Forums.Likebd.Com

Full Version: গুগলে আত্মহত্যার উপায় খুঁজতে গিয়ে যেভাবে বাঁচলো তরুণী
You're currently viewing a stripped down version of our content. View the full version with proper formatting.
অনলাইন ডেস্ক: আত্মহত্যা করতে যাওয়া এক ভারতীয় তরুণী শেষ মুহূর্তে ইন্টারনেটের দৌলতে প্রাণে বেঁচে গেছেন। নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার থেকে আত্মহত্যা করার কোনও সহজতর উপায় আছে কি না, তা জানতে গুগল করেছিলেন তিনি। আর সেখানেই পেয়ে যান এক সিনিয়র পুলিশ অফিসারের ফোন নম্বর। সেই পুলিশ অফিসার বেশ কিছুক্ষণ ধরে বুঝিয়ে শুনিয়ে ওই তরুণীকে নিজের অফিসে নিয়ে আসেন।

জানা যায় দীর্ঘদিনের প্রেমিকের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে নিজের জীবন শেষ করতে চলেছিলেন তিনি। এখন ওই তরুণীকেই যাতে বিয়ে করেন তার পুরনো প্রেমিক, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশই।

উত্তরপ্রদেশের সাহারাণপুরের বাসিন্দা বছর ২৪এর ওই তরুণী গিয়েছিলেন নদীতে ঝাঁপ দিতে। শেষ মুহূর্তে তাঁর মনে হয় তার থেকে কোনও সহজ উপায়ে আত্মহত্যা করা যায় কি না, সেটা জেনে নিলে কেমন হয়। সেজন্যই মোবাইলে গুগল সার্চ করেন তিনি - আত্মহত্যার সহজ উপায় জানতে।

জনপ্রিয় ওই সার্চ ইঞ্জিন ফলাফল দেখায় বেশ কিছু সহায়তা কেন্দ্রের নাম ও ফোন নম্বর - যার মধ্যে একটি ছিল সাহারাণপুর পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল জিতেন্দ্র কুমার শাহির। কি ভেবে ফোন করে ফেলেন ওই যুবতী।

মি. শাহি বলছিলেন, "কয়েকদিন আগে হঠাৎই এক যুবতীর ফোন পাই। সে জানায় যে নদীর ধারে দাঁড়িয়ে আছে - আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে। আমার নম্বর যোগাড় করে খবরটা দেওয়ার জন্য ফোন করেছে বলে জানায় মেয়েটি। তার কাছে জানতে চাই কি এমন সমস্যা হল যে কেন আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে সে। স্বল্প কথায় জানা যায় যে প্রায় নবছর ধরে সম্পর্ক থাকার পরে এক যুবক তাকে বিয়ে করত অস্বীকার করেছে। সেই জন্য নিজের জীবন শেষ করে দিতে চায় যুবতীটি। কিছুক্ষণ ধরে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে আমার অফিসে আসতে বলি। ঘণ্টা দেড়েক পরে মেয়েটি আসে।"তারপরেই জানা যায় প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পুরো বিষয়টি।

ওই যুবতীটি যা জানায়, তা হল, যে যুবকের সঙ্গে অনেক দিনের সম্পর্ক ছিল, এমন কি দুজনের ইচ্ছাতেই শারীরিক সম্পর্কও হয়েছিল, সেই ছেলেটি সম্প্রতি সরকারী চাকরী পেয়ে যাওয়ার পরে তার পরিবার এই মেয়ের সঙ্গে বিয়েতে আপত্তি তোলে।

পুলিশের কাছে ওই যুবতিটি অবশ্য তার প্রেমিকের নামে কোনও খারাপ কথা, বা ধোঁকা দেওয়ার অভিযোগ করে নি। তাকে বোঝানো হয় অন্য একজন যদি ধোঁকা দিয়েও থাকে, তাহলে নিজের জীবনটা কেন শেষ করতে হবে?

যুবতিটি যথেষ্ট শিক্ষিত। তার তো অন্য জায়গায় বিয়ে হতেই পারে পরে।

বিস্তারিত জানার পরে এক নারী পুলিশ অফিসারকে ডি আই জি দায়িত্ব দেন ওই যুবতিটিকে বোঝানোর। পরে ছেলেটিকে এবং তার পরিবারকেও ডেকে বিষয়টি বোঝানো হয়, দেওয়া হয় হাল্কা হুমকিও।

তবে এখন ডি আই জি মি. শাহির এটাই শান্তি যে মেয়েটির জীবন বেঁচে গেছে। মি. শাহি বলছিলেন, "মেয়েটি বলেছিল যে যে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার আগে সে গুগল করেছিল আত্মহত্যার পদ্ধতি জানতে। সেখানেই আমার নম্বর পেয়ে ফোন করেছিল। ঈশ্বর হয়তো মেয়েটিকে বাঁচিয়ে দিতেই চেয়েছিলেন। তাই সে কি ভেবে আমাকে ফোনটা করে ফেলে।"

গুগলে আত্মহত্যার পদ্ধতি বা সহজ উপায় সার্চ করতে গেলে সেখানে এরকম কোনও পদ্ধতি সরাসরি দেখানো হয় না। যতগুলি সার্চ রেজাল্ট পাওয়া যায়, প্রায় সবগুলিই কোনও না কোনও মানসিক সহায়তা বা কাউন্সেলিং কেন্দ্রের নাম ফোন নম্বর অথবা এমন তথ্য, যাতে জীবন শেষ করে দিতে চাওয়া কাউকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করে তোলা যায়।

একদিকে যেমন গুগলই ওই যুবতীর জীবন যেমন বাঁচিয়ে দিয়েছে, তেমনই তার পুরনো প্রেমিক এবং তার পরিবারকে পুলিশ বুঝিয়ে শুনিয়ে বিয়েটা দেওয়ার ব্যাপারে প্রায় রাজী করিয়েই ফেলেছে।-বিবিসি