Forums.Likebd.Com

Full Version: জানাযার লাশের ঘটনা
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
প্রত্যেকটা জানাযার নামাজই আমাদের অনেক কিছু শিখিয়ে যায়। আমি প্রায়ই জানাযার নামাজ পড়ি। তবে নামাজ শেষে যখন লাশটার চেহারা দেখানো হয় তখন চলে আসি । কারন লাশের চেহারা দেখলে আমার রাতে ভয়ে ঘুমই হয় না। ছোটবেলায় একবার একটা লাশের মুখ দেখে এক সপ্তাহ রাতে ঘুমাতে পারিনি। তো মসজিদের মাইকে শুনতে পেলাম আজ সকাল ১১ টায় নাকি জানাযার নামাজ আছে। করিম মিয়া মারা গেছেন। যদিও লোকটাকে চিনিনা তাও ওযু করে জানাযার নামাজ পড়তে চলে গেলাম মসজিদে। দেখলাম মাত্র পৌনে ১১ টা বাজে। আরো পনেরো মিনিট পর জানাযা শুরু হবে। সামনে একটা খাটিয়াতে লাশটা রাখা ছিলো। খাটিয়ার পাশে লোকটার আত্মীয়স্বজনরা দাড়িয়ে ছিলো। তো হঠাত আমার পাশে একটা বৃদ্ধ লোক এসে দাড়ালো। পড়নে সাদা জুব্বা, মুখ ভরতি দাড়ি, শ্যাম রঙের চেহারা। এসেই খাটিয়ার দিকে তাকিয়ে আমাকে বলল:
-মৃত্যু কতটা ভয়ংকর তাই না! একদিন আমাদের সবাইকেই এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যেতে হবে।
আমি হঠাত কিছু না বুঝেই বললাম।
-হুম
-আচ্ছা যে লোকটা মারা গেছে, তুমি তাকে চেনো?
-নাহ। তবে নাম শুনেছি করিম মিয়া।
-আমি ওকে চিন্তাম। ও আজ বড় বিপদে পড়েছে।
-উনিতো মারা গেছেন বিপদে পড়বেন কিভাবে! আর শুনেছি উনি নাকি নিয়মিত নামাজ পড়তেন। তাহলেতো কোন বিপদ নেই।
-নাহ। অন্য একটা বিপদ রয়েছে উনার। জানাযার পূর্বে মুরদার সকল ঋন পরিশোধ করতে হয়। তবে লোকটা এখনো ঋনি। বাজারের মোড়ের ঐ চায়ের দোকানদার ওর কাছে ২০ টাকা পাবে। আর ঋণি ব্যাক্তিদের শাস্তি অনেক ভয়ানক হয়।
-হুম। তবে আপনি জানলেন কিভাবে উনি যে বিপদে পড়েছেন আর উনার ঋণের কথা।
-সেটা তুমি পড়ে জানতে পারবে। এখন লোকটার উপকার করো এবং এই ঋনটা সম্পর্কে তার ছেলেকে অবগত করো। ঐ খানে উনার ছেলে দাড়িয়ে আছে।

আমি আসলে কিছুই বুঝতেছিলাম না। শুধু মনে হচ্ছিলো এই মৃত ব্যাক্তিটাকে সাহায্য করা উচিত। আমি উনার ছেলেকে সব কথা বললাম, উনার ২০ টাকা ঋণের কথা। উনি জানতে চাইলেন:
-আচ্ছা। তুমি জানলে কিভাবে?
-একটা বৃদ্ধ লোক এসে আমায় বলল।

তখন উনি আমাকে ২০ টাকা দিয়ে অনুরোধ করলেন টাকাটা চাওয়ালাকে দিয়ে শোধ করতে। জানাযার নামাজের আর মাত্র কয়েকমিনিট বাকি ছিলো। আমি দ্রুত গিয়ে সেই চাওয়ালাকে ২০ টাকা দিয়ে আসলাম। চাওয়ালাও বলল।
-হুম। আমিতো টাকার কথা প্রায় ভুলেই গেছিলাম। তবে লোকটা বড় ভালো ছিলোগো।

আমি আবার মসজিদে ফিরে আসলাম দেখি জানাযার নামাজ শুরু হবে। তবে আশেপাশে সেই দাড়িওয়ালা জুব্বা পড়া লোকটাকে অনেক খুজলাম তবে পেলাম না। তবে এটা ভেবে ভালো লাগলো লোকটার জন্য একটা মৃত ব্যাক্তির ঋনতো শোধ করতে পারলাম। তবে লোকটা এই কথাগুলো কিভাবে জানলো তার আর জানা হলো না। জানাযার শেষে লোকটার লাশের মুখ দেখতে ভীড় করলো সবাই। আমার যথারিতি ভয় শুরু হয়ে গেলো। তবে তাও ভয়ে ভয় লোকটার লাশ দেখতে অগ্রসর হলাম। লাশটার মুখ দেখেতো আমার চোখ কপালে উঠার দশা। এইটাতো সেই লোকটারই লাশ যে একটু আগে আমার কাছে এসে ঋণটা শোধ করার কথা বলেছিলো....!!

( এই ছিল আমার ঘটনা , ভাল লাগলে সবাই লাইক দেওয়ার চেষ্টা করবেন )