Forums.Likebd.Com

Full Version: কবে শেষ হবে কোম্পানির প্রচার?
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
‘৩০০ টাকার একটি এনার্জি বাল্ব মাত্র ১০০ টাকা। বাজারে কিনতে গেলে ৩০০ টাকা, আমাদের কাছে পাচ্ছেন মাত্র ১০০ টাকায়। শুধুমাত্র কোম্পানির প্রচারের জন্য। সাথে পাচ্ছেন ছয় মাসের ওরেন্টি।’ ঢাকায় থাকেন অথচ এ সংলাপগুলো শোনেননি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক ফান পেইজেও এ এনার্জি বাল্ব নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক ট্রল। ‘কোহলি-ওয়ার্নাররা নাকি বাংলাদেশে আসবেন শুধুমাত্র স্টার এনার্জি বাল্ব কেনার জন্য। কারণ, একমাত্র এ দেশেই ৩০০ টাকার এনার্জি বাল্ব পাওয়া যায় মাত্র ১০০ টাকায়। শুধুমাত্র কোম্পানির প্রচারের জন্য।’

প্রায় তিন থেকে চার বছর আগে রাজধানী ঢাকায় শুরু হয় ন্যাশনাল কোম্পানির এনার্জি বাল্বের প্রচার। যা আজ ছড়িয়ে গেছে বিভাগীয় শহরগুলো থেকে জেলা শহর পর্যন্ত। শুধু রাজধানী ঢাকাতেই কয়েক হাজার বিক্রয় কর্মী আছেন, যারা এ এনার্জি বাল্ব বিক্রয় করেন। প্রায় সবার মনেই প্রশ্ন, কোম্পানির এ প্রচার শেষ হবে কবে?

তবে, এ প্রশ্নের উত্তর জানেন না বিক্রয়কর্মীরা। কারণ, বিক্রয়কর্মীদের বড় একটা অংশই বেতনভুক্ত কর্মচারী। আর বাকি যারা আছেন তারা শুধু ব্যবসার প্রয়োজনেই বিক্রি করেন এ বাল্ব। অন্যদিকে, বাল্বের মোড়কে কোম্পানির নির্দিষ্ট কোন ঠিকানা বা যোগাযোগের নাম্বার না থাকায় কোম্পানিরর সঙ্গেও নেই কোন যোগাযোগের ব্যবস্থা।

অবশেষে উত্তর মেলে মিরপুর-১ এর ব্যবসায়ী জয়নুল আবেদিনের কাছে। তার অধীনে চাকরি করেন তিনজন বিক্রয়কর্মী। জয়নুল আবেদিন জানান, কোন প্রচার নয়, ব্যবসায়ের জন্যই এ এনার্জি বাল্ব বিক্রি। তার সহজ উত্তর, ‘যতদিন মানুষের প্রয়োজন হবে ততদিন এভাবে চলবে বিক্রি।’

তিনি জানান, প্রথমে ‘ন্যাশনাল কোম্পানি’ নামে একটি কোম্পানি তাদের পন্য ‘স্টার এনার্জি বাল্ব’ নিয়ে এ প্রচার ব্যবসা শুরু করে। এ ব্যবসার সাফল্য দেখে আরো কয়েকটি কোম্পানিও ‘স্টার এনার্জি বাল্ব’ নামে এনার্জি বাল্ব নিয়ে আসে বাজারে। বাজারে এখন প্রায় ১৫০টি এমন প্রতিষ্ঠান আছে যারা এ এনার্জি বাল্ব তৈরি করে।

জয়নুল জানান, চীন থেকে এনার্জি বাল্বের বিভিন্ন অংশ আমদানি করে দেশে করা হয় একত্রীকরণ। আর এ জন্য গুলিস্তানের কাপ্তান বাজারের এরশাদ মার্কেট বিখ্যাত। প্রায় সবগুলো প্রতিষ্ঠানই এখানে। বাল্বের বিভিন্ন অংশ একত্রীকরণ থেকে শুরু করে মোড়কজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ সবই হয় এ মার্কেটে।

জয়নুলের মত ব্যবসায়ীরা এরশাদ মার্কেট থেকে এসব এনার্জি বাল্ব পাইকারি কিনে বেতনভুক কর্মীদের দ্বারা বিক্রি করান। আবার অনেক বিক্রয়কর্মী সরাসরি সংগ্রহ করে এরশাদ মার্কেট থেকে। ১০০ টাকায় বিক্রি করা প্রতিটি বাল্ব পাইকারি কেনা হয় ৭০ টাকা দামে। অনেক প্রতিষ্ঠান এরইমধ্যে নিয়ে এসেছে এলইডি বাল্বও। প্রতিটি এলইডি বাল্ব বিক্রয় করা হয় ৩০০ টাকা দামে, যার কেনা দাম মাত্র ১৫০ টাকা। কোম্পানি বেশি থাকায় আছে বাজারে টিকে থাকার প্রতিযোগিতা। তাই কোম্পানি ভেদে আছে সুযোগ-সুবিধার তারতম্য।

জয়নুল বলেন, কিছু কোম্পানি আছে যারা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভাঙ্গা ও নষ্ট বাল্ব ফেরত নেয়। তাই ঝুকি কম থাকায় এসব কোম্পানির পণ্যই বিক্রি করেন তিনি।

শুধু ব্যবসার জন্য বিক্রি করলেও কেন প্রচারে এ রেকর্ড বাজানো হয়? -এমন প্রশ্নের জবাবে জয়নুল আবেদিন জানান, খরচের জন্য নতুন রেকর্ড কেউ করতে চায় না। এ ছাড়া বিক্রয়কেন্দ্রে বাজানো রেকর্ডে যদিও বলা হয় ‘দোকানে কিনতে গেলে ৩০০ টাকা’, তবে কোন দোকানেই ৩০০ টাকায় বিক্রি হয় না এ বাল্ব।