Forums.Likebd.Com

Full Version: একটি সত্য ঘটনা। ভুত/প্রেত/জীন বিশ্বাস না করলে পড়বেন না কেউ।
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
আমার বাড়ি বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পাশেই।
ছোটবেলা থেকে গ্রামে গঞ্জে থেকে মানুষ আমি ভূতের ভয়
নেই বললেই চলে । অনেকের মুখে শুনেছি সন্ধ্যার পর
কীর্তনখোলার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে নাকি অশরীরীর দেখা
পাওয়া যায়। আমি কখনো এসব বিশ্বাস করতাম না। সেবার
মামার বাড়িতে গিয়েছিলাম একটা কাজে। এক পরিচিত চাচার
মোটর নৌকায় গিয়েছিলাম।
বাসায় ফেরার পথে সন্ধ্যা হয়ে যায়। চাচার গঞ্জে কাজ
ছিলো দেখে আমাকে বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে নামিয়ে
দেয়। আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সমস্যা হবে নাকি। আমি
না করি। চাচাকে বিদায় দিয়ে বাড়ির পথে হাঁটতে লাগলাম।
সন্ধ্যা নেমেছে চারপাশে। খুব দ্রুতই রাতের আঁধারে চারপাশ
ঢেকে যাবে।
আমার সাথে কোনও আলো নেই। তবে বাড়ি খুব একটা দুরের
পথ না। বাকা পথে গেলে ১৫ মিনিট। আর সোজা রাস্তা দিয়ে
গেলে ২৫-৩০ মিনিট লাগবে। সেইদিন বাংলাদেশের সাথে
ইংল্যান্ডের খেলা ছিল। তাই আমি সময় বাঁচানোর জন্য
বাকা পথ যাকে আমরা বলি শর্ট রাস্তা ধরে হাঁটা দিলাম।
হনহন করে হাঁটছি।
সবাই মনে হয় বাংলাদেশের খেলা দেখছে। কাউকেই দেখলাম
না পথে। প্রায় ৪-৫ মিনিট হাঁটার পর আমার পাশের একটা
ঝুপে ধপ করে কি যেন পড়লো। বলতে ভুলে গেছি, শর্ট
রাস্তাটা একটু জঙ্গলা টাইপের এলাকার মধ্য দিয়ে। চারপাশে
ঝি ঝি পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। আওয়াজটা শুনেই আমি
থেমে গেলাম।
একদম চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম ২০ সেকেন্ড। কান খাঁড়া করে
শোনার চেষ্টা করলাম কিসের আওয়াজ হল। কিন্তু কোনও
শব্দ হল না আর। আমি নাছোড়বান্দা। আস্তে আস্তে পা
টিপে এগিয়ে গেলাম ঝোপের দিকে। অনেকেই ভাববেন হয়তো
মিথ্যা বলছি। কিন্তু ভাই আমি আসলেই অনেক সাহসী
ছিলাম।
একা হাতে গভীর রাতে ২টা চোর একসাথে পিটাইছি। ভয় ডর
খুব কম। যাই হোক, ঝোপের পাশে দাঁড়িয়ে উকি দিলাম।
উকি দিয়েই চমকে উঠলাম। ঐ পাশে দেখলাম একটা সাদা
কাপড় পড়া মহিলা ঝুঁকে আছে কিছু একটার উপর। দেখে মনে
হল কোনও চারপেয়ে জানোয়ার। অন্ধকার হতে যাচ্ছে। দৃষ্টি
পরিষ্কার না।
মহিলার পাশ থেকে গচ গচ শব্দ হচ্ছিলো। হাড় ভাঙার
আওয়াজ কানে এলো। কড়মড় করে কি যেন খাচ্ছে। আমি আর
সহ্য করতে পারলাম না। জোরে চিৎকার দিয়ে বললাম, ঐ
কেডা রে ? কেডা হেইখানে ?
সাথে সাথে পাই করে আমার দিকে ঘুরে গেলো মহিলাটা। ওটার
চেহারা দেখার সাথে সাথে মনে হল কলিজাটা এক লাফে গলায়
উঠে এলো। বহু কষ্টে নিজেকে দাঁড় করে রাখলাম। মহিলার
বয়স বুঝতে পারি নি, তবে সাদা চুল, সাদা কাপড়, এবং সাড়া
মুখে লেগে থাকা রক্ত এবং সামনে পড়ে থাকা একটা মাঝারি
সাইজের গরুর মৃত দেহ দেখে কিছু বুঝতে বাকি রইলো না।
এরপর শুধু এতটুকু মনে আছে যে জ্ঞান হারাবার আগে জোরে
কয়েকবার লা ইলাহা ইলাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবর
বলেছিলাম। মহিলাটা চোখের পলকে মরা গরুটা রেখে আমার
দিকে এগিয়ে এলো। এরপরে আমার কিছু মনে নেই।
জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে আবিষ্কার করি আমাদের বাড়ির
উঠানে। সামনে এলাকার সব মুরুব্বী এবং গঞ্জের বড় হুজুর
বসে আছে। উনাদের কাছে শুনতে পাই রাতে রাস্তা দিয়ে
ফেরার পথে আমাদের বাড়ির ৩ বাড়ির পরের রহমত আলি
চাচা আমাকে দেখতে পান। এরপর আরও মানুষের সাহায্যে
আমাকে বাসায় নিয়ে আসেন।
আশ্চর্যের ব্যাপার যে সেইদিন আমার থেকে একটু দূরে একটা
আধ খাওয়া গরুর মৃত দেহ পাওয়া যায়। গরুটির শরীরের বাকি
অংশ পাওয়া গেলেও মাথা থেকে পেট পর্যন্ত ছিল না।