞানের পরিবর্তন
মানুষের সাধ্যের বাইরে। তাহলে কি স্রষ্টার বিধান
অপরিবর্তনীয়? না, অপরবর্তনীয় নয়।
এখন স্রষ্টার জ্ঞান পূর্ণ হলেও
বিশুদ্ধতম জ্ঞান আহরণের সামর্থ্য সব
যুগের মানুষের সমান ছিল না। তাই
ভিন্নভিন্ন যুগের বিধান এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যা সেই
যুগের মানুষের জন্য উপযুক্ত ছিল। আদম
(আ) এর সময়ের মানুষের
কাছে যদি ইনযিল বা কুরআন নাযিল
হত তবে তারা সেটা অনুধাবন
করতে সমর্থ হত না। তাই মানুষের মানসিক বিকাশ যত বেড়েছে,
রিসালাতের ধারার জ্ঞান ও বিধান
তত আপগ্রেডেড হয়েছে। এই ধারার
সমাপ্তি কুরআনের মাধ্যমে,
যেটা পূর্ণাঙ্গ এবং তাই
ইসলামী শরীয়াহ এর এক্সপায়ারি ডেট আল কিয়ামাহ।
রিসালাতের ধারার
পরিপূর্ণতা দানের মাধ্যমে ইসলামের
বিধানের পরিবর্তনশীলতা রহিত
হয়ে গেছে। তদ্রুপ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, রাজনীতি,
রাষ্ট্রব্যবস্থা, পররাষ্ট্রনীতিসহ
যাবতীয় তাত্ত্বিক বিষয়ে মানুষের
স্বতঃলব্ধ জ্ঞানের প্রয়োগ
রিসালাতের ধারার মাধ্যমে বন্ধ
করা হয়েছে। কেননা এইসকল বিষয়ে মানুষ নিজের জ্ঞান-
বুদ্ধি দ্বারা তত্ত্ব আবিষ্কারে মগ্ন
হলে তা মানবজাতির জন্য প্রভূত
অকল্যাণ নিয়ে আসবে। যুদ্ধ-বিগ্রহ আর
হানাহানির মূলে আছে মানুষের এই
বিশুদ্ধতম জ্ঞানের উৎসকে অবহেলা করা। ইসলামের
অর্থনীতিকে গ্রহণ না করায় উদ্ভুত
পুঁজিবাদী ব্যবস্থার শোষণ
আমরা বিশ্বজুড়ে আজ প্রত্যক্ষ করছি।
ইসলামের রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ
না করায় সাম্রাজ্যবাদের করাল গ্রাসের স্বীকার আজ মানবজাতি। এর
মূল কারণ একটাই, নিজেদের অপূর্ণাঙ্গ
জ্ঞানের উপর অতিনির্ভরশীলতা।
আল্লাহ্ যে বিধান দিয়েছেন, তার
মধ্যেই কল্যাণ আছে-এ বিশ্বাসটুকু
করতে না পারা। ৪ এতক্ষণ আলোচনায় আমরা এটাই
বোঝাতে চেষ্টা করলাম, আল্লাহ্র
থেকে আগত জ্ঞান পূর্ণ, আর মানুষের
স্বতঃলব্ধ জ্ঞান অপরিপূর্ণ। আমাদের
মনে রাখতে হবে যে, ইসলামের
ভিত্তি যুক্তি নয়; বিজ্ঞান নয়, বিশ্বাস। কাজেই বিজ্ঞান
বা যুক্তি ইসলামের পক্ষে যাক
বা যাক, সেসবকে আমরা কেয়ার
করি না। এটাই ঈমানের প্রথম
এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কথা। রাসূল (সা) এর মিরাজের
ঘটনা অবিশ্বাসীরা এককালে ‘অবাস্তব’
বলে উড়িয়ে দিলেও আইনস্টাইনের
থিওরি অফ রিলেটিভিটি আজ এই
ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দাঁড়
করাতে সমর্থ হয়েছে। তার মানে এই না যে, আধুনিক বিজ্ঞান এই
ঘটনাকে প্রমাণ করতে ব্যর্থ
হলে আমরা তাতে বিশ্বাস আনতাম না।
আগেই বলেছি, ইসলামের
ভিত্তি বিজ্ঞান নয়, বিশ্বাস। আবু
বক্বর (রা) কে মক্কার কাফিররা মিরাজের ঘটনার উল্লেখ
করে বলল-“এখন কি তুমি এই অবাস্তব
গাঁজাখুরি কাহিনীও বিশ্বাস
করবে??” আবু বক্বর কিন্তু
বলেননি-“নিশ্চয়ই এর পেছনে কোন
যুক্তি আছে”, তিনি বলেছেন-“রাসূল (সা) যদি এই কথা বলে থাকেন,
তবে আমি তা বিশ্বাস করলাম”। এটাই ঈমানের মূল কথা। আমরা যেন
আল্লাহ্র বিধানকে নিজেদের মত
করে প্রমাণের
চেষ্টা করে না বলি-“এটা যুক্তিযুক্ত
কাজেই আমি বিশ্বাস করলাম”।
বরং আমরা বলব-“আল্লাহ বলেছেন কাজেই এটা শতভাগ সঠিক, এর
পেছনে যুক্তি খুঁজে পাই আর না ই
পাই”। ইসলামের ভিত্তি যদি বিজ্ঞানই হত
তাহলে মিরাজের বৈজ্ঞানিক
ব্যাখ্যা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার
সাথে সাথে এর উপরে কাফিররা ঈমান
আনত, তাই নয় কি? কিন্তু তবু
ওরা বলবে, ওই বোরাক আবার কীরকম জন্তু !! অমনটা তো কোনদিন দেখিনি !! লেখার শুরুতে বলেছিলাম, মানুষ
সাধারণত চোখে যা দেখে তা ই
বিশ্বাস করতে চায়। সে বোরাকের মত
কোন জন্তু দেখেনি বলে তা বিশ্বাস
করতে চায় না। সে জান্নাত-
জাহান্নাম দেখেনি বলে তা বিশ্বাস করতে চায় না। এখন
চিন্তা করে দেখুন,
ম্যাজিশিয়ানরা স্টেজে যে ম্যাজিক
দেখায়, তার আড়ালে কত কৌশল থাকে,
যা আমরা চোখে দেখে বুঝতে পারি না।
কিন্তু আমরা জানি এর পেছনে কোন কৌশল আছে, তাই কোন ম্যাজিক
দেখে অভিভূত হলেও আমরা বলি-“এর
পেছনে কোন মারাত্মক
চালাকি আছে নিশ্চয়ই”। অথচ সেই আমরাই যখন আল্লাহ্র কোন
বিধান মনঃপূত হয় না তখন
সেটাকে বিজ্ঞানের অপূর্ণ জ্ঞানের
কষ্ঠিপাথরে যাচাই করতে বসি, অথচ
এটা ভাবতে পারি না-“আল্লাহ যখন
বলেছেন এর পেছনে নিশ্চয়ই কল্যাণ আছে”, যে কথা ম্যাজিশিয়ানের
ক্ষেত্রে ভেবে থাকি। অর্থাৎ
আমরা আল্লাহ্র
কৌশলকে ম্যাজিশিয়ানের কৌশলের
চেয়ে কম শক্তিধর ভেবে বসছি !! কত
মূর্খ আমরা, ভাবতে পারেন?? আর নিজের চোখে না দেখা জিনিস
বিশ্বাস না করা মানে চরম
অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দেওয়া। ম্যাজিক
দেখতে স্টেজে উঠে প্রতিনিয়ত
বিভ্রান্ত হয় মানুষ, চোখের
দৃষ্টি আড়ালের কলাকৌশলকে ধরতে পারে না, সেই
মানুষ কিভাবে এই দুর্বল
দৃষ্টিকে জ্ঞানের উৎস
হিসেবে স্বীকার করতে পারে !! আমাদের অনেকেরই
প্রবণতা আছে ইসলামের
বিধানকে প্রচলিত বিজ্ঞান
দ্বারা ব্যাখ্যা করে একে “বিজ্ঞানসম্মত”
বলে প্রচার করা। এ স্বভাব বর্জনীয়।
কারণ এতে দুটো বড় সমস্যা আছে। প্রথমত, ইসলামের বিধানকে বিজ্ঞান
দিয়ে ব্যাখ্যা করে সেটাকে “যুক্তিযুক্ত”
বলার
মানে হচ্ছে পরোক্ষভাবে ইসলামকে অপূর্ণ
বলে স্বীকার করা। কেননা বিজ্ঞান
একটা অপূর্ণ বিষয়, আর একটা অপূর্ণাঙ্গ বিষয়
দিয়ে একটা পূর্ণাঙ্গ বিষয়ের
ব্যাখ্যা করা মানে পূর্ণাঙ্গ
বিষয়টাকে অপমান করা। দ্বিতীয়ত, ইসলামের
প্রতিটি বিধানকে বিজ্ঞানের আওতায়
আনার চেষ্টা করার অভ্যাস
হয়ে গেলে হঠাৎ একটা বিধান
প্রচলিত বিজ্ঞানের তত্ত্বের
সাথে খাপ না খেলে সে বিধানের ব্যাপারে একটা সংশয় চলে আসবে,
যা ঈমানের একটা মারাত্মক ত্রুটি। কাফিররা আমাদের কাছে ঠিক এটাই
চায়। তারা চায় ধর্ম পালনের
ক্ষেত্রে আমরা যেন
বিজ্ঞানকে সত্যের মানদণ্ড
ধরে ইসলামকে বিজ্ঞান দিয়ে বোঝার
চেষ্টা করি, যাতে বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে কোন বিধান
বোধগম্য
না হলে আমরা সেটাকে ছুড়ে ফেলে দিই
(নাঊযুবিল্লাহ)।
সেক্ষেত্রে তারা অনেকটা সফল। তাই
দেখা যায় পাঁচওয়াক্ত নামাযের খবর না থাকলেও হিজাব কেন
“বিজ্ঞানসম্মত” সে কথা প্রমাণে আজ
মুসলিমরা ব্যস্ত। তেমনি কাফিরদের
আবিষ্কৃত “গণতন্ত্র”, “পুঁজিবাদ”,
“ধর্মনিরপেক্ষতা”
ইত্যাদিকে “বিজ্ঞানসম্মত” বলে মেনে নিয়ে আল্লাহ্র দ্বীন
থেকে দূরে সরে গিয়ে তাদের
গোলামি করছি। যেহেতু ইসলাম পূর্ণ আর বিজ্ঞান
অপূর্ণ, তাই ইসলামের
ক্ষেত্রে “বিজ্ঞানসম্মত”
কথাটা অর্থহীন। “বিজ্ঞানসম্মত”
মানে বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত।
এখন কথা হল যেটা নিজেই অপূর্ণ সেটা একটা পূর্ণ বিষয়কে প্রমাণ
করার কে? ইসলামকে “বিজ্ঞানসম্মত”
বলা মানে কি ইসলামের
জাস্টিফিকেশনের ভারটা বিজ্ঞানের
উপর ন্যাস্ত করা হয়ে যায় না??? একটা উদাহরণ দেই। আলফাজ
বাংলাদেশের একজন ফুটবলার। কথিত
আছে, এক ধারাভাষ্যকার
বলেছিলেন-“মেসির মধ্যে আলফাজের
ছায়া খুঁজে পাই”।
কথাটা ব্যাপক হাস্যরসিকতার উদ্ভব করেছিল। কেন? কারণ আলফাজের
চেয়ে মেসি অনেক উচুমানের
খেলোয়াড় কাজেই
মানদণ্ডটা আলফাজের খেলা না,
মেসির খেলাই হওয়া উচিত।
ভাষ্যকারের কথাটা এমন মিন করে-“আলফাজের মত হওয়ার
পথে এগিয়ে যাচ্ছেন মেসি” তাই নয়
কি? এটা কি মেসির অপমান নয়? ঠিক
তেমনি সত্যের মাপকাঠি ইসলাম
এবং পক্ষান্তরে বিজ্ঞান অপূর্ণাঙ্গ
হওয়া সত্ত্বেও “ইসলাম একটি বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম”
বলাটা মেসির মধ্যে আলফাজের
ছায়া খুঁজে পাওয়ারই নামান্তর। কাফির-নাস্তিক-ইসলামবিদ্বেষীদের
সাথে তর্ক হলে আমরা যেন ডিফেনসিভ
না হয়ে যাই। তাদের কথামত
ইসলামের প্রতিটি বিধানের
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে যেন
ইসলামকে খাট না করি, এ ধরনের উত্তর দিয়ে যেন তাদের এন্টারটেইন
না করি। “বিজ্ঞানের
ভিত্তিতে পরকালের অস্তিত্ব প্রমাণ
করুন” এই কথা শুনে আমরা যেন
আইনস্টাইন-ম্যাক্সওয়েল
ঘেঁটে পরকালের পক্ষে যুক্তি না খুঁজি, বরং তাদের পালটা প্রশ্ন
করি-“আপনি আগে বিজ্ঞানের
ভিত্তিতে পরকালকে অসার প্রমাণ
করুন”।
যুক্তির ভিত্তিতে নয়,
বরং নির্দ্বিধায় আল্লাহ্র হুকুম মেনে নেওয়ার মধ্যেই
আছে সত্যিকারের সাফল্য। আল্লাহ্ আমাদের মাফ করুন ও ঈমানের
সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছানোর সামর্থ্য
দান করুন। পুনরুত্থানে অবিশ্বাসী বস্তুবাদীরা,
যারা বলত : “আমাদের এ পার্থিব জীবনই জীবন,
আমাদেরকে পুনরায় জীবিত
হতে হবে না।” (সুরা আন’আম, ৬ : ২৯) “যেদিন মানুষ প্রত্যক্ষ
করবে যা সে সামনে প্রেরণ
করেছে এবং অবিশ্বাসীরা বলবেঃ হায় !
আফসোস !
আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম !!” (সূরা নাবা,
৭৮ : ৪০) “কারও প্রতি জুলুম
করা হবে না এবং তোমরা যা করবে,
কেবল তারই প্রতিদান
পাবে।” (সুরা ইয়াসীন, ৩৬ : ৫৪)