01-02-2018, 04:47 PM
" অতৃপ্ত মন "
শহরের শেষ বিকেলের আলো গুলোতে মানুষ গুলোকে
কেমন যেন দেখায়,
অফিস শেষে সীমা ফুটপাত ধরে হাটছে আর ভাবছে।
আজ তার মন ভীষণ খারাপ,
এতটা খারাপ আগে লাগেনি।
আজ তার স্বামীকে দু দুটো মেয়ের সাথে গাড়িতে
উঠতে দেখেছে। ব্যাপার না,এটা নতুন কিছু নয়।
বিয়ের পর দুবছর ঠিক ছিল, তারপর থেকেই ও.... ......
বিশাল ফ্লাটবাসাটার কি নেই??
চামড়া মোড়ানো দামী সোফা,এসি রুম,স্মার্ট
টিভি,দেশী - বিদেশি শোপিস ভর্তি কাচের
ডায়াস, নরম বিছানার দামী খাট .... শুধু ঐ বিছানায়
আর নিজের শোয়া হয় না....
রাত হলে ঐ বিছানা দখল করে স্বামী আর তার
নিত্যনতুন গার্লফেন্ড্র।
তখন একরুমে চলে লালসার খেলা আর ঠিক পাশের
রুমে ভাগ্যর নির্মম পরিহাসে মাথা ঠুকড়ে চলে
সীমার বোবাকান্না।
প্রথম প্রথম যে প্রতিবাদ করেনি তা নয়, তবে বলতে
গেলেই গলা চেপে ধরে হিস..হিস... করে উঠত। বলত
"খবরদার, চুপ ...একদম চুপ"
এখন আর নিজের কাছে খারাপ লাগে না । মনের
বাধঁনে যাকে আটকানো যায়নি,কথার বাধঁনে সে কি
করে আটকাবে।
মাঝে মাঝে মনে হয়, এইসব অর্থ - সম্পত্তির কাছে
নিজে বিক্রি হয়ে গেছে।
ঐ মেয়েগুলো যেমন অর্থের জন্যে একেক জনের
কাছে শরীর বিকোয়,
নিজেও যেন এতগুলো সম্পত্তির জন্যে একজনের
কাছে সারাজীবনের জন্যে বিক্রি হয়ে গেছে।
ভাবতে ভাবতে সীমা কখন যে রমনা পার্কে ঢুকে
পড়েছে,খেয়াল করেনি।
সন্ধ্যা যেন গাছগুলোর নিচে ঝুপ করে নেমে এসেছে
। আকাশে অল্পখানি রক্তিম আভা লেগে রয়েছে ।
কুয়াশার হালকা চাদর যেন আশপাশ ঘিরে রয়েছে ।
হু হু করে এক দমকা হাওয়া এসে সীমার চুলগুলোকে
এলোমেলো করে দিয়ে গেল।
পার্কে নির্জন এক বেন্চিতে বসল,সীমা।
গায়ের চাদরটা টেনে বসল সে।
এই পার্কের নির্জনতার মতোই,
সীমার জীবনটা আজ একাক্বীত্ব আর বিষাদে ভরা।
ভার্সিটি লাইফের প্রান্তের কথা মনে পড়ে গেল।
দুজন,দুজনকে অনেক ভালবাসতো।
ছুটির দিনে হুড খোলা রিকশায় একসাথে দুজনে
ঘোরা। পথ্যিমধ্যে রাস্তায় ঝালমুড়ি বা চটপটি
পেলে রিকশা থামিয়ে খাওয়া,এমনকি
রিকশাওয়ালাকেও তার ভাগ দেওয়া ।
কখনওবা ঝুম বৃষ্টিতে মিরপুর চিড়িয়াখানার ছোট্ট
লেকটাতে শাপলা ফুলের দিকে তাকিয়ে থাকা।
প্রান্ত বলত, সীমা আমায় ছেড়ে কখনও যাবে না
তো।
-উহু.... কখনোই না ।
-সারাজীবন আমায় এমনি করে পাশে থাকবে তো।
-থাকবো...থাকবো...থাকবো যাও,তিন শর্তি দিলাম
থাকবো....খুশি??
প্রান্ত হেসে দিল।
মধ্যবিত্ত মেয়েদের ইচ্ছে বলে কোন কিছু নাকি
থাকতে নেই। সীমার ছিল কিন্তু বদরাগী বাবার
সামনে মুখ ফুটে বলার সাহসটুকু ছিল না।
আর দশটা মেয়ের মতোই বাবা মার কথা মেনে
বড়লোক ছেলের সাথে বিয়ে হয় সীমার।তারপর.........
বুক চিরে দীর্ঘ নিঃশ্বাস বের হল সীমার।
বেন্চ থেকে উঠে দাড়াল।
এসময় বাসায় থাকার কথা।কিন্তু আজ যেতে ইচ্ছে
করছে না।
রিকশায় উঠল
-আফা কই যামু? ? পনের-ষোল বছরের রিকশাচালক
ছেলেটা বলে উঠল।
-কোথাও না।
ছেলেটা ভ্রু কিন্চিৎ ভাজ করল। তারপর ফিক করে
হেসে উঠল।
-বুঝছি,মন খারাপ। সংসদ চত্তর যাইবেন??
মন ভালা হইয়া যাইবো ।
-চল।
রিকশার হুড খুলে দিয়ে ,চুলগুলো বাতাসে ছেড়ে
দিল,যেমনটি করত প্রান্তের সাথে রিকশায় উঠলে।
তিক্ততা ভরা এ জীবনে রাস্তার সোডিয়ামের হলুদ
আলো আজ বড্ড বেশি ভালো লাগছে।
.
লেখা : অচেনা বালক কাব্য
post: হেমন্তে বর্ষায় আমি
Hello World!:
- tes
- Hello Friends . Welcome Back
শহরের শেষ বিকেলের আলো গুলোতে মানুষ গুলোকে
কেমন যেন দেখায়,
অফিস শেষে সীমা ফুটপাত ধরে হাটছে আর ভাবছে।
আজ তার মন ভীষণ খারাপ,
এতটা খারাপ আগে লাগেনি।
আজ তার স্বামীকে দু দুটো মেয়ের সাথে গাড়িতে
উঠতে দেখেছে। ব্যাপার না,এটা নতুন কিছু নয়।
বিয়ের পর দুবছর ঠিক ছিল, তারপর থেকেই ও.... ......
বিশাল ফ্লাটবাসাটার কি নেই??
চামড়া মোড়ানো দামী সোফা,এসি রুম,স্মার্ট
টিভি,দেশী - বিদেশি শোপিস ভর্তি কাচের
ডায়াস, নরম বিছানার দামী খাট .... শুধু ঐ বিছানায়
আর নিজের শোয়া হয় না....
রাত হলে ঐ বিছানা দখল করে স্বামী আর তার
নিত্যনতুন গার্লফেন্ড্র।
তখন একরুমে চলে লালসার খেলা আর ঠিক পাশের
রুমে ভাগ্যর নির্মম পরিহাসে মাথা ঠুকড়ে চলে
সীমার বোবাকান্না।
প্রথম প্রথম যে প্রতিবাদ করেনি তা নয়, তবে বলতে
গেলেই গলা চেপে ধরে হিস..হিস... করে উঠত। বলত
"খবরদার, চুপ ...একদম চুপ"
এখন আর নিজের কাছে খারাপ লাগে না । মনের
বাধঁনে যাকে আটকানো যায়নি,কথার বাধঁনে সে কি
করে আটকাবে।
মাঝে মাঝে মনে হয়, এইসব অর্থ - সম্পত্তির কাছে
নিজে বিক্রি হয়ে গেছে।
ঐ মেয়েগুলো যেমন অর্থের জন্যে একেক জনের
কাছে শরীর বিকোয়,
নিজেও যেন এতগুলো সম্পত্তির জন্যে একজনের
কাছে সারাজীবনের জন্যে বিক্রি হয়ে গেছে।
ভাবতে ভাবতে সীমা কখন যে রমনা পার্কে ঢুকে
পড়েছে,খেয়াল করেনি।
সন্ধ্যা যেন গাছগুলোর নিচে ঝুপ করে নেমে এসেছে
। আকাশে অল্পখানি রক্তিম আভা লেগে রয়েছে ।
কুয়াশার হালকা চাদর যেন আশপাশ ঘিরে রয়েছে ।
হু হু করে এক দমকা হাওয়া এসে সীমার চুলগুলোকে
এলোমেলো করে দিয়ে গেল।
পার্কে নির্জন এক বেন্চিতে বসল,সীমা।
গায়ের চাদরটা টেনে বসল সে।
এই পার্কের নির্জনতার মতোই,
সীমার জীবনটা আজ একাক্বীত্ব আর বিষাদে ভরা।
ভার্সিটি লাইফের প্রান্তের কথা মনে পড়ে গেল।
দুজন,দুজনকে অনেক ভালবাসতো।
ছুটির দিনে হুড খোলা রিকশায় একসাথে দুজনে
ঘোরা। পথ্যিমধ্যে রাস্তায় ঝালমুড়ি বা চটপটি
পেলে রিকশা থামিয়ে খাওয়া,এমনকি
রিকশাওয়ালাকেও তার ভাগ দেওয়া ।
কখনওবা ঝুম বৃষ্টিতে মিরপুর চিড়িয়াখানার ছোট্ট
লেকটাতে শাপলা ফুলের দিকে তাকিয়ে থাকা।
প্রান্ত বলত, সীমা আমায় ছেড়ে কখনও যাবে না
তো।
-উহু.... কখনোই না ।
-সারাজীবন আমায় এমনি করে পাশে থাকবে তো।
-থাকবো...থাকবো...থাকবো যাও,তিন শর্তি দিলাম
থাকবো....খুশি??
প্রান্ত হেসে দিল।
মধ্যবিত্ত মেয়েদের ইচ্ছে বলে কোন কিছু নাকি
থাকতে নেই। সীমার ছিল কিন্তু বদরাগী বাবার
সামনে মুখ ফুটে বলার সাহসটুকু ছিল না।
আর দশটা মেয়ের মতোই বাবা মার কথা মেনে
বড়লোক ছেলের সাথে বিয়ে হয় সীমার।তারপর.........
বুক চিরে দীর্ঘ নিঃশ্বাস বের হল সীমার।
বেন্চ থেকে উঠে দাড়াল।
এসময় বাসায় থাকার কথা।কিন্তু আজ যেতে ইচ্ছে
করছে না।
রিকশায় উঠল
-আফা কই যামু? ? পনের-ষোল বছরের রিকশাচালক
ছেলেটা বলে উঠল।
-কোথাও না।
ছেলেটা ভ্রু কিন্চিৎ ভাজ করল। তারপর ফিক করে
হেসে উঠল।
-বুঝছি,মন খারাপ। সংসদ চত্তর যাইবেন??
মন ভালা হইয়া যাইবো ।
-চল।
রিকশার হুড খুলে দিয়ে ,চুলগুলো বাতাসে ছেড়ে
দিল,যেমনটি করত প্রান্তের সাথে রিকশায় উঠলে।
তিক্ততা ভরা এ জীবনে রাস্তার সোডিয়ামের হলুদ
আলো আজ বড্ড বেশি ভালো লাগছে।
.
লেখা : অচেনা বালক কাব্য
post: হেমন্তে বর্ষায় আমি
Hello World!:
- tes
- Hello Friends . Welcome Back
Hasan