Thread Rating:
  • 0 Vote(s) - 0 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5

একেবারেই আলাদা কক্ষপথ যে গ্রহের

Googleplus Pint
#1
ঘুরছে সৌরজগতের সবকিছু। গ্রহরা যেমন সূর্যকে
কেন্দ্র করে ঘোরে তেমনি উপগ্রহরাও ঘোরে গ্রহকে
কেন্দ্র করে।
নিজের অক্ষের চারপাশে মঙ্গল যে বেগে ঘোরে,
উপগ্রহ ফোবস মঙ্গলের চারপাশে ঘোরে তার থেকে
তিনগুণ গতিবেগে। ইউরেনাসের উপগ্রহরা তার
(ইউরেনাসের) চারপাশে ঘোরে সামনের বা
পেছনের দিকে নয়, ইউরেনাসের কক্ষের সঙ্গে
সমকোণে। আবার নেপচুন, বৃহস্পতি ও শনির কোনো
কোনো উপগ্রহ ঘোরে গ্রহের নিজ অক্ষের ঘূর্ণনের
ঠিক উল্টো দিকে।
ঘোরে স্বয়ং সূর্যও, নিজ অক্ষের ওপর পাক খেতে
খেতে সমস্ত সৌরমণ্ডল নিয়ে মহাশূন্যের ভেতর
দিয়ে সেকেন্ডে ১৯.২ কিলোমিটার বেগে ছুটে চলে
সে। শুধু তাই নয়, নক্ষত্র সৃষ্টির জন্যও নীহারিকার
ভেতর ঘূর্ণনের প্রয়োজন প্রধানতম বিষয়। যে কারণে
মহাজাগতিক বস্তুর ঘূর্ণন ও তার কক্ষপথ ওই বস্তুর
ক্ষেত্রে প্রধান বিষয়গুলোর একটি।
সৌরজগতের সব গ্রহই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে একটি
নিয়মিত ধরনের কক্ষপথে। এই কক্ষপথগুলো মোটামুটি
বৃত্তাকার ধরনের হয়। সূর্য থেকে গ্রহের দূরত্বের ওপর
ভিত্তি করে এসব কক্ষপথ বড় কিংবা ছোট হয়ে
থাকে।
তবে সকল গ্রহের কক্ষপথ বিবেচনা করলে
সৌরজগতের সবচেয়ে বিস্ময়কর কক্ষপথের গ্রহ হল
প্লুটো। কারণ সৌরজগতের অন্যসকল গ্রহের মতো
বৃত্তাকার পথে এটি সূর্যকে পরিভ্রমণ করে না।
প্লুটের কক্ষপথ অত্যন্ত হেলানো এবং অনেক বেশি
উপবৃত্তাকার। যে কারণে সৌরজগতের সবচেয়ে দূরতম
এই গ্রহটি নিজ কক্ষপথের ওপর দিয়ে সূর্যকে
পরিভ্রমণ কালে মাঝে মাঝে নেপচুনের কক্ষপথ পার
হয়ে নেপচুন এবং ইউরেনাসের কক্ষপথের মধ্যে চলে
আসে। তখন সূর্য থেকে নেপচুনের তুলনায় প্লুটোর
দূরত্ব কম হয়ে যায়।
এই ভিন্ন ধরনের কক্ষপথ হওয়ায় আবিষ্কারের প্রথম
থেকেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে গ্রহটিকে
নিয়ে এক প্রকার বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিজ্ঞানী
হয়েল এবং আরো অনেকে জ্যোতির্বিদ ধারণা
করতেন, প্লুটো আসলে আদিতে নেপচুনের একটি
উপগ্রহ ছিল। পরে কোনো কারণে নেপচুনের আকর্ষণ
থেকে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে এসে স্বাধীনমতো সূর্যের
চারিদিকে ঘুরছে এবং একটি গ্রহে পরিণত হয়েছে।
কিন্তু ১৯৭৮ সালের ২২ জুন জ্যোতির্বিজ্ঞানী
জ্যামস ক্রিস্টি প্রথমবারের মতো প্লুটোর উপগ্রহ
‘শ্যারন’কে আবিষ্কার করার পরে এটিকে
বিজ্ঞানীরা গ্রহ হিসেবে মেনে নিতে বাধ্য হন।
প্লুটো আবিষ্কারের প্রায় অর্ধশত বছর পর এই ঘটনা
ঘটে।
লোয়েল মান মন্দিরের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্লাইড
ডব্লিউ টমবাউ ১৯৩০ সালে একটি মহাকাশীয়
বস্তুপিন্ড হিসেবে এই গ্রহটিকে আবিষ্কার করেন।
আবিষ্কৃত এই মহাকাশীয় বস্তুপিন্ডটিকে রোমক মৃত্যু
ও প্রেতলোকের দেবতার নামে গ্রহ হিসেবে নামকরণ
করা হয় প্লুটো। পুরাণ মতে, প্লুটো হচ্ছে নিম্নতর
জগতের দেবতা। সে স্যাটার্ন বা শনির পুত্র, জুপিটার
বা বৃহস্পতি ও নেপচুনের ভাই এবং প্রসপারপাইনের
স্বামী।
আবিষ্কারের পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্লুটো
সৌরজগতের নবম গ্রহ হিসেবে চিহ্নিত হতো। কিন্তু
২০০৬ সালের ২৪ আগস্ট ইন্টারন্যাশনাল
অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন গ্রহের সংজ্ঞা নতুন
করে নির্ধারণ করার পর প্লুটো তার গ্রহত্ব হারায়।
নতুন সংজ্ঞার আওতায় বামন গ্রহ হিসেবে অভিহিত
করে প্লুটোর গ্রহের মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হয়।
প্লুটোর কক্ষপথ
প্লুটো নিজ কক্ষপথে প্রতি সেকেন্ডে ৪.৬৭
কিলোমিটার বেগে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। সূর্যকে
একবার প্রদক্ষিণ করতে প্লুটোর সময় লাগে ২৪৮ বছর
বা ৯০,৫৬০ দিন। নিজের চারদিকে একবার ঘুরে
আসতে এর সময় লাগে ৬ দিন ৭ ঘণ্টা ১২ মিনিট। সূর্য
থেকে প্লুটোর গড় দূরত্ব প্রায় ৫৯১ কোটি
কিলোমিটার। এর ব্যাস প্রায় ৫৯১০ কিলোমিটার।
আয়তনের হিসাবে পৃথিবীর চাঁদ লুনার তুলনায় এটি
বেশ ছোট।
সূর্য থেকে প্লুটোয় আলো পৌঁছাতে সময় লাগে ৫.৫
ঘণ্টা। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, গ্রহটি সম্পূর্ণ বরফ
এবং পাথরে পাহাড়ে ভরপুর। প্লুটোর তাপমাত্রা খুবই
কম। এর ওপরিভাগের তাপমাত্রা অধিকাংশ সময়
প্রায় -২৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি
থাকে। তবে মাঝে মাঝে নেপচুন থেকে সূর্যের
কাছে চলে যাওয়ার কারণে এর তাপমাত্রা অনেক
বেড়ে যায়। প্লুটোতে নাইট্রোজেন, কার্বন মনো-
অক্সাইড এবং মিথেনের খুবই হালকা বায়ুমণ্ডল
বিদ্যমান।
তবে ১৯৮৯ সালে ভয়েজার-২ থেকে প্রাপ্ত তথ্য
অনুসারে বিজ্ঞানীদের দাবী, এর বায়ুমণ্ডলে
ট্রাইটনের মতো অন্য গ্যাসের তুলনায় কার্বন মনো-
অক্সাইড পরিমাণই সবচেয়ে বেশি।
প্লুটোর চাঁদের সংখ্যা পাঁচটি। আয়তন অনুসারে
এগুলো হল- চ্যারন, স্টায়েক্স, নিক্স, কারবেরাস এবং
হাইড্রা। চ্যারন আয়তনে প্রায় প্লুটের অর্ধেক হলেও
অন্য উপগ্রহগুলো খুবই ক্ষুদ্রাকৃতির।
২০০৫ সালের ১৫ মে হাবল টেলিস্কপের সাহায্যে
ইন্টারন্যাশনাল এস্ট্রোনোমিকাল ইউনিয়নের ‘নিউ
হরিজন মিশন’ এর মাধ্যমে আবিষ্কৃত হয় নিক্স এবং
হাইড্রা। ২০১১ সালের ২৮ এবং ২০১২ সালের ২৬ মে
আবিষ্কৃত হয় কারবেরাস এবং স্টায়েক্স। সবমিলিয়ে
ভিন্নধর্মী এক জগৎ প্লুটোর।
এদিকে ভিন্নধর্মী কক্ষপথ হওয়ার কারণে মহাবিশ্ব
সম্প্রসারণ নীতির ওপরে ভিত্তি করে ভবিষ্যতে
নেপচুনের সঙ্গে প্লুটোর কোনো সংঘর্ষ হবে কিনা
সেটা নিয়ে বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যেই উদ্বেগ
প্রকাশ করেছেন। যে কারণে এই গ্রহকে
পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই ‘নিউ
হরিজন স্পেসক্র্যাফট’ নামে একটি মহাকাশযান
পাঠানো হয়েছে।
এখনো পর্যন্ত যানটি প্রায় ৬.২৫ জিবি তথ্য প্রেরণ
করেছে যাতে মহাকাশের নতুন নতুন কিছু তথ্য
বেরিয়ে আসছে। আগামীতে বিজ্ঞানীরা এই গ্রহ
সম্পর্কে আর কোনো নতুন তথ্য কিংবা এর রহস্যময়ী
কক্ষপথ সম্পর্কে কিছু জানতে পারবেন কিনা সেটা
এখন দেখার বিষয়।
তথ্যসূত্র :
* প্লুটো ফ্যাক্ট শিট– ডেভিড আর উইলিয়ামস,
জুলাই ২৪ ২০১৫, নাসা।
* দ্য প্লুটো সিস্টেম: ইনিশিয়াল রেজাল্টস
ইটস এক্সপ্লরেশান বাই নিউ হরিজন (পৃষ্ঠা
২৪৯-৩৫২)
* প্লুটো ক্লোজ আপ- মারসিয়া ডান, এপি
নিউজ, জুলাই ১৪ ২০১৫
* এ কোয়ান্টাম অব কসমোলজি- লি স্মোলিন
* এক্সপ্লোরিং আওয়ার ইউনিভার্স অ্যান্ড
আদারস- মারটিন রিস
Hasan
Reply


Possibly Related Threads…
Thread Author Replies Views Last Post
  এ বছরই পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহাণুর সংঘর্ষ? Hasan 0 1,397 05-25-2017, 10:37 PM
Last Post: Hasan
  নতুন সাত গ্রহে পর্যাপ্ত পানি Hasan 0 1,666 03-16-2017, 08:43 PM
Last Post: Hasan
  বিশ্বের প্রথম আলো বিকিরণকারী ব্যাঙের সন্ধান! Hasan 0 1,481 03-16-2017, 08:42 PM
Last Post: Hasan
  পৃথিবীর সার্বজনীন ৯টি স্বপ্ন এবং তাদের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা Hasan 0 1,593 02-28-2017, 11:54 PM
Last Post: Hasan
  প্রাণঘাতী ৮ টি ভাইরাস সম্পর্কে জানুন Hasan 0 1,523 02-28-2017, 11:53 PM
Last Post: Hasan
  ২০১৮ সালে দুই পর্যটক নিয়ে চাঁদে যাচ্ছে স্পেসএক্স Hasan 0 1,348 02-28-2017, 11:52 PM
Last Post: Hasan
  বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম এসডি কার্ড উন্মুক্ত করলো সনি Hasan 0 1,938 02-25-2017, 10:21 PM
Last Post: Hasan
  পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে ভিনগ্রহীরা ! Hasan 0 1,576 01-14-2017, 11:42 AM
Last Post: Hasan
  সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে না বৃহস্পতি Hasan 0 1,499 01-14-2017, 11:41 AM
Last Post: Hasan
  মঙ্গলগ্রহে বিশাল আকারের চামচের সন্ধান! Hasan 0 1,554 01-14-2017, 11:40 AM
Last Post: Hasan

Forum Jump:


Users browsing this thread: 1 Guest(s)