Forums.Likebd.Com

Full Version: অ্যান্টাসিড যেভাবে আপনার শরীরের উপর প্রভাব ফেলে
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
অনেক মানুষই পেটে ব্যথা হলেই একটি অ্যান্টাসিড সেবন করে ফেলেন, তাই না? এটি বেশিরভাগ মানুষের জন্যই খুবই সাধারণ একটি বিষয়। এসিডিটির সমস্যা হলেই কোন কিছু চিন্তা করা ছাড়াই অ্যান্টাসিড গ্রহণ করেন বেশিরভাগ মানুষ। এসিডিটির সমস্যার ক্ষেত্রে একবার বা দুইবার অ্যান্টাসিড গ্রহণ করাই যায় কিন্তু নিয়মিত এটি গ্রহণ করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। কারণ এটি নিয়মিত সেবনের ফলে অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। শরীরে অ্যান্টাসিডের প্রতিক্রিয়ার ফলাফল জেনে নিই চলুন।

অ্যান্টাসিড কীভাবে কাজ করে

আমাদের পাকস্থলী এসিডিক প্রকৃতির, এর pH 3। আপনি যে খাবার খান তা ভেঙ্গে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট এ পরিণত হয় পাকস্থলীর এই pH মাত্রায়। এই হজম উপযোগী উপাদানগুলো (প্রিডাইজেস্টেড) পাকস্থলী থেকে অন্ত্রে যায়, যেখানের pH হালকা ক্ষারীয়। এই পর্যায়ে পুষ্টি উপাদান রক্ত ও কোষে শোষিত হয়।

যদি আপনি অ্যান্টাসিড গ্রহণ করে থাকেন তাহলে এটি পাকস্থলীর এসিডকে নিরপেক্ষ করে দেয় এবং হজম প্রক্রিয়ায় কোন সাহায্য করে না। পাকস্থলীতে এসিড না থাকলে হজমকে ব্যাহত করে। এর ফলশ্রুতিতে অপরিপাককৃৎ খাবার এবং বৃহত্তর কণা অন্ত্রে যায় এবং অন্ত্রের প্রাচীরের মধ্যে গর্তের সৃষ্টি করে। এর ফলে খাদ্য কণায় রক্ত মিশে যায় এবং লিকি গাট, IBS বা অটোইমিউন ডিজিজ সৃষ্টি করে।

অতিরিক্ত অ্যান্টাসিড গ্রহণ করলে যা হয়

অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভুগলেই যদি আপনি অ্যান্টাসিড গ্রহণ করেন তাহলে এটি আপনার জানা প্রয়োজন যে, এই সমস্যা সমাধানের জন্য পরবর্তীতে আপনাকে অনেক শক্তিশালী ও অনেক বেশি পরিমাণে অ্যান্টাসিড গ্রহণ করতে হবে। অ্যান্টাসিডে অ্যালুমিনিয়াম থাকে। তাই অনেক বেশি অ্যান্টাসিড গ্রহণ করলে অ্যালুমিনিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং অ্যালুমিনিয়ামের অতিরিক্ত মাত্রা বিষাক্ততা সৃষ্টি করে। আপনার সতর্ক হওয়া প্রয়োজন এই কারণে যে, অতিরিক্ত অ্যালুমিনিয়াম কিডনির সমস্যা, অষ্টিওপোরোসিস এবং আলঝেইমার্স রোগ সৃষ্টি করে। এতে ম্যাগনেসিয়াম ও থাকে যা কিডনির উপর ও প্রভাব ফেলে এবং ডায়রিয়াও সৃষ্টি করতে পারে। ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ের জন্য আপনাকে ঔষধ গ্রহণ করতে হয় বলে আপনার ঔষধ গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

এছাড়াও অ্যান্টাসিড শরীরের আয়রন শোষণকে বাঁধা দেয়। এর ফলে শরীরে হিমোগ্লোবিন এবং ফেরিটিন এর মাত্রা কমে যায় বলে আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হয়। আয়রন সাপ্লিমেন্ট অতিরিক্ত গ্রহণ করলে যকৃতকে নিষ্ক্রিয় বা মন্থর করে দেয়। এর ফলে যেহেতু শরীরের ফ্যাট পুড়ে না তাই ওজন কমানো কঠিন হয়। এছাড়াও দীর্ঘদিন অ্যান্টাসিড গ্রহণের ফলে যকৃতে মেদ জমে যায়।

কীভাবে এর সমাধান করা যায়?

এই সমস্যা মোকাবেলার একমাত্র উপায় টপাটপ অ্যান্টাসিড গ্রহণ না করা এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করা। এছাড়াও লাইফস্টাইলের পরিবর্তন যেমন – খাদ্য খুব ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া উচিৎ যাতে ভালোভাবে হজম হয়। খালি পেটে, খাওয়ার সাথে বা খাওয়ার পরপর ফল খাবেন না, এর ফলে অনেক বেশি অ্যাসিডিক অবস্থা তৈরি হয়। এছাড়াও স্ট্রেস অনুভব করলেই খাবেন না, এতে উচ্চমাত্রার করটিসোল নিঃসৃত হয় বলে অনেক বেশি অ্যাসিডিক অবস্থা তৈরি হয়। বেশি পরিমাণে পানি পান করুন কিন্তু খাওয়ার সময় পানি পান করবেন না।

সূত্র: দ্যা হেলথ সাইট