01-13-2017, 11:12 PM
ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস, বিদ্বেষমূলক কথা বা হেট স্পিচ দিয়ে, ছবি বিকৃত করে, ভুয়া পেজ ও আইডি খুলে আজকাল হরহামেশা অনেককে হয়রানি করা হচ্ছে। অনেকে এসবের কারণে নিপীড়নের শিকারও হচ্ছেন। নিগৃহীত হচ্ছেন সামাজিকভাবে। অনেকের জীবন হুমকির মধ্যে পড়েছে। কারও সম্পর্ক ভাঙছে, ভাঙছে সংসারও। কেবল প্রতিকার পাওয়ার উপায় জানা না থাকায় দিনদিন এসব বেড়েই চলেছে।
ফেসবুক তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের কিছু ঘটলে, তা থেকে প্রতিকারের উপায় রয়েছে। ভুক্তভোগী চাইলে যিনি হয়রানি করছেন তার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় অভিযোগ করতে পারেন, আইসিটি অ্যাক্টে তার বা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা তাকে সুরক্ষা দেবে। অন্যদিকে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে অভিযোগ করতে পারেন, সমাধান মিলবে। যদি একান্তই এসব কিছু করা না যায় তাহলে (ফেসবুকের মাধ্যমে কোনও কিছু ঘটলে) ফেসবুকে সরাসরি রিপোর্ট করারও ব্যবস্থা রয়েছে। উপযুক্ত তথ্যাদি দিতে পারলে ফেসবুক আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব থেকে রক্ষা পেলে চাইলে সচেতন থাকার কোনও বিকল্প নেই। ব্যক্তি নিজে যদি এসব থেকে সরে না আসেন তাহলে কখনও এসব বন্ধ করা যাবে না। কঠোর আইন করেও বিপথগামীদের ফেরানো যাবে না। তারা অন্যের অনিষ্ট করবেই।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সচিব সরওয়ার আলম বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে অভিযোগ এলে ভালো। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চাওয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করি।’ তিনি জানান, ‘তবে কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানান তাহলে কমিশন তাদের সহযোগিতা করে থাকে, সমাধান পাওয়ার পথ দেখিয়ে দিতে পারে।’
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা
৫৭-এর ১ উপধারায়
বলা হয়েছে, ‘কোনও ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনও ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে প্রদান করা হয়, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ।’
অপরাধের শাস্তি
৫৭ ধারার ২ নম্বর উপধারায় বলা হয়, ‘কোনও ব্যক্তি উপ-ধারা (১)-এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক চৌদ্দ বছর এবং ন্যূনতম সাত বৎসর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’
তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষক সুমন আহমেদ সাবির বলেন, ‘এসব আসলে কোনও আইন করে বন্ধ করা যাবে না তবে প্রকোপ কমানো যেতে পারে। এসব বন্ধে নৈতিকতা, নীতিবোধ জাগ্রত করতে হবে। ব্যক্তিকে সচেতন হতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে প্রতিশোধ গ্রহণ বা কুৎসা রটানোর হাতিয়ার হিসেবে নেওয়া যাবে না। ফেসবুককে কেবল যদি আমরা যোগাযোগ এবং শেয়ারিংয়ের জন্য ভাবি, তাহলে তা সবার জন্য মঙ্গল। তিনি এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করতে সরকারকে সচেতনমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে আহ্বান জানান।
এদিকে ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস, ছবি, পেজ ও ভুয়া অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে চাইলেই রিপোর্ট করতে চাইলেও তা করা যাবে। যেভাবে রিপোর্ট করবেন:
ছবি: ফেসবুকে লগইন করে ছবিটিতে ক্লিক করুন। ছবি ওপেন হলে ডান পাশে রিপোর্ট বাটনে (report this photo) ক্লিক করুন। এতে করে নতুন একটি ডায়লগ বক্স ওপেন হবে। এখান থেকে কেন আপত্তিকর তা নির্বাচন করুন। এরপর সাবমিট বাটন ক্লিক করলেই আপত্তিকর ছবিটির বিরুদ্ধে আপনার রিপোর্ট করা হয়ে যাবে। এরপর ফেসবুক আপনার অভিযোগ খতিয়ে দেখবে। কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা মেসেজ দিয়ে আপনাকে জানিয়ে দেবে।
পোস্ট: কোনও আপত্তিকর পোস্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পোস্টের ডানপাশে অপশন ড্রপডাউন মেনু থেকে রিপোর্ট (Report) নির্বাচন করতে হবে। এরপর নতুন ডায়লগ ব্ক্স থেকে থেকে কেন আপত্তিকর তা সিলেক্ট করে কন্টিনিউ বাটন ক্লিক করতে হবে।
অ্যাকাউন্ট: কোনও নির্দিষ্ট ফেসবুক ব্যবহারকারী কিংবা ভুয়া অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে হলে প্রথমে ওই প্রোফাইলটি ওপেন করতে হবে। ওই ব্যক্তির কাভার ফটোর ডানপাশের নিচের অংশে (...) মেনুতে ক্লিক করে রিপোর্ট নির্বাচন করতে হবে।এতে করে নতুন ডায়লগ বক্স ওপেন হবে। সেখান থেকে অভিযোগের কারণ নির্বাচন করে দাখিল করতে হবে।
পেজ: নির্দিষ্ট পেজটি ওপেন করে কাভার ফটোর ডানপাশে নিচের (...) বাটনে ক্লিক করে রিপোর্ট নির্বাচন করতে হবে। এতে নতুন ডায়লগ ব্ক্স ওপেন হবে। সেখানে আপত্তির কারণ জানিয়ে পরবর্তী নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।
গ্রুপ: কোনও গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গ্রুপটিতে যেতে হবে।তারপর গ্রুপ ফটোর ডানপাশে নিচে (...) বাটনে ক্লিক করে রিপোর্ট নির্বাচন করতে হবে। নতুন ডায়লগ বক্স ওপেন হলে তা অনুসরণ করতে হবে।
অন্যদিকে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ একটি হেল্পডেস্ক খুলেছিল। প্রায় দুই বছর মেয়াদি ওই হেল্পডেস্কে প্রায় ১৫ হাজার অভিযোগ আসে যার মধ্যে ৭৫ শতাংশই ছিল ফেসবুককেন্দ্রিক। প্রকল্প শেষ হওয়ায় হেল্পডেস্কটি বন্ধ রয়েছে। নতুনরূপে হেল্পডেস্কটি চালু হতে পারে বলে জানা গেছে। ওই হেল্পডেস্কে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ জানালে হেল্পডেস্ক থেকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হতো। -বাংলা ট্রিবিউন
ফেসবুক তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের কিছু ঘটলে, তা থেকে প্রতিকারের উপায় রয়েছে। ভুক্তভোগী চাইলে যিনি হয়রানি করছেন তার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় অভিযোগ করতে পারেন, আইসিটি অ্যাক্টে তার বা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা তাকে সুরক্ষা দেবে। অন্যদিকে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে অভিযোগ করতে পারেন, সমাধান মিলবে। যদি একান্তই এসব কিছু করা না যায় তাহলে (ফেসবুকের মাধ্যমে কোনও কিছু ঘটলে) ফেসবুকে সরাসরি রিপোর্ট করারও ব্যবস্থা রয়েছে। উপযুক্ত তথ্যাদি দিতে পারলে ফেসবুক আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব থেকে রক্ষা পেলে চাইলে সচেতন থাকার কোনও বিকল্প নেই। ব্যক্তি নিজে যদি এসব থেকে সরে না আসেন তাহলে কখনও এসব বন্ধ করা যাবে না। কঠোর আইন করেও বিপথগামীদের ফেরানো যাবে না। তারা অন্যের অনিষ্ট করবেই।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সচিব সরওয়ার আলম বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে অভিযোগ এলে ভালো। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চাওয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করি।’ তিনি জানান, ‘তবে কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানান তাহলে কমিশন তাদের সহযোগিতা করে থাকে, সমাধান পাওয়ার পথ দেখিয়ে দিতে পারে।’
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা
৫৭-এর ১ উপধারায়
বলা হয়েছে, ‘কোনও ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনও ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে প্রদান করা হয়, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ।’
অপরাধের শাস্তি
৫৭ ধারার ২ নম্বর উপধারায় বলা হয়, ‘কোনও ব্যক্তি উপ-ধারা (১)-এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক চৌদ্দ বছর এবং ন্যূনতম সাত বৎসর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’
তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষক সুমন আহমেদ সাবির বলেন, ‘এসব আসলে কোনও আইন করে বন্ধ করা যাবে না তবে প্রকোপ কমানো যেতে পারে। এসব বন্ধে নৈতিকতা, নীতিবোধ জাগ্রত করতে হবে। ব্যক্তিকে সচেতন হতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে প্রতিশোধ গ্রহণ বা কুৎসা রটানোর হাতিয়ার হিসেবে নেওয়া যাবে না। ফেসবুককে কেবল যদি আমরা যোগাযোগ এবং শেয়ারিংয়ের জন্য ভাবি, তাহলে তা সবার জন্য মঙ্গল। তিনি এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করতে সরকারকে সচেতনমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে আহ্বান জানান।
এদিকে ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস, ছবি, পেজ ও ভুয়া অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে চাইলেই রিপোর্ট করতে চাইলেও তা করা যাবে। যেভাবে রিপোর্ট করবেন:
ছবি: ফেসবুকে লগইন করে ছবিটিতে ক্লিক করুন। ছবি ওপেন হলে ডান পাশে রিপোর্ট বাটনে (report this photo) ক্লিক করুন। এতে করে নতুন একটি ডায়লগ বক্স ওপেন হবে। এখান থেকে কেন আপত্তিকর তা নির্বাচন করুন। এরপর সাবমিট বাটন ক্লিক করলেই আপত্তিকর ছবিটির বিরুদ্ধে আপনার রিপোর্ট করা হয়ে যাবে। এরপর ফেসবুক আপনার অভিযোগ খতিয়ে দেখবে। কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা মেসেজ দিয়ে আপনাকে জানিয়ে দেবে।
পোস্ট: কোনও আপত্তিকর পোস্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পোস্টের ডানপাশে অপশন ড্রপডাউন মেনু থেকে রিপোর্ট (Report) নির্বাচন করতে হবে। এরপর নতুন ডায়লগ ব্ক্স থেকে থেকে কেন আপত্তিকর তা সিলেক্ট করে কন্টিনিউ বাটন ক্লিক করতে হবে।
অ্যাকাউন্ট: কোনও নির্দিষ্ট ফেসবুক ব্যবহারকারী কিংবা ভুয়া অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে হলে প্রথমে ওই প্রোফাইলটি ওপেন করতে হবে। ওই ব্যক্তির কাভার ফটোর ডানপাশের নিচের অংশে (...) মেনুতে ক্লিক করে রিপোর্ট নির্বাচন করতে হবে।এতে করে নতুন ডায়লগ বক্স ওপেন হবে। সেখান থেকে অভিযোগের কারণ নির্বাচন করে দাখিল করতে হবে।
পেজ: নির্দিষ্ট পেজটি ওপেন করে কাভার ফটোর ডানপাশে নিচের (...) বাটনে ক্লিক করে রিপোর্ট নির্বাচন করতে হবে। এতে নতুন ডায়লগ ব্ক্স ওপেন হবে। সেখানে আপত্তির কারণ জানিয়ে পরবর্তী নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।
গ্রুপ: কোনও গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গ্রুপটিতে যেতে হবে।তারপর গ্রুপ ফটোর ডানপাশে নিচে (...) বাটনে ক্লিক করে রিপোর্ট নির্বাচন করতে হবে। নতুন ডায়লগ বক্স ওপেন হলে তা অনুসরণ করতে হবে।
অন্যদিকে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ একটি হেল্পডেস্ক খুলেছিল। প্রায় দুই বছর মেয়াদি ওই হেল্পডেস্কে প্রায় ১৫ হাজার অভিযোগ আসে যার মধ্যে ৭৫ শতাংশই ছিল ফেসবুককেন্দ্রিক। প্রকল্প শেষ হওয়ায় হেল্পডেস্কটি বন্ধ রয়েছে। নতুনরূপে হেল্পডেস্কটি চালু হতে পারে বলে জানা গেছে। ওই হেল্পডেস্কে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ জানালে হেল্পডেস্ক থেকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হতো। -বাংলা ট্রিবিউন