Thread Rating:
  • 0 Vote(s) - 0 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5

[গল্প] রক্তখেকো (ভুতের গল্প)

Googleplus Pint
#1
এই মেয়েটা দেখার পরও যখন কালামের পছন্দ হইলোনা। তখন সবাই ধরে নিল এই জীবনে কালামের আর বিয়াই হইবোনা। গ্রামের সবাই কালামকে একটু-আধটু টিপ্পনিও কাটে। কিন্তু একদিন হঠাৎ করে সবাইকে অবাক করে দিয়ে কালাম বিয়ে করে ফেলল। যেমন তেমন মেয়ে নয়, এক অপরুপ সুন্দরী। গ্রামে কালামের বউ নিয়া ব্যাপক আলোচনা। কালামের বউয়ের আবার অনেক গুণ আছে। যেমন শশুর-শাশুরীর যত্ন, ভাল রান্না-বান্না, স্বামী সেবা আরও কত কি? বউ নিয়া কালামের দিন সুখেই কাটছিল।
এরমাঝে একদিন সকালে খবর বের হলো জমিরের ষাড় গরু দুইটির ঘাড়ভাঙ্গা অবস্থায় গোয়াইল ঘরে [গরু রাখার ঘর] পরে আছে। গ্রামের সবলোক জমিরের বাড়িতে হাজির। কেউ কেউ বলতে লাগল ভূত এসে ঘাড় ভেঙ্গে দিয়ে গেছে, কেউবা বলতে লাগল এটা রাক্ষসের ঘটনা। রাক্ষস এসে ঘাড় ভেঙ্গে রক্ত চুষে খেয়েছে। কেউ কেউ ঘটনাটাকে পাত্তা না দিয়ে বলছে ষাড়ে ষাড়ে লড়াই করে মারা গেছে। তাদের যুক্তিও ছিল - দুইটি ষাড়েরই শিং ভাঙ্গা।
কিন্তু পরের দিন যখন একই ভাবে ফিরোজ চাচারও গরু মরে গেল। তখন সবার ভিতর একটা অজানা আশংকা সৃষ্টি হইলো। গ্রামের মুসল্লিরা মসজিদে মসজিদে দোয়া, হিন্দুরা মন্দিরে পূজা শুরু করল। কিন্তু সবকিছু অসার প্রমান করে এবার সুবলের একমাত্র সম্বল গাই-বাছুরেরও একই অবস্থা। সুবলের আহাজারিতে গ্রামের সমস্ত মানুষও কান্দে।
এরমাঝে এক বিশাল ঘটনা ঘটলো আবু মিয়া বাজার থেকে আসার সময় নাকি শশানঘাটের কাছটায় যে তেতুলগাছটা আছে, সেখানে দেখলো এক ইয়া বড় ভূত। কি লম্বা দাঁত। তারদিকেই নাকি তেরে আসছিলো। হাতের ভিতর যে মাছটা ঝোলানো ছিল সেটা নাকি ঐ ভূতের সামনে ছুড়ে মেরে রক্ষা। এইগ্রাম-সেইগ্রাম করে এ ঘটনা প্রায় দশগ্রাম ছড়িয়ে পড়লো।
কালামের বউতো কালামরে একা একা ছাড়তেই চায় না। রাত্রে কালাম বাথরুমেও যেতে চাইলে তার বৌ গিয়া তার পাশে দাড়িয়ে থাকে। আবার তার বৌ যখন বাথরুমে যায় তখন কালামরে বলে তুমি আমার স্বামী, তুমার কিছু হইয়া গেলে আমি বাচুমনা। তুমি শুইয়া থাক, তোমার বাইরে যাওয়া লাগবোনা। কালামের আবার কিছুটা ঘুমরোগ আছে। শুয়ে পড়লেই ঘুমিয়ে যায়। কালামতো বউয়ের ভালবাসা দেখে আল্লাহর কাছে বউয়ের ভালো চেয়ে দোয়া করে।
অনেক পাহারা সত্বেও আশে-পাশের সব গ্রামের গরুকেই একইভাবে মরে যেতে হচ্ছে। গ্রামের বয়ো-বৃদ্ধদের কেউ কেউ কলিযুগের কথাও স্মরণ করতে লাগল। এইদিকে একদিন কালাম মাঝরাত্রে বউকে বিছানায় না দেখে অবাক। ভাবলো হয়তো বাইরে গেছে। কিন্তু আধঘন্টারও বেশী সময়েও যখন বউ ঘরে ফিরলোনা তখন কালাম চুপিসারে গিয়ে বাথরুমের দরজায় দাক্কা দিলো। দেখে কেউ নাই। কালামের মনে গভীর আশংকা সৃষ্টি হলো। কিন্তু ভয়ে বেশীক্ষণ বাইরে না থেকে ঘরে চলে গেল। কিছুক্ষণের মাঝেই তার বউ ঘরে হাজির। কালাম জিজ্ঞাসা করলো কোথায় গেছিলা?তখন তার বউ তাকে জড়িয়ে বললো এইতো একটু বাথরুমে গেছিলাম। পুরান আমাশয়টা খুব ভুগাচ্ছে। কালামের মনের মাঝে সন্দেহ হইলো। পরেররাত্রে সে সাথে মরিচ নিয়া শুইলো। একটু পর পর সে চোখের মাঝে মরিচ দেয় যাতে ঘুম এসে কাবু করতে না পারে। গভীর রাত্রে কালামের বউ বের হয়ে গেলো। ঘন্টা তিনেক পরে সে আবার ঘরে ফিরে আসলো।
আশে-পাশের দশ গেরামের সব গরু শেষ। শুধু কালামদের গরুগুলোর এখনও কিছু হয়নাই। কালাম তার বউকে বললো আমার বন্ধুর মা খুব অসুস্থ আমি আজকে সন্ধায় তাদের বাড়িতে যাবো। কালকে চলে আসবো। যাবার বেলা বউ বলল আমার তুমার জন্য খুব খারাপ লাগবে। সাবধানে থেকো ইত্যাদি।
গভীর রাত। কালামের বউ আস্তে আস্তে দরজাটা খুলে কালামদের গোয়াইল ঘরে ঢুকলো। কিছুক্ষণের মাঝেই তার চেহারাটা একটা রাক্ষসীর রুপ নিলো। ইয়া বড় দাঁত, নখ। কি বিশ্রী চেহারা........ কালাম দেখে ভয় পেয়ে গেলো। তারপরও সে গোয়াইল ঘরের উপরে যে মাচাটা আছে সেখানে চুপ করে বসে থাকলো। কালামের বউ একে একে সব গরুর ঘাড় ভেঙ্গে রক্তচুষে খেয়ে ফেললো। কিছুক্ষণ পর আবার আগের রুপে ঘরে চলে গেল।
কালাম ঐ যায়গা থেকে নেমে গ্রামের সবাইকে এই ঘটনা খুলে বললো। গ্রামের সবাইতো অবাক। এখন কি করা যায়? এই ভেবে সবাই অস্থির। এর মাঝে একবৃদ্ধ বললো বড় একটা কুয়া খুড়তে। তারপর সবাই বলবে যে দেশে অনেকবড় ঘূর্ণিঝড় হবে সবাইকে এই কোয়ায় আশ্রয় নিবে। তারপর কালামরাও ঐ জায়গায় যাবে এবং কালাম তার বৌকে ঐ কোয়ায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবে। তারপর সবাই মিলে মাটিচাপা দিয়ে দিবে।
দুপুর বেলা পুরো গ্রামে ছড়িয়ে গেলো বিরাট ঘূর্ণিঝড় হবে সবাইকে ঐ কুয়ার কাছে আশ্রয় নিতে হবে। যারা আগে আসবে তারাই ঐ কুয়ায় আশ্রয় নিতে পারবে। এই কথা শুনে কালামের বউ তারাতারি রেডি হয়ে গেলো। কালাম বাসায় আসার সাথে সাথেই তার বউ তাকে সব খুলে বললো এবং তারাতারি যেতে বললো। কালাম তার বউ নিয়া সেই কুয়ার কাছে ছুটলো। এইদিকে কালামের বউ ভাবলো তাকে সবার আগে ঐ কুয়ায় আশ্রয় নিতে হবে।তাই সে সবার আগে ঐ কুয়ায় লাফ দিলো। গ্রামের সবাই মিলে তারাতারি ঐ কুয়া মাটি দিয়া ভরে ফেললো।
এখনো ঐ শান্ত গ্রামে মাঝেই মাঝেই মাটি কেপে উঠে। গ্রামের সবার ধারনা ঐ রাক্ষসীই মাটির নিচ থেকে উঠার জন্য মাঝে মাঝে চেষ্টা করে বলে এভাবে মাটি কেপে উঠে।

( ভাল লাগলে লাইক দিবেন )
Hasan
Reply


Possibly Related Threads…
Thread Author Replies Views Last Post
  [গল্প] জানাযার লাশের ঘটনা Hasan 0 2,007 01-02-2018, 01:29 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] ব্যাপারটা যতটা না ভৌতিক তারচেয়ে বেশি রহস্যময় Hasan 0 2,174 01-02-2018, 01:29 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] ছদ্দবেশ (ভুতের গল্প) Hasan 0 2,169 01-02-2018, 01:28 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] ভৌতিক কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য দিলাম Hasan 0 2,348 01-02-2018, 01:26 PM
Last Post: Hasan
  ভুতের গল্পঃ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার Hasan 0 1,900 01-02-2018, 01:21 PM
Last Post: Hasan
  রহস্যকুঠীর রানী ( পিশাচ কাহিনী) কাহিনী : মানবেন্দ্র পাল Maghanath Das 0 4,905 02-20-2017, 04:16 PM
Last Post: Maghanath Das
  সত্যি কাহিনী অবলম্বনে- হৃদয় নাড়া দেয়ার মত গল্প। পুরোটা পড়ুন- ... Maghanath Das 0 2,453 02-20-2017, 04:13 PM
Last Post: Maghanath Das
  একটি সত্য ঘটনা। ভুত/প্রেত/জীন বিশ্বাস না করলে পড়বেন না কেউ। Maghanath Das 0 2,634 02-20-2017, 04:12 PM
Last Post: Maghanath Das
  অস্বাভাবিক তথ্য Hasan 0 2,066 01-17-2017, 08:04 PM
Last Post: Hasan
  আমার বাবার অসুস্থতা Hasan 0 2,141 01-17-2017, 08:03 PM
Last Post: Hasan

Forum Jump:


Users browsing this thread: 1 Guest(s)