02-28-2017, 11:53 PM
আমাদের আধুনিক মানব সভ্যতার উন্মেষের সময় থেকেই মানুষ ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা শুরু করেছে। কিছু ভাইরাস ঘটিত রোগকে টিকা এবং ঔষধের মাধ্যমে প্রতিরোধ ও নিরাময় করা যায়। স্মলপক্সকে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কথা আমরা সবাই জানি। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে জয়ী হতে হলে আরো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে আমাদের।
Ebola Zaire সম্প্রতি মহামারি সৃষ্টি করেছে। এর দ্বারা আক্রান্ত ৯০ শতাংশ মানুষই মৃত্যুবরণ করেছে। এটি ইবোলা পরিবারের সবচেয়ে মারাত্মক প্রজাতি। বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজির সহযোগী অধ্যাপক এবং ইবোলা ভাইরাস বিশেষজ্ঞ এলকে মোহলবার্গার বলেন, ‘এটি আরো খারাপ হতে পারত’।
কিন্তু এমন আরো কিছু ভাইরাস আছে যা প্রাণের সংশয় সৃষ্টিকারী এবং এর চেয়েও মারাত্মক হতে পারে। এমন ৮ টি মারাত্মক ভাইরাসের বিষয়েই জানবো আজকের ফিচারে।
১। মারবারগ ভাইরাস
বিজ্ঞানীরা ১৯৬৭ সালে মারবারগ ভাইরাস শনাক্ত করেন, যখন জার্মানির ল্যাবরেটরির শ্রমিকদের মধ্যে প্রাদুর্ভাব হতে দেখা যায় উগান্ডা থেকে আমদানিকৃত বানরের দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার ফলে। মারবারগ ভাইরাস ও ইবোলার মতোই হিমোরেজিক ফিভার সৃষ্টি করে, অর্থাৎ সংক্রমিত মানুষের মধ্যে উচ্চমাত্রার জ্বর এবং শরীরে রক্তপাত হয় যার ফলে পক্ষাঘাত হয় এবং মৃত্যু হয়।
২। ইবোলা ভাইরাস
১৯৭৬ সালে প্রথম ইবোলার প্রাদুর্ভাব হয় সুদান এবং কঙ্গোতে। সংক্রমিত মানুষ বা জীবজন্তুর রক্ত বা শরীরের অন্য কোন তরল বা টিস্যুর দ্বারা এটি অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে পরে। ইবোলার একটি প্রজাতি ইবোলা রেস্টোন মানুষকে অসুস্থ করেনা। কিন্তু WHO এর মতে, এর বান্ডিবাগিও প্রজাতিটির দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণের কারণে মৃত্যু হার ৫০ শতাংশের বেশি এবং এর সুদান প্রজাতিটির দ্বারা মৃত্যু হার ৭১ শতাংশ।
৩। র্যাবিস
যদিও ১৯২০ সালে পোষা প্রাণীর টিকা র্যাবিস এর সাথে পরিচয় ঘটে মানুষের যা সারা পৃথিবীতে এর ছড়িয়ে যাওয়া রোধ করে। এটি এখনো আফ্রিকার কিছু অংশে এবং ভারতে মারাত্মক সমস্যা।
মোহলবার্গার বলেন, ‘এটি মস্তিষ্ককে ধ্বংস করে দেয় এবং এটি সত্যিই মারাত্মক একটি রোগ’। তিনি বলেন, ‘র্যাবিসের টিকা আছে আমাদের এবং আমাদের অ্যান্টিবডি আছে যা র্যাবিসের বিরুদ্ধে কাজ করে’। তাই কেউ যদি ক্ষিপ্র জীবজন্তুর কামড় খায় তাহলে তাকে নিরাময় করা সম্ভব। তিনি এটাও বলেন যে, যদি আপনি চিকিৎসা গ্রহণ না করেন তাহলে আপনার মৃত্যু হওয়ার ১০০% সম্ভাবনা আছে।
৪। এইচআইভি
বর্তমান যুগের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি হল এইচআইভি। ইনফেকশিয়াস ডিজিজ সোসাইটি অফ আমেরকার মুখপাত্র এবং সংক্রামক রোগের চিকিৎসক ডা. অ্যামেশ অ্যাডালজা বলেন, ‘এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় খুনি’।
১৯৮০ সালে এই রোগটি শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৬ মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরণ করে। অ্যাডালজা বলেন, মানবতার উপর সবচেয়ে বড় আঘাত হানছে এই সংক্রামক রোগটি। শক্তিশালী অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ ব্যবহার করে এইচআইভি নিয়েও কয়েক বছর বেঁচে থাকা যায়।
৫। হান্টাভাইরাস
১৯৯৩ সালে প্রথম দৃষ্টিগোচর হয় হান্টাভাইরাস পালমোনারি সিনড্রোম (HPS)। আমেরিকায় ৬০০ মানুষের মধ্যে HPS এর সংক্রমণ হতে দেখা যায় এবং এদের মধ্যে ৩৬ শতাংশের মৃত্যু হয়। এই ভাইরাসটি একজন থেকে আরেকজনে সংক্রমিত হয়না। বরং সংক্রমিত ইঁদুরের মল দ্বারা সংক্রমণ ছড়িয়ে পরে।
৬। ইনফ্লুয়েঞ্জা
সবচেয়ে মারাত্মক ফ্লু সৃষ্টিকারী ভাইরাস হচ্ছে স্প্যানিশ ফ্লু। ১৯১৮ সালে এটি পৃথিবীর জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষকে অসুস্থ করে তোলে। প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়।
৭। ডেঙ্গু
১৯৫০ সালে ফিলিপাইন এবং থাইল্যান্ড এ ডেঙ্গু ভাইরাসটি প্রকাশিত হয়। তখন থেকেই এটি বিশ্বের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে পরে এটি। পৃথিবীর জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষই বাস করে ডেঙ্গু উপদ্রুত এলাকায়। এই ভাইরাসটি ছড়ায় মশার মাধ্যমে। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর টিকা আবিস্কার হয়নি।
৮। রোটা ভাইরাস
রোটা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শিশুদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য ২ টি টিকা রয়েছে। এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পরে এবং এর দ্বারা আক্রান্ত হলে মারাত্মক ডায়রিয়া হয় ছোট শিশুদের। WHO এর মতে, ২০০৮ সালে ৫ বছরের কম বয়সের ৪,৫৩,০০০ শিশু মারা যায় রোটাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে। টিকা আবিস্কারের পরে সংক্রমণের হার কমে এসেছে।
Ebola Zaire সম্প্রতি মহামারি সৃষ্টি করেছে। এর দ্বারা আক্রান্ত ৯০ শতাংশ মানুষই মৃত্যুবরণ করেছে। এটি ইবোলা পরিবারের সবচেয়ে মারাত্মক প্রজাতি। বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজির সহযোগী অধ্যাপক এবং ইবোলা ভাইরাস বিশেষজ্ঞ এলকে মোহলবার্গার বলেন, ‘এটি আরো খারাপ হতে পারত’।
কিন্তু এমন আরো কিছু ভাইরাস আছে যা প্রাণের সংশয় সৃষ্টিকারী এবং এর চেয়েও মারাত্মক হতে পারে। এমন ৮ টি মারাত্মক ভাইরাসের বিষয়েই জানবো আজকের ফিচারে।
১। মারবারগ ভাইরাস
বিজ্ঞানীরা ১৯৬৭ সালে মারবারগ ভাইরাস শনাক্ত করেন, যখন জার্মানির ল্যাবরেটরির শ্রমিকদের মধ্যে প্রাদুর্ভাব হতে দেখা যায় উগান্ডা থেকে আমদানিকৃত বানরের দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার ফলে। মারবারগ ভাইরাস ও ইবোলার মতোই হিমোরেজিক ফিভার সৃষ্টি করে, অর্থাৎ সংক্রমিত মানুষের মধ্যে উচ্চমাত্রার জ্বর এবং শরীরে রক্তপাত হয় যার ফলে পক্ষাঘাত হয় এবং মৃত্যু হয়।
২। ইবোলা ভাইরাস
১৯৭৬ সালে প্রথম ইবোলার প্রাদুর্ভাব হয় সুদান এবং কঙ্গোতে। সংক্রমিত মানুষ বা জীবজন্তুর রক্ত বা শরীরের অন্য কোন তরল বা টিস্যুর দ্বারা এটি অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে পরে। ইবোলার একটি প্রজাতি ইবোলা রেস্টোন মানুষকে অসুস্থ করেনা। কিন্তু WHO এর মতে, এর বান্ডিবাগিও প্রজাতিটির দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণের কারণে মৃত্যু হার ৫০ শতাংশের বেশি এবং এর সুদান প্রজাতিটির দ্বারা মৃত্যু হার ৭১ শতাংশ।
৩। র্যাবিস
যদিও ১৯২০ সালে পোষা প্রাণীর টিকা র্যাবিস এর সাথে পরিচয় ঘটে মানুষের যা সারা পৃথিবীতে এর ছড়িয়ে যাওয়া রোধ করে। এটি এখনো আফ্রিকার কিছু অংশে এবং ভারতে মারাত্মক সমস্যা।
মোহলবার্গার বলেন, ‘এটি মস্তিষ্ককে ধ্বংস করে দেয় এবং এটি সত্যিই মারাত্মক একটি রোগ’। তিনি বলেন, ‘র্যাবিসের টিকা আছে আমাদের এবং আমাদের অ্যান্টিবডি আছে যা র্যাবিসের বিরুদ্ধে কাজ করে’। তাই কেউ যদি ক্ষিপ্র জীবজন্তুর কামড় খায় তাহলে তাকে নিরাময় করা সম্ভব। তিনি এটাও বলেন যে, যদি আপনি চিকিৎসা গ্রহণ না করেন তাহলে আপনার মৃত্যু হওয়ার ১০০% সম্ভাবনা আছে।
৪। এইচআইভি
বর্তমান যুগের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি হল এইচআইভি। ইনফেকশিয়াস ডিজিজ সোসাইটি অফ আমেরকার মুখপাত্র এবং সংক্রামক রোগের চিকিৎসক ডা. অ্যামেশ অ্যাডালজা বলেন, ‘এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় খুনি’।
১৯৮০ সালে এই রোগটি শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৬ মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরণ করে। অ্যাডালজা বলেন, মানবতার উপর সবচেয়ে বড় আঘাত হানছে এই সংক্রামক রোগটি। শক্তিশালী অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ ব্যবহার করে এইচআইভি নিয়েও কয়েক বছর বেঁচে থাকা যায়।
৫। হান্টাভাইরাস
১৯৯৩ সালে প্রথম দৃষ্টিগোচর হয় হান্টাভাইরাস পালমোনারি সিনড্রোম (HPS)। আমেরিকায় ৬০০ মানুষের মধ্যে HPS এর সংক্রমণ হতে দেখা যায় এবং এদের মধ্যে ৩৬ শতাংশের মৃত্যু হয়। এই ভাইরাসটি একজন থেকে আরেকজনে সংক্রমিত হয়না। বরং সংক্রমিত ইঁদুরের মল দ্বারা সংক্রমণ ছড়িয়ে পরে।
৬। ইনফ্লুয়েঞ্জা
সবচেয়ে মারাত্মক ফ্লু সৃষ্টিকারী ভাইরাস হচ্ছে স্প্যানিশ ফ্লু। ১৯১৮ সালে এটি পৃথিবীর জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষকে অসুস্থ করে তোলে। প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়।
৭। ডেঙ্গু
১৯৫০ সালে ফিলিপাইন এবং থাইল্যান্ড এ ডেঙ্গু ভাইরাসটি প্রকাশিত হয়। তখন থেকেই এটি বিশ্বের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে পরে এটি। পৃথিবীর জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষই বাস করে ডেঙ্গু উপদ্রুত এলাকায়। এই ভাইরাসটি ছড়ায় মশার মাধ্যমে। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর টিকা আবিস্কার হয়নি।
৮। রোটা ভাইরাস
রোটা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শিশুদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য ২ টি টিকা রয়েছে। এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পরে এবং এর দ্বারা আক্রান্ত হলে মারাত্মক ডায়রিয়া হয় ছোট শিশুদের। WHO এর মতে, ২০০৮ সালে ৫ বছরের কম বয়সের ৪,৫৩,০০০ শিশু মারা যায় রোটাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে। টিকা আবিস্কারের পরে সংক্রমণের হার কমে এসেছে।