Forums.Likebd.Com

Full Version: ময়না দিঘী
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
★★ ময়না দিঘী ★★
লেখক...মিফতাউল ইসলাম
মুরুব্বিদের মুখে শুনা ময়না দিঘীর কিছু
কাহিনী। সঠিক ভাবে কারোর মনে নেই, হয়ত
কয় একশ বছর আগের কাহিনী। খুলনার কোনো
এক জায়গায় এক ব্যক্তি কিছু মানুষ দিয়ে বড়
একটা দিঘী খনোন করে। দিঘীটির নাম রাখে
ময়না দিঘী। তার স্ত্রীর নামে। কিন্তু দূর ভাগ্য
বসতো দিঘীতে পানি উঠিনি। দিঘীতে খাল
অথবা নদী থেকে পানি এনে দিলে তাও
শুকিয়ে যেতো। হঠাৎ কোনো একদিন রাত্রে ঐ
ব্যক্তি স্বপ্ন দেখে যে তার স্ত্রী যদি
দিঘীতে নামে তবে দিঘী পানিতে ভরে
উঠবে। পর দিন সকালে ঐ ব্যক্তি গ্রামের কিছু
মুরুব্বিদের উনার স্বপ্নে দেখার কথা
জানালেন। ঐ ব্যক্তির স্বপ্নের কথা শুনে
গ্রামের মুরুব্বিরা মত দিলেন যে আগামী কাল
শুক্রবার তার স্ত্রী কে দিঘীতে নামানোর। পর
দিন শুক্রবারে গ্রামের মুরুব্বীরা সহ সবাই
সকালে দিঘীর পাহাড়ে এসে দাঁড়ালেন। পরে
ঐ ব্যক্তির স্ত্রী কে এনে দিঘীতে নামিয়ে
দেওয়া হয়। একটি কথা বলতে ভুলে গিয়েছি।
তার স্ত্রীর একটি ছেলে সন্তান আছে।
ছেলেটির বয়স ২/৩ মাস হবে। তার স্ত্রীকে
দিঘীতে নামিয়ে দেওয়ার কিছু পরে দিঘীতে
পানি উঠতে লাগলো। এক পর্যায় তার স্ত্রীর
মাঝা পর্যন্ত পানি উঠে গেলো। গ্রামের
সবাই তখন বললো তার স্ত্রীকে দিঘী থেকে
উঠে আসার জন্য । কিন্তু তার স্ত্রী দিঘী
থেকে উঠলো না উলটো সবাইকে বললো দিঘী
পনিতে ভরে গেলে একবারে গছল করে উঠবো।
কিছু সময়ের মধ্যে দিঘী পানিতে ভরে গেলো।
ঐ ব্যক্তির স্ত্রী ও পানির মাঝে তলিয়ে
গেলো। তার স্ত্রী দিঘী থেকে উঠে আসার
জন্য অনেক ছটপট করেছে কিন্তু উঠে আসতে
পারিনি। সবার ধারোনা তার পা কেউ
আটকিয়ে রেখে ছিলো। পরে সবাই অনেক
কান্না কাটি করে এবং ঐ ব্যক্তির স্ত্রীকে
দিঘীর মাঝে সবাই বিভিন্ন ভাবে খুজা খুজি
করে কিন্তু পাইনা। না পাওয়ার পরে সবাই যার
যার বাড়ি চলে যায়। সেই দিন রাত্রে ঐ
ব্যক্তিকে তার স্ত্রী স্বপ্ন দেখায় যে আমি
যেখানে আছি সেখানে ভালো আছি তুমি
আমার সন্তান কে দেখে রেখো আর ও যদি
খাওয়ার জন্য কাদে তাহলে ওকে দিঘীর
পাহাড়ে রেখে যেও আমি ওকে খাওয়ায়ে
দিবো তুমি পরে এসে নিয়ে যেও। আর এই
এলেকায় যদি কোনো অনুষ্ঠান হয় তবে ঘাটে
এসে যাযা লাগে চাইতে বলো আমি সব
ব্যবস্থা করে দিবো। তারা অনুষ্ঠানের দিন
এসে ঘাট থেকে নিয়ে যাবে। এবং অনুষ্ঠান
শেষে আবার ঘাটে ফেরত দিয়ে যাবে। পর
দিন সকালে ছেলে প্রচুর কাঁদছে তখন
ঐব্যক্তির রাত্রের স্বপ্নর কথা মনে পড়লো।
ছেলেকে নিয়ে দিঘির ঘাটে রেখে আসলো।
কিছু পরে যেয়ে আবার ছেলেকে নিয়ে
এলেন। ছেলে আর কাঁদছে না । গ্রামে কোনো
অনুষ্ঠান হলে এই ময়না দিঘী থেকে
আসবাবপত্র নিয়ে ব্যবহার করে আবার ময়না
দিঘীর ঘাটে ফিরে দিয়ে যেতো। কোনো এক
বিয়ের অনুষ্ঠানে এই ময়না দিঘী থেকে
আসবাবপত্র নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্ত ঐ
অনুষ্ঠানের সব আসবাবপত্র ফেরত দিলেও
একটি লবনের পাত্র ফেরত দি নাই। কেউ একজন
রেখে দিয়ে ছিলো। কারণ ঐ আসবাবপত্র
ছিলো সরণের। পরের দিন রাত্রে যে পাত্রটি
রেখে ছিলো তাকে স্বপ্ন দেখায় পাত্র ফেরত
দেওয়ার জন্য । এবং সেই থেকে অনুষ্ঠানে
আসবাবপত্র দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কালের
পরিবর্তে গায়েবি ভাবে দিঘীটা নদীতে
পরিণত হয়।