Forums.Likebd.Com

Full Version: পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর নদী
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
বছরের বেশির ভাগ সময় এ নদী অন্য ১০টি সাধারণ
নদীর মতো। সেপ্টেম্বর এলে কী যেন জাদু খেলে
যায় নদীটিতে। স্ফটিক জলের নিচে যেন রঙের
বিস্ফোরণ ঘটে। জলের তলায় এক বিচিত্র গুল্ম
মাকারেনিয়া ক্লাভিগেরার বদৌলতে বিভিন্ন বর্ণ
লাভ করে কানো ক্রিস্টাল।
লাল বর্ণের প্রাধান্য থাকলেও কখনো মেরুন বা গাঢ়
অথবা হালকা গোলাপি। ছায়াযুক্ত স্থানে থাকে
সবুজ বর্ণ। কানো ক্রিস্টালের নীল আর হলদেটে রংও
চোখে পড়েছে অভিযাত্রীদের। লোকে বলে, এটি
নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর নদী। অনেকের মতে, এই
নদী স্বর্গে উত্পত্তি হয়ে মর্ত্যলোকে বয়ে চলেছে।
কিন্তু কেবল বর্ষা ও শুষ্ক ঋতুর মাঝামাঝি মাত্র
অল্প কয়েক দিনের জন্য নদীটি এই অপরূপ সৌন্দর্যে
ধরা দেয় কেন? কেননা মাকারেনিয়া ক্লাভিগেরার
বহু বর্ণে সাজার জন্য প্রকৃতির সাহায্য দরকার।
কলম্বিয়ার বর্ষাকালে জলের গভীরতা এবং গতি এত
বেশি যে তলদেশ সহজে চোখে পড়ে না। তাই গুল্মের
লাল রং দেখার জন্য প্রয়োজনীয় সূর্যালোকও নদীর
তলে যায় না। আবার শুকনো মৌসুমে পানি থাকে খুব
কম। আর কানো ক্রিস্টাল ন্যূনতম একটি পানির
প্রবাহ ছাড়া লাল রং ধারণ করে না।
সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরে কয়েক সপ্তাহ যখন
নদীতে পানির গভীরতা একটি নির্দিষ্ট মাত্রার
কমও নয় বেশিও নয়—সেই যথাযথ পরিস্থিতিতে
গুল্মের রংগুলো ধরা দেয়, দেখা মেলে। সঙ্গে হলদে
সবুজ বালি, নীল জলের সঙ্গে সূর্যের আভা
মিলেমিশে জন্ম দেয় রঙের হাজারো শেড। মনে হয়,
আকাশের রংধনু তার সব রং নিয়ে মাটিতে নেমে
এসেছে। তাই এ নদী ‘তরল রংধনু’ নামেও পরিচিত।
কানো ক্রিস্টাল উদ্ভিদেভরা হলেও এতে কোনো
মাছ নেই। বালুকণার পরিমাণ কম হওয়ায় পানি বেশ
স্বচ্ছ। এ জন্য প্রতিটি রং ঠিক ঠিক বোঝা যায়।
নদীটি প্রায় ১০০ কিলোমিটার লম্বা আর ২০ মিটার
চওড়া। এত সুন্দর একটি স্থানে পর্যটকের আনাগোনা
হবে, সেটাই স্বাভাবিক। সেই সঙ্গে আরো আছে
ঝরনা, আর পানি উষ্ণ হওয়ায় এটি সাঁতারেরও
চমত্কার স্থান। তবে গেরিলা আক্রমণের আশঙ্কায়
স্থানটি বহু দিন জনসাধারণের জন্য বন্ধ ছিল। ২০০৯
সালে আবার নতুন করে খুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে
অনেক প্রতিষ্ঠান নদীটি ঘুরে দেখার ব্যবস্থা করে
রেখেছে। বিমানে করে পাশের শহর লা মাকারেনা
পর্যন্ত যাওয়া যায়। সেখান থেকে ঘোড়া বা গাধার
পিঠে চড়ে সোজা চলে আসা যায় রংধনু নদীর
তীরে।