Forums.Likebd.Com

Full Version: শিশুর দেরীতে কথা বলা নিয়ে চিন্তিত আপনি?
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
সব পিতামাতাই সন্তানের মুখ থেকে প্রথম শব্দ শোনার জন্য অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেন। তাই সন্তানের কথা বলায় দেরী হলে তা অত্যন্ত দুশ্চিন্তা ও হতাশার কারণ হয়। তবে ভালো খবর হচ্ছে বেশিরভাগ শিশুরাই দেরীতে কথা বলা শুরু করে দুই বছর বয়সের মধ্যে কোন সমস্যা ছাড়াই। প্রতি চারজনে একজন শিশু বিলম্বে কথা বলা শুরু করে। এদের বেশিরভাগেরই বিশেষ সাহায্যের প্রয়োজন হয় না। শিশুর কথা বলার বিষয়ে এবং কখন একজন বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া প্রয়োজন সে বিষয়ে জেনে আসি চলুন।

যা স্বাভাবিক

যদিও শিশুদের কথা বলার প্রক্রিয়া একই রকম ভাবে শুরু হয় তবুও বিভিন্ন শিশুতে এর বিভিন্নতা দেখা যায়। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী শিশুর ১ বছর বয়সের মধ্যে শিশু একটি শব্দ বলা শেখে। ১৮ থেকে ২ বছর বয়সের মধ্যে ২ টি শব্দের সমন্বয়ে কথা বলে এবং ৩ বছর বয়সের আগেই ৩ শব্দের বাক্য বলতে পারে। যদিও ১৮ মাস বয়সেই অনেকে ৫০ থেকে ১০০ টা শব্দ বলতে পারে যার বেশিরভাগই বোঝা যায় না। অঙ্গভঙ্গি ও নির্দেশনা অনুসরণ করতে পারলেই বোঝা যায় যে শিশুর এগুলো বোঝার ক্ষমতা তৈরি হয়েছে এবং সে যোগাযোগ করতে পারছে।

শিশুর দেরীতে কথা বলার কারণ

বংশগতি এবং মেজাজের কারণে শিশুর ভাষাগত বিলম্ব হতে দেখা যায়। শিশুর প্রতিটা প্রয়োজনে শিশু কথা বলবে এটার অপেক্ষা না করে পিতামাতার উচিৎ নিজে থেকেই তার সাথে কথা বলা যেমন- 'তুমি কী তোমার ফিডারটা চাও?' বা, 'ক্ষুধা লেগেছে তোমার?' ইত্যাদি।

মেয়ে শিশুর তুলনায় ছেলে শিশুদের কথা বলায় দেরী হয় বেশি এবং তা হতে পারে ১/২ মাসের ব্যবধানে। ১৬ মাস বয়সে ছেলে শিশুরা গড়ে ৩০ টি শব্দ বলতে পারে যেখানে মেয়ে শিশুরা গড়ে ৫০ টি শব্দ বলতে পারে।

যারা কিছুদিন আগে জন্মগ্রহণ করে অর্থাৎ প্রিম্যাচিউর শিশুদের কথা বলা শুরু হতে দেরি হয়। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রিম্যাচিউর শিশুর উন্নয়নের হিসাব করার সময় তার জন্ম তারিখ নয় বরং তার যখন জন্মানোর কথা ছিল সেই তারিখটি থেকে গণনা শুরু করতে হবে। ৩ মাস পূর্বে জন্মগ্রহণ করা শিশুর কথা বলতে দেরী হচ্ছে মনে হতে পারে কিন্তু সে আসলে ঠিক ভাবেই বেড়ে উঠছে।

সঠিক সময়ের পূর্বেই জন্মগ্রহণ করা, কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করা এবং জন্মের সময়ে চিকিৎসাগত কোন সমস্যার কারণে শিশুর ভাষার দক্ষতা অর্জনে বিলম্ব হতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদে কানের সংক্রমণে আক্রান্ত হয় যে শিশুরা তাদের কথা বলা শুরু করতে দেরি হয়। যদি শিশুর ১ বছর বয়সের মধ্যে তার কানের ভেতরে তরল জমা থাকে সংক্রমণের কারণে তাহলে তার শব্দ শুনতে সমস্যা হবে এবং সে দেরীতে কথা বলা শুরু করবে।

শিশুর ভাষাগত দক্ষতা অর্জনে দেরী হলেও তার অন্যান্য বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে হলে বুঝতে হবে যে সে অন্যকোন একটি বিষয়ে (যেমন – হাঁটার) দক্ষতা অর্জনের জন্য চেষ্টা করছে।

যখন শিশুর সাহায্য প্রয়োজন

১ বছর বয়সেও শিশু যখন অস্ফুট বাক্য বলে না বা অন্যদের কথার সাথে সাথে তা অনুকরণ করার চেষ্টা করে না বা প্রতিক্রিয়া দেখায় না তখন বুঝতে হবে যে কোন সমস্যা আছে তার।

- ১৮ মাস বয়সেও যদি সে ১ টি শব্দ ও না বলে,

- ২ বছর বয়সেও যদি সে খুব অল্প শব্দ বলতে পারে এবং যদি সে খুব একটা কথা না বলে,

- আড়াই বছর বয়সেও যদি সে ৫০ টির মত শব্দ বলতে না পারে,

- ৩ বছর বয়সেও যদি তার উচ্চারণগুলো অন্যরা বুঝতে না পারে তখন শিশুর সাহায্য প্রয়োজন বলে ধরে নিতে হবে।

কী করতে হবে?

শিশুর আড়াই বছর বয়সেও যদি সঠিকভাবে শব্দ বলতে না পারে তাহলে তার চিকিৎসকের সাহায্য প্রয়োজন। স্পীচ থেরাপির মাধ্যমে বা কানের সংক্রমণের নিরাময় বা শ্রবণ সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে চিকিৎসক তার নিরাময়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

আড়াই বছর বয়সের পূর্বেই আপনার কণ্ঠস্বর শুনে সে কথা বলতে উৎসাহিত হয় এবং কথা বলতে শেখে। তাই শিশুর সামনে উচ্চস্বরে কথা বলুন, বই পড়ুন, গান শুনুন এবং তাকে আপনার সাথে কথা বলতে উৎসাহিত করুন। মুখে বুদবুদ তৈরি করলে মুখের পেশীর উন্নতি হয় এবং খেলনা টেলিফোনে কথা বললে বা তার সাথে খেলার ছলে কথা বললে সে কথা বলতে উৎসাহিত হবে।

সূত্র: প্যারেন্টিং