Thread Rating:
  • 0 Vote(s) - 0 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5

রহস্যকুঠীর রানী ( পিশাচ কাহিনী) কাহিনী : মানবেন্দ্র পাল

Googleplus Pint
#1
রহস্যকুঠীর রানী ( পিশাচ কাহিনী)
কাহিনী : মানবেন্দ্র পাল
বড়দিনের ছুটিতে ভাইপোকে নিয়ে মধুপুরে বেড়াতে যাব ঠিক
করেছি। মধুপুরে কিছুদিন থেকে দেওঘর আর গিরিডি'ও নিয়ে
যাব, প্ল্যান করেছি। দেওঘরের ত্রিকূট পাহাড়, গিরিডির উশ্রী
প্রপাত - ডাকু আজ পর্যন্ত দেখেনি। এবার ওকে না দেখালেই
নয়। ডাকুর তো আনন্দে রাতে ঘুমই হয় না। খালি জিজ্ঞেস
করে, " কাকু, কবে মধুপুর যাব?"
দিন যেই স্থির হল, তারপর থেকে ডাকু ব্যস্ত হয়ে পড়ল, কি
কি জিনিস সঙ্গে নেবে, তার লিস্ট তৈরি করতে। হোক
দশদিনের জন্য, তবু তো বাইরে যাওয়া।
যাই হোক, শেষপর্যন্ত এক শীতের বিকেলে আমরা মধুপুর
স্টেশনে এসে নামলাম। কিন্তু সমস্যা দেখা দিল হোটেলে
জায়গা পাওয়া নিয়ে। কোনও হোটেলে রুম খালি নেই।
টাঙ্গাওয়ালা আমাদের একটা নামকরা হোটেলের সামনে নিয়ে
এসে ছেড়ে দিল; কিন্তু হায় মন্দভাগ্য! এই হোটেলেও জায়গা
নেই। ম্যানেজার আরও সাঙ্ঘাতিক কথা শোনালেন। তিনি
জানালেন, এইসময় শুধু হোটেল কেন, একটা খালি বাড়িও নাকি
পাবো না। এইসময়টায় নাকি প্রচুর লোক চেঞ্জে আসে, তাই
ভীড়ও বেশি। আমি একটা ঘরের জন্য যখন প্রায় নাছোড়বান্দা
তখন উনি চোখ ছোট ছোট করে বললেন, " একটা বাড়ির
সন্ধান দিতে পারি; কিন্তু টিকতে পারবেন কি?"
বললাম," কেন? ভূতের বাড়ি নাকি?"
ম্যানেজার মাথা দুলিয়ে বললেন, " লোকে তো তাই বলে। এক
রাত্তিরের বেশি কেউ থাকতে পারে না, শুনেছি। "
ডাকু ঐসময় আমার হাতে চাপ দিয়ে ফিসফিস করে বললে, "
ঐবাড়িতেই চলো কাকু, ভূত দেখা যাবে। "
আমি তখন ভালমানুষের মতো মুখ করে ম্যানেজারকে বললাম,
" কি আর করা যাবে? ঠিকানাটা দিন তাহলে। ভূতের বাড়িতেই
ক'দিন কাটাই।"
ম্যানেজার তখন কোথা দিয়ে কোথায় যেতে হবে বুঝিয়ে দিল।
শহরের বাইরে নদীর ধারে একটা কবরখানা। তারই পাশে বিরাট
গম্বুজওয়ালা একটা পুরনো দোতলা বাড়ি। সেই বাড়িতে
একজন মহিলা থাকেন। তিনিই বাড়ির মালিক। তিনি যদি রাজি
থাকেন, তাহলে হয়তো সেই বাড়িতে একখানি ঘর পেতে পারি।
আমি হতাশার সুরে বললাম " যা শুনছি, তাতে মনে হয় উনি
ভাড়া দেবেন।"
ম্যানেজার বললেন, " দেখুন, সে আপনার কপাল। তবে উনি
অনেককেই ভাড়া দিয়েছেন আর কেউই এক রাত্তিরের বেশী
টিকতে পারেনি। তবে হ্যাঁ, পুরো ভাড়াটা অবশ্য উনি আগাম
নিয়ে থাকেন।"
শীতের বেলা তখন শেষ হয়ে এসেছে। টাঙাটা আমাদের এক
জায়গায় নামিয়ে দিল। বলল," কবরখানার রাস্তার দিকে আর
নাকি গাড়ি চলবে না। রাস্তা খারাপ।"
অগত্যা দুজনে হাঁটতে হাঁটতে নদীর ধারে গিয়ে পৌঁছলাম। নদীর
পশ্চিম দিকে একরাশ বুনো ফুলের আড়ালে একটা পুরনো
কবরখানা দেখতে পেলাম। এবার বাড়িটা খুঁজতে হবে। ভাগ্য
ভাল, বাড়িটাও খুঁজে পেতে অসুবিধা হল না। অনেকগুলো সার
সার ইউক্যালিপটাস গাছের আড়ালে বাড়িটা যেন লুকিয়ে ছিল।
আমরা যখন ফটক ঠেলে বাড়ির ভেতর ঢুকলাম তখন চারপাশে
রীতিমতো অন্ধকার। শহরে ইলেক্ট্রিসিটি থাকলেও এই
পল্লীতে বিদ্যুৎ আসেনি। এখানে যে অল্প কয়েক ঘর বসতি
আছে তাদের প্রায় সবাই আদিবাসী খ্রীষ্টান; কিন্তু দেখলেই
বোঝা যায় ওদের জীবনে জাঁকজমক বলে কিছু নেই। সারাদিন
খাটাখাটুনি করে এসে সন্ধ্যে হবার আগে চুপচাপ নিজের ঘরে
ঢুকে খিল বন্ধ করে দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
কারোর সঙ্গে কারোর কোনও যোগাযোগ নেই। ইলেকট্রিক
আলোর জন্য মাথা কোটাকুটিও করে না।
যাই হোক, আমরা সেই বাড়ির বাইরের ঘরে এসে ঢুকলাম
প্রথমে। কুপকুপে অন্ধকার ঘর।
আমি ডাকলাম, " কেউ আছেন?"
সাড়া নেই।
আবার ডাকলাম, " কেউ কি আছেন?"
এবারও সাড়া নেই।
এবার ব্যাগ থেকে টর্চ বের করে জ্বালালাম। সেই আলোয়
দেখলাম, সামনে আরেকটা দরজা। সেই দরজা দিয়ে ভেতরে
ঢুকলাম। সামনে একটা লম্বা দালান। ওপাশে মনে হল ওপরে
ওঠার সিঁড়ি। আমরা সেই দালানে পা রাখতেই ওপাশের একটা
মস্ত জালে ঢাকা খাঁচা থেকে অনেকগুলো মুরগি যেন ভয়ে পেয়ে
একসঙ্গে কোঁকর-কোঁ-কোঁকর-কোঁ করে ডেকে উঠল।
ডাকু ফিসফিস করে বলল, " এত মুরগি! বাড়িওয়ালী কি মুরগির
ব্যবসা করে না নিজে খায়?"
আমার মাথায় তখন অন্য চিন্তা। সারাদিন ট্রেনজার্নি করে
আসা, এখন যদি একটু থাকার ব্যবস্থা না হয় তাহলে যাব
কোথায়?
তাই এবার একটু জোরে ডাকলাম, " কেউ আছেন?"
হঠাৎ খুব কাছ থেকে একটা অদ্ভুত কন্ঠ শোনা গেল, " বাইরের
ঘরে বসুন।"
গলার স্বরটা না পুরুষের, না মহিলার। কেমন একটা বিশ্রী
খ্যানখেনে গলা। এপাশ ওপাশ তাকিয়েও কাউকে দেখতে পেলাম
না।
যাই হোক, আমরা আবার বাইরের ঘরে এসে দাঁড়ালাম।
দাঁড়িয়েই রইলাম, কেননা বসবার কোন ব্যবস্থাই ছিল না।
টর্চের আলোয় দেখলাম, চারদিকে শুধু ভাঙা আলমারি, ভাঙা
দেরাজ আর কতগুলো ভাঙা চেয়ার মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।
মেঝেতে পুরু ধূলোর আস্তরণ। এই ঘরে যে কেউ কোনওদিন
আসে না, সেটা বেশ বুঝতে পারলাম।
একসময় ভেতরের দরজা দিয়ে একচিলতে ঘোলাটে আলো এসে
পড়ল। তারপরই দেখলাম, কালো গাউন পরা একজন মহিলা,
হাতে পেটমোটা একটা সেকেলে সেজবাতি নিয়ে এসে এ'ঘরে
ঢুকলেন। একেবারে আপাদমস্তক কালো গাউনে ঢাকা। গলা
থেকে একটা লম্বা ক্রশ গাউনের ওপর এসে ঝুলছে। মুখটা
অস্বাভাবিক সাদা। গালের হনুদুটো একটু উঁচু আর সেজন্য
গালের বাকি অংশ একটু বসা। মহিলা বেশ লম্বা কিন্তু কত
বয়স তা ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না।
Reply


Possibly Related Threads…
Thread Author Replies Views Last Post
  [গল্প] জানাযার লাশের ঘটনা Hasan 0 1,876 01-02-2018, 01:29 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] ব্যাপারটা যতটা না ভৌতিক তারচেয়ে বেশি রহস্যময় Hasan 0 2,038 01-02-2018, 01:29 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] ছদ্দবেশ (ভুতের গল্প) Hasan 0 2,042 01-02-2018, 01:28 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] ভৌতিক কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য দিলাম Hasan 0 2,213 01-02-2018, 01:26 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] রক্তখেকো (ভুতের গল্প) Hasan 0 1,893 01-02-2018, 01:23 PM
Last Post: Hasan
  ভুতের গল্পঃ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার Hasan 0 1,770 01-02-2018, 01:21 PM
Last Post: Hasan
  সত্যি কাহিনী অবলম্বনে- হৃদয় নাড়া দেয়ার মত গল্প। পুরোটা পড়ুন- ... Maghanath Das 0 2,324 02-20-2017, 04:13 PM
Last Post: Maghanath Das
  একটি সত্য ঘটনা। ভুত/প্রেত/জীন বিশ্বাস না করলে পড়বেন না কেউ। Maghanath Das 0 2,514 02-20-2017, 04:12 PM
Last Post: Maghanath Das
  অস্বাভাবিক তথ্য Hasan 0 1,936 01-17-2017, 08:04 PM
Last Post: Hasan
  আমার বাবার অসুস্থতা Hasan 0 2,016 01-17-2017, 08:03 PM
Last Post: Hasan

Forum Jump:


Users browsing this thread: 1 Guest(s)