মাথায় ফুটবল নিয়ে ৩০ মাইল; নাম উঠল গিনেজ বুকে! - Printable Version +- Forums.Likebd.Com (http://forums.likebd.com) +-- Forum: বাংলা ফোরামস (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=228) +--- Forum: বিশেষ আয়োজন (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=74) +---- Forum: ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস (http://forums.likebd.com/forumdisplay.php?fid=76) +---- Thread: মাথায় ফুটবল নিয়ে ৩০ মাইল; নাম উঠল গিনেজ বুকে! (/showthread.php?tid=547) |
মাথায় ফুটবল নিয়ে ৩০ মাইল; নাম উঠল গিনেজ বুকে! - Hasan - 01-15-2017 গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড নিজের নাম তোলা চাট্টিখানি কথা না। বহুত কাঠখড় পুড়িয়ে নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলে তারপর কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। মাথায় ফুটবল নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাইক চালাতে পারবেন?কিম্বা তিরিশ সেকেন্ডে দেড়শো বার জাগলিং? শুনেই তাজ্জব ? কিন্তু মনোজের কাছে এসবই নস্যি। তিরিশ মাইল মাথায় বল নিয়ে হেঁটে গিনেস বুক অফ রেকর্ডে নাম তুলেছেন পাঁশকুড়ার মনোজ। মাথায় বলের মুকুট পরেই হাঁটতে ভালোবাসেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা এভাবেই হেঁটে বেড়ান। জীবনে হাজারো বাঁধা,ঝক্কি ,অভাব অনটন। তবু মনোজের জীবন খাতার প্রতি পাতায় একটাই ভালোবাসা, তার নাম ফুটবল। সবুজ মাঠে বিপক্ষের রক্ষণভেঙে তিরের মতো ছুটে চলা। সামনে একটাই লক্ষ্য। বিপক্ষ দলের চারকোনা বারপোস্ট। সব বাধা টপকে গোল দেওয়াটাই একমাত্র নেশা । এরকমই একদিন ঘটে গেল এক দুর্ঘটনা। লিগামেন্টে চোট। চিকিত্সক বললেন ফুটবল খেলা ছাড়তে হবে। কিন্তু জীবন তো থেমে থাকে না। মনোজও প্রতিকূলতার কাছে হার মানেননি। ফুটবলার মনোজ স্বপ্ন দেখা শুরু করলেন জাগলার মনোজ হয়ে ওঠার।শুরু হল কঠিন পরিশ্রম। দিন নেই, রাত নেই শুধুই অকান্ত পরিশ্রম। একটা ফুটবল, মনোজ, আর অনেক স্বপ্ন। মনের জোরের প্রবল তোড়ে ভেঙে গেল সব ব্যারিকেড। পূর্ব মেদিনীপুরের অখ্যাত গ্রামের বাসিন্দা মনোজ মিশ্রের নাম ঝলমল করে উঠল গিনেস বুক অফ রেকর্ডে। রূপকথার মতো সেই স্বীকৃতি। চলতি বছরে জানুয়ারি মাসে মাথায় বল নিয়ে তিরিশ মাইল পথ হাঁটেন তরুণ মনোজ। মনোজ যা যা কীর্তি গড়েছেন : ** ৩ ঘণ্টায় ২০হাজার বার বল জাগলিং ** ১২ ঘণ্টা মাথায় বল নিয়ে হাঁটা ** ৩০ সেকেন্ডে ১৫৩ বার বল জাগলিং ** ১ মিনিটে ৩২৫ বার মাথায় বল জাগলিং ** মাথায় ফুটবল নিয়ে ৩০ কিমি বাইক চালানো ** ৫৫ সেকেন্ডে মাথায় বল নিয়ে ১০০ মিটার দৌড় ** কাঁধ থেকে মাথায় ১২৫ বার বল ঘোরানো কিন্তু ঝলমলে এই পুরস্কারের আড়ালে লুকিয়ে আছে বহু দুঃখের ইতিকথা। বাজারে ফেরি করা এক ফুলওয়ালা বাবার স্বপ্ন। ছেলের সাফল্যের প্রতীক্ষায় অভাবী মায়ের আঁচলের খুঁটে মোছা নীরব অশ্র। অ্যাসবেস্টারের ছাউনি দেওয়া ছোট্ট এই ঘর থেকেই আজ বিশ্বের দরবারে পৌছে গেছে মনোজ মিশ্র। পাঁশকুড়ার তিলাগেড়িয়া গ্রামের মানুষ এখন মনোজকে চেনেন। উৎসাহী মানুষের ভিড় হয় গ্রামের গর্ব মনোজকে দেখার জন্য। কিন্তু গিনেস বুকে নাম তোলার পরেও মনোজের লড়াই থামেনি। বাবা, মা,স্ত্রীয়ের মুখে হাসি ফোটাতে বড় দরকার একটা চাকরির । মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে মাথায় বল নিয়ে খেলা দেখিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন মনোজ। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে আশ্বাসও মিলেছে চাকরির। তবে এখনও শিকে ছেঁড়েনি। ফুটবলের জাগলিং নিয়েই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে চান মনোজ। তৈরি করতে চান আরও অসংখ্য লড়াকু মনোজের। যারা স্বপ্ন দেখতে ভালবাসবে। দেশকেও স্বপ্ন দেখাবে। |