Forums.Likebd.Com

Full Version: যে কারণে রাতারাতি বুড়িয়ে যায় মানুষ
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
কখনো কখনো একজন মানুষকে দেখে মনে হয় এক রাতের মাঝেই বয়স বেড়ে গেছে তার। এই ঘটনাটি কেন হয়, তার ব্যাখ্যা দেন বায়োলজিতে নোবেলপ্রাপ্ত ডঃ এলিজাবেথ ব্ল্যাকবার্ন। একজন মানুষ খুব বেশী স্ট্রেসের মাঝে পড়লে তাদের বয়স খুব দ্রুত বেড়ে গেছে বলে মনে হয়। এটা শরীরের ওপর স্ট্রেসের প্রভাবের কারণে হয়। শরীরের কোষগুলো এতই আক্রান্ত হয় যে তারা নিজেদের সারিয়ে তুলতে পারে না। ফলে মানুষটি রাতারাতি বুড়ো হয়ে গেছে বলে মনে হয়।

মানুষের জীবনে স্ট্রেসের শেষ নেই। কিন্তু খুব বড় কোনো বিপর্যয়ের মাঝে দিয়ে গেলে সেই স্ট্রেস আসলেই শরীরের ওপর দৃশ্যমান প্রভাব ফেলে। মনে হয় মানুষটি দুঃখে-কষ্টে বুড়িয়ে গেছেন। এটা হয় স্ট্রেস হরমোনের কারণে। স্ট্রেস সামলাতে গিয়ে আমাদের শরীর কিছু প্রতিক্রিয়া দেখায়। স্ট্রেস বেশী হলে সেই প্রতিক্রিয়াও বেশী হয়। স্ট্রেস হরমোন আসলে আমাদেরকে প্রতিকূল পরিস্থিতি সামলানোর জন্য প্রস্তুত করতে চায়। কিন্তু ফলাফল খুব একটা ভালো হয় না।

স্ট্রেস হরমোন এভাবে অনেক বেশী প্রতিক্রিয়া তৈরি করে শরীরের কোষ এবং ক্রোমোজোম, বিশেষ করে ক্রোমোজোমের শেষ অংশ টেলোমিয়ারের ওপরে। এর ফলে কোষের ক্ষয়পূরণ এবং সেরে ওঠার প্রক্রিয়া বাঁধাগ্রস্ত হয়। আমাদের তারুণ্য এবং সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য কোষের এই ক্ষয়পূরণ খুবই জরুরী। বড় কোনো ঘটনায় এই প্রক্রিয়ায় বাঁধা পড়ার কারণে আমাদের শরীর বুড়িয়ে যায়। বড় সমস্যা হলো টেলোমিয়ারের অবস্থা খারাপ হয়। টেলোমিয়ার সুস্থ না থাকলে একজন মানুষের শরীরে বুড়ো হয়ে যাবার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যেতে পারে কম বয়সেই।


ক্রোমোজোমের নীল প্রান্তগুলো টেলোমিয়ার, তাদের স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে আমাদের তারুণ্য। ছবি: সংগৃহীত

কোষের ভেতরে শুরু হলেও ব্যাপারটা আমরা খালি চোখেই দেখতে পারি। খুব সাধারণ একটি উদাহরণ হলো কারো প্রিয়জনের মৃত্যু, বড় কোনো দুর্ঘটনা, চাকরি চলে যাওয়া এসব ঘটনায় মানুষের চেহারা এমন হয় যে আমরে দেখেই বলে উঠি, “ওর বয়স এক রাতে দশ বছর বেড়ে গেছে”। এটা মোটেই মুখের কথা নয়, বরং আসলেই এমন স্ট্রেসের প্রভাব শরীরে বেশ বোঝা যায়।

তবে এই পরিস্থিতিতেও আশার কথা আছে। শরীরে তারুণ্য ফিরিয়ে আনতে এমন কিছু কাজ করা যেতে পারে যাতে টেলোমিয়ারের অবস্থা ভালো হয়। টেলোমিয়ার নিয়ে বিভিন্ন বড় বড় গবেষণা থেকে আমরা জানতে পারি কী কী কাজ করলে আসলে টেলোমিয়ারের অবস্থার উন্নতি হতে পারে এবং আমাদের এই বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করা যেতে পারে। এর মাঝে আছে টেনশন কমানো, ব্যায়াম, আঁশযুক্ত বিশেষ করে হোল গ্রেইন খাবার খাওয়া, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর খাবার খাওয়া, মাছ খাওয়া, ওজন কমানো ইত্যাদি।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার ও প্রিভেনশন