গল্প :- প্রেম অতঃপর - Printable Version +- Forums.Likebd.Com (http://forums.likebd.com) +-- Forum: বাংলা ফোরামস (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=228) +--- Forum: গল্প সমগ্র (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=14) +---- Forum: জীবনের গল্প (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=44) +---- Thread: গল্প :- প্রেম অতঃপর (/showthread.php?tid=2151) |
গল্প :- প্রেম অতঃপর - Hasan - 02-22-2017 গল্প :- প্রেম অতঃপর। . . শুভ পড়ার টেবিলে বসে থেকে পড়াশোনা করছে,কিন্তু কোন মতেই পড়াতে গভীর ভাবে মনযোগী হতে পারছে না। . যখন খুব সুন্দর ভাবে পড়া শুরু করছে,তখনি ইরার কথা মনে পড়ছে। ইরার কথা মনে হতেই পড়ার প্রতি আর মনোযোগ দিতে পারছে না। ইরাকে অনেক ভালোবাসে শুভ। রাতে ঘুমাতে গেলে, পড়াশোনা করার সময়, ইরার সাথে কাটানো সময় গুলোর কথা মনে পড়ে যায় শুভর। তখন একটু মুচকি হেসে নিজের মাথাই নিজের হাত দিয়ে থাবা মেরে বলে, মন তুই কোন সময় কি সব ভাবিস। . কিছুক্ষন মোবাইলে গান শুনে ইরার কথা ভুলে যেতে চাই শুভ। গান শোনা শেষ করে আবার পড়তে বসে,কিন্তু পড়া আর হয় না,যখনি পড়তে বসে তখনি ইরার কথা মনে পড়ে যায়। শেষে কোন রাস্তা খুজে পাই না শুভ। . মনকে অনেক শক্ত করে শুভ। অনেক অনেক রাগ ভাব নিয়ে ইরাকে ফোন করে, ইরা ওপাশ থেকে ফোন ধরেই শুরু করে, -ওই তোমাকে না বলেছি পড়া শেষ করে ফোন দিতে ( ইরা) > পড়া তো শেষ করেই তোমাকে ফোন দিবো ভেবেছি। (শুভ) - তাহলে কি পড়া শেষ হয়ে গেছে। > না, এতো তারাতারি কি পড়া শেষ হয়। - তাহলে পড়া শেষ করে ফোন দাও। > কি করে পড়বো বলো মনটা তো তোমার কাছে। মনটা এখন ফিরিয়ে দাও, সেটা না হলে কোনভাবেই পড়াতে মন বসাতে পারবো না। -শুভ তুমি এতো কথা না বলে পড়তে বসো। পড়া শেষ হলে ফোন দিও,জরুরী কথা আছে তোমার সাথে। > না এখনি বলো। - এখন বলা যাবে না, যেটা বলছি সেটা আগে করো। > আমাকে তোমার টেনশনে রাখতে খুব ভালোলাগে। টেনশনে তো আর পড়াশোনা হবে না। - ফোন রাখলাম, পরে কথা হবে। > হ্যালো,হ্যালো ইরা, ফোনটা কেটে দিয়েছে। . শুভ এবার মনকে শক্ত করে পড়তে বসে। পড়ার প্রতি এখন তার অনেক মনোযোগ। হটাৎ করে মনে পড়ে যায়,কি এমন কথা বলবে ইরা তাকে, কি বলবে ভাবতে পারছে না শুভ। আবার পড়া থেকে অমোনোযোগী হয়ে গেলো শুভ। রাগ করে পড়বেনা বলেই বই বন্ধ করে টিভি দেখতে চলে গেলো। . ঘন্টা দুয়েক পরে শুভ রুমে এসে ইরাকে ফোন করে। - পড়া শেষ করেছো। (ইরা) > হুম, শেষ। এখন বলো কি বলতে চাইছিলা তখন। (শুভ) - শুভ একটা বড় ধরনের সমস্যা হয়েছে। এটা ফোনে বলা সম্ভব না,তুমি কালকে কলেজে আসো,তখন দেখা করেই বলবো। > আচ্ছা তাহলে কালকে দেখা হচ্ছে। - হ্যাঁ হচ্ছে। তাদের মধ্যে কিছুক্ষন প্রেমালাপ কথা বাঁতা হয়। কথা শেষ করে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায় শুভ। কিন্তু ঘুম আর আসতে চাই না,চোখের পাতা কোনভাবেই এক হতে চাইছে না। সবসময় ইরার কথা মনে পড়ছে, কি এমন হয়েছে যার কারনে সে ফোনে বলতে পারলো না কথাগুলো। ইরার কথা চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ে শুভ। দেখতে থাকে ইরাকে নিয়ে ঘর বাধার স্বপ্ন। ঘুমের মাঝে হারিয়ে যায় ইরাকে নিয়ে। . সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে কলেজে চলে যায় শুভ। ইরা আজকে কি জেনো বলবে সেই কথাটি বারবার মনে পড়ে শুভর। কি এমন কথা। . কলেজে গিয়ে দেখে ইরা এখনো আসেনি। সেইজন্য শুভ ইরার সাথে যেখানে দেখা করে ওখানেই গিয়ে বসে মোবাইলে গান শুনতে থাকে। বিশমিনিট বসে থাকার পরে ইরার আগমন হয়। আজকে ইরা হলুদ শাড়ি পড়ে এসেছে। হলুদ শাড়িতে ইরাকে অনেক সুন্দর লাগছে। শুভ আরেকবার ইরার প্রেমে পড়ে যায়। > এমন কি কথা ইরা যেটা ফোনে বলা যেতো না। (শুভ) -না ফোনে বলা যেতো না,সেইজন্যই তো দেখা করা। > তাহলে বলো কি এমন কথা বলতে তুমি এখানে ডেকেছো। - তুমি তো জানো কবি রবীন্দ্রনাথ বলে গেছেন যার সাথে প্রেম করবে তাকে কখনো বিয়ে করা যাবেনা। > তো কি সমস্যা, উনি কবি সেইজন্য বলেছেন। - কবিরা সব সময় সত্যি কথা বলে। > তুমি কি বলতে চাইছো ইরা। - দেখো শুভ আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। দুদিন পরে আমার বিয়ে। আমি জানতাম না এই কথাটি,বাবা গতকাল রাতে আমাকে বলছে। ছেলে বিদেশে থাকে, ভালো চাকরি করে,দেখতেও অনেক স্মার্ট। > কি বলছো এসব,তুমি না করে দিতে পারলে না। > হ্যাঁ আমি বলছিলাম,কিন্তু বাবা বলেছে ছোটথেকে আমাদের বিয়ে ঠিক করে রাখা হয়েছে। > তারমানে তুমি বিয়েতে রাজী। - হ্যাঁ। > আর আমার ভালোবাসা কি তাহলে মিথ্যা ছিলো ইরা। - না মিথ্যা ছিলো না,ওইযে রবীন্দ্রনাথেরর কথা অনুযায়ী আমি কাজ করেছি। > তুমি এটা করতে পারো না ইরা, (কেঁদে ফেলেছে শুভ) - দেখো কেঁদে লাভ নেই, সব ভালোবাসার মিল হয়না, আর তোমার প্রতিষ্ঠিত হতেও অনেক সময় লাগবে। আর জানোই তো এখন টাকা ছাড়া প্রেম ভালোবাসা মানাই না। যার অনেক টাকা তাকে নিঃসন্দেহ বিয়ে করা যায়,আর ভালোবাসাও যায়। > তুমি এটা বলতে পারলে ইরা। - দেখো যার টাকা বেশি তাকে বিয়ে করলে সব পেয়ে যাবো। আর যার কিছু নেই তাকে বিয়ে করলে কিছুই পাবোনা। > আমিও তো চাকরি করবো ইরা, পড়াশোনাটা শেষ হলে। - ততদিন আমি অপেক্ষা করতে পারবো না। > ইরা তুমি এতো নিষ্ঠুর হতে পারো না। - শুভ তোমার কান্না থামাও। কেঁদে কোন লাভ হবে না,আর হ্যাঁ এইযে বিয়ের কার্ড। তিনদিন পরে বিয়ে, তুমি এসো সেদিন,অার ভালো থেকো,আরাকটা কথা তুমি যেই লেভেলের ওই লেভেলের মেয়েকে বিয়ে করো নইলে সেও চলে যাবে তোমার জীবন থেকে। . ইরা শুভর হাতে নিজের বিয়ের কার্ড টা ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলো।ইরা মনে মনে অনেক খুশি,ওর তো ভালই হচ্ছে বড়লোক ছেলেকে পেয়ে যাচ্ছে। এদিকে শুভ বাচ্চা ছেলের মতন কান্না করছে। . তিনদিনের মাঝে শুভ ইরাকে অনেক বুঝিয়েছে, কিন্তু কোন লাভ হয়নি। তিনদিনের দিন ইরা হাঁসিমুখে বিয়ে করে নিয়েছে। শুভর কথা একটুও চিন্তা করেনি। ইরার প্রয়োজন ছিলো টাকার,সেইজন্য শুভকে ছেড়ে বিদেশে থাকা ছেলে টাকে সে অনায়াসে বিয়ে করেছে। . শুভ ইরাকে হারিয়ে একদম ভেজ্ঞে পরেছে। যাকে সে এতো ভালোবাসতো আজ সেই অন্যকে বিয়ে করলো। এটাই মনে হয় সব থেকে বড় কষ্ট। শুভর আর পড়াশোনা করাটা হলো না। ইরার কথা চিন্তা করতে করতে শুভ পাগলে পরিনত হয়ে গেলো। সবসময় ইরার কথা বলে শুভ। . ওদিকে ইরা শুভকে ছেড়ে দিয়ে তার স্বামীর সাথে সুখে সংসার করছে। একসময় যে শুভকে ছাড়া কিছু বুঝতো না, এখন সে অন্য ছেলেকে নিয়ে দিব্যি সুখে আছে। মেয়েরাই এমন কাজগুলো করতে পারে অনায়াসে। মেয়ে জাতটা আসলেই অদ্ভুদ, কাউকে ভালোবাসলে প্রচন্ড রকমের ভালোবাসে,আর যদি মনে করে দশটা ছেলের সাথে সম্পর্ক করবে তাই করে। আজকালকার ভালোবাসা হলো টাকার ভালোবাসা। টাকা আছে ভালোবাসা আছে, টাকা নাই কেউ নাই। . . লিখা :- রাফি ( পড়া চোর) |