02-22-2017, 12:24 AM
স্বপ্ন ভেলা
Sunjid Hasan(অসমাপ্ত কাব্য)
ভালবাসায় আবেগের চেয়ে বিবেকের মূল্যটাকেই প্রধান্য দেওয়া উচিত।ভালবাসতে হলে আবেগ দিয়েই ভালবাসতে হয়।তবেই তো ভালবাসা একটা ভাল আশার খোড়াক।ভালবাসাটাই যখন সম্বল তখন তা হোক না অবিরাম।এসব ভাবতে ভাবতেই নিজের মনের অগোচরেই হেসে উঠল সাইফ।আর বলছে অনেক ভারী কথাতো ভাবছি!ভারী হলেও কথাগুলো কিন্তু বাস্তব সত্য।পরক্ষণেই মনে হল আবেগ বিবেক দুটো দিয়েই তো ভালবাসছিলাম নীতিকে।তবে কেনই বা হারালাম তাকে।আর কেনই বা ছন্নছাড়া এই আমি??তবুও ভালবাসি,ভালবাসি এই অদেখা তোমাকে।এরই মাঝে হঠাৎ করে পাশে কেউ একজন ধারণা করতে পারলাম।আরে!এ কিভাবে সম্ভব?? এ তো আমার হারিয়ে যাওয়া নীতি।
সাইফ:এতদিন পর পড়ল কি মনে এই অভাগাটাকে??আমিতো চেয়েছিলাম তোমাকে সাথে নিয়ে ভালবাসার খোড়াক হয়ে দিনগুলো কাটাব কিন্তু তা তো আর হয়ে উঠল না,তোমার সাথে কাটানো মূহুর্তগুলোই আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেষ্টা করছি।আজও যে বড্ড বেশিই ভালবাসি তোমাকে।
নীতি:এসব কথা পরে হবে।আগে বল কেমন আছ??
সাইফ:আমার আবার ভাল থাকা।তুমি কেমন আছ??আর তোমার চেহারার এই অবস্থা কেন??
নীতি:কই নাতো আমি ঠিক আছি।কাল দেখা কর সব বলব।
পরের দিন তাড়াতাড়ি করেই সাইফ তাদের পছন্দের জায়গাটিতে গেল।জায়গাটি অসম্ভব সুন্দর।এর পাশ দিয়েই বয়ে চলছে ছোট্ট নদী।আর এর উপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বটবৃক্ষ।নদীর দুপাশেই কাশফুল।মনে হয় কাশফুলগুলো হয়তো কোন চিত্রশিল্পী আকাশের বুকে রংতুলি দিয়ে অনেক যত্নে এঁকেছে।
ঐ তো মহারাণী আসছে তাহলে।কাগজের মত কিছু দেখা যাচ্ছে হাতে।আসতেই জিজ্ঞাসা করলাম ঐ তোমার হাতে কি??নীতি বলল, এরই মাঝে তোমার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে।তারপর কাগজগুলো আমার দিকে দিল।এগুলো দেখছি কিন্তু নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না।এগুলো তো মেডিকেল সার্টিফিকেট।আর এতে এগুলা কি?? আমার নীতির নাকি ক্যান্সার তাও আবার শেষ ধাপে!ডাক্তার হয়তো উল্টা পাল্টা লিখছে বুঝতে পারে নাই।তাহলে এই কিমোর তারিখগুলা কি??আর দুইটা কিমো দেওয়াও হয়ছে নাকি??
সাইফ:নীতি তুমি আমার সাথে মজা করতেছ কেন??তাও এই ব্যাপারগুলো নিয়ে।আমি তো নিতে পারি না।নীতি:তোমাকে স্বাভাবিকভাবেই নিতে হবে বিষয়টা।এটাই হয়তো হওয়ার ছিল আর তাই হয়তো হতে চলছে।আর ৬ মাস আগে যখন জানতে পারি আমার ক্যান্সার তখন আমি নিজেই চেয়েছিলাম তোমার কাছ থেকে দূরে সরতে কিন্তু এক অজানা মায়ার প্রবল টানে আমি পারি নি দূরে থাকতে।দুইটা কিমো দেওয়া হয়ছে আর তাতেই চুল পড়া শুরু করে দিছে।ডাক্তার বলছে আর বেশিদিন হয়তো বাঁচব না।বড় জোর মাস খানেক।
আমি আর কিছুই বলতে পারছি না।চোখগুলো কেমন জানি ঝাপসা হয়ে আসছে??তারপর প্রায় ১৭ দিন পরের কথা।হাসপাতালের বেডে নীতি নিথর হয়ে পড়ে আছে।আমি পাশে যেতেই নীতি বলল কে সাইফ??আমি পাশে গিয়ে বসলাম তখন নীতি বলল তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে।হাত বুলিয়ে দেওয়ার সময় প্রিয়তমার চুলগুলো আমার হাতে উঠে আসছে।চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছে কিন্তু পারছি না।কাঁদলে হয়তো নীতি বুঝতে পারবে সে আমাকে ছেড়ে যাচ্ছে।নীতি আমাকে জড়িয়ে ধরতে বলছে।জড়িয়ে ধরলাম তখন সে বলছে আমি বাঁচতে চাই।তোমার ভালবাসা নিয়ে তোমার সাথে অনেকদিন বাঁচতে চাই।আমি বললাম কেউ তোমাকে আমার কাছ থেকে নিতে পারবে না।আমার ভালবাসায় তুমি বেঁচে থাকবে সবসময়।তার দুইদিন পর ডাক্তার আমাকে ডেকে নিল।তিনি বললেন ধৈর্য হারাবেন না।তিন নাম্বার কিমো দেওয়ার পর থেকে রিপোর্ট ভালর দিকে যাচ্ছে।উপরওয়ালাকে ডাকেন।ইনশাল্লাহ আপনার ভালবাসা আপনার কাছেই ফিরে আসবে।ধীরে ধীরে নীতির কিমো দেওয়া শেষ হল।ও ধীরে ধীরে সুস্থ হতে শুরু করল।ওর মাথার একটা চুলও নেই।মুখে কেমন যেন ফ্যাকাশে ভাব।তবুও সে আমার কাছে অপ্সরী আমার রাজরাণী।
দুই বছর পর,,
আজ নীতি আমার বউ।উপরওয়ালার রহমতে আজ সে সুস্থ।আর ওর মাথা ভর্তি চুলও গজিয়েছে যা দিয়ে চায়লে আমাকে বেঁধেও রাখতে পারবে??।বিয়ের পরই আমাকে নানা নিয়মে বেঁধে দিছে।এখন আর ইচ্ছা হলেও রাত জাগতে পারি না বন্ধুদের সাথে,সাহস হয়না সিগারেটে টান দিতে।ইচ্ছে হলেও বাসায় দেরি করে ফিরতে পারি না।এগুলো করলে তো পাগলীটা এদিকে অভিমানে মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে।এই অভিমান এই খুনসুটিগুলোই তো ভালবাসা।এভাবেই যাক না সময় মিষ্টি মধুর অভিমানে।
বেঁচে থাকুক ভালবাসা।ভাল থাকুক ভালবাসার মানুষগুলো।জয় হোক ভালবাসার।
Sunjid Hasan(অসমাপ্ত কাব্য)
ভালবাসায় আবেগের চেয়ে বিবেকের মূল্যটাকেই প্রধান্য দেওয়া উচিত।ভালবাসতে হলে আবেগ দিয়েই ভালবাসতে হয়।তবেই তো ভালবাসা একটা ভাল আশার খোড়াক।ভালবাসাটাই যখন সম্বল তখন তা হোক না অবিরাম।এসব ভাবতে ভাবতেই নিজের মনের অগোচরেই হেসে উঠল সাইফ।আর বলছে অনেক ভারী কথাতো ভাবছি!ভারী হলেও কথাগুলো কিন্তু বাস্তব সত্য।পরক্ষণেই মনে হল আবেগ বিবেক দুটো দিয়েই তো ভালবাসছিলাম নীতিকে।তবে কেনই বা হারালাম তাকে।আর কেনই বা ছন্নছাড়া এই আমি??তবুও ভালবাসি,ভালবাসি এই অদেখা তোমাকে।এরই মাঝে হঠাৎ করে পাশে কেউ একজন ধারণা করতে পারলাম।আরে!এ কিভাবে সম্ভব?? এ তো আমার হারিয়ে যাওয়া নীতি।
সাইফ:এতদিন পর পড়ল কি মনে এই অভাগাটাকে??আমিতো চেয়েছিলাম তোমাকে সাথে নিয়ে ভালবাসার খোড়াক হয়ে দিনগুলো কাটাব কিন্তু তা তো আর হয়ে উঠল না,তোমার সাথে কাটানো মূহুর্তগুলোই আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেষ্টা করছি।আজও যে বড্ড বেশিই ভালবাসি তোমাকে।
নীতি:এসব কথা পরে হবে।আগে বল কেমন আছ??
সাইফ:আমার আবার ভাল থাকা।তুমি কেমন আছ??আর তোমার চেহারার এই অবস্থা কেন??
নীতি:কই নাতো আমি ঠিক আছি।কাল দেখা কর সব বলব।
পরের দিন তাড়াতাড়ি করেই সাইফ তাদের পছন্দের জায়গাটিতে গেল।জায়গাটি অসম্ভব সুন্দর।এর পাশ দিয়েই বয়ে চলছে ছোট্ট নদী।আর এর উপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বটবৃক্ষ।নদীর দুপাশেই কাশফুল।মনে হয় কাশফুলগুলো হয়তো কোন চিত্রশিল্পী আকাশের বুকে রংতুলি দিয়ে অনেক যত্নে এঁকেছে।
ঐ তো মহারাণী আসছে তাহলে।কাগজের মত কিছু দেখা যাচ্ছে হাতে।আসতেই জিজ্ঞাসা করলাম ঐ তোমার হাতে কি??নীতি বলল, এরই মাঝে তোমার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে।তারপর কাগজগুলো আমার দিকে দিল।এগুলো দেখছি কিন্তু নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না।এগুলো তো মেডিকেল সার্টিফিকেট।আর এতে এগুলা কি?? আমার নীতির নাকি ক্যান্সার তাও আবার শেষ ধাপে!ডাক্তার হয়তো উল্টা পাল্টা লিখছে বুঝতে পারে নাই।তাহলে এই কিমোর তারিখগুলা কি??আর দুইটা কিমো দেওয়াও হয়ছে নাকি??
সাইফ:নীতি তুমি আমার সাথে মজা করতেছ কেন??তাও এই ব্যাপারগুলো নিয়ে।আমি তো নিতে পারি না।নীতি:তোমাকে স্বাভাবিকভাবেই নিতে হবে বিষয়টা।এটাই হয়তো হওয়ার ছিল আর তাই হয়তো হতে চলছে।আর ৬ মাস আগে যখন জানতে পারি আমার ক্যান্সার তখন আমি নিজেই চেয়েছিলাম তোমার কাছ থেকে দূরে সরতে কিন্তু এক অজানা মায়ার প্রবল টানে আমি পারি নি দূরে থাকতে।দুইটা কিমো দেওয়া হয়ছে আর তাতেই চুল পড়া শুরু করে দিছে।ডাক্তার বলছে আর বেশিদিন হয়তো বাঁচব না।বড় জোর মাস খানেক।
আমি আর কিছুই বলতে পারছি না।চোখগুলো কেমন জানি ঝাপসা হয়ে আসছে??তারপর প্রায় ১৭ দিন পরের কথা।হাসপাতালের বেডে নীতি নিথর হয়ে পড়ে আছে।আমি পাশে যেতেই নীতি বলল কে সাইফ??আমি পাশে গিয়ে বসলাম তখন নীতি বলল তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে।হাত বুলিয়ে দেওয়ার সময় প্রিয়তমার চুলগুলো আমার হাতে উঠে আসছে।চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছে কিন্তু পারছি না।কাঁদলে হয়তো নীতি বুঝতে পারবে সে আমাকে ছেড়ে যাচ্ছে।নীতি আমাকে জড়িয়ে ধরতে বলছে।জড়িয়ে ধরলাম তখন সে বলছে আমি বাঁচতে চাই।তোমার ভালবাসা নিয়ে তোমার সাথে অনেকদিন বাঁচতে চাই।আমি বললাম কেউ তোমাকে আমার কাছ থেকে নিতে পারবে না।আমার ভালবাসায় তুমি বেঁচে থাকবে সবসময়।তার দুইদিন পর ডাক্তার আমাকে ডেকে নিল।তিনি বললেন ধৈর্য হারাবেন না।তিন নাম্বার কিমো দেওয়ার পর থেকে রিপোর্ট ভালর দিকে যাচ্ছে।উপরওয়ালাকে ডাকেন।ইনশাল্লাহ আপনার ভালবাসা আপনার কাছেই ফিরে আসবে।ধীরে ধীরে নীতির কিমো দেওয়া শেষ হল।ও ধীরে ধীরে সুস্থ হতে শুরু করল।ওর মাথার একটা চুলও নেই।মুখে কেমন যেন ফ্যাকাশে ভাব।তবুও সে আমার কাছে অপ্সরী আমার রাজরাণী।
দুই বছর পর,,
আজ নীতি আমার বউ।উপরওয়ালার রহমতে আজ সে সুস্থ।আর ওর মাথা ভর্তি চুলও গজিয়েছে যা দিয়ে চায়লে আমাকে বেঁধেও রাখতে পারবে??।বিয়ের পরই আমাকে নানা নিয়মে বেঁধে দিছে।এখন আর ইচ্ছা হলেও রাত জাগতে পারি না বন্ধুদের সাথে,সাহস হয়না সিগারেটে টান দিতে।ইচ্ছে হলেও বাসায় দেরি করে ফিরতে পারি না।এগুলো করলে তো পাগলীটা এদিকে অভিমানে মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে।এই অভিমান এই খুনসুটিগুলোই তো ভালবাসা।এভাবেই যাক না সময় মিষ্টি মধুর অভিমানে।
বেঁচে থাকুক ভালবাসা।ভাল থাকুক ভালবাসার মানুষগুলো।জয় হোক ভালবাসার।
Hasan