02-24-2017, 09:56 AM
একটা পুকুরে বড়ো বড়ো তিনটি মাছ
বাস করত। মাছগুলো দেখতে যেমন
সুন্দর ছিল তেমনি ছিল
ব্যতিক্রমধর্মী এবং আকর্ষণীয়।
যে কারো নজরে পড়লেই তাদের
ব্যাপারে কৌতূহল সৃষ্টি না হয়ে পারত না। একদিন এক মাছ শিকারী ওই
পুকুরের পাড় দিয়ে যাচ্ছিল। মাছ
শিকারীকে জেলেও বলা হয়।
জেলে বলে কথা। তার
নজরে তো না পড়ে পারেই না।
জেলে এতো সুন্দর মাছ সহসা দেখেনি। কিছু সময়
দাঁড়িয়ে থেকে মাছগুলোকে ভালোভাবে
দেখল। কেমন যেন
মোটাসোটা মাছগুলো আর
দেখতে তো সুন্দরের কোনো কমতি নেই।
মাছ তিনটির ভাগ্য ভালো যে জেলে মাছ শিকারের
উদ্দেশ্যে বের হয় নি, তাই তার
কাছে জাল
বা টেটা কিংবা বর্শিটর্শি গোছের
কোনো সরঞ্জামই ছিল না। মাছ
শিকারী তাই বলল: আজ নয় পরে একদিন জালটাল নিয়ে এসে মাছগুলোকে ধরব।
এই বলে জেলে চলে গেল।
মাছেরা শিকারীর কথাগুলো শুনল।
তাই ভাবলো অলসতা করলে নিশ্চয়ই
শিকারীর জালে আটকা পড়তে হবে।
সুতরাং যতো দ্রুত সম্ভব শিকারীদের হাত থেকে রক্ষা পাবার উপায়
খুঁজে বের করতে হবে। ওই
তিনটি মাছের মধ্যে একটি মাছ ছিল
বেশ চালাক চতুর এবং দূরদর্শী।
আরেকটি ছিল মোটামুটি চালাক
এবং উপায় সন্ধানী। কীভাবে পার পাওয়া যায়, কীভাবে পালিয়ে জীবন
বাঁচানো যায় সে রকম চিন্তা করার
মতো। কিন্তু তৃতীয় মাছটি ছিল
বোকা ধরনের, মূর্খ
এবং অযথা সময়ক্ষেপণকারী।
তো চালাক মাছটি মনে মনে বলল: শিকারী তো যে-কোনো মুহূর্তেই
এসে যেতে পারে তাই এই বিপদ
থেকে যতো দ্রুত সম্ভব
প্রাণটা বাঁচানো দরকার
এবং ধীরে ধীরে সমুদ্রের বিশালতায়
চলে যাওয়া দরকার। সে সিদ্ধান্ত নিলো তার এই
চিন্তাটা বাকি দুটি মাছের
কাছে গোপন রাখবে। কেননা সে ভয়
পাচ্ছিলো ওরা দীর্ঘ এই সফরের
কষ্টের
কথা ভেবে তাকে বুঝিয়ে সুজিয়ে শেষ পর্যন্ত তাকে তার সিদ্ধান্ত
থেকে সরিয়ে ফেলবে।
বুদ্ধিমান
মাছটি দেরি না করে সমুদ্রের
উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে দিলো,
কাউকেও কিছু বলল না। অত্যন্ত বিপদ সঙ্কুল পথ পাড়ি দিল সে।
পানিভর্তি খাল কিংবা নালায়
না গিয়ে সরু পথে পাড়ি জমিয়ে শেষ
পর্যন্ত সে তার মঞ্জিল অর্থাৎ বিশাল
সমুদ্রে গিয়ে পৌঁছল। বিপদের
অন্ধকার থেকে আলোর সমুদ্রে গিয়ে সে ভীষণ আনন্দ বোধ
করল।
দ্বিতীয় মাছটি-যার কথা বলছিলাম
যে-স্বল্প বুদ্ধিসম্পন্ন তবে পথ
খুঁজে বের করার চিন্তা তার আছে,
সে তখনো পুকুরেই থেকে গেল এবং ততোক্ষণে মাছ
শিকারী এসে হাজির হলো।
মাছটি তখন ভাবল
গড়িমসি করাটা ঠিক হয় নি ওর
সাথে পাড়ি জমালেই ভালো হতো।
কিন্তু এখন কী করা, এখন তো শিকারী ওঁৎ পেতে বসে আছে ধরার
জন্যে। বেশি একটা ভাববারও সুযোগ
নেই। এসব
ভেবেচিন্তে সে একটা চালাকি করল।
ভাবলো এখন তো গবেষণা করার সময়
নেই আগে জান বাঁচাতে হবে। যা হবার তো হয়েই গেছে। সুযোগ
তো আর ফিরে আসবে না।
এভাবে ভেবেচিন্তে মাছটি হঠাৎ
পানিতে চীৎ হয়ে ভেসে উঠল।
যে কেউ তাকে দেখলেই
ভাবলে মরে গেছে। সত্যি সত্যিই মাছ শিকারীরা যখন তাকে দেখলো পেট
ফুলিয়ে পানির ওপর ভেসে আছে,
ভাবলো এটা মরা মাছ। তবু একজন
মাছটিকে উপরে তুলল।
নড়াচড়া না দেখে মরা ভেবে তাকে
পুকুরের পাড়ে ফেলে রেখে চলে গেল। মাছ শিকারীরা চলে যাবার পর
সে ধীরে ধীরে আবার
পুকুরে লাফিয়ে পড়ে জীবনটা রক্ষা করল।
এবার তৃতীয় মাছের পালা। এই
মাছটি ছিল একেবারেই অলস
এবং বোকা। সুদূর প্রসারী চিন্তা সে করতে পারত না।
যৎকালে তৎবিবেচনা-এ ধরনের
চিন্তা করতো সে। কিন্তু যখন
দেখলো মাছ শিকারীরা এসে গেছে।
তখন সে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লো-
কীভাবে মুক্তির উপায় খুঁজে বের করা যায়।
ভয়ে আতঙ্কে সে কী করবে না করবে উপায়
খুঁজে না পেয়ে এলোমেলো এদিক ওদিক
দৌড়তে শুরু করে দিলো। কিন্তু
জেলেরা তো পানিতে তাদের জাল
পেতে রেখেছিলো সে কারণে বেশি দৌড়তে পারলো না সে। আটকে গেল
জালে। জালের এ ঘর থেকে ওঘরে,
এফোঁড় থেকে ও
ফোঁড়ে দৌড়াতে লাগলো মুক্তির আশায়।
কোনো কাজ হলো না।
উল্টো বরং বেশি দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে আরো বেশি ক্লান্ত
এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল।
জালের ঘরে ঘরে আটকে আহতও
হয়েছে বেশ। অবশেষে লেজসহ একবার
জালে আটকা পড়ে আর নড়াচড়াই
করতে পারল না। শিকারীর হাতে ধরা পড়ে গেল।
জেলের হাতে আটকা পড়ার শেষ
মুহূর্তে মাছটি মনে মনে বলছিল,
এবার যদি কোনোভাবে এই বিপদ
থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি,
তাহলে আর অলসতা করবো না। সোজা চলে যাবো মহাসমুদ্রে।
সেখানে নিরাপদে জীবন যাপন করব।
তখন আর কোনো জেলে কিংবা মাছ
শিকারীর হাতে পড়তে হবে না। কিন্তু
সেই সুযোগটা তো আর পেল না সে।
সময়মতো সতর্ক না হবার খেসারত দিতেই হলো তাকে। ততোক্ষণে মাছ
শিকারীরা তাকে কাবাব
বানিয়ে মজা করে খেতে শুরু
করে দিল।
” আসলে মানুষের জীবনটাও এরকমই।
যে কোনো সময় আজ্রাইল ফেরেশতা চলে আসতে পারে শিকারীর
মতো। কখন যে আসবে কেউ
তো জানে না। তাই সবসময়ের
জন্যে প্রস্তুত থাকা ভালো এবং সময়
থাকতেই পরম সত্ত্বা তথা আল্লাহর
পথে পাড়ি জমিয়ে নিরাপদ জীবনযাপনের সুযোগ নেওয়া উচিত।”
বাস করত। মাছগুলো দেখতে যেমন
সুন্দর ছিল তেমনি ছিল
ব্যতিক্রমধর্মী এবং আকর্ষণীয়।
যে কারো নজরে পড়লেই তাদের
ব্যাপারে কৌতূহল সৃষ্টি না হয়ে পারত না। একদিন এক মাছ শিকারী ওই
পুকুরের পাড় দিয়ে যাচ্ছিল। মাছ
শিকারীকে জেলেও বলা হয়।
জেলে বলে কথা। তার
নজরে তো না পড়ে পারেই না।
জেলে এতো সুন্দর মাছ সহসা দেখেনি। কিছু সময়
দাঁড়িয়ে থেকে মাছগুলোকে ভালোভাবে
দেখল। কেমন যেন
মোটাসোটা মাছগুলো আর
দেখতে তো সুন্দরের কোনো কমতি নেই।
মাছ তিনটির ভাগ্য ভালো যে জেলে মাছ শিকারের
উদ্দেশ্যে বের হয় নি, তাই তার
কাছে জাল
বা টেটা কিংবা বর্শিটর্শি গোছের
কোনো সরঞ্জামই ছিল না। মাছ
শিকারী তাই বলল: আজ নয় পরে একদিন জালটাল নিয়ে এসে মাছগুলোকে ধরব।
এই বলে জেলে চলে গেল।
মাছেরা শিকারীর কথাগুলো শুনল।
তাই ভাবলো অলসতা করলে নিশ্চয়ই
শিকারীর জালে আটকা পড়তে হবে।
সুতরাং যতো দ্রুত সম্ভব শিকারীদের হাত থেকে রক্ষা পাবার উপায়
খুঁজে বের করতে হবে। ওই
তিনটি মাছের মধ্যে একটি মাছ ছিল
বেশ চালাক চতুর এবং দূরদর্শী।
আরেকটি ছিল মোটামুটি চালাক
এবং উপায় সন্ধানী। কীভাবে পার পাওয়া যায়, কীভাবে পালিয়ে জীবন
বাঁচানো যায় সে রকম চিন্তা করার
মতো। কিন্তু তৃতীয় মাছটি ছিল
বোকা ধরনের, মূর্খ
এবং অযথা সময়ক্ষেপণকারী।
তো চালাক মাছটি মনে মনে বলল: শিকারী তো যে-কোনো মুহূর্তেই
এসে যেতে পারে তাই এই বিপদ
থেকে যতো দ্রুত সম্ভব
প্রাণটা বাঁচানো দরকার
এবং ধীরে ধীরে সমুদ্রের বিশালতায়
চলে যাওয়া দরকার। সে সিদ্ধান্ত নিলো তার এই
চিন্তাটা বাকি দুটি মাছের
কাছে গোপন রাখবে। কেননা সে ভয়
পাচ্ছিলো ওরা দীর্ঘ এই সফরের
কষ্টের
কথা ভেবে তাকে বুঝিয়ে সুজিয়ে শেষ পর্যন্ত তাকে তার সিদ্ধান্ত
থেকে সরিয়ে ফেলবে।
বুদ্ধিমান
মাছটি দেরি না করে সমুদ্রের
উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে দিলো,
কাউকেও কিছু বলল না। অত্যন্ত বিপদ সঙ্কুল পথ পাড়ি দিল সে।
পানিভর্তি খাল কিংবা নালায়
না গিয়ে সরু পথে পাড়ি জমিয়ে শেষ
পর্যন্ত সে তার মঞ্জিল অর্থাৎ বিশাল
সমুদ্রে গিয়ে পৌঁছল। বিপদের
অন্ধকার থেকে আলোর সমুদ্রে গিয়ে সে ভীষণ আনন্দ বোধ
করল।
দ্বিতীয় মাছটি-যার কথা বলছিলাম
যে-স্বল্প বুদ্ধিসম্পন্ন তবে পথ
খুঁজে বের করার চিন্তা তার আছে,
সে তখনো পুকুরেই থেকে গেল এবং ততোক্ষণে মাছ
শিকারী এসে হাজির হলো।
মাছটি তখন ভাবল
গড়িমসি করাটা ঠিক হয় নি ওর
সাথে পাড়ি জমালেই ভালো হতো।
কিন্তু এখন কী করা, এখন তো শিকারী ওঁৎ পেতে বসে আছে ধরার
জন্যে। বেশি একটা ভাববারও সুযোগ
নেই। এসব
ভেবেচিন্তে সে একটা চালাকি করল।
ভাবলো এখন তো গবেষণা করার সময়
নেই আগে জান বাঁচাতে হবে। যা হবার তো হয়েই গেছে। সুযোগ
তো আর ফিরে আসবে না।
এভাবে ভেবেচিন্তে মাছটি হঠাৎ
পানিতে চীৎ হয়ে ভেসে উঠল।
যে কেউ তাকে দেখলেই
ভাবলে মরে গেছে। সত্যি সত্যিই মাছ শিকারীরা যখন তাকে দেখলো পেট
ফুলিয়ে পানির ওপর ভেসে আছে,
ভাবলো এটা মরা মাছ। তবু একজন
মাছটিকে উপরে তুলল।
নড়াচড়া না দেখে মরা ভেবে তাকে
পুকুরের পাড়ে ফেলে রেখে চলে গেল। মাছ শিকারীরা চলে যাবার পর
সে ধীরে ধীরে আবার
পুকুরে লাফিয়ে পড়ে জীবনটা রক্ষা করল।
এবার তৃতীয় মাছের পালা। এই
মাছটি ছিল একেবারেই অলস
এবং বোকা। সুদূর প্রসারী চিন্তা সে করতে পারত না।
যৎকালে তৎবিবেচনা-এ ধরনের
চিন্তা করতো সে। কিন্তু যখন
দেখলো মাছ শিকারীরা এসে গেছে।
তখন সে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লো-
কীভাবে মুক্তির উপায় খুঁজে বের করা যায়।
ভয়ে আতঙ্কে সে কী করবে না করবে উপায়
খুঁজে না পেয়ে এলোমেলো এদিক ওদিক
দৌড়তে শুরু করে দিলো। কিন্তু
জেলেরা তো পানিতে তাদের জাল
পেতে রেখেছিলো সে কারণে বেশি দৌড়তে পারলো না সে। আটকে গেল
জালে। জালের এ ঘর থেকে ওঘরে,
এফোঁড় থেকে ও
ফোঁড়ে দৌড়াতে লাগলো মুক্তির আশায়।
কোনো কাজ হলো না।
উল্টো বরং বেশি দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে আরো বেশি ক্লান্ত
এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল।
জালের ঘরে ঘরে আটকে আহতও
হয়েছে বেশ। অবশেষে লেজসহ একবার
জালে আটকা পড়ে আর নড়াচড়াই
করতে পারল না। শিকারীর হাতে ধরা পড়ে গেল।
জেলের হাতে আটকা পড়ার শেষ
মুহূর্তে মাছটি মনে মনে বলছিল,
এবার যদি কোনোভাবে এই বিপদ
থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি,
তাহলে আর অলসতা করবো না। সোজা চলে যাবো মহাসমুদ্রে।
সেখানে নিরাপদে জীবন যাপন করব।
তখন আর কোনো জেলে কিংবা মাছ
শিকারীর হাতে পড়তে হবে না। কিন্তু
সেই সুযোগটা তো আর পেল না সে।
সময়মতো সতর্ক না হবার খেসারত দিতেই হলো তাকে। ততোক্ষণে মাছ
শিকারীরা তাকে কাবাব
বানিয়ে মজা করে খেতে শুরু
করে দিল।
” আসলে মানুষের জীবনটাও এরকমই।
যে কোনো সময় আজ্রাইল ফেরেশতা চলে আসতে পারে শিকারীর
মতো। কখন যে আসবে কেউ
তো জানে না। তাই সবসময়ের
জন্যে প্রস্তুত থাকা ভালো এবং সময়
থাকতেই পরম সত্ত্বা তথা আল্লাহর
পথে পাড়ি জমিয়ে নিরাপদ জীবনযাপনের সুযোগ নেওয়া উচিত।”
Hasan