Forums.Likebd.Com

Full Version: কেমন হবে বিশ্ব পরিস্থিতি?
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
২০১৭ সালের শুরুতে নেপচুন, কেতু, শুক্র, মঙ্গল বায়ু রাশি কুম্ভে এবং অপ্রত্যাশিত ঘটনাবলির কারক ইউরেনাস জলজ রাশি মীনে অবস্থান করছে। জলজ রাশি বৃশ্চিকে শনি এবং অগ্নিরাশি ধনুতে রবি, বুধ ও প্লুটো অবস্থান করছে। রাহুর অবস্থান অগ্নি রাশি সিংহে এবং চন্দ্র মৃত্তিকা রাশি মকরে অবস্থান করছে। গ্রহগুলোর উপরোল্লেখিত অবস্থান বিশ্লেষণ করে এ কথা বলা যায় যে বছরটি বিশ্ববাসীর জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংঘাত ও সহিংসতায় ভরা থাকবে। নানাবিধ শুভাশুভ অপ্রত্যাশিত ঘটনাবলি এ বছর জল, স্থল এবং অন্তরীক্ষে ঘটতে পারে। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জল, স্থল ও অন্তরীক্ষে বিবিধ ধরনের দুর্ঘটনা প্রচুর ঘটতে পারে।
বিশ্বের অনেক অঞ্চলেই এক ধরনের যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করবে। সন্ত্রাস, সহিংসতা, জঙ্গি তৎপরতা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা প্রভৃতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করবে। আইএস, আল-কায়েদা, তালেবান, মুসলিম-ব্রাদারহুড ইহুদি-খ্রিস্টান প্রভৃতি মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীর অপতৎপরতার ফলে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অঘোষিত যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করবে। সৌদি আরবসহ বিবিধ রাজতন্ত্রশাসিত দেশগুলোয়ও শাসকদের বিরুদ্ধে গণঅসন্তোষ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা আছে। আফ্রো-এশিয়া ও লাতিন আমেরিকাসহ বিশ্বের যেসব দেশে সেনা-সমর্থিত বা একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা আছে, সেসব দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার হতে পারে। নিম্নে বিশ্বের কতিপয় উল্লেখযোগ্য দেশগুলো সম্পর্কে ২০১৭ সালের পূর্বাভাস দেওয়া হলো :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র



মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব গ্রহণ করার পরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মার্কিন নীতির উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনপূর্ব মুসলিমবিরোধী বক্তব্য এবং অভিবাসীদের সম্পর্কে দেওয়া বক্তব্য নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার তেমন কোনো কারণ নেই; বরং মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে মার্কিন নীতি অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনাই বেশি। দায়িত্ব গ্রহণের আগে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোন আলাপ নিয়েও উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বিশ্বে শান্তি ও পারস্পরিক সহযোগিতার-প্রয়োজনেই গণচীনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বসবাসকারী কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনপূর্ব বক্তব্য তেমন কোনো গুরুত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। রুশ-মার্কিন সম্পর্ক বর্তমানের মতো একই রকম থাকবে বলে আশা করা যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো ধরনের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
রাশিয়া



রাশিয়ার আর্থসামাজিক পরিস্থিতি মোটামুটি অপরিবর্তিত থাকবে। এ বছরও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবেন। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে রুশ ভূমিকার তেমন কোনো পরিবর্তন আশা করা যায় না। তবে বিশ্বব্যাপী জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে রাশিয়া জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চলমান যুদ্ধ-পরিস্থিতিতে রাশিয়ার ভূমিকা অপরিবর্তিত থাকবে।
ব্রিটেন



ব্রিটেনের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভালো নাও যেতে পারে। ব্রেক্সিট প্রস্তাব গণভোটে পাস হওয়ার পরে ব্রিটিশ অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পরাশক্তি হিসেবে দেশটির গুরুত্ব হ্রাস পাবে।
চীন



আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চীনের গুরুত্ব বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে চীন নিজেকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারবে। গণচীনের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এ বছর চীনের উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং চীনের রপ্তানি বাণিজ্যও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। প্রতিবেশীদের সঙ্গেও চীনের সুসম্পর্ক বজায় থাকবে।
ভারত



অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিরোধীদের সঙ্গে মোদি সরকারের মতবিরোধ এ বছর আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা আছে। বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারবিরোধী আন্দোলন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা অক্ষুণ্ণ থাকবে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারত এ বছর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। ভারতের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো থাকবে। ভারতে এ বছর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার মতো একাধিক ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি নিম্নবর্ণের দলিত হিন্দুরাও সহিংসতার শিকার হতে পারে।
জাপান



জাপানের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও বজায় থাকবে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির ফলে জাপানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে।
মধ্যপ্রাচ্য ও আরব বিশ্ব



মধ্যপ্রাচ্যে অনেক দেশেই এক ধরনের যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করবে। ইরাক, তুরস্ক, লিবিয়া, মিসর, সিরিয়া প্রভৃতি দেশে সরকার এবং সরকারবিরোধীদের পারস্পরিক সংঘর্ষে হতাহতের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। এসব দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থাও বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে। ইরানের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি সরকার ও জনগণের সম্পর্ক উন্নয়নের আদৌ কোনো সম্ভাবনা নেই। সৌদি আরবের ধর্মীয় ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন অব্যাহত থাকবে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই এ বছর একাধিক জঙ্গি হামলা ঘটতে পারে।