Forums.Likebd.Com

Full Version: ইসলামে ইয়াতিম অসহায়দের প্রতি মানুষের কর্তব্য
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
ইসলাম সব মানুষের সাথে সদাচরণের শিক্ষা দেয়।

বিশেষ করে সমাজের অবহেলিত দুঃস্থ, অসহায়,

ইয়াতিম এবং মজলুম মানুষের প্রতি বিত্তবানদের

রয়েছে অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য। সব অসহায়

মানুষকে দান ও সহযোগিতার প্রতি ইসলাম অধিক

গুরুত্বারোপ করেছে।
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক জায়গায়

সমাজের সব অসহায় দুঃস্থ, ইয়াতিম ও মজুলম মানুষের

প্রতি সদয় হওয়ার তথা যথাযথ দায়িত্ব কর্তব্য পালনের

জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।

অসহায় ইয়াতিমদের হক আদায় না করা এবং মিসকিনদের

খাবার না দেয়া লোকদেরকে অভিশাপ দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি কি এমন লোককে

দেখেছ, যে দ্বীনকে অস্বীকার করে?

সে তো ওই ব্যক্তি যে ইয়াতিমের প্রতি রূঢ়

আচরণ করে তাড়িয়ে দেয় আর মিসকিনদের খাবার

প্রদানে মানুষকে নিরুৎসাহিত করে। (সুরা মাউন : আয়াত

১-৩)
ইয়াতিমদের অসহায়দের সম্মান না করার অর্থ হলো

তাদের প্রাপ্য হক আদায় না করা এবং তাদের

প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার বহন না করা। তাদের দুঃখে

এবং কষ্টে সহযোগিতা না করা। এ কারণে আল্লাহ

তাআলা ইয়াতিম, মিসকিন, দুঃস্থ, অসহায় ও মজলুমদের

প্রতি সম্মান ও সহযোগিতার প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে

কুরআনে আয়াত নাজিল করেন বলেন, ‘কখনো

যেন এরূপ না হয় যে, তোমরা ইয়অতিমদের সম্মান

করা না; আর মিসকিনদের খাদ্যদানে (অন্যকে)

উৎসাহিত কর না। (সুরা ফাজর: আয়াত ১৭-১৮)

যারা দুনিয়ার জীবনে ইয়াতিম, মিসকিন, দুঃস্থ, অসহায় ও

বন্দিদের ওপর ইহসান করে, আল্লাহ তাআলা

তাদেরকে পরকালে জান্নাত ও জান্নাতের বহু নিয়ামত

প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। বিশেষ করে ইয়াতিম

ও মিসকিনদের সহায়তা দান জান্নাতি মানুষের স্বভাব।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা দুনিয়ার জীবনে

খাদ্যদ্রব্যের প্রতি নিজেদের প্রয়োজন আসক্তি

থাকা সত্ত্বেও মিসকিন, ইয়াতিম ও বন্দিদের আহার

প্রদান করে। (সুরা দাহর : আয়াত ৮)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসহায়

মানুষকে সাহায্যের বিষয়ে কতটা উদার ছিলেন তা এ

হাদিস থেকে বুঝা যায়। তিনি বলেছেন, ‘তুমি তোমার

মুমিন ভাইকে সাহায্য কর; চাই সে জালিম হোক আর

মজলুম হোক।’

সাহাবায়ে কেরাম বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লামকে জিজ্ঞাসা কররেন, ‘জালিমকে কিভাবে

সাহায্য করবো। বিশ্বনবি বললেন, ‘জালিমকে জুলম

থেকে বিরত রাখাই তাকে সাহায্য করা। (বুখারি, মুসলিম ও

মিশকাত)

পরিশেষে…

ইসলাম যেহেতু ইয়াতিম, দুঃস্থ, অসহায়, বন্দি ও মজলুম

মানুষের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর বিশেষ তাগিদ

দিয়েছেন, সেহেতু মুসলিম উম্মাহর উচিত দুনিয়ার সব

অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করা, পরস্পরকে

ভালোবাসা।
অন্তত কেউ যেন কোনো কারণে এ সব

অসহায় মানুষকে কষ্ট না দেয়। তাদের প্রতি জুলুম-

অত্যাচার না করে। আল্লাহ তাআলা মানুষকে কল্যাণের

জন্যই সৃষ্টি করেছেন। কুরআনে এসেছে,

‘তোমরা শ্রেষ্ঠ জাতি! তোমাদের আবির্ভাব

হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য।’ (সুরা আল-ইমরান

: আয়াত ১১০)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইয়াতিম, মিসকিন, দুঃস্থ,

অসহায়, মজুলম ও বন্দিদের ওপর সদয় হওয়ার তাওফিক

দান করুন। তাদেরকে দান-অনুদান, সাহায্য-সহযোগিতা

করার তাওফিক দান করুন। সব অসহায়দের সহযোগিতা

করে পরকালে জান্নাতের অধিকারী হওয়ার তাওফিক

দান করুন। আমিন।