কাছ থেকে দূরে যাওয়ার গল্প - Printable Version +- Forums.Likebd.Com (http://forums.likebd.com) +-- Forum: বাংলা ফোরামস (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=228) +--- Forum: গল্প সমগ্র (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=14) +---- Forum: ভালোবাসার গল্প (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=45) +---- Thread: কাছ থেকে দূরে যাওয়ার গল্প (/showthread.php?tid=2050) |
কাছ থেকে দূরে যাওয়ার গল্প - Maghanath Das - 02-21-2017 হাতে প্রপোজ লেটারটা নিয়া ভাবতেছি যে রিজেক্ট করবো নাকি হ্যা বলবো? মেয়েটা অনেক ডেঞ্জারাস।পাশাপাশি অপরুপাও।তো কি করবো ভাবতাছিলাম।অবশেষে ভাবলাম রাজি হয়েই যাই।সামনে যেহেতু ভ্যালেন্টাইন। সব বছরের মত এবারেও সিঙ্গেল থাকলে পরে রেলমন্ত্রীর মত মন্ত্রী নাহলে বউ পাওয়া মুশকিল হবে প্রেমতো দূরে থাকুক।তো ফোন দিলাম আরিশাকে। আমি বললাম আরিশা আমি রাজি। আরিশা বললো আমার মন কেন জানি বলছিলো তুমি রাজি হবা।তাইতো ফোনটা হাতে নিয়ে বসে ছিলাম। আমি বললাম তাই নাকি? তবে একটা শর্ত আছে। আরিশা শর্তের কথা জানতে চাইলে বললাম আসলে বাবার টাকায় চলি তো বুঝতেই পারছো কি বলতে চাই। আরিশা বললো তোমায় এ নিয়ে টেনশন করতে হবেনা। তো আমিও নিশ্চিন্তে প্রেমালাপ কিছুক্ষণ চালাতে লাগলাম। আর যাইহোক বাপের টাকার ফোন রিচার্জ!তাই না? দেখতে দেখতে ভ্যালেন্টাইনস ডে আসলো।আসলো বলতে এই না যে মামা বাড়ি গিয়েছিলো বেড়াতে সেখান থেকে আসছে। এখানে আসলো বলতে বছর ঘুরে বিশেষ একটা দিন আসলো আরকি! তো আরিশাকে নিয়ে ঘুড়তে বের হয়েছি। আরিশা প্রথমে বললো সিএনজি নেও।আমি বললাম আরিশা একটা কথা বলবো? আরিশা বলল,কি? আমি বললাম আসলে ব্যাপারটা হয়েছে কি যে বাপের টাকা।মাথাটা নিচু করে রাখলাম। আরিশা বললো তাহলে রিক্সা নেও।আমি বললাম আসলে বাপের টাকা।কথা বলেই মাথা নিচু করলাম।আরিশা এইবার একটু রেগে বললো যে চলো হেটেই যাই।আমি আমার পরিপূর্ণ ৩২টা দাতের একটা ম্যাজিক স্মাইল দিয়ে আরিশার দিকে তাকালাম। মনে হলো হাসিটা শুধু আমার নাহ আরিশা নিজেও হাসলো। . তো এইবার কেএফসির সামনে নিয়ে আসলো আরিশা।আমার চোখ তালগাছে।একচোখ যেনো খুলছেইনা। আরিশা হাত ধরে টেনে ভিতরে নিতে চাইলে আমি আবারো বললাম আরিশা আসলে বাপের টাকা।মাথা আবারো নিচু করলাম। এইবার আরিশা আমার হাত শক্ত করে ধরে একটা কমদামী রেষ্টুরেন্টে নিয়ে গেলো।প্রথমে কোল্ড কফির অর্ডার দিতে চেয়েছিলো তখন আমি বললাম যে আসলে বাপের টাকা আরিশা।তো আরিশা কেনো জানি আমার বিরুদ্ধে যেয়ে কোল্ড কফিরই অর্ডার দিলো।খাওয়া শেষে টাকাটা বের করতে কলিজা ছিড়ে যাচ্ছিলো।একশত ষাটটা টাকা।বুক ফেটে আল্লাহ বলে চিৎকার দিতে মন চাইছিলো।কিন্তু দেইনি।কারণ টাকাটা আরিশা দিলো।অতঃপর আরিশা আর আমি রেষ্টুরেন্ট থেকে বের হলাম। নিজেকে ছোট ছোট লাগছিলো।তবুও এইভেবে শান্তি পেলাম যে বাপের টাকা বাচলো। . তো আরিশা এইবার বললো যে দুইকাপ রঙ চায়ের টাকা হবে? আমি ম্যাজিকাল হাসি দিয়ে বললাম হ্যা।অতঃপর পার্কে যেয়ে বসলাম। একটা ছোট ছেলেকে বললাম দুইকাপ রঙ চা দিতে। দুইকাপ দশটাকা।শেখ মুজিবের ছবি অংকিত নোটটা বের করে দিলাম।এবার সামনে বাদামওয়ালা পেলাম।নিজেরো মন চাচ্ছিলো বাদাম খেতে।তবে এখন আরিশা আছে। নিজে থাকলে পাচঁ টাকা খরচ করতে পারতাম।এখন পাচঁটাকার নেয়াও যাবেনা। নিলেও দশটাকার। বাবার পাচঁ টাকা আরেক মেয়ে অলরেডি খেয়েছে এখন আবার পাচঁটাকা।তবুও নিজেকে এই বলে বুঝ দিলাম মেয়েটাও ওর বাপের ১৬০টাকা নষ্ট করছে।আমিও করি। তারপর সব ডিশমিষ।বাপের টাকা আর নষ্ট করা যাবেনা।দেখতে দেখতে দশটাকার রঙ চা,দশটাকার বাদাম,বিশটাকার হাওয়াই মিঠা,বিশটাকার ঝালমুড়ি,চল্লিশটাকার ফুচকা। প্রায় ১০০টাকা ভেঙ্গে ফেললাম।বুকের ভিতর চিনচিন করছিলো।তবুও মনকে সায় দিলাম শিশির ১০০টাকা কিছুনা।মানইজ্জতই সব। . কথা বলতে বলতে আরো চল্লিশটাকা শেষ। প্রেম করার আগে বলছিলাম তবুও মেয়েটা না করেনাই একবারো টাকা ভাঙ্গার সময়।সব মেয়েই সেল্ফিশ এগেইন প্রুভড। ভাবলাম যে বিশটা টাকা কম খরচ হইছে আর এখন ওর বাসার প্রায় কাছেই।এখন আর খাওয়ার মতও কিছু নাই।আমিই জিতেছি। তো ওরে রেখে ফিরে আসবো এমন সময় আমার হাত ধরে টান দিলো।বললো আমায় রিক্সা, সিএনজি,কেএফসি বা কোনো রেষ্টুরেন্টে নিয়ে যাওয়া লাগবেনা।আমি তোমার দুহাত ধরে যতক্ষণই হাটি ততক্ষণ পৃথিবীর সব সুখ পেয়ে যাই।মনে হয় আমার সব আছে।আর হ্যা তোমার বাবার টাকা ভাঙ্গার দরকার নাই।আমার ওসব কিছু লাগবেনা।আর আজ যেই টাকাগুলো ভাঙ্গছো তা লাগবে? লাগলে বলো আমি দিয়ে দিচ্ছি। . পার্সে হাত দিচ্ছিলো, আমি নিষেধ করলাম আবার আড়চোখে তাকাচ্ছিলামও যে একশো চল্লিশটাকার বদলে যদি একহাজার টাকার একটা নোট বের হতো। এরপর আমার চুলগুলো ঠিক করে শার্টের প্রথম বোতামটা লাগিয়ে বললো তোমাকে একেবারে শিশুর মত লাগছে। অই মুহুর্তে মনে হচ্ছিলো প্রেম মানেই স্বর্গ। তো আমি আই লাভ ইউ বলে বাসার দিকে হাটা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ পিছন থেকে আরিশা জোরে ডাক দিলো।এরপর বললো শিশির আমার ফোনে বিশটা টাকা পাঠিয়ে দিওতো প্লিজ। . তখন মাথায় আসলো কোনো মেয়েই প্রেম করার জন্যে ভালোনা।এজন্যই শিশুর মত বানিয়ে শিশু বলে ডাকছিলো।। ভাবছিলাম ওর থেকে বিশ টাকা কম খরচ করে বাসায় যেয়ে বন্ধুদের বলবো দেখ ভ্যালেন্টাইট ডেতে আমার থেকে আমার গার্লফ্রেন্ড বেশি খরচ করছে তা নাহ।শেষ পর্যন্ত সমান সমান করেই ছাড়লো।কি মেয়েরে বাব্বাহ! শেষ পর্যন্ত বিশটাকাও ছাড়লোনা।আমি তখন ভাবলাম ব্রেকাপ করাই উত্তম। . তো ফোনে টাকা না পাঠিয়ে ব্রেকাপের মেসেজ পাঠিয়ে দিলাম"আমাদের রিলেশন আর রাখতে চাইনা।সমস্যা হলো আসলে বাপের টাকাতো,,,,,,,,,,,,,,," মেসেজটা পাঠিয়েই ফোন অফ করে দিলাম।জানি সিম কোম্পানী দুই টাকা কাটবে।তাও ভালো।বিষটাকা পুরোপুরি না বাচুক।আঠারো টাকাতো বাচলো? চার আনা হোক।বাপের টাকাইতো! |