সীমাহীন ভালবাসা - Printable Version +- Forums.Likebd.Com (http://forums.likebd.com) +-- Forum: বাংলা ফোরামস (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=228) +--- Forum: গল্প সমগ্র (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=14) +---- Forum: ভালোবাসার গল্প (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=45) +---- Thread: সীমাহীন ভালবাসা (/showthread.php?tid=2052) |
সীমাহীন ভালবাসা - Maghanath Das - 02-21-2017 শুভ্র আর অবন্তী দুজনের ভালবেসে বিয়ে হয় আজ পাঁচ বছর.. অবন্তী শুভ্র কে অনেক বিশ্বাস করে,, শ্রদ্ধা করে.. এবং ভালবাসে সীমাহীন। শুভ্র ও অবন্তী কে অনেক বিশ্বাস করে,, ভালবাসে.. আজ পাঁচ বছরের বিবাহিতা জীবনে কখনো শুভ্র অবন্তী কে কঠিন কথা বলেই নি,, অবন্তী কষ্ট পাবে এমন কোন কাজ করেই নী.. তাই শুভ্র কে ফ্যামিলি থেকে মাঝে মাঝে শুনতে হতো বৌ পাগলা,, নানান অপমান.. এর কারণ ও আছে। বিয়ের পাঁচ বছর হয়ে গেলো,, এখনো কোনো সন্তানের মুখ দেখার সৌভাগ্য তাদের হয়নি.. অবন্তী বুঝতো এসব,, মেয়েটি খুব কাঁদতো.. এমনকি আত্মহত্যা করতে ও চেয়েছে দু দু বার। কিন্তু শুভ্রর কারণে করতে পারেনি,, ছেলেটা খুব ভালবাসে অবন্তী কে.. তাই সে সন্তান চাই না,, শুধু অবন্তী কে চাই.. কত বুঝিয়েছে অবন্তী কে,, আমার পৃথিবীতে তুমি ছাড়া কেউ যে নেই.. তুমি আমাকে ছেড়ে গেলে,, আমি ও যে বাঁচতে পারবো না.. আমার অস্তিত্ব তোমার মাঝে.. এই বলে শুভ্র ছোট বাচ্চার মত কাঁদতে থাকে।। অবন্তী ও কাঁদতে থাকে.. অবশেষে প্রতিজ্ঞা করে শুভ্র কে ছেড়ে যাবে না.. কিন্তু যখন সবার মুখ থেকে নানান কথা শুনে তখন শুভ্র কে দেওয়া প্রতিজ্ঞার কথা ভুলে যাই,, নিমিষে নিজেকে শেষ করে দিতে চাই.. একদিন অবন্তী খুব কাঁদতে কাঁদতে রুমে আসলো.. --কি হয়ছে অবন্তী? কেউ কিছু বলছে? কথা বলো প্লিজ.. অবন্তী চুপ,, শুধু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে.. শুভ্র অবন্তী কে বুকে টেনে নিয়ে,, অবন্তীর চোখের পানি মুছে দিচ্ছে.. তুমি জানো না তুমি কাঁদলে আমার কষ্ট হয় যে?? --আমার একটা কথা রাখবা?? --তোমার কোন কথা না রেখেছি,, বলো লক্ষ্মীটি.. --তুমি আরেক টা বিয়ে করো প্লিজ.. --কি বললে তুমি?? ছিঃ অবন্তী.. এটা বলতে পারলে তুমি? যা কে এতটা বেশি ভালবাসি,, সে ও আজ আমাই কষ্ট দিচ্ছে.. --প্লিজ তুমি বুঝতে চেষ্টা করো,, তোমার ও একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ আছে। তুমি আমার জন্য এ জীবন নষ্ট করো না.. --তুমি কি জানো আমার জীবনের পুরোটা জুড়ে শুধু তুমি আছো?? তুমি পাশে থাকলে আমার জীবন কখনো নষ্ট হবেনা,, তুমি ছেড়ে গেলে আমার জীবনটা ও নষ্ট হয়ে যাবে.. প্লিজ এসব কথা আর কোনো দিন ও বলবা না,, তাহলে আমি চিরতরে হারিয়ে যাবো। --এত ভালবাসো কেন আমায়?? --জানিনা,, শুধু জানি দেহের সাথে নিশ্বাসের যে সম্পর্ক.. তোমার সাথে ও আমার তাই। অবন্তী শুভ্রর বুকে মাথা রেখে কাঁদতে লাগলো.. কয়েক মাস পর অবন্তী শুভ্র কে ফোন দিয়ে অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বাসায় আসতে বলে.. শুভ্র ভয় পেয়ে যাই,, কিছু হয়নি তো অবন্তীর। ও তাড়াতাড়ি অফিস এর কাজ সেরে বাসায় আসে.. এসে দেখে বাসার সবাই মিষ্টি খাচ্ছে,, সবার মুখে কি হাসি.. শুভ্র আসতে দেখে ওর আম্মু বললো বাবা এইদিকে আয় তো,, এই বলে নিজ হাতে মিষ্টি খেয়ে দিলো.. ও কিছু বুঝে উঠতে পারলো না,, ও সবার এই অবস্থা দেখে সবার দিখে চেয়ে আছে.. অবশেষে নীরবতা ভেঙ্গে জিজ্ঞাস করলো অবন্তী কোথায়?? ওর বোন বললো রুমে ভাবি তোর জন্য অপেক্ষা করছে,, যা.. ও রুমে গিয়ে দেখে অবন্তী পুতুল একটা নিয়ে খেলছিল। ওই অবন্তী? --কি গো --ছোট বাচ্চার মত এসব কি করছো হ্যা?? কেউ দেখলে হাসবে তো.. --এটা আমার বাবুর জন্য --মানে কি? --বুঝো না? --না,, খুলে বলো.. --চোখ বন্ধ করো --করলে? --আগে করো। --ওকে,, এই করলাম। --তুমি বাবা হতে যাচ্ছো (কানের কাছে মুখ এনে চুপিচুপি বললো) --কি???? সত্যি???? --হুম --অভিনন্দন অবন্তী লক্ষ্য করলো,, যেটুকু খুশি হবার কথা ছিলো ততটুকু শুভ্র হলো না। কেমন যেন বিচলিত হয়ে পরলো,, মুখটা ফ্যাকাসে ভাব ফুটে উঠলো। শুনো,, তুমি কি খুশি হও নাই? --কেন হবো না হ্যা? আমার বৌর খুশি তো আমার খুশি.. এই বলে হাসার ব্যর্থ চেষ্টা করলো। শুভ্র আসলে যতটা না খুশি হয়েছে তার চেয়ে বেশি ভয় কাজ করলো.. কারণ ও কয়েকমাস আগে,, সন্তান হওয়া অবস্থায় তার এক বন্ধুর বৌ এর করুণ মৃত্যু দেখেছে। তার বন্ধুর কান্না দেখে সে ও কেঁদে ফেলছিল,, আর মনে মনে বলতে লাগলো আমার সন্তান হয়নি ভালো হয়ছে.. আমি কখনো সন্তান চাই না। দিন যত এগুতে থাকে,, শুভ্রর ভয় তত বেড়েয় চলছে.. মনে হচ্ছে কিছু হারিয়ে ফেলছে ও ওর জীবন থেকে। ওই দিকে শুভ্র লক্ষ্য করলো,, বাসার সবাই এখন অবন্তী কে কত সেবা যত্ন করে। সবাই খুব খুশি.. ওর এসব দেখে খুব রাগ হচ্ছে,, আর মনে মনে বলতে লাগলো এতদিন এই ভালবাসা কোথায় ছিল? সব ডং!! অবন্তীর সময় খুব কাছে।। মাঝরাতে একটা দুঃস্বপ্নে শুভ্রর ঘুম ভেঙ্গে যাই.. ও দেখলো অবন্তী ঘুমাচ্ছে ,, কি মায়া অবন্তীর মুখে। আলতো করে একটা চুমু দিয়ে অবন্তীর দিকে তাকিয়ে রয়লো.. সারারাত এইভাবে তাকিয়ে থাকলো। অবন্তী সকালে ঘুম থেকে উঠে শুভ্রর এমন করে তাকিয়ে থাকতে দেখে অবাক!! --এই কি হয়ছে তোমার? --কয়.. --এমন করে কি দেখছো? --আমার পরী কে.. --ডং --না,, সত্যি.. --ভালবাসি.. --হুম জানি --কচু জানো,, উঠো ফ্রেশ হবে। --আর একটু থাকো না.. আর ও পরে। --ক্যান? --তোমাকে দেখবো --দেখার আর ও বাকি আছে নাকি? আমি তো পুরানো। --সারাজীবন দেখলে ও দেখার শখ মিঠবে না,, ভালবাসার মানুষ কখনো পুরানো হয় না.. অনন্তকাল তোমাকে এইভাবে দেখবো। এক সাপ্তাহ পর.. শুভ্রর ছোট বোনের ফোন,, শুভ্র তখন অফিসে। --হ্যালো --ভাইয়া আমরা ভাবি কে নিয়ে হাসপাতাল আসছি,, তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো। এটা শুনার পর শুভ্র কেমন হয়ে পরলো,, খুব টেনশন করতে লাগলো.. হাসপাতাল গিয়ে পৌঁছে বাহিরে অপেক্ষা করছে.. অবন্তী এখন অপারেশন থিয়েটার এ। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে বললো,, অভিনন্দন শুভ্র ভাই। আপনার মেয়ে হয়ছে,, কিন্তু আপনার স্ত্রীর অবস্থা অনেক খারাপ। প্রচুর ব্লাডিং হয়ছে,, ৫-৬ ব্যাগ রক্ত লাগবে। আধাঘন্টার মধ্যে রক্তের ব্যবস্থা করুন,, না হয় 'মা' কে বাঁচানো যাবেনা.. শুভ্র কাঁদতে কাঁদতে বললেন ডাক্তার রক্ত সব ই আমি দিবো,, প্লিজ তবু ওকে বাঁচান.. --দেখুন আপনি একা এত ব্যাগ রক্ত দিতে পারবেন না, অসম্ভব! আপনি তাড়াতাড়ি রক্তের ব্যবস্থা করুন,, এই বলে ডাক্তার চলে গেলো। শুভ্র তা বন্ধুদের জানালো রক্ত লাগবে। রক্ত পাচ্ছে কিন্তু আধাঘন্টার মধ্যে আসা সম্ভব না.. ২-৩ ঘন্টা লাগবে। শুভ্র তখন কাঁদতে লাগলো,, আর বিধাতার কাছে পার্থনা করতে লাগলো। ও একবার এর জন্য ও ওর মেয়ের দিকে ফিরে তাকায় নি.. ব্লাড পায়ছেন?? --না,, প্লিজ ওকে বাঁচান। আমি সব রক্ত দিবো,, আমি মরলে সমস্যা নেই কিন্তু ওকে বাঁচাতে হবে.. ওই মুহূর্তে শুভ্রর বন্ধুর ফোন,, দোস্ত রক্ত পায়ছি। দুইজন দিব.. আমরা ১০ মিনিটের মধ্যে আসছি। ওরা আসলো,, তারপর রক্ত দেওয়া হলো। ১ঘন্টা পর অবন্তীর জ্ঞান ফিরে.. অবন্তী শুভ্র কে খুঁজতে থাকে,, ডাক্তার খুশি হয়ে শুভ্র কে ডাকে.. শুভ্র এক প্রকার দৌড়ে অবন্তীর কাছে যাই। অবন্তীর পাশে বসে মাথায় হাত রাখে,, আর চোখ থেকে টুপটাপ পানি গড়িয়ে পরছিল। অবন্তী শুভ্রর হাতটা শক্ত করে ধরে একটা মুচকি হাসি দিলো.. --এখনকষ্ট হচ্ছে? --না,, তুমি পাশে থাকলে কষ্ট চলে যাই। এতদিন আমাকে নিয়ে অনেক ভয়ে ছিলে তাই না?? --হু --পাগল,, আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না। --যেতে দিলে তো।। --ওই তোমার মেয়ে কে কোলে নাও নি? --না --কি???? কি হারামী বাবা,, তাড়াতাড়ি কোলে নাও। --হু,, এখন নিবো.. --নাও,, তোমার মত হয়ছে দেখতে একদম!! --না না আমার পরীর মত হবে.. অবশেষে শুভ্র মেয়েকে কুলে নিয়ে একটা চুমু দিলো.. |