01-17-2017, 07:58 PM
আজ আপনাকে এক অদ্ভুত গল্প
শোনাবো। যদি ও জানি আপনি এর এক
দন্ড ও বিশ্বাস করবেন না। ভাববেন আমি
পাগল কিনবা বদ্ধ উন্মাদ। কিনবা মানসিক
হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসা কেউ।
কিন্তু বিশ্বাস করেন আমি আজ যে কথা
গুলো বলবো তাতে বিন্দু মাত্র মিথ্যা
লুকানো নেই। আমি লেখক হতে পারি,
বানিয়ে বানিয়ে প্রচুর গল্প লিখতে পারি -
কিন্তু আমি আজ যে জিনিসটা নিয়ে
আপনাদের কাছে লিখছি সেটা আমার
সামনেই আছে। একটা সামান্য সিংহাসন মাত্র
এটা। আমি এটাতে বসেই লিখছি আপনার
কাছে। আমি এটা সম্পর্কে যা যা
লিখবো সব সত্য লিখবো এটা প্রতিজ্ঞা
করেই শুরু করলাম। ঘটনার শুরু যখন আমি
মেসে থাকি- ঢাকায় এক অভিজাত এলাকায়।
বাবার অনেক টাকা থাকায় আমোদ
ফুর্তিতে আমি ছিলাম একেবারেই মত্ত।
আমি পড়তাম এক অভিজাত প্রাইভেট
ইউনিভার্সিটি তে। সারাদিন আড্ডা- নেশা
করা- বিভিন্ন যায়গায় হটাত করে চলে যাওয়া
ছিল আমার নিত্য দিনের অভ্যাস। আমি
কুমিল্লার ধর্ম সাগরে নেশা করে নৈকায়
ঘুরেছি- সমুদ্রে চাঁদের আলোর
নিচে বসে বসে বন্ধুদের মাঝে
বিলিয়েছি ঘুমের মন্ত্র। নীল পাহাড়ে
গিয়েছি একদম ঠান্ডার মাঝে। এসব
করে অভিজ্ঞতা ও আমার কম হয়নি। আমি
সেই অভিজ্ঞতা গুলো জমিয়েই
লিখেছি ১০ টা উপন্যাস। সব গুলোই বই
আকারে আছে। আপনারা হয়ত "নীলাভ
তারার কালচে আলো" উপন্যাস টা
পড়েছেন। এইত কদিন আগে ঈদে
এটা থেকে নাটক হয়ে গেল। জাহিদ
হাসান আর জয়িতা অভিনয় করেছিল। যাই
হোক সেই এক সময় আমি গিয়েছিলাম
সুন্দর বন। সময়টা বেশিদিন আগের না।
মাত্র তিন মাস আগে। প্রথমে
গিয়েছিলাম খুলনা- সেখান থেকে বরগুনা
ঘুরে সুন্দরবন । একসপ্তাহ ছিলাম আমি
সেখানে- সাথে ছিল আমার তিন মেস
মেট। আমরা একসাথেই পড়ি। লেখা পড়া
শেষ হবার উপলক্ষে আমাদের এই
ট্যুরের স্পন্সর আমি। ফেরার আগেই
ছয়দিন আমরা অনেক অনেক আনন্দ
করেছি। টাকা খাইয়ে এক বনবিভাগের
লোক কে আমরা ঢুকে ছিলাম চিত্রা
হরিণ শিকার করতে। আমি নিজেই একটা
মেরেছি। সেটার মাংস পুড়িয়ে
খেয়েছি নদীর পাড়ে। আমি
যেখানেই যাই অঢেল টাকা নিয়ে যাই।
সেবার ও নিয়েছিলাম অনেক টাকা। ইচ্ছা
ছিল সব ঊড়িয়ে খালি হাতে দেশে
ফিরব। কিন্তু হলনা। সুন্দরবন থেকে
ফেরার পথে আমরা খোঁজ পেলাম
একটা বজরার। এটা এক সৌখিন মানুষ সুজন
মোল্লার। উনার বজরা তে আমরা
ঊঠেছিলাম শুধু মাত্র নৌকা ভ্রমণের
জন্য। কিন্তু সেখানে গিয়েই আমরা
জানতে পারি এই বজরা ছিল কুখ্যাত ডাকাত
করিম মোল্লার। এবং এই সুজন মোল্লা
তার ই সন্তান। শুনে তো আমরা অনেক
ভয় পেয়ে যাই। কিন্তু আমাদের সুজন
মোল্লা অভয় দেয়। সে এখন ডাকাতি
করেনা। তার বাবার রেখে যাওয়া অঢেল
টাকা আছে। সে কোন কাজ করেনা-
পায়ের উপর পা তুলে খায়। এভাবে কথায়
কথায় আমাদের সাথে সুজন মোল্লার
বেশ ভাব হয়। আমরা সেইদিন রাতে
বজরায় একসাথে জোছনা দেখলাম।
পরদিন আমাদের তিনজন কে সুজন
মোল্লা কিছু অদ্ভুত জিনিস দেখালো।
সেগুলো ছিল তার ই বাবার রেখে যাওয়া
ডাকাতির মাল পত্র। এর মাঝে একটা সিংহাসন
দেখলাম আমি। দেখেই আমার খুব ভাল
লেগে গেল। আমি এটার কাহিনী
জানতে চাইলেই উনি বললেন আজ
থেকে প্রায় বছর পঞ্চাশ আগে
একবার ডাকাতি করতে গিয়ে আরেক
ডাকাত এর সাথে লড়াই করে এই সিংহাসন
কেড়ে নেন করিম মোল্লা। সেই
ডাকাত- যে এই সিংহাসন এর মালিক ছিল -
সে এটা পেয়েছিল তার বাবার কাছ
থেকে। তার বাবা ছিল ব্রিটিশ আমলের
কুখ্যাত ডাকাত নিরঞ্জন পালী। তিনি এটা
নিয়ে এসেছিলেন উত্তর বাংলার জমিদার
জ্ঞানদা চরণ মজুমদার এর সভাকক্ষ
থেকে। নিরঞ্জন পালী বেশ হিংস্র
ছিলেন। তিনি যখন এই সিংহাসন কেড়ে
নিতে যান তখন এটাতেই বসা ছিলেন
জ্ঞানদা চরণ। একটা তলোয়ার জ্ঞানদা
চরণের পেটে আমুল বসিয়ে লাশ সহ
সিংহাসন নিয়ে আসেন তার আস্তানায়।
সেখান থেকে হাত ঘুরে এই বজরায়।
এটা পাওয়ার পর প্রায় ১৫০ বছর অতিবাহিত
হয়েছে। কিন্তু এখন ও সিংহাসনটার
অদ্ভুত জেল্লা দেখে আমি অবাক
হলাম।সিংহাসন এর উচ্চতা আনুমানিক চার ফুট।
সবার উপরে একটা ময়ুরের মাথা আর
পালক। সেই পালকে গাথা শ'খানেক
মুক্তা আর নীলা। দুই হাতলে আছে
অদ্ভুত সিংহ খচিত কারুকাজ। হাতলের
শেষে সিংহের মুখ হা করে আছে।
আর চোখ দুটো তে উজ্জ্বল পাথর।
পিঠের নিচে আছে মখমলের নরম
আবরন। পায়া চারটার মাঝে জ্বল জ্বল
করছে সাতটা করে নীলা। কালচে রং
এর কাঠের আবরনে এখন ও কেমন
যেন রাজা মহারাজা আবেশ ছড়িয়ে
আছে। আমি অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে
ছিলাম সিংহাসনটার দিকে। আসলে এই রকম
একটা জিনিস এই ভাঙ্গা বজরাতে থাকতে
পারে সেটা নিজের চোখেই বিশ্বাস
হচ্ছিল না। যাদুঘরে রাখার মত এই সম্পদ
এই আস্তাকুড়ে নৌকায় পড়ে আছে
ভাবতেই মনটাই খারাপ হয়ে গেল। আমার
সাথে এক লাখের মত টাকা ছিল। আমি
সুজন মোল্লা কে তখন ই সিংহাসনটা
কেনার জন্য আবদার করলাম। সুজন
মোল্লা ও না করেনি। আমাদের কে
জিনিস গুলো দেখানো মানেই ছিল
এগুলো আমাদের কাছে বিক্রি করে
তার পেট চালানোর ধান্ধা। কিন্তু সে যা
দাম চাইল তাতেই মাথায় হাত পড়ল আমার।
সেই এই সিংহাসন এর দাম হাঁকল দশ লাখ
টাকা। আমি ঊষ্ণা প্রকাশ করতেই সে
একজন জহুরী ডাকাল। সেই জহুরী
প্রতিটা পাথর আমাদের
সামনে পরীক্ষা করে জানাল প্রতিটি
পাথর ই মহামুল্যবান। সব মিলিয়ে এই সিংহাসন
এর দাম কম করে হলেও কোটি টাকা
ছাড়িয়ে যাবে। আমি সেই দিনেই
আব্বাকে ফোন করে টাকার ব্যাবস্থা
করলাম। উনি সাথে দুইজন লোক ও
পাঠিয়ে দিলেন। ঐ লোকগুলো
সিংহাসনটাকে নিয়ে রওনা দেয় আমার
মেসে এর উদ্দেশ্যে। আমি ঢাকায়
পৌছানোর একদিন পরেই ঢাকায় পৌছায়
আমার সিংহাসনটা। কিন্তু এটা আনার পরদিন ই
এক অদ্ভুত কান্ড ঘটে। রাতে আমি
একটা অ্যাসাইনমেন্ট এর কাজ এ দেরী
করে ঘুমিয়ে ছিলাম। সকালে ঘুম
থেকে ঊঠে দেখি সিংহাসন এর বসার
যায়গায় মরে পড়ে আছে একটা বাচ্চা
ইদুর। আমি কাজের বুয়া কে ইদুরটা
সরাতে বলেই চলে গেলাম ভার্সিটি।
যখন ঘরে ফিরি তখন সন্ধ্যা। আমি কলিং
বেল অনেক বার টিপে ও কেউ
খুলে না দিলে দাড়োয়ান ডেকে দরজা
ভাঙ্গার ব্যাবস্থা করি। এবং দরজা ভেঙ্গে
আমার রুমে গিয়ে যা দেখি তার জন্য
আমি কোনদিন প্রস্তুত ছিলাম না।
দেখলাম সিংহাসন এর উপর কাজের বুয়া
অদ্ভুত ভাবে পড়ে আছে। নাক দিয়ে
রক্তের একটা ধারা। আর কোন
আঘাতের চিহ্ন নেই। দেখে আমি
হতভম্ভ। তাড়াতাড়ি হাসপাতাল নিয়ে যাই।
সেখানে জানায় সে মারা গেছে
অনেক ক্ষন আগে। মস্তিষ্কে
রক্তক্ষরণ জনিত কারনে। ডাক্তার পুলিশ
কেস করতে বলেছিল। আমি টাকা
খাইয়ে ডাক্তার কে ম্যানেজ করি। টাকা
খাইয়ে দাড়োয়ানের মুখ ও বন্ধ করি।
এবং কাজের বুয়ার পরিবার কে দশহাজার
টাকা দিয়ে চুপ থাকতে বলে ছেড়ে
দেই সেই মেস। এবং সিংহাসনটাকে
পাঠিয়ে দেই আমার গ্রামের বাড়িতে।
সেখানে আব্বাই আমাকে সেটা
পাঠিয়ে দিতে বলেন। এবং আমার
দুর্ভাগ্যের শুরু সেখান থেকেই। দুই
সপ্তাহ পর বাসা থেকে জরুরী ফোন
আসল। বলা হল আমার খালা খুব অসুস্থ।
আমি যেন চলে আসি। আমি তড়িঘড়ি
করে গিয়ে দেখি খালা মারা গেছেন।
আমি লাশের মুখ টা দেখতে চাইতেই
দেখলাম খালার নাকের কাছে জমে থাকা
লালচে রক্ত। বুঝতে বাকি থাকল না যে
খালা সেই সিংহাসন এ বসেই মারা
গেছেন। আমি সেইদিন ই জানাজার পর
ফোন করলাম সুজন মোল্লা কে।
সে আমাকে জানাল এই সিংহাসন অভিশপ্ত।
কেউ এটাতে বসলেই সে একটা
ঘোরের মাঝে চলে যায়। তারপর সে
আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পড়ে। সেই
ঘুম কখনো ভাঙ্গে না। এতেই সুজন
মোল্লার বাবা করিম মোল্লা মারা যান।
এটাতেই মারা যায় সুজন মোল্লার
মেয়ে জামাই।এই কথা আমাকে আগে
কেন জানায় নি জানতে চাইতেই ঐ পাশ
থেকে ফোন কেটে দেয় সুজন
মোল্লা। বুঝলাম ডাকাতি না করলে ও
স্বার্থের জন্য করেনা কিছু বাকি নেই
তার। দশ লাখ টাকার জন্য মেরে
ফেলেছে দুজন
মানুষ কে। আমি সেই দিন ই লুকিয়ে
ফেললাম সিংহাসনটাকে। বাড়িটা বিশাল
আমাদের। পুরোনো বাড়ি- অনেক
গুলো রুম। আমি একটা স্টোর রুমে
লুকিয়ে ফেললাম সেটাকে। কিন্তু
থামাতে পারলাম না মৃত্যু। ঠিক দুইদিন পর
খবর আসল আমার বড় ভাই মারা গেছেন।
আমি গেলাম সেখানে। গিয়ে দেখলাম
ভাইয়ার ও একই অবস্থা। নাকের কাছে
এক ফোঁটা রক্ত। বুঝলাম ভাইয়া কোন
একটা কাজে সেই স্টোর রুমে
গিয়েছিলেন। গিয়েই চেয়ারটা দেখে
লোভ সামলাতে না পেরে বসে
পড়ে। আর মারা যায়। আমি প্রায় উন্মাদ
হয়ে গেলাম।ভাইয়ার মৃত্যু কে আমার
আম্মা মেনে নিতে পারেন নি। তিনি
পরদিন স্ট্রোক করে মারা যান। এবং
একে একে আমাদের পরিবারের এগার
জন এই সিংহাসন এ বসে বসে মারা
গেলেন। আমি শুধু দীর্ঘশ্বাস
ফেললাম। কিছু ই করার ছিলনা। কারো
কাছে বিক্রি ও করতে পারছিলাম না
লুকিয়ে ও রাখতে পারলাম না। যেন
একের পর এক মানুষ কে টেনে
নিয়ে মারে ইচ্ছা মত সিংহাসনটা।আমাদের
পারিবারিক গোরস্থানে একটু আগে
আমার আব্বাকে কবর দিয়ে এসে
সিংহাসনটাতে বসেই লিখছি এই সব। বিশ্বাস
করেন এর একবিন্দু ও মিথ্যা না। আমি যা যা
লিখেছি তার সব সত্য। যেমন একটু
আগে থেকে আমি একটা খুব সুন্দর
মেয়েকে দেখতে পাচ্ছি। চমৎকার
একটা শাড়ি পড়ে আছে। হাতে একটা
থালা। তাতে নানা রকম ফল। আমি লেখার
ফাঁকে ফাঁকে মেয়েটাকে
দেখছিলাম। এখন মেয়েটা আস্তে
আস্তে সামনে এসে আমাকে ফল
খাওয়ালো। আমি ও খেলাম।কি ফল জানিনা।
কোনদিন
খাইনি। কিন্তু আশ্চর্য স্বাদ। মেয়েটা
এরপর থালাটা মাটিতে রেখে নাচ শুরু
করল। আমি ঊঠে মেয়েটার সাথে
নাচতে চাইলাম। কিন্তু আমাকে জোর
করে বসিয়ে দিল আরো দুই জন হটাত
করে উদয় হওয়া মেয়ে। তারপর
আমাকে একজন একটা হাত পাখা দিয়ে
বাতাস করতে লাগল। আরেকজন একটা
রুপার পাত্রে ঢেলে দিল মদ। আমি মদ
খেয়ে মাতাল হতে শুরু করেছি। তাই
লিখতে পারছিনা। হয়ত এটাই আমার
জীবনের শেষ ক্ষন। কারন একটু
আগেই নাকের কাছে একটা সরু
রক্তের ধারা টের পেয়েছি। কিন্তু
কিছুই করার নেই। আমি ঊঠতে পারছি না
সিংহাসন ছেড়ে। মেয়েটার নাচের তাল
বেড়েই চলল। কেউ একজন হাতের
তালি দিয়ে তবলার বোল দিচ্ছে।
মেয়েটা নেচে চলেছে। তা ধিন ধিন
ধা তা ধিন ধিন ধা- না তিন তিন না- তেটে ধিন
ধিন ধা- ধা- আহ মাথার চার পাশ কেমন যেন
হালকা হয়ে আসছে। এখন সামনে শুধু
মেয়েটা নাচছে। আর কিছু শুনতে
পারছিনা। খুব ঘুম পাচ্ছে। প্রচন্ড ঘুম। আমি
ঘুমালাম- জীবনের শেষ ঘুম। আপনি এই
সিংহাসন টাকে ধবংস করে দেবেন।
ভুলেও লোভে পড়ে এতে
বসবেন না। বসলেই নিশ্চিত মৃত্যু
................ ইতি রাওসিভ হাসান.।.। দুই মাস পর
বর্ষা যাদুঘরে এসেছে ওর মা বাবার
সাথে।ওর খুব শখ পুরাত্ন জিনিস পত্র
দেখার। তাই প্রতিমাসে সে আসে
জাতীয় যাদুঘরে। দেশের প্রায়
প্রতিটি যাদুঘরে ও ঘুরে ঘুরে সব
মুখস্থ করে ফেলেছে। কিন্তু সে
এখন তিন তলার ডান পাশের রুমে নতুন
যে সিংহাসন টার সামনে দাঁড়িয়ে আছে
সেটা সে আগের বার আসার সময়
দেখেনি। তাই মন যোগ দিয়ে সিংহাসন
এর সামনে লেখা বর্ণনা পড়তে লাগল।
তাতে লেখা- " পশ্চিম বাংলার জমিদার
জ্ঞানদা চরণ এর হারিয়ে যাওয়া সিংহাসন এটা।
পাওয়া গেছে গাজিপুরের হাসান
পরিবারে। সিংহাসনটা জ্ঞানদা চরণ নিজে
বসার জন্য বানায় নি।
সেটা বানিয়ে ছিলেন তার ভাই রুক্ষদা
চরণের জন্য। এটা ছিল একটা মরন ফাঁদ।
এই সিংহাসন এর সব খানেই মেশানো
আছে একধরনের অজানা বিষ। এই সিংহাসন
এ বসলেই এই বিষ প্রবেশ করে বসা
ব্যাক্তির উপর। তারপর আস্তে আস্তে
ঐ ব্যাক্তির মৃত্যু হয়। জ্ঞানদা চরণ তার
ভাইকে মারার জন্য এটা বানালে ও কুখ্যাত
ডাকাত নিরঞ্জন পালী এটাকে হস্তগত
করে। এর পর প্রায় ২০০ বছর এটার
অস্তিত্ব অজানা ছিল। একমাস আগে হাসান
ফ্যামিলির রাওসিব হাসানের মৃতদেহ
আবিষ্কারের মাধ্যমে এটা ঊঠে আসে
সভ্যতার সামনে। নিরীহ দর্শন এই সিংহাসন
হত্যা করেছে প্রায় ৪০ জনের মত
নিরীহ মানুষ কে। তাই এটা থেকে
দূরে থাকুন ................ লেখাটা পড়েই
বর্ষা খুব ভয় পেল। তারপর দৌড়ে চলে
গেল ওর বাবার কাছে ...........
শোনাবো। যদি ও জানি আপনি এর এক
দন্ড ও বিশ্বাস করবেন না। ভাববেন আমি
পাগল কিনবা বদ্ধ উন্মাদ। কিনবা মানসিক
হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসা কেউ।
কিন্তু বিশ্বাস করেন আমি আজ যে কথা
গুলো বলবো তাতে বিন্দু মাত্র মিথ্যা
লুকানো নেই। আমি লেখক হতে পারি,
বানিয়ে বানিয়ে প্রচুর গল্প লিখতে পারি -
কিন্তু আমি আজ যে জিনিসটা নিয়ে
আপনাদের কাছে লিখছি সেটা আমার
সামনেই আছে। একটা সামান্য সিংহাসন মাত্র
এটা। আমি এটাতে বসেই লিখছি আপনার
কাছে। আমি এটা সম্পর্কে যা যা
লিখবো সব সত্য লিখবো এটা প্রতিজ্ঞা
করেই শুরু করলাম। ঘটনার শুরু যখন আমি
মেসে থাকি- ঢাকায় এক অভিজাত এলাকায়।
বাবার অনেক টাকা থাকায় আমোদ
ফুর্তিতে আমি ছিলাম একেবারেই মত্ত।
আমি পড়তাম এক অভিজাত প্রাইভেট
ইউনিভার্সিটি তে। সারাদিন আড্ডা- নেশা
করা- বিভিন্ন যায়গায় হটাত করে চলে যাওয়া
ছিল আমার নিত্য দিনের অভ্যাস। আমি
কুমিল্লার ধর্ম সাগরে নেশা করে নৈকায়
ঘুরেছি- সমুদ্রে চাঁদের আলোর
নিচে বসে বসে বন্ধুদের মাঝে
বিলিয়েছি ঘুমের মন্ত্র। নীল পাহাড়ে
গিয়েছি একদম ঠান্ডার মাঝে। এসব
করে অভিজ্ঞতা ও আমার কম হয়নি। আমি
সেই অভিজ্ঞতা গুলো জমিয়েই
লিখেছি ১০ টা উপন্যাস। সব গুলোই বই
আকারে আছে। আপনারা হয়ত "নীলাভ
তারার কালচে আলো" উপন্যাস টা
পড়েছেন। এইত কদিন আগে ঈদে
এটা থেকে নাটক হয়ে গেল। জাহিদ
হাসান আর জয়িতা অভিনয় করেছিল। যাই
হোক সেই এক সময় আমি গিয়েছিলাম
সুন্দর বন। সময়টা বেশিদিন আগের না।
মাত্র তিন মাস আগে। প্রথমে
গিয়েছিলাম খুলনা- সেখান থেকে বরগুনা
ঘুরে সুন্দরবন । একসপ্তাহ ছিলাম আমি
সেখানে- সাথে ছিল আমার তিন মেস
মেট। আমরা একসাথেই পড়ি। লেখা পড়া
শেষ হবার উপলক্ষে আমাদের এই
ট্যুরের স্পন্সর আমি। ফেরার আগেই
ছয়দিন আমরা অনেক অনেক আনন্দ
করেছি। টাকা খাইয়ে এক বনবিভাগের
লোক কে আমরা ঢুকে ছিলাম চিত্রা
হরিণ শিকার করতে। আমি নিজেই একটা
মেরেছি। সেটার মাংস পুড়িয়ে
খেয়েছি নদীর পাড়ে। আমি
যেখানেই যাই অঢেল টাকা নিয়ে যাই।
সেবার ও নিয়েছিলাম অনেক টাকা। ইচ্ছা
ছিল সব ঊড়িয়ে খালি হাতে দেশে
ফিরব। কিন্তু হলনা। সুন্দরবন থেকে
ফেরার পথে আমরা খোঁজ পেলাম
একটা বজরার। এটা এক সৌখিন মানুষ সুজন
মোল্লার। উনার বজরা তে আমরা
ঊঠেছিলাম শুধু মাত্র নৌকা ভ্রমণের
জন্য। কিন্তু সেখানে গিয়েই আমরা
জানতে পারি এই বজরা ছিল কুখ্যাত ডাকাত
করিম মোল্লার। এবং এই সুজন মোল্লা
তার ই সন্তান। শুনে তো আমরা অনেক
ভয় পেয়ে যাই। কিন্তু আমাদের সুজন
মোল্লা অভয় দেয়। সে এখন ডাকাতি
করেনা। তার বাবার রেখে যাওয়া অঢেল
টাকা আছে। সে কোন কাজ করেনা-
পায়ের উপর পা তুলে খায়। এভাবে কথায়
কথায় আমাদের সাথে সুজন মোল্লার
বেশ ভাব হয়। আমরা সেইদিন রাতে
বজরায় একসাথে জোছনা দেখলাম।
পরদিন আমাদের তিনজন কে সুজন
মোল্লা কিছু অদ্ভুত জিনিস দেখালো।
সেগুলো ছিল তার ই বাবার রেখে যাওয়া
ডাকাতির মাল পত্র। এর মাঝে একটা সিংহাসন
দেখলাম আমি। দেখেই আমার খুব ভাল
লেগে গেল। আমি এটার কাহিনী
জানতে চাইলেই উনি বললেন আজ
থেকে প্রায় বছর পঞ্চাশ আগে
একবার ডাকাতি করতে গিয়ে আরেক
ডাকাত এর সাথে লড়াই করে এই সিংহাসন
কেড়ে নেন করিম মোল্লা। সেই
ডাকাত- যে এই সিংহাসন এর মালিক ছিল -
সে এটা পেয়েছিল তার বাবার কাছ
থেকে। তার বাবা ছিল ব্রিটিশ আমলের
কুখ্যাত ডাকাত নিরঞ্জন পালী। তিনি এটা
নিয়ে এসেছিলেন উত্তর বাংলার জমিদার
জ্ঞানদা চরণ মজুমদার এর সভাকক্ষ
থেকে। নিরঞ্জন পালী বেশ হিংস্র
ছিলেন। তিনি যখন এই সিংহাসন কেড়ে
নিতে যান তখন এটাতেই বসা ছিলেন
জ্ঞানদা চরণ। একটা তলোয়ার জ্ঞানদা
চরণের পেটে আমুল বসিয়ে লাশ সহ
সিংহাসন নিয়ে আসেন তার আস্তানায়।
সেখান থেকে হাত ঘুরে এই বজরায়।
এটা পাওয়ার পর প্রায় ১৫০ বছর অতিবাহিত
হয়েছে। কিন্তু এখন ও সিংহাসনটার
অদ্ভুত জেল্লা দেখে আমি অবাক
হলাম।সিংহাসন এর উচ্চতা আনুমানিক চার ফুট।
সবার উপরে একটা ময়ুরের মাথা আর
পালক। সেই পালকে গাথা শ'খানেক
মুক্তা আর নীলা। দুই হাতলে আছে
অদ্ভুত সিংহ খচিত কারুকাজ। হাতলের
শেষে সিংহের মুখ হা করে আছে।
আর চোখ দুটো তে উজ্জ্বল পাথর।
পিঠের নিচে আছে মখমলের নরম
আবরন। পায়া চারটার মাঝে জ্বল জ্বল
করছে সাতটা করে নীলা। কালচে রং
এর কাঠের আবরনে এখন ও কেমন
যেন রাজা মহারাজা আবেশ ছড়িয়ে
আছে। আমি অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে
ছিলাম সিংহাসনটার দিকে। আসলে এই রকম
একটা জিনিস এই ভাঙ্গা বজরাতে থাকতে
পারে সেটা নিজের চোখেই বিশ্বাস
হচ্ছিল না। যাদুঘরে রাখার মত এই সম্পদ
এই আস্তাকুড়ে নৌকায় পড়ে আছে
ভাবতেই মনটাই খারাপ হয়ে গেল। আমার
সাথে এক লাখের মত টাকা ছিল। আমি
সুজন মোল্লা কে তখন ই সিংহাসনটা
কেনার জন্য আবদার করলাম। সুজন
মোল্লা ও না করেনি। আমাদের কে
জিনিস গুলো দেখানো মানেই ছিল
এগুলো আমাদের কাছে বিক্রি করে
তার পেট চালানোর ধান্ধা। কিন্তু সে যা
দাম চাইল তাতেই মাথায় হাত পড়ল আমার।
সেই এই সিংহাসন এর দাম হাঁকল দশ লাখ
টাকা। আমি ঊষ্ণা প্রকাশ করতেই সে
একজন জহুরী ডাকাল। সেই জহুরী
প্রতিটা পাথর আমাদের
সামনে পরীক্ষা করে জানাল প্রতিটি
পাথর ই মহামুল্যবান। সব মিলিয়ে এই সিংহাসন
এর দাম কম করে হলেও কোটি টাকা
ছাড়িয়ে যাবে। আমি সেই দিনেই
আব্বাকে ফোন করে টাকার ব্যাবস্থা
করলাম। উনি সাথে দুইজন লোক ও
পাঠিয়ে দিলেন। ঐ লোকগুলো
সিংহাসনটাকে নিয়ে রওনা দেয় আমার
মেসে এর উদ্দেশ্যে। আমি ঢাকায়
পৌছানোর একদিন পরেই ঢাকায় পৌছায়
আমার সিংহাসনটা। কিন্তু এটা আনার পরদিন ই
এক অদ্ভুত কান্ড ঘটে। রাতে আমি
একটা অ্যাসাইনমেন্ট এর কাজ এ দেরী
করে ঘুমিয়ে ছিলাম। সকালে ঘুম
থেকে ঊঠে দেখি সিংহাসন এর বসার
যায়গায় মরে পড়ে আছে একটা বাচ্চা
ইদুর। আমি কাজের বুয়া কে ইদুরটা
সরাতে বলেই চলে গেলাম ভার্সিটি।
যখন ঘরে ফিরি তখন সন্ধ্যা। আমি কলিং
বেল অনেক বার টিপে ও কেউ
খুলে না দিলে দাড়োয়ান ডেকে দরজা
ভাঙ্গার ব্যাবস্থা করি। এবং দরজা ভেঙ্গে
আমার রুমে গিয়ে যা দেখি তার জন্য
আমি কোনদিন প্রস্তুত ছিলাম না।
দেখলাম সিংহাসন এর উপর কাজের বুয়া
অদ্ভুত ভাবে পড়ে আছে। নাক দিয়ে
রক্তের একটা ধারা। আর কোন
আঘাতের চিহ্ন নেই। দেখে আমি
হতভম্ভ। তাড়াতাড়ি হাসপাতাল নিয়ে যাই।
সেখানে জানায় সে মারা গেছে
অনেক ক্ষন আগে। মস্তিষ্কে
রক্তক্ষরণ জনিত কারনে। ডাক্তার পুলিশ
কেস করতে বলেছিল। আমি টাকা
খাইয়ে ডাক্তার কে ম্যানেজ করি। টাকা
খাইয়ে দাড়োয়ানের মুখ ও বন্ধ করি।
এবং কাজের বুয়ার পরিবার কে দশহাজার
টাকা দিয়ে চুপ থাকতে বলে ছেড়ে
দেই সেই মেস। এবং সিংহাসনটাকে
পাঠিয়ে দেই আমার গ্রামের বাড়িতে।
সেখানে আব্বাই আমাকে সেটা
পাঠিয়ে দিতে বলেন। এবং আমার
দুর্ভাগ্যের শুরু সেখান থেকেই। দুই
সপ্তাহ পর বাসা থেকে জরুরী ফোন
আসল। বলা হল আমার খালা খুব অসুস্থ।
আমি যেন চলে আসি। আমি তড়িঘড়ি
করে গিয়ে দেখি খালা মারা গেছেন।
আমি লাশের মুখ টা দেখতে চাইতেই
দেখলাম খালার নাকের কাছে জমে থাকা
লালচে রক্ত। বুঝতে বাকি থাকল না যে
খালা সেই সিংহাসন এ বসেই মারা
গেছেন। আমি সেইদিন ই জানাজার পর
ফোন করলাম সুজন মোল্লা কে।
সে আমাকে জানাল এই সিংহাসন অভিশপ্ত।
কেউ এটাতে বসলেই সে একটা
ঘোরের মাঝে চলে যায়। তারপর সে
আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পড়ে। সেই
ঘুম কখনো ভাঙ্গে না। এতেই সুজন
মোল্লার বাবা করিম মোল্লা মারা যান।
এটাতেই মারা যায় সুজন মোল্লার
মেয়ে জামাই।এই কথা আমাকে আগে
কেন জানায় নি জানতে চাইতেই ঐ পাশ
থেকে ফোন কেটে দেয় সুজন
মোল্লা। বুঝলাম ডাকাতি না করলে ও
স্বার্থের জন্য করেনা কিছু বাকি নেই
তার। দশ লাখ টাকার জন্য মেরে
ফেলেছে দুজন
মানুষ কে। আমি সেই দিন ই লুকিয়ে
ফেললাম সিংহাসনটাকে। বাড়িটা বিশাল
আমাদের। পুরোনো বাড়ি- অনেক
গুলো রুম। আমি একটা স্টোর রুমে
লুকিয়ে ফেললাম সেটাকে। কিন্তু
থামাতে পারলাম না মৃত্যু। ঠিক দুইদিন পর
খবর আসল আমার বড় ভাই মারা গেছেন।
আমি গেলাম সেখানে। গিয়ে দেখলাম
ভাইয়ার ও একই অবস্থা। নাকের কাছে
এক ফোঁটা রক্ত। বুঝলাম ভাইয়া কোন
একটা কাজে সেই স্টোর রুমে
গিয়েছিলেন। গিয়েই চেয়ারটা দেখে
লোভ সামলাতে না পেরে বসে
পড়ে। আর মারা যায়। আমি প্রায় উন্মাদ
হয়ে গেলাম।ভাইয়ার মৃত্যু কে আমার
আম্মা মেনে নিতে পারেন নি। তিনি
পরদিন স্ট্রোক করে মারা যান। এবং
একে একে আমাদের পরিবারের এগার
জন এই সিংহাসন এ বসে বসে মারা
গেলেন। আমি শুধু দীর্ঘশ্বাস
ফেললাম। কিছু ই করার ছিলনা। কারো
কাছে বিক্রি ও করতে পারছিলাম না
লুকিয়ে ও রাখতে পারলাম না। যেন
একের পর এক মানুষ কে টেনে
নিয়ে মারে ইচ্ছা মত সিংহাসনটা।আমাদের
পারিবারিক গোরস্থানে একটু আগে
আমার আব্বাকে কবর দিয়ে এসে
সিংহাসনটাতে বসেই লিখছি এই সব। বিশ্বাস
করেন এর একবিন্দু ও মিথ্যা না। আমি যা যা
লিখেছি তার সব সত্য। যেমন একটু
আগে থেকে আমি একটা খুব সুন্দর
মেয়েকে দেখতে পাচ্ছি। চমৎকার
একটা শাড়ি পড়ে আছে। হাতে একটা
থালা। তাতে নানা রকম ফল। আমি লেখার
ফাঁকে ফাঁকে মেয়েটাকে
দেখছিলাম। এখন মেয়েটা আস্তে
আস্তে সামনে এসে আমাকে ফল
খাওয়ালো। আমি ও খেলাম।কি ফল জানিনা।
কোনদিন
খাইনি। কিন্তু আশ্চর্য স্বাদ। মেয়েটা
এরপর থালাটা মাটিতে রেখে নাচ শুরু
করল। আমি ঊঠে মেয়েটার সাথে
নাচতে চাইলাম। কিন্তু আমাকে জোর
করে বসিয়ে দিল আরো দুই জন হটাত
করে উদয় হওয়া মেয়ে। তারপর
আমাকে একজন একটা হাত পাখা দিয়ে
বাতাস করতে লাগল। আরেকজন একটা
রুপার পাত্রে ঢেলে দিল মদ। আমি মদ
খেয়ে মাতাল হতে শুরু করেছি। তাই
লিখতে পারছিনা। হয়ত এটাই আমার
জীবনের শেষ ক্ষন। কারন একটু
আগেই নাকের কাছে একটা সরু
রক্তের ধারা টের পেয়েছি। কিন্তু
কিছুই করার নেই। আমি ঊঠতে পারছি না
সিংহাসন ছেড়ে। মেয়েটার নাচের তাল
বেড়েই চলল। কেউ একজন হাতের
তালি দিয়ে তবলার বোল দিচ্ছে।
মেয়েটা নেচে চলেছে। তা ধিন ধিন
ধা তা ধিন ধিন ধা- না তিন তিন না- তেটে ধিন
ধিন ধা- ধা- আহ মাথার চার পাশ কেমন যেন
হালকা হয়ে আসছে। এখন সামনে শুধু
মেয়েটা নাচছে। আর কিছু শুনতে
পারছিনা। খুব ঘুম পাচ্ছে। প্রচন্ড ঘুম। আমি
ঘুমালাম- জীবনের শেষ ঘুম। আপনি এই
সিংহাসন টাকে ধবংস করে দেবেন।
ভুলেও লোভে পড়ে এতে
বসবেন না। বসলেই নিশ্চিত মৃত্যু
................ ইতি রাওসিভ হাসান.।.। দুই মাস পর
বর্ষা যাদুঘরে এসেছে ওর মা বাবার
সাথে।ওর খুব শখ পুরাত্ন জিনিস পত্র
দেখার। তাই প্রতিমাসে সে আসে
জাতীয় যাদুঘরে। দেশের প্রায়
প্রতিটি যাদুঘরে ও ঘুরে ঘুরে সব
মুখস্থ করে ফেলেছে। কিন্তু সে
এখন তিন তলার ডান পাশের রুমে নতুন
যে সিংহাসন টার সামনে দাঁড়িয়ে আছে
সেটা সে আগের বার আসার সময়
দেখেনি। তাই মন যোগ দিয়ে সিংহাসন
এর সামনে লেখা বর্ণনা পড়তে লাগল।
তাতে লেখা- " পশ্চিম বাংলার জমিদার
জ্ঞানদা চরণ এর হারিয়ে যাওয়া সিংহাসন এটা।
পাওয়া গেছে গাজিপুরের হাসান
পরিবারে। সিংহাসনটা জ্ঞানদা চরণ নিজে
বসার জন্য বানায় নি।
সেটা বানিয়ে ছিলেন তার ভাই রুক্ষদা
চরণের জন্য। এটা ছিল একটা মরন ফাঁদ।
এই সিংহাসন এর সব খানেই মেশানো
আছে একধরনের অজানা বিষ। এই সিংহাসন
এ বসলেই এই বিষ প্রবেশ করে বসা
ব্যাক্তির উপর। তারপর আস্তে আস্তে
ঐ ব্যাক্তির মৃত্যু হয়। জ্ঞানদা চরণ তার
ভাইকে মারার জন্য এটা বানালে ও কুখ্যাত
ডাকাত নিরঞ্জন পালী এটাকে হস্তগত
করে। এর পর প্রায় ২০০ বছর এটার
অস্তিত্ব অজানা ছিল। একমাস আগে হাসান
ফ্যামিলির রাওসিব হাসানের মৃতদেহ
আবিষ্কারের মাধ্যমে এটা ঊঠে আসে
সভ্যতার সামনে। নিরীহ দর্শন এই সিংহাসন
হত্যা করেছে প্রায় ৪০ জনের মত
নিরীহ মানুষ কে। তাই এটা থেকে
দূরে থাকুন ................ লেখাটা পড়েই
বর্ষা খুব ভয় পেল। তারপর দৌড়ে চলে
গেল ওর বাবার কাছে ...........