02-20-2017, 10:44 AM
পাঠকের প্রশ্ন: , শুভেচ্ছা জানাই। যদিও আমি নিজের সমস্যা কারো সাথে শেয়ার করতে চাইনা। কিন্তু ইদানিং খুব অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছি। আসেপাশের সব খুব বেশি অগোছালো হয়ে গেছে। আমার প্রধান সমস্যা হচ্ছে আমার সবচেয়ে কাছের লোকজন। বাবা, মা ও একমাত্র ছোট ভাই। এদের কারো সাথেই আমার ঠিক যেন আর কিছুতেই মিলছে না। নিজেকে ভিষণ একা আর অসহায় মনে হচ্ছে।
এইটুকু পড়ে আমাকে টিনেজ ভাবতেই পারেন। তবে আমার চাকরির বয়স ৪ বছর। আমি একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা। জীবনের এই সময়ে এ ধরণের চিন্তা খুব অবিবেচকের মতন। যাকেই বলব সে-ই বলবে- ধৈর্য ধর, সব ঠিক হয়ে যাবে। কিংবা সুখে থাকতে ভুতে কিলায় টাইপ কথাও শুনতে হবে।
কিন্তু আমার এই চিন্তাটা নতুন না। অনেক ছোটবেলা থেকেই নিজেকে একা লাগত। তখন নিজেকে দোষারোপ করতাম। আমি কেন কালো, মোটা আর লম্বা? সাথে চশমাও ছিল। নিজেকে খুব খারাপ মেয়ে মনে হত। বাড়ির বড় মেয়ে। একদম ছোটবেলাটা খুব আদরে কেটেছে। তবে যখন থেকে আমার আইডেন্টিটি একজন বাচ্চার বদলে মেয়ে হয়ে গেল, তখন থেকেই আমার কমতি গুলো আমাকে চোখে আংগুল দিয়ে দেখানো শুরু হল।
আমি অলস।
ঘরের কোন কাজ পারিনা।
দেখতে অসুন্দর।
কথাও বলতে পারিনা।
এর সাথে ছিল ভাই হবার পর হুট করে আমাকে বড় বানিয়ে দেয়া। 'ভাই মারলে কি হয় তুমি না বড়"- এসবের সাথে সাথে আরো অনেক কিছু। তারপর বন্ধুদের মাঝে আমি খুব একটা জনপ্রিয় ছিলাম না। তবে বন্ধু নিজে থেকে বানাতে না পারলেও তাদের ধরে রাখতে চাইতাম সবসময়। আমার বন্ধুরা এখোন কিছু বললে সেটা করে দিতে চেষ্টা করি। তাতে আমার যত কষ্টই হোক না কেন।
আস্তে আস্তে আমিও বড় হলাম। খুব গুছিয়ে কথা বলতে পারতাম না। তাই একসময় কথা বলা কমিয়ে কথা শোনায় মনযোগী হলাম। কিছুটা বুঝতে শিখলাম আশপাশের জগতকে। তবুও শুন্যতা ছিল। কলেজ পর্যন্ত যে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল, অনার্সের প্রতিষ্ঠান আলাদা হবার সুবাদে বন্ধুত্ব ভেঙে গেল। আমি কল করলে ও কথা বলত। কিন্তু নিজে থেকে কল করত না। শেষে আমিও কল দেওয়া বন্ধ করে দিলাম।
এরপর মাস্টার্স কমপ্লিট করে চাকরির জন্য দৌড় শুরু। প্রচন্ড ইচ্ছা ছিল বিসিএস ক্যাডার হব। হওয়া হল না। আর বিসিএস চেষ্টা করার জন্য আমার যতগুলো বিয়ের সম্বন্ধ আসত সবাই জিজ্ঞেস করত বর্তমান চাকরি ছেড়ে বিসিএসে কেন যাব? এখানেও সবাই কম্প্রোমাইজ করতে বলল। সবাই বলল- কী দরকার, বিসিএসই লাগবে কেন? ফলসরূপ এখনো বিয়ে হয়নি। সেই সাথে বিসিএসের স্বপ্নও বিসর্জন দিয়েছি বয়স থাকা সত্বেও। বিয়ে করতে আমি রাজি , কিন্তু প্রস্তাব আসা কোন ছেলেকেই পুরোপুরি পছন্দ হচ্ছেনা। তার উপর একটা সম্বন্ধ বিয়ের ডেট ঠিক হয়ে যাবার পরে ছেলের কথার ধরণ পছন্দ না হওয়াতে আমি নিজে ভেঙে দিয়েছি।
এখন আসছি নিজের পরিবারের প্রসঙ্গে। বাবা রিটায়ার করে সারাদিন বাসায় থাকে। আমার বিয়ে দেওয়াটা তার কাছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টার্গেট এচিভ করার মত হয়ে গিয়েছে। মা অনেকটা বোঝে আমাকে। তবে তার নিত্য নেগেটিভ অভিযোগগুলো মানতে পারিনা। ছোটবেলারগুলো তো আছেই। সাথে যোগ হয়েছে সব খাবার খেতে চাইনা, হোস্টেলে একা থেকে শুচিবায়ু গ্রস্ত হয়ে গেছি ইত্যাদি।
ভাই কেবল এল. এল. বি পাস করেছে। কিছুই করেনা, কিন্তু বাবার যতুটুকু সম্পত্তি আছে সেটা গুছিয়ে নিতে চাইছে। এ বিষয়ে কিছু কথা বলতে গিয়েছিলাম। তাতে তার ধারণা হয় আমি অবশ্যই সম্পত্তির ভাগ চাইতে আসব। এছাড়া আরো নানা ইস্যু আছে ওকে নিয়ে।
আমি ইদানিং খুব বেশি মাত্রায় লো ফিল করছি। সামান্য কিছু কি বলতে পারেন যাতে নিজেকে একটু চাঙ্গা করতে পারি। আগে এরকম হলে মুভি দেখতাম, বই পড়তাম কিন্তু এখন তাতেও কাজ হচ্ছেনা। নিজের বাসাই নিজের কাছে সবচেয়ে অসহ্য হয়ে গিয়েছে। ধন্যবাদ আপু , এতক্ষণ ধৈর্য ধরে আমার কথা পড়ার জন্য। আমার না সব কথা বলার মত কোন মানুষ নাই।
প্রশ্নটি আমাদের ফেসবুক পেজে করেছেন : নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন।
চাইলে আপনিও যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন আমাদের কাছে। আর নিজের নাম গোপন রাখতে চাইলে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন পেজের ইনবক্সে, সঙ্গে লিখে দিতে হবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
স্বাস্থ্য হোক বা সৌন্দর্য, খেলা হোক বা সিনেমা, দাম্পত্য বা প্রেম, অফিসের সমস্যা কিংবা আইনি, বিজ্ঞান হোক বা রাজনীতি, স্কুল-কলেজ হোক বা সামাজিক ও পারিবারিক কোনো সমস্যা। যে কোনো সমস্যা লিখে জানান আমাদের। আপনার হয়ে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করবো আমরা।
আপনার প্রশ্ন, বিশেষজ্ঞের উত্তর।
আপনার জন্যই অপেক্ষায় আছি আমরা।
এইটুকু পড়ে আমাকে টিনেজ ভাবতেই পারেন। তবে আমার চাকরির বয়স ৪ বছর। আমি একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা। জীবনের এই সময়ে এ ধরণের চিন্তা খুব অবিবেচকের মতন। যাকেই বলব সে-ই বলবে- ধৈর্য ধর, সব ঠিক হয়ে যাবে। কিংবা সুখে থাকতে ভুতে কিলায় টাইপ কথাও শুনতে হবে।
কিন্তু আমার এই চিন্তাটা নতুন না। অনেক ছোটবেলা থেকেই নিজেকে একা লাগত। তখন নিজেকে দোষারোপ করতাম। আমি কেন কালো, মোটা আর লম্বা? সাথে চশমাও ছিল। নিজেকে খুব খারাপ মেয়ে মনে হত। বাড়ির বড় মেয়ে। একদম ছোটবেলাটা খুব আদরে কেটেছে। তবে যখন থেকে আমার আইডেন্টিটি একজন বাচ্চার বদলে মেয়ে হয়ে গেল, তখন থেকেই আমার কমতি গুলো আমাকে চোখে আংগুল দিয়ে দেখানো শুরু হল।
আমি অলস।
ঘরের কোন কাজ পারিনা।
দেখতে অসুন্দর।
কথাও বলতে পারিনা।
এর সাথে ছিল ভাই হবার পর হুট করে আমাকে বড় বানিয়ে দেয়া। 'ভাই মারলে কি হয় তুমি না বড়"- এসবের সাথে সাথে আরো অনেক কিছু। তারপর বন্ধুদের মাঝে আমি খুব একটা জনপ্রিয় ছিলাম না। তবে বন্ধু নিজে থেকে বানাতে না পারলেও তাদের ধরে রাখতে চাইতাম সবসময়। আমার বন্ধুরা এখোন কিছু বললে সেটা করে দিতে চেষ্টা করি। তাতে আমার যত কষ্টই হোক না কেন।
আস্তে আস্তে আমিও বড় হলাম। খুব গুছিয়ে কথা বলতে পারতাম না। তাই একসময় কথা বলা কমিয়ে কথা শোনায় মনযোগী হলাম। কিছুটা বুঝতে শিখলাম আশপাশের জগতকে। তবুও শুন্যতা ছিল। কলেজ পর্যন্ত যে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল, অনার্সের প্রতিষ্ঠান আলাদা হবার সুবাদে বন্ধুত্ব ভেঙে গেল। আমি কল করলে ও কথা বলত। কিন্তু নিজে থেকে কল করত না। শেষে আমিও কল দেওয়া বন্ধ করে দিলাম।
এরপর মাস্টার্স কমপ্লিট করে চাকরির জন্য দৌড় শুরু। প্রচন্ড ইচ্ছা ছিল বিসিএস ক্যাডার হব। হওয়া হল না। আর বিসিএস চেষ্টা করার জন্য আমার যতগুলো বিয়ের সম্বন্ধ আসত সবাই জিজ্ঞেস করত বর্তমান চাকরি ছেড়ে বিসিএসে কেন যাব? এখানেও সবাই কম্প্রোমাইজ করতে বলল। সবাই বলল- কী দরকার, বিসিএসই লাগবে কেন? ফলসরূপ এখনো বিয়ে হয়নি। সেই সাথে বিসিএসের স্বপ্নও বিসর্জন দিয়েছি বয়স থাকা সত্বেও। বিয়ে করতে আমি রাজি , কিন্তু প্রস্তাব আসা কোন ছেলেকেই পুরোপুরি পছন্দ হচ্ছেনা। তার উপর একটা সম্বন্ধ বিয়ের ডেট ঠিক হয়ে যাবার পরে ছেলের কথার ধরণ পছন্দ না হওয়াতে আমি নিজে ভেঙে দিয়েছি।
এখন আসছি নিজের পরিবারের প্রসঙ্গে। বাবা রিটায়ার করে সারাদিন বাসায় থাকে। আমার বিয়ে দেওয়াটা তার কাছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টার্গেট এচিভ করার মত হয়ে গিয়েছে। মা অনেকটা বোঝে আমাকে। তবে তার নিত্য নেগেটিভ অভিযোগগুলো মানতে পারিনা। ছোটবেলারগুলো তো আছেই। সাথে যোগ হয়েছে সব খাবার খেতে চাইনা, হোস্টেলে একা থেকে শুচিবায়ু গ্রস্ত হয়ে গেছি ইত্যাদি।
ভাই কেবল এল. এল. বি পাস করেছে। কিছুই করেনা, কিন্তু বাবার যতুটুকু সম্পত্তি আছে সেটা গুছিয়ে নিতে চাইছে। এ বিষয়ে কিছু কথা বলতে গিয়েছিলাম। তাতে তার ধারণা হয় আমি অবশ্যই সম্পত্তির ভাগ চাইতে আসব। এছাড়া আরো নানা ইস্যু আছে ওকে নিয়ে।
আমি ইদানিং খুব বেশি মাত্রায় লো ফিল করছি। সামান্য কিছু কি বলতে পারেন যাতে নিজেকে একটু চাঙ্গা করতে পারি। আগে এরকম হলে মুভি দেখতাম, বই পড়তাম কিন্তু এখন তাতেও কাজ হচ্ছেনা। নিজের বাসাই নিজের কাছে সবচেয়ে অসহ্য হয়ে গিয়েছে। ধন্যবাদ আপু , এতক্ষণ ধৈর্য ধরে আমার কথা পড়ার জন্য। আমার না সব কথা বলার মত কোন মানুষ নাই।
প্রশ্নটি আমাদের ফেসবুক পেজে করেছেন : নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন।
চাইলে আপনিও যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন আমাদের কাছে। আর নিজের নাম গোপন রাখতে চাইলে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন পেজের ইনবক্সে, সঙ্গে লিখে দিতে হবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
স্বাস্থ্য হোক বা সৌন্দর্য, খেলা হোক বা সিনেমা, দাম্পত্য বা প্রেম, অফিসের সমস্যা কিংবা আইনি, বিজ্ঞান হোক বা রাজনীতি, স্কুল-কলেজ হোক বা সামাজিক ও পারিবারিক কোনো সমস্যা। যে কোনো সমস্যা লিখে জানান আমাদের। আপনার হয়ে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করবো আমরা।
আপনার প্রশ্ন, বিশেষজ্ঞের উত্তর।
আপনার জন্যই অপেক্ষায় আছি আমরা।