03-19-2017, 11:26 AM
মেয়েদের কৌমার্য হরণ ছিল এই রাজার নেশা!
নাম তার রিপুদমন হলে কী হবে! এই মহরাজা তার প্রথম জীবনে কোনওদিন রিপুকে বশে আনতে পারেননি। বা চেষ্টা করেননি। বিশেষ করে‚ ষড় রিপুর প্রথমটির প্রকোপে বড়ই কাতর ছিলেন তিনি।
ব্রিটিশ শাসনে এক রাজন্য প্রদেশ ছিল পঞ্জাবের নভ। সেখানে রাজবংশে জন্ম রিপুদমনের‚ ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের ৪ মার্চ। বাবা মহারাজা হীরা সিং। মা যশমের কাউর। রিপুদমন ছিলেন বাবার একমাত্র উত্তরাধিকারী। সিংহাসনে আরোহণ করেন ১৯১১ সালে।
তার দশ বছর আগেই সম্পন্ন হয়েছে রিপুদমনের প্রথম বিয়ে। প্রথমা স্ত্রী ছিলেন পঞ্জাবের এক অভিজাত বংশের কন্যা জগদীশ কৌর। রাজা হওয়ার পরে রিপুদমনের জীবনে আসেন দ্বিতীয় স্ত্রী‚ সরোজিনী দেবী।
দুজনের বিয়ে হয় ১৯১৮ সালে। এরপর ১৯২৩ সালে তৃতীয় বিয়ে। এবার আর অভিজাত কোনও কন্যা নয়। সাধারণ পরিবারের মেয়ে গুরুশরণ কৌর। গুরুশরণের বয়স তখন মাত্র ১৯ বছর। আর রাজা রিপুদমন ৪০ বছর বয়সী।
এ তো গেল রাজার তিন মহিষী। এর সঙ্গে রিপুদমনের অন্তরমহলে ছিল অগণিত নারী। তিনি পছন্দ করতেন কুমারী নারীসঙ্গ। চোখে পড়ে পছন্দ হলেই শিকারকে হাজির করা হতো রাজার কাছে। ফূর্তি হয়ে গেলে ছুড়ে ফেলে দিতেন ছিবড়ে করে।
একবার যুবরাজ রিপুদমনের নজর পড়ল রূপসী বিদুষী প্রীতম কৌরের উপর। রাজসভার এক অফিসারের কন্যা প্রীতম। প্রাসাদ থেকে বিয়ের সম্বন্ধের প্রস্তাব পাঠানো হল। কিন্তু প্রীতম বেঁকে বসলেন। তিনি কিছুতেই কামুক যুবরাজকে বিয়ে করবেন না। মেয়ের সিদ্ধান্তে সম্মত হলেন প্রীতমের বাবা মাও। মেয়েকে নিয়ে পালাতে গেলেন দুজনে।
কিন্তু তিনজনে ধরা পড়ে গেলেন। পালাতে পারলেন না। বন্দি করে রাজ পেয়াদারা তাঁদের ঢুকিয়ে দিল কারাগারে।
রিপুদমন করলেন কী‚ এক অপরাধীর ছদ্মবেশে থাকতে লাগলেন কারাগারে‚ প্রীতমের পাশের ঘরে। যুবরাজের নির্দেশে প্রীতমে ঘরে কয়েকটা সাপ ছেড়ে দেওয়া হল। ভয়ে চিৎকার করে উঠলেন প্রীতম।
এরপর সিনেমায় যেমন হয়। সাহায্য করতে গেলেন ছদ্মদেশী রিপুদমন। সাপগুলোকে মেরে ফেললেন। সাধিত হল তাঁর আসল উদ্দেশ্যও। ভয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন প্রীতম। সেই ঘনিষ্ঠতার সুযোগে প্রীতমকে ব্ল্যাকমেল করা হতে লাগল। চরিত্রহানির ভয়ে প্রীতম বাধ্য হয়ে রাজি হলেন রিপুদমনকে বিয়ে করতে।
কিন্তু পাশার ছক তো উল্টে গেছে। রিপুদমন তাঁকে বিয়ে তো করলেনই না। বরং সম্ভোগের পরে টোকা মেরে ফেলে দিলেন। লজ্জার অন্ধকারে হারিয়ে গেলেন প্রীতম কৌর‚ তাঁর পরিবার।
অথচ এই রিপুদমনের অমূল পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল সময়ের সঙ্গে। ১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড চোখ খুলে দিল তাঁর। ব্রিটিশের প্রতি সব আস্থা হারিয়ে ফেললেন। তিনি হয়ে গেলেন ব্রিটিশ বিরোধী। কিন্তু রিপুদমনের দূর সম্পর্কের পরিজন পাতিয়ালার মহারাজ ভূপিন্দর সিং রয়ে গেলেন ব্রিটিশ-ভক্ত হয়েই।
এর ফলে মহারাজা রিপুদমন হয়ে গেলেন ব্রিটিশদের বিরাগভাজন। ১৯২৩ সালে তাঁকে সিংহাসনচ্যুত করে ব্রিটিশ সরকার। নির্বাসনে পাঠানো হয় দেরাদুনে। সে যুগে তাঁর বার্ষিক ভাতা নির্ধারিত হয় ৩ লক্ষ টাকা।
নির্বাসিত হয়েও রিপুদমন ফিরে আসার চেষ্টা করে যেতে থাকেন। সেটা বন্ধ করার জন্য ব্রিটিশ সরকার রিপুদমনের ছেলে প্রতাপ সিং-কে বসায় সিংহাসনে। তিনি ছিলেন রিপুদমনের দ্বিতীয়া স্ত্রী সরোজিনী দেবীর ছেলে।
ওদিকে রিপুদমনের বার্ষিক ভাতা কমিয়ে করে দেওয়া হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। দেরাদুন থেকে স্থানান্তরিত হন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির কোদাইকানালে। তবে ক্রমশ রাজধর্মের প্রতি মোহচ্যুত হয়ে পড়েন রিপুদমন।
১৯২৭ সালে তিনি গ্রহণ করেন খালসা ব্রত। অতীতের নৃপতি হয়ে যান বিপ্লবী। নতুন নাম হয় গুরুচরণ সিং। ১৯৪২ সালে কোদাইকানালে আমৃত্যু এটাই ছিল তাঁর পরিচয়।
- ইন্টারনেট
নাম তার রিপুদমন হলে কী হবে! এই মহরাজা তার প্রথম জীবনে কোনওদিন রিপুকে বশে আনতে পারেননি। বা চেষ্টা করেননি। বিশেষ করে‚ ষড় রিপুর প্রথমটির প্রকোপে বড়ই কাতর ছিলেন তিনি।
ব্রিটিশ শাসনে এক রাজন্য প্রদেশ ছিল পঞ্জাবের নভ। সেখানে রাজবংশে জন্ম রিপুদমনের‚ ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের ৪ মার্চ। বাবা মহারাজা হীরা সিং। মা যশমের কাউর। রিপুদমন ছিলেন বাবার একমাত্র উত্তরাধিকারী। সিংহাসনে আরোহণ করেন ১৯১১ সালে।
তার দশ বছর আগেই সম্পন্ন হয়েছে রিপুদমনের প্রথম বিয়ে। প্রথমা স্ত্রী ছিলেন পঞ্জাবের এক অভিজাত বংশের কন্যা জগদীশ কৌর। রাজা হওয়ার পরে রিপুদমনের জীবনে আসেন দ্বিতীয় স্ত্রী‚ সরোজিনী দেবী।
দুজনের বিয়ে হয় ১৯১৮ সালে। এরপর ১৯২৩ সালে তৃতীয় বিয়ে। এবার আর অভিজাত কোনও কন্যা নয়। সাধারণ পরিবারের মেয়ে গুরুশরণ কৌর। গুরুশরণের বয়স তখন মাত্র ১৯ বছর। আর রাজা রিপুদমন ৪০ বছর বয়সী।
এ তো গেল রাজার তিন মহিষী। এর সঙ্গে রিপুদমনের অন্তরমহলে ছিল অগণিত নারী। তিনি পছন্দ করতেন কুমারী নারীসঙ্গ। চোখে পড়ে পছন্দ হলেই শিকারকে হাজির করা হতো রাজার কাছে। ফূর্তি হয়ে গেলে ছুড়ে ফেলে দিতেন ছিবড়ে করে।
একবার যুবরাজ রিপুদমনের নজর পড়ল রূপসী বিদুষী প্রীতম কৌরের উপর। রাজসভার এক অফিসারের কন্যা প্রীতম। প্রাসাদ থেকে বিয়ের সম্বন্ধের প্রস্তাব পাঠানো হল। কিন্তু প্রীতম বেঁকে বসলেন। তিনি কিছুতেই কামুক যুবরাজকে বিয়ে করবেন না। মেয়ের সিদ্ধান্তে সম্মত হলেন প্রীতমের বাবা মাও। মেয়েকে নিয়ে পালাতে গেলেন দুজনে।
কিন্তু তিনজনে ধরা পড়ে গেলেন। পালাতে পারলেন না। বন্দি করে রাজ পেয়াদারা তাঁদের ঢুকিয়ে দিল কারাগারে।
রিপুদমন করলেন কী‚ এক অপরাধীর ছদ্মবেশে থাকতে লাগলেন কারাগারে‚ প্রীতমের পাশের ঘরে। যুবরাজের নির্দেশে প্রীতমে ঘরে কয়েকটা সাপ ছেড়ে দেওয়া হল। ভয়ে চিৎকার করে উঠলেন প্রীতম।
এরপর সিনেমায় যেমন হয়। সাহায্য করতে গেলেন ছদ্মদেশী রিপুদমন। সাপগুলোকে মেরে ফেললেন। সাধিত হল তাঁর আসল উদ্দেশ্যও। ভয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন প্রীতম। সেই ঘনিষ্ঠতার সুযোগে প্রীতমকে ব্ল্যাকমেল করা হতে লাগল। চরিত্রহানির ভয়ে প্রীতম বাধ্য হয়ে রাজি হলেন রিপুদমনকে বিয়ে করতে।
কিন্তু পাশার ছক তো উল্টে গেছে। রিপুদমন তাঁকে বিয়ে তো করলেনই না। বরং সম্ভোগের পরে টোকা মেরে ফেলে দিলেন। লজ্জার অন্ধকারে হারিয়ে গেলেন প্রীতম কৌর‚ তাঁর পরিবার।
অথচ এই রিপুদমনের অমূল পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল সময়ের সঙ্গে। ১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড চোখ খুলে দিল তাঁর। ব্রিটিশের প্রতি সব আস্থা হারিয়ে ফেললেন। তিনি হয়ে গেলেন ব্রিটিশ বিরোধী। কিন্তু রিপুদমনের দূর সম্পর্কের পরিজন পাতিয়ালার মহারাজ ভূপিন্দর সিং রয়ে গেলেন ব্রিটিশ-ভক্ত হয়েই।
এর ফলে মহারাজা রিপুদমন হয়ে গেলেন ব্রিটিশদের বিরাগভাজন। ১৯২৩ সালে তাঁকে সিংহাসনচ্যুত করে ব্রিটিশ সরকার। নির্বাসনে পাঠানো হয় দেরাদুনে। সে যুগে তাঁর বার্ষিক ভাতা নির্ধারিত হয় ৩ লক্ষ টাকা।
নির্বাসিত হয়েও রিপুদমন ফিরে আসার চেষ্টা করে যেতে থাকেন। সেটা বন্ধ করার জন্য ব্রিটিশ সরকার রিপুদমনের ছেলে প্রতাপ সিং-কে বসায় সিংহাসনে। তিনি ছিলেন রিপুদমনের দ্বিতীয়া স্ত্রী সরোজিনী দেবীর ছেলে।
ওদিকে রিপুদমনের বার্ষিক ভাতা কমিয়ে করে দেওয়া হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। দেরাদুন থেকে স্থানান্তরিত হন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির কোদাইকানালে। তবে ক্রমশ রাজধর্মের প্রতি মোহচ্যুত হয়ে পড়েন রিপুদমন।
১৯২৭ সালে তিনি গ্রহণ করেন খালসা ব্রত। অতীতের নৃপতি হয়ে যান বিপ্লবী। নতুন নাম হয় গুরুচরণ সিং। ১৯৪২ সালে কোদাইকানালে আমৃত্যু এটাই ছিল তাঁর পরিচয়।
- ইন্টারনেট
Hasan