Thread Rating:
  • 0 Vote(s) - 0 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5

মৃত মানুষের সফরসঙ্গী - ভূতের গল্প

Googleplus Pint
#1
আমার সাথে দু'একটা অতি অলৌকিক ঘটনা না ঘটলে আমি কখনোই বিশ্বাস করতাম না যে, জ্বিন-ভূত বলে কিছু আছে।



এখনো মাঝে মাঝে বিশ্বাস করতে চাইনা।আর এই জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে ভূত-প্রেতে বিশ্বাস একেবারেই বেমানান। তবে এই পৃথীবিতে এখনো অনেক বিষয় আছে যা অমীমাংসিত। যার কোন সদুত্তর কেউ দিতে পারেনি।



আমার জীবনে তেমনি একটা অমীমাংসিত প্রশ্ন রয়ে গেছে।আমি অনেককেই এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছি কিন্তু কোন যুক্তিসংগত উত্তর পাইনি।আজ তাই সবার কাছে আমি সেই প্রশ্নটা আরেকবার করতে চাই।



তার আগে ঘটনাটা বলি,



মাঘ মাসের কনকনে শীতের রাত।আমি সেদিন রাতের ট্রেনে বগুড়া থেকে বাড়ি ফিরছি।রাত দশটা বিশে রংপুর এক্সপ্রেসে উঠলাম।যেহেতু চাটমোহর স্টেশনে রংপুর এক্সপ্রেস দাড়ায় না তাই বাধ্য হয়ে বড়ালব্রীজের টিকিট কাটতে হলো। বগুড়া থেকে বড়ালব্রীজ পৌছাতে রাত আড়াইটে বেজে গেলো।



ছোট্ট একটা স্টেশন।দু' একটা দোকান খোলা আছে।দেখে শুনে এক চায়ের দোকানে বসলাম।আর মনে মনে ভাবলাম, আজ আর বাড়ি যাবো না।স্টেশনেই সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবো।



তাই আরাম করে পায়ের উপর পা তুলে বসে বসে চা-সিগারেট খাচ্ছি। প্রায় আধা ঘন্টা হয়ে গেলো এভাবে বসে থাকতে থাকতে।এদিকে প্রচন্ড ঠান্ডা আর কুয়াশায় চারদিকে ঢেকে আসছে। নিজের অযাচিত বোকামির জন্য নিজের কাছেই রাগ হচ্ছে!



মনে মনে ভাবলাম,



"দুর! কাল সকালে বের হলেও পারতাম।কি দরকার ছিল অযথা এই রাতে ট্রেনে আসার! না হয় কালকের কাজটা একটু দেরীতেই হত। তবুও তো এই কনকনে শীতের রাতে খোলা আকাশের নীচে এভাবে বসে থাকতে হত না।"



এসব ভাবছিলাম, আর নিজের প্রতি খুব রাগ হচ্ছিলো। কাউকে গাড়ি নিয়ে আসতেও বলিনি।এমনকি কোন আত্মীয়কে ফোন দেব তারও উপায় নেই। ফোনের ব্যাটারি সারা রাস্তায় ফেসবুক চালাতে চালাতেই ডেড হয়ে গেছে।



অগত্য নিরুপায় হয়ে বসে থাকা আর চা সিগারেট খাওয়া ছাড়া উপায় নেই।প্লাটফর্ম এ কিছুক্ষন বসে থেকে সারে তিনটা নাগাদ নীচে বাজারের দিকে নামলাম ঘুরে দেখার জন্য।



কিছুদূর এগুতেই দেখলাম আমার বাড়ির পাশের এক পরিচিত জ্যাঠা এক দোকানে দাঁড়িয়ে পান খাচ্ছে।কাছে যেতেই বলল,



"ক্যা বারে, তুমি এত রাতে কোনে থেইক্যা? "



আমি কাছের একজন মানুষ পেয়ে কিছুটা উচ্ছাসিত হলাম।যাক তাও নিজের একটা মানুষ আছে।



আমি বললাম,"জ্যাঠা,বগুড়া থেকে আসতেছি।আপনি এখানে ক্যা? "



জ্যাঠা বলল,"আমার মেয়ে আর জামাই আসার কথা ছিল এই ট্রেনে।কিন্তু ওরা তো কেউ আসে নাই দেখতেছি। আমার ফোনডাও বাড়িত রাইখ্যে আইছি তাই ফোন দিবের পারি নাই।"



কেবলে দোকানদারের কাছ থেকে ফোন দিয়ে শুনি,ওরা নাকি গাড়ি ফেল করিসে।দেইখসেও রে বা, ক্যাবা কথা হইলো! যাই হোক,ভালোই হইলো তুমা'ক পায়া।"



"তা তুমি, বাড়ি যাইবে লায়? "



আমি বললাম,"হু যাবো তো,কিন্তু এত রাতে গাড়ি পাবোনে কই? "



জ্যাঠা হাসি মুখে কইলো, "দুর ব্যাটা,আমি একটা সি এন জি লিয়ে আইছি। চল,যাই।"



আমি মোটামুটি আনন্দে আত্মহারা।যাক বাবা,বাঁচা গেলো।



নদী পার হয়ে পশ্চিম পাশের বটগাছের কাছ থেকে সি এন জি তে উঠলাম। বিশ্বাস করবেন না, সি এন জি তে উঠে কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়লাম।



এক ঘুম দেয়ার পর কারো ডাকে ঘুম ভেঙে গেলো।দেখি আমার ওই জ্যাঠা।



আমাকে বলল,"ব্যাটা,তোমারে বাড়ি পায়া গেছি।নামবা? না হয় আজ আমারে বাড়িতে যাই চল?



আমি চোখ খুলে দেখলাম,"আমার বাড়ির সামনের রাস্তায় সি এন জি দাড়িয়ে আছে।আমি জ্যাঠাকে বললাম,



"না,জ্যাঠা,বাড়ি যখন চলে এসছি তখন আর যাবো না।অন্যদিন যাবো।"



জ্যাঠা বলল,"আচ্ছা বাজান,ভালো থাইকো তালি।আর তোমার আব্বা মাকে বইলো আমার বাড়িতে বেড়ায়ে আসতে।"



আমি হ্যা বলে বাড়ির উঠোনে উঠতে শুরু করলাম।ততক্ষণে, সি এন জি মুখ ঘুড়িয়ে বড় রাস্তার দিকে চলা শুরু করেছে।



বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে বুঝলাম সবাই ঘুমিয়ে আছে। আমি আম্মার ঘরের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে আস্তে আস্তে আম্মাকে ডাকলাম।



আম্মা ঘুম থেকে উঠে এত রাত্রে আমাকে দেখে তো অবাক!



তারপর নানা প্রশ্ন,কিভাবে আসলাম? কই থেকে আসলাম? কার সাথে আসলাম ইত্যাদি।



আমি ঘরে যেয়ে মাকে সব খুলে বললাম।



হঠাৎ করে ঘরের দেয়াল ঘড়িটা বেজে উঠলো। চারটার ঘন্টা শুনে আমি হকচকিয়ে ঘড়ির দিকে তাকালাম।



কেবল চারটা বাজলো!



আমি দেয়াল ঘড়িতে ভুল আছে ভেবে হাত ঘড়ির দিকে তাকালাম। চারটা এখনো বাজেনি।কয়েক সেকেন্ড এখনো বাকি আছে!! আমি আরো অবাক হয়ে গেলাম।



এটা কিভাবে সম্ভব? বড়ালব্রীজ থেকে চাটমোহরে আসতেই যেখানে ৪৫ মিনিটের উপরে সময় লাগে,সেখানে আরো সাত-আট কিলো বেশি রাস্তা মাত্র পনেরো মিনিটে কিভাবে আসলাম??



তারপর মা যখন সব কিছু শুনে বুকে দোয়া পড়ে ফু দিয়ে বললেন,"আল্লাহর মাল,আল্লাহই হেফাজত করেন। "তখন একটু অবাক হয়েছিলাম বটে কিন্তু যখন শুনলাম আমি যে জ্যাঠার সাথে এতটা পথ এসেছি,তিনি গত পাঁচ দিন আগে মারা গেছেন তখন স্তব্ধ হয়ে গেলাম।



কিন্ত কিভাবে আমি এত অল্প সময়ে এতটা পথ এলাম?



আর একজন মৃত মানুষ আমাকে কেন সাহায্য করলেন? তা আজো আমার কাছে অমীমাংসিত জিজ্ঞাসা!!



[সূত্রঃ গল্পটি ইন্টারনেট হতে সংগ্রহিত]
Reply


Possibly Related Threads…
Thread Author Replies Views Last Post
  [গল্প] জানাযার লাশের ঘটনা Hasan 0 2,062 01-02-2018, 01:29 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] ব্যাপারটা যতটা না ভৌতিক তারচেয়ে বেশি রহস্যময় Hasan 0 2,224 01-02-2018, 01:29 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] ছদ্দবেশ (ভুতের গল্প) Hasan 0 2,221 01-02-2018, 01:28 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] ভৌতিক কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য দিলাম Hasan 0 2,396 01-02-2018, 01:26 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] রক্তখেকো (ভুতের গল্প) Hasan 0 2,078 01-02-2018, 01:23 PM
Last Post: Hasan
  ভুতের গল্পঃ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার Hasan 0 1,955 01-02-2018, 01:21 PM
Last Post: Hasan
  রহস্যকুঠীর রানী ( পিশাচ কাহিনী) কাহিনী : মানবেন্দ্র পাল Maghanath Das 0 4,960 02-20-2017, 04:16 PM
Last Post: Maghanath Das
  সত্যি কাহিনী অবলম্বনে- হৃদয় নাড়া দেয়ার মত গল্প। পুরোটা পড়ুন- ... Maghanath Das 0 2,507 02-20-2017, 04:13 PM
Last Post: Maghanath Das
  একটি সত্য ঘটনা। ভুত/প্রেত/জীন বিশ্বাস না করলে পড়বেন না কেউ। Maghanath Das 0 2,692 02-20-2017, 04:12 PM
Last Post: Maghanath Das
  অস্বাভাবিক তথ্য Hasan 0 2,126 01-17-2017, 08:04 PM
Last Post: Hasan

Forum Jump:


Users browsing this thread: 1 Guest(s)