Forums.Likebd.Com

Full Version: যে ৫ টি কারণে আমাদের শারীরিক স্পর্শের প্রয়োজন হয় প্রতিদিন!
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
স্পর্শ, যা দুইটি মানুষের মাঝে ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ করে থাকে। যে কারণে স্পর্শের মাধ্যমে দুইজন মানুষের মাঝে সম্পর্ক এবং সংযোগ তৈরি হয়ে থাকে। যেকোন বয়সের মানুষই ভালোবাসার স্পর্শের কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করেন। এমনকি শিশুরাও চায় তাদের ভালোবাসার মানুষদের কাছ থেকে স্নেহ পেতে, আদর পেতে।

বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী হ্যারি হার্লো মা বানর এবং শিশু বানরের উপর একটি গবেষণা করেছে। কিছু শিশু বানর ক খাদ্য এবং মায়ের কাছ থেকে দূরে রাখা হয়েছিল এবং এরপরে তাদের খাদ্য অথবা মায়ের স্পর্শ থেকে যেকোন একটি বেছে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। শিশু বানরগুলো খাদ্যের আগে তাদের মা এবং মায়ের স্পর্শকেই বেছে নেয়।

মানুষও কিন্তু বানরদের থেকে খুব বেশী ভিন্ন নয়। প্রতিটা মানুষ চায় তার প্রিয়জনের সংস্পর্শে থাকতে। ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকা যুগলারও চায় একে অন্যের ভালোবাসার স্পর্শ পেতে! তাই একটু ভালোবাসার ছোঁয়া, স্পর্শ- ব্যপারটাকে খুব ছোটখাটো মনে হলেও যে কোন সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার প্রভাব অনেকখানি।

জেনে নিন কেন প্রতিদিন ভালোবাসার স্পর্শের প্রয়োজন আমাদের সকলের জন্য।

১/ প্রতিদিন যোগাযোগ করার জন্যে শারীরিক স্পর্শের প্রয়োজন:

মানুষ সামাজিক প্রাণী এবং স্পর্শ করা হলো একে অন্যের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করার খুবই সাধারণ একটি মাধ্যম। একে অন্যকে স্পর্শ করার মাধ্যমে মানুষজন নিজেদের অনুভূতিগুলো প্রকশ করে থাকে। ভেবে দেখুন তো, শেষ কবে আপনার বন্ধুর সাথে মজার কোন কথা বলার সময় তার কাঁধে হাত রেখেছিলেন?

কাঁধে হাত

দুইজন মানুষের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রকাশের ক্ষেত্রেও স্পর্শ খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত আমরা যখন একে অন্যের সাথে কোন বিষয়ে কথা বলে থাকি, কোন তথ্য আদান প্রদান করে থাকি তখন আমাদের মনের ভাব আমরা শব্দ দ্বারা প্রকাশ করে থাকি। কিন্তু যখন দুইজন মানুষের মাঝে দারুণ একটা সম্পর্ক কাজ করে, দুইজনের অনুভূতি একই রকম হয় তখন আমরা একে অন্যের সংস্পর্শে এসে সেই ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ করে থাকি। কারণ, যে সম্পর্কে টান আছে, সেখানে স্পর্শের থাকবে।

২/ অন্যান্য মানুষের সাথে যোগাযোগ তৈরি করতে আপনার শারীরিক স্পর্শের প্রয়োজন:

আমার শারীরিক অনুভূতিগুলোই কিন্তু আমাদের মানসিক অনুভূতি কিংবা আবেগকে প্রকাশ করে থাকে। যখন আপনি দুশ্চিন্তায় থাকবেন তখন আপনি খুব জড়সড় বোধ করবেন। কোন কারণে ভয় পেলে আপনার মেরুদণ্ড দিয়ে শীতল অনুভূতি প্রবাহিত হয়। আমরা আমাদের নিজেদের শরীরে যে সকল অনুভূতি অনুভব করে থাকি সে সকল অনুভূতিই অন্যান্য মানুষদের সাথে আমাদের সংযোগ ঘটাতে সাহায্য করে থাকে।

৩/ কাঙ্ক্ষিত জিনিস পাওয়ার জন্য শারীরিক স্পর্শের প্রয়োজন:

শারীরিক স্পর্শ দ্বারা একজনকে কোন কথার বা কাজের গুরুত্ব বোঝানো যায় খুব সহজেই। কাউকে যদি আপনি বলে থাকেন, ‘আমার কথা শোনো মনোযোগ দিয়ে’- তবে হয়ত সে বুঝতে পারবে যে আপনি কোন দরকারি কথা বলতে চাইছেন। কিন্তু যখন আপনি তার হাত ধরে তাকে কথাটি বলবেন, তখন সে বুঝতে পারবে কথাটা আসলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার প্রতি তার পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার দরকার।

৪/ মানসিক শক্তি আদানপ্রদানের জন্যেও শারীরিক স্পর্শের প্রয়োজন আপনার:

আপনার সামান্য একটুখানি স্পর্শও অনেক শক্তিশালী হতে পারে কারণ, মানুষ তার স্পর্শের মাধ্যমেও একে অন্যের শরীরে কিছু ভালো শক্তি আদানপ্রদান করে থাকে। কোন ভালো খবর বন্ধুকে জানানোর জন্য, অথবা আপনার আনন্দ তার সাথে শেয়ার করার জন্য আপনি যখন আপনার বন্ধুর হাত ধরে থাকেন, অথবা তাকে স্পর্শ করেন তখন আপনার ভেতরের ভালো অনুভূতির শক্তিগুলো আপনার বন্ধুর মধ্যেও প্রবাহিত হয়।

স্পর্শ ও অনুভূতি

যে কারণে, একজন মানুষের মানসিক প্রশান্তি, ভালোলাগা, আনন্দ, সুখ অন্য মানুষের মধ্যেও আপনি সঞ্চালিত করতে পারেন আপনার স্পর্শ দিয়েই।

৫/ আপনার শারীরিক ও মানসিক ক্ষত সারাতে প্রয়োজন শারীরিক স্পর্শের:

চিকিৎসাগত ভাবেও নিজেকে সুস্থ রাখার জন্যে আদিকাল থেকেই শারীরিক বিভিন্ন ধরণের স্পর্শমূলক চিকিৎসা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যার মধ্যে আছে আকুপাংচার, ম্যাসাজ এবং অন্যান্য সকল উপায়। মূলত এই সকল পদ্ধতি শারীরিক সুস্থতার উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকলেও, মানসিকভাবে এর উপকার অনেক বেশী এবং ম্যাসাজ প্রদানকারী ব্যক্তির যত্নবান স্পর্শ মানসিক চাপকে শিথিল করতে সাহায্য করে থাকে।

সূত্র: পাওয়ার অফ পজেটিভিটি।