এসেছে নতুন বছর। বিজ্ঞান আর গ্রাভিটি নিয়ে হয়ে যাক কিছু কথা! - Printable Version +- Forums.Likebd.Com (http://forums.likebd.com) +-- Forum: বাংলা ফোরামস (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=228) +--- Forum: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=13) +---- Forum: বিজ্ঞান জগৎ (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=38) +---- Thread: এসেছে নতুন বছর। বিজ্ঞান আর গ্রাভিটি নিয়ে হয়ে যাক কিছু কথা! (/showthread.php?tid=419) |
এসেছে নতুন বছর। বিজ্ঞান আর গ্রাভিটি নিয়ে হয়ে যাক কিছু কথা! - Hasan - 01-14-2017 আমার কাছে বিজ্ঞানের সবথেকে মজার টপিক হল “সময় ও গ্রাভিটি” । সময় নিয়ে কথা বলার কোন নির্দিষ্ট সময় থাকা লাগে না । আজকে অবশ্য সময় এসেছে কিছু কথা বলবার । নিউ ইয়ার না কি যেন বয়ে চলছে বাইরে। সময় কথাটা শুনলেই প্রথমেই মাথায় যে একটা ছবি ভেসে আসে সেটা হয়ত একটা ঘড়ির ছবি । সময় একটা ভৌত রাশি । এর কোন দিক নেই । অর্থাৎ এটি একটি নন-ভেক্টর রাশি। যেকোনো দিকেই এটা হাঁটাচলা করতে পারে । প্রশ্ন হচ্ছে সময় বয়ে যায় কি করে ? সময়ের কি হাত পা আছে যে হেটে হেটে চলে যাবে। সময় আসলে যায় না। সময় আসে। ঠিক তাই, সময় চলে আসে মহাকর্ষকে অতিক্রম করে। উদাহরণ দেয়া যাক, মহাকর্ষকে অতিক্রম করে কি করে সময় আসে। এই যে আজকে ৩৬৫ দিন ঘুরে এক বছর এলো। এটা তো মহাকর্ষের জন্যই। পৃথিবীর একবার ঘুরে আসতে যে ৩৬৫ টা দিন লেগে গেল এজন্য তো ঐ ব্যাটা মহাকর্ষই দায়ী। মহাকর্ষ না থাকলে তো পৃথিবী হয়ত একবার ঘুরে আসতে পারত কয়েক সেকেন্ডে, অথবা ঘুরতই না, অথবা ঘুরে ফিরে চলে যেত অন্য কোন নক্ষত্রের দেশে। নক্ষত্রের দেশ আছে। নক্ষত্রের ভাষা আছে। নক্ষত্রদের জাতীয়তাবাদ আছে। নক্ষত্রের জেলখানা আছে। সেখানে যারা যারা অপরাধী তাদের শাস্তি একটাই জাবৎজীবন কারাদণ্ড। ভাবছেন সেটা আবার কি? ভুলে গেলেন কৃষ্ণ গহ্বরের কথা! ওটাই তো নক্ষত্রদের কারাগার। একবার যদি কোন নক্ষত্র কোন বস্তুর উপর ক্ষেপে যায় তাহলে সবাই মিলে তাকে ঠেলেঠুলে পাঠিয়ে দেয় কৃষ্ণ গহ্বর নামক জেলখানায়। মহাকর্ষের জন্যই আমরা থেমে আছি কেবল বর্তমানে। যেতে পারছি না অতীত বা ভবিষ্যতে। অর্থাৎ টাইম ট্রাভেল সম্ভব হচ্ছে না। আবার অন্য দিকে বলতে গেলে মহাকর্ষের জন্যই আমরা খেয়ে পরে বেঁচে আছি। বিজ্ঞানী জর্জ গ্যামোর নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই । রাশিয়ান এক পাগলাটে বিজ্ঞানী। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন টাইম, স্পেস ও কসমোলজি নিয়ে আইনস্টাইন ও স্টিফেন হকিং এর আগেই। কিন্তু তেমন কোন স্বকৃতী পান নি। পাগলাটে বিজ্ঞানী বলে কথা। উনি কিছু শিশুতোষ বিজ্ঞান কল্প-কাহিনীর বই লিখেছিলেন। সেসব কাহিনী গল্পে উনি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মহাকর্ষকে! তার এক গল্পে এমন এক গ্রহের কথা লিখেন যেখানে সাধারণ সাইকেলের বেগ ঐ গ্রহের আলোর বেগের থেকে বেশি। সেখানে লোকজন সাইকেল চালিয়েই আলোর বেগ অতিক্রম করে টাইম ট্রাভেল করে জেনে নিতে পারত তার অতীত বা ভবিষ্যৎ । ধরুন, আপনি আগামীকাল বিসিএস পরীক্ষা দিবেন, অথচ পড়ালেখা কিছুই করেননি। আপনি চাচ্ছেন ইশ , আজ রাতেই প্রশ্নটা যদি হাতে পেয়ে যেতেন! চিন্তার কোন কারণ নেই। সাইকেলটা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ুন! হিসাব নিকেশ করে দেখুন কত ঘণ্টা সাইকেল চালালে আপনি ঠিক পৌঁছে যাবেন আগামীকালে। সে অনুযায়ী সাইকেল চালাতে থাকুন। বিশ্বাস হচ্ছে না ? বেরিয়ে পড়বেন নাকি সাইকেলটা নিয়ে ? এই পাগলা বিজ্ঞানী জর্জ গ্যামো একবার হিসেব নিকাশ করে বের করেছিলেন পৃথিবী থেকে স্রষ্টার দূরত্ব মাত্র ৯০ আলোকবর্ষ। ভাবছেন কিভাবে ? এটাও তার পাগলামি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে একজন জার্মান পাদ্রী জার্মানিতে শান্তি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করেছিলেন । জার্মানিতে শান্তি ফিরে এসেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ৯০ বছর পরে। অর্থাৎ, যদি ধরে নেয়া হয় যে পাদ্রীর সেই প্রার্থনা শুনেই ঈশ্বর জার্মানিতে শান্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন তাহলে সেটা ৯০ বছর পরে কেন? তাহলে কি ঈশ্বরের নিকট পাদ্রীর প্রার্থনা পৌঁছাতে সময় লাগল ৯০ বছর! পাদ্রীর প্রার্থনা যদি আলোর বেগেও ঈশ্বরের নিকট পৌছায় তাহলে মোট দূরত্ব এসে দাঁড়াচ্ছে ৯০ আলোকবর্ষ! গ্রাভিটি , চলন্ত ট্রেন আর ঘড়ির গল্পটা নিশ্চয়ই সবাই জানেন। সেখানেও দেখা গেছে নির্দিষ্ট স্থানের গ্রাভিটিকে চাইলেই টেক্কা দিতে পারে সময় শুধু প্রয়োজন অসীম গতি। সময় ও গ্রাভিটিকে ধরা হয় মহাবিশ্বের চতুর্থ ও ৫ম মাত্রা হিসেবে। যেখানে আমরা কেবল পৃথিবীতে তিনিটি মাত্র মাত্রার অস্তিত্ব টের পেতে পারি। আপেক্ষিক পদার্থবিজ্ঞানে কিছু শব্দ ব্যবহার করা হয় প্রকৃত সময় নামে। এটাই আসলে থিউরি অফ রিলেটিভিটির প্রধান চমক। প্রকৃত সময় স্থানাংকের সাথে সম্পৃক্ত। আর স্থানাংক যেখানে আছে সেখানে গ্রাভিটি থাকবে না সেটা আবার হয় নাকি! স্থানাংকের সাথে সময়ের সম্পর্ক জুড়ে কিভাবে ব্যবহার করা হয় সেটা একটু উদাহরণ দেয়া যাক। জাহাজ , বিমান বা আর্মি কিভাবে তাদের লোকেশন জানায় জানেন নিশ্চয়ই। প্রথমে দ্রাঘিমা ও সাথে আন্তর্জাতিক সময় বলে একত্রে লোকেশন জানানো হয়। এটা একটা ক্ষুদ্র দিক। আইনস্টাইনের কাল দীর্ঘায়ন সমীকরন তো সবাই জানি। সেটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। শুধু একটা জোকস মনে পড়ছে, আইনস্টাইনকেই একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল “কালের বা সময়ের আপেক্ষিকতা আপনি কিভাবে সহজ করে ব্যাখা করবেন? “। উত্তরে আইনস্টাইনের উত্তর ছিল, ” একজন সুন্দরি মেয়ের পাশে দুই ঘন্টার বেশি সময় বসে থাকলেও মনে হবে যেন এইত মাত্র বসলাম। পাচ মিনিট হবে হয়ত। আর কোন বাস স্টপে বাসের জন্য পাচ মিনিট বসে থাকলেও মনে হবে, অনেক সময় হয |