নদীর পাড়ের সেই মেয়েটি অতঃপর - Printable Version +- Forums.Likebd.Com (http://forums.likebd.com) +-- Forum: বাংলা ফোরামস (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=228) +--- Forum: গল্প সমগ্র (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=14) +---- Forum: ভালোবাসার গল্প (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=45) +---- Thread: নদীর পাড়ের সেই মেয়েটি অতঃপর (/showthread.php?tid=2159) |
নদীর পাড়ের সেই মেয়েটি অতঃপর - Hasan - 02-22-2017 নদীর পাড়ের সেই মেয়েটি অতঃপর অব্যক্ত ভালোবাসা লেখক-Md Jasim uddin Shuvo (ক্ষুদ্র লেখক) সোনালী ধান কাটার মৌসুমে গ্রামের লোকজন একবারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন আমাদের বাসায় কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে থাকলে তাকেউ তার বাবাকে সাহায্য করতে ধান কাটার কাজে যোগদান করতে হয়। আমরা গ্রামের ছেলেরা এ গুনটাতে সবচেয়ে এগিয়ে থাকি শহরের ছেলেদের থেকে। ধান কাটার সিজন একবার শুরু হয়ে গেলে আমারা ও লেগে পড়ি ধান কাটার কাজে তখন আমরা ভাবি না যে,আমি কলেজে পড়ি কিংবা ভারসিটিতে সবাই একসাথে ..শ্রমিকদের সাথে কাজে লেগে যাই। যাইহোক আমি,গ্রামের অন্য ছেলেদের ন্যায় আমিও কাজে লেগে যাই বাবাকে সাহায্য করতে। প্রতিদিন একটি নদীর পাড় ধরে যেতে আমার গন্তব্যস্থলে যেখান ধান কেঁটে ধান মাড়াই করা হয়। তো ঐখানকার এক ব্যক্তি যাকে আমি আংকেল বলে ডাকি তাদের ধান মাড়াইয়ের আমাদের ধান মাড়াইয়ের জায়খা থেকে একটু দুরে,বলে রাখা ভালো ঐখান থেকে আমাদের বাসার দুরত্ব প্রায় ৩০থেকে ৩৫ মিনিটের মতো হবে। প্রতিদিনের ন্যায় আজকেও যাচ্ছি ধান মাড়াইয়ের কাজে পথি পথে সেই আংকেলের সাথে দেখা তাদের ধান মাড়ায়ের জায়গায় সাথে তার মেয়ে। আমি আগেও জেনেছি আংকেলের একটি মেয়ে আছে,মেয়েটি তার নানু বাসায় থেকে লেখাপড়া করে,এই সেই মেয়ে নাম সুমি। মেয়েটির সাথে তখনো কথা হয়নি। মেয়েটার চেহাড়ায় কেমন জানি এক ধরনের মায়া আছে সেটা মুখে বলে শেষ করা যাবে না। যাইহোক প্রতিদিন মেয়েটি সাথে দেখা হতো কিন্ত মুখে কথা হতো না শুধু চোখাচোখি হতো। একদিন আমাদের ধান মাড়াইয়ের সময় ভালো লাগছিলো না বলে শুয়ে আছি তখন দেখলাম আমার সেই আংকেল আর তার মেয়ে সুমি আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছে,উল্লেখ্য ঐখানে তাদের ধানের ক্ষেত আছে। আমি তখন জাগ্রত ছিলাম মেয়েটিকে দেখে আমি ঘুমের অভিনয় করলাম, দেখি মেয়েটি আমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে!! একদিন সাইকেল নিয়ে আসছিলাম,তখন জনশূন্য এলাকায় মেয়েটির সাথে দেখা, সে এক আটি ধান নিয়ে আসছে। আমি শুধু বললাম...এতো কাজ করলে খাবে কে তোমার?? কিছু বললো না শুধু একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল। আমি তো পুরাই থ হয়ে গেলাম যে মেয়েটার হাসি দেখে।আর ভাবতে লাগলাম মেয়েদের হাসি এতো সুন্দর হতে পারে, আমি তখনি সুমির হাসির প্রেমে পড়ে গেলাম আর মনের ভেতর গাইতে লাগলো..... --কি নামে ডাকবো যে তোমায় --নীল জোসনা --এক চিলতে রোধ হয়ে আর হেসো না -- যদি তোমায় ছুঁতে পারি --দেব মেঘের সাথে আরি --শুধু মন আকাশে হাওয়ায় ভেসে --ছুটে আসো না --কি নামে ডাকবো তোমায়...... আর কিছুদিন চলে গেলে আমাদের কাজ হয়ে যায় তখন আমারা একবারে চলে আসি যেখান থেকে কিন্ত মন পড়ে থাকে যেখানে। তারপর থেকে আমার কাজ না সত্তেও আমি সেখানে যেতাম বেশীভাগ সময় সুমির সাথে দেখা হতো না। একদিন জানে পারলাম সুমি জানতে পারলাম সুমি তার নানু বাসায় চলে গেছে। . এর মধ্যে একটি বছর কেটে গেছে। আমার ছোট বোনের এস এস সি পরীক্ষা চলছে। ও একটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম সুমি তখন দশম শেণ্রীতে পড়তো তারমানে সেও এখন এস এস সি পরীক্ষা দিতেছে। আপনারা নিশ্চয় জানেন এ পরীক্ষা এক থানায় থেকে অন্য থানায় গিয়ে দিতে হয়। তো ছোট বোনকে যে থানায় বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে সে বিদ্যালয়ের আশে পাশে বাসা ভাড়া করে দিয়ে এলাম। আমি শুধু পরীক্ষার আগের দিন বিকালে যেতাম লেখাপড়া বুঝিয়ে দিতে আর ছোট বোনকে পরীক্ষা কেন্দ্রে দিয়ে পরীক্ষা শেষ না পর্যন্ত অপেক্ষা করে,পরীক্ষা শেষ হলে প্রশ্ন কেমন হয়েছে দেখে নিজ বাসায় চলে আসতাম। তো গত 09-02-2017 তারিখে ছোট বোনকে পরীক্ষার কেন্দ্রে ঢুকিয়ে ভাবলাম একটু ঘুরে আসি,তখন দেখি সেই আংকেল পরীক্ষা কেন্দের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে। সেই আংকেল মানে সুমির বাবা। সুমির বাবা এখানে কেন বললে সুমির বাবা বলে সুমি এখানে পরীক্ষা দিতেছে। . তখন চোখের সামনে গত একটি বছর আগের সুমির হাসিটুকু ভেসে উঠে। ১টি বছর পর আবার দেখা হবে তারসাথে ভাবতেই কেমন জানি লাগছে। আমি আগে জানতাম না যে সুমি এখানে পরীক্ষা দিতেছে।অপেক্ষা করতে থাকলাম কখন পরীক্ষা দিয়ে বের হয়। পরীক্ষা শেষ দলে দলে ছাএ ছাত্রি বের হচ্ছে গেট দিয়ে,দেখলাম আমার ছোট বোন বের হচ্ছে।বোন বললাম তুই তোর বান্দবীদের নিয়ে রুমে যা আমি একটু পড়ে আসতেছি।বোন আমার কিছুদুর গিয়ে আবার এসে আমাকে টানটানতে মার্কেটে নিয়ে গেল এবং এটা কিনে দে ওটা কিনে দে।এটা ওটা কিনতে অনেক দেরী হয়ে গেল,একটু পর কেন্দ্রে এসে দেখি কেন্দ্র পুরাই ফাঁকা। হতাশ মনে চলে আসলাম নিজ বাসায়। তারপর আবার ১১-০২-২০১৭ তারিখে গেলাম পরীক্ষা দেখতে,বোনের গনিত পরীক্ষা তারপর আবার মনে ইচ্ছা জেগেছে সুমিকে দেখার।এতোদিন দেখবো তাকে,তাকে ভুলে গেলেও ভুলতে পারিনাই তার মায়া মাখা হাসিটাকে ভুলতে পারিনাই তার পলকহীন চেয়ে থাকা দৃষ্টিকে। ১২-০২-২০১৭ আর মাএ কয়েক মূহুত্ব বাকী তাই দেখতে পারবো আমার যতনে আগলে রাখা হাসিটুকুর মালিকটাকে দেখতে পাবো নদীর পাড়ের সেই মেয়েটিকে। ঘন্টা বাঁজতে শুরু করলো মানে পরীক্ষা শেষ কিন্ত আমার মনের ভিতর ঘন্টা বাঁজতে শুরু করলো। আচ্ছা আমাকে কি সুমি চিনতে পারবে! গেট দিয়ে ছাএ ছাত্রি বের হচ্ছে,ছোট বোনকে রুমে যেতে বললে চলে গেল। দেখি আংকেল সুমির জন্য অপেক্ষা করতেছে সাথে আমি ও যোগ দিলাম তবে একটু দুরে গিয়ে। সব ছাএ ছাত্রি চলে যাচ্ছে কিন্ত সুমি কই? ঠিক তখনি দেখি সুমি গেট দিয়ে বের হচ্ছে, আগের চেয়ে অনেক সুন্দর হয়েছে,ইচ্ছে করছে সুমিকে জড়িয়ে ধরি,বলি ভালবাসি তোমাকে।কিন্ত আমার দ্বারা এসব সম্ভব নয়। দেখলাম সুমি আমার দিকে এগিয়ে আসছে,আমার দিকে নয় কারণ আমি রাস্তার কোনে দাঁড়িয়ে ছিলাম আর সুমি সে রাস্তা দিয়ে এগিয়ে আসছিলো। আমার পাশ কাটিয়ে চলে গেল মুখটা কিছুটা ভার করে,জানিনা কিসের জন্য সুমির মুখটা ভার করে রাখলো পরীক্ষা খারাপ হলো না অন্য কোন ব্যপারে নাকি আমাকে দেখার পরে বুঝতে পারলাম না। সুমি চলে যাচ্ছে তাকিয়ে আছি তার চলে যাওয়ার দিকে। সুমি চলে গেল আমি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রইলাম সেখানে আর ভাবতে লাগলাম সত্যিই আমি একটা অর্করমার ঢেঁকি আমাকে কিছু হবে না।আমি শুধু দুর থেকে ভালবাসতে জানি ভালবাসার নামক কথা গুলো বলা আমার দ্বারা সম্ভব না আর আগামিতেও সম্ভব হবে না।সুমি আমি ভালবাসবো তোমার হাসিটাকে,ভালবাসবো তোমাকে তবে দুর থেকে। মনে রেখো দেখা হবে সেই নদীর পাড়ে সেই চিরচেনা জায়গায় শুধু বলা হবে না আমার ভালবাসার সেই অব্যক্ত কথা গুলি। -------সমাপ্ত------ |