01-17-2017, 07:54 PM
হ্যালোইনের জঙ্গল পার্টিতে
অংশগ্রহন করতে এসেছে ওরা তিন
বোন। এঞ্জেলা, নিনা আর মিশেল। নিনা
আর মিশেল বয়সে বড়, এঞ্জেলা
ওদের অনেক ছোট। ১৬ বছরে
পড়ল এবার। বাইরের জগৎ সম্পর্কে
একেবারেই অসচেতন। দুই বোনের
সাথে এবার প্রথমবারের মতো যোগ
দিচ্ছে হ্যালোইন জঙ্গল পার্টিতে।
পার্টিতে যারা অংশগ্রহন করবে সবাই
এসে গেছে। কিছু বয়স্ক দম্পতি,
কয়েকজন ইয়াং ছেলেমেয়ে,
বাচ্চাকাচ্চা আর এঞ্জেলারা তিন বোন-
সব মিলে মোটের উপর ৩৫-৪০ জন
হবে। ঠিক রাত ১০-৩০ মিনিটে বাস
ছেড়ে দিবে।
এঞ্জেলারা তিন আসনের একটা বেঞ্চ
দখল করে বসে গেল। বাসের
মধ্যে বাচ্চাদের হৈচৈ আর অন্যান্নদের
উল্লাস চিৎকারে কান ঝালাপালা হয়ে
আসছে। অনেকেই ভ্যাম্পয়ার আর
ওয়্যারউল্ফের মুখোস পড়ে একে
অন্যকে হাস্যকর ভাবে ভয়
দেখানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এঞ্জেলা বসেছে সীটের করিডর
সাইডে। লাল একটা হুডওয়ালা গাউন তার
পরনে। চুপচাপ বসে আছে ও। ব্যাপারটা
চোখ এড়ালোনা নিনার। "কি হয়েছে
তোর," নিনা জিজ্ঞেস করলো।
এঞ্জেলা ইশারায় পিছনে বসা
ভ্যাম্পায়ারের মুখোশ পড়া এক
লোককে দেখালো, যে এক
দৃষ্টিতে এঞ্জেলার দিকে তাকিয়ে
আছে। তাকানোর ভঙ্গিটা কেমন যেন
রহস্যময়, কিছুটা ভয়ঙ্করও। নিনা
এঞ্জেলাকে লোকটার দিকে
তাকাতে মানা করলো। ছোট বোনটা
সুন্দরী, বেশ সুন্দরী। লোকজন
একটু লোলুপ দৃষ্টিতে তাকাতেই
পারে।
এতে ওদের যায় আসে না। আজ
হ্যালোইনের রাত। ওরা তিনবোন আজ
খুব এনজয় করবে, শুধু ওরা তিনজন। রাত
১২-০৪ মিনিটে বাস এসে পৌছালো
শহরের বাইরে অবস্থিত "উল্ফ
ফরেস্ট" নামক জঙ্গলের সামনে।
নেকড়ে আর ভালুকের অভয়ারন্য এই
বন। তবে ওরা বেশ ভিতরের দিকে
থাকে। জঙ্গলের এই দিকটাতে আসে
না বললেই চলে। হৈচৈ করতে করতে
সবাই বাস থেকে নেমে পড়লো।
আগে থেকেই ৪ জন লোক
পাঠানো হয়েছিল। তারা ক্যাম্পের
ব্যাবস্থা করেই রেখেছে। বয়স্ক
লোকেরা ক্যাম্প ফায়ারের ধার
ঘেষে বসলো, বাচ্চারা এদিক সেদিক
দৌড়াদৌড়ি করতে লাগলো। যুবক যুবতীরা
যুগল ভাবে ঘুরতে লাগল এদিক সেদিক।
কিন্তু ভাম্পায়ারের মুখোশ পরা রহস্যময়
লোকটাকে কোথাও দেখা গেলনা।
নিনা ওর ছোট দুই বোনকে নিয়ে
বনের ভেতর দিকে ঘুরতে বের
হলো। বিশাল এক পূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে
আকাশে।
এত সুন্দর দৃশ্ব্য আগে কখনও
দেখেনি এঞ্জেলা । আকাশ আর
পূর্ণিমার আলোয় স্নান করা জঙ্গল
দেখতে দেখতে দুই বোনের
পিছন পিছন যেতে লাগলো ও। সৌন্দর্য
দেখতে এতই ব্যাস্ত ছিল যে কখন
বোনদের ছেড়ে পথ হারিয়েছে
বুঝতে পারেনি এঞ্জেলা। যখন
বুঝতে পারলো তখন অনেক দেরী
হয়ে গেছে। চারদিকে তাকিয়ে
চমকে উঠল এঞ্জেলা। আশেপাশে
কেউ নেই। একদম নিশ্চুপ বনভূমি।
বোনদের কাছে শোনা গল্পগুলো
মনে পড়ে গেল এঞ্জেলার।
হ্যালোইনের এই রাতে জেগে
ওঠে সব দানোবেরা। ভ্যাম্পায়ার আর
ওয়্যারউল্ফরা মেতে ওঠে
রক্তখেলায়। শরীরটা একটু ছমছম
করে উঠল এঞ্জেলার। পিছনে একটা
শব্দ হতেই ঘুরে তাকালো ও।
প্রথমে কিছুই দেখতে পেল না।
ভালো করে খেয়াল করতেই
দেখলো মুখোশ পরা সেই লোকটা
একদৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
মুখোশের ভিতর থেকে লোলুপ
চোখদুটো এঞ্জেলার দিকে
তাকিয়ে নিষ্ঠুর ভঙ্গিতে হাসছে যেন।
প্রচন্ড ভয় পেল এঞ্জেলা। বুকের
ভিতর হৃৎপিন্ডটা প্রচন্ড ভাবে লাফাচ্ছে।
লোকটা ধীরে ধীরে ওর দিকে
এগিয়ে আসছে। এঞ্জেলা পিছাতে
শুরু করলো। হঠাৎ ঘুরে দৌড়াতে শুরু
কররো ও। মুখ থেকে মুখোশটা
খুলে ফেলল লোকটা তারপর পিছু নিল
এঞ্জেলার। হাটতে হাটতে অনেক
দূর এসে খেয়াল হলো এঞ্জেলা
নেই ওদের সাথে। চমকে উঠলো
ওরা দুইবোন। চারদিকে খোঁজ করতে
লাগলো এঞ্জেলার। কিন্তু কোথাও
নেই। ভয় পেয়ে গেল মিশেল।
"কোথায় যেতে পারে এঞ্জেলা?"
ভীত কন্ঠে প্রশ্ন করলো ও।
"জানিনা, বনের মধ্যে পথ হারানো
অস্বাভাবিক কিছুনা" অনিশ্চিত কন্ঠ নিনার,
"চলো আরো ভালো করে খুজে
দেখি।" খুজতে খুজতে বনের
আরো গভীরে চলে আসলো ওরা।
হঠাৎ একটা কিছুতে পা বেধে পড়ে
গেল নিনা। উঠে দাড়িয়েই তাকালো
জিনিষটার দিকে। মানুষের আকৃতির কিছু
একটা পড়ে আছে। এগিয়ে গেল ওটার
দিকে। ভালো করে তাকাতেই চিনতে
পারলো জিনিষটা। এঞ্জেলার গাউন। হুড
দিয়ে মুখটা ঢাকা। ততক্ষনে মিশেলও
চলে এসেছে। ফুঁপিয়ে কেদে
উঠল সে। পড়ে থাকা বডিটার মুখ
থেকে খুব ধীরে হুডটা সরালো নিনা।
তাকালো বডিটার মুখের দিকে। না,
এঞ্জেলা নয়। একজন যুবক ভীত
দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এঞ্জেলার
গাউনের ভিতর থেকে। "আমাকে
বাঁচাও," ফিসফিস করে বলে উঠলো
যুবকটা। "কে তুমি, কি হয়েছে
তোমার?" নিনা জিজ্ঞেস করলো। "ও,
ওই মেয়েটা..." বলে পিছন দিকে
আঙ্গুল তুললো লোকটা। ঘুরে
তাকালো নিনা আর মিশেল। পেছনে
দাড়িয়ে আছে এঞ্জেলা।
চোখে বিস্মিত দৃষ্টি। একটা হালকা নীল
রঙের টি-শার্ট আর সাদা স্কার্ট ওর
পরনে। গাউনের ভিতরে এগুলো
পড়ে ছিল সে, যেটা এখন লোকটার
গায়ে জড়ানো। এঞ্জেলার দিকে
এগিয়ে গেল নিনা। "তোমাকে
বলেছিলাম না আমাদের সাথে সাথেই
থাকতে?" "আমি পথ হারিয়ে
ফেলেছিলাম।" ভয় মিশ্রিত কন্ঠে বলল
এঞ্জেলা, "আর ঐ লোকটা.........."
"ভালোই তো," লোকটার দিকে
তাকিয়ে হাসলো নিনা, "দারুন এক সুদর্শন
যুবককে পেয়েছ তুমি। দারুন ভাগ্য
তোমার।" "কিন্তু আমি যে কিছুই পারিনা,
কোনই অভিজ্ঞতা নেই আমার।"
এঞ্জেলা বলল। "তাতে কি? আমরা সবাই-
ই নতুন ছিলাম কোন না কোন সময়। ওর
কাছে যাও, এঞ্জেলা। তোমার উষ্ণ
ছোঁয়া দাও ওকে।" একটু ভাবলো
এঞ্জেলা। তারপর ধীরে ধীরে
এগিয়ে গেল লোকটার দিকে। যুবকটা
তাকিয়ে থাকলো রূপসীনির দিকে।
এঞ্জেলা সরাসরি লোকটার শরীরের
উপর উঠে বসলো। সামান্য ভয় কাজ
করছে ওর মধ্যে। কিন্তু ভয়টা কাটিয়ে
উঠল ও। একটানে নিজের টি শার্ট টা
খুলে ফেলল। যুবকের মধ্যে আবার
সেই লোলুপতা ফিরে আসলো।
লোভনীয় চোখ নিয়ে তাকালো
এঞ্জেলার অন্তর্বাস পড়া শরীরের
দিকে। কিন্তু একি! হঠাৎ করেই যেন
এঞ্জেলার শরীরে গজাতে
লাগলো ঘন কালো লোম। ঘনঘন শ্বাস
নিতে থাকলো সে। চোখের নীল
মনি হঠাৎ পরিনত হলো হলুদ বর্ণে। ফাঁক
হয়ে গেল এঞ্জেলার মুখটা,
চোয়ালের কোনার দুই দাঁত প্রথমে
সরু আকার ধারন করলো তারপর
অনেকটা লম্বা হয়ে গেল, অনেকটা
শ্বাপদ প্রাণীর দাঁতের মতো। চাঁদের
আলোয় ঝিকিয়ে উঠলো দাঁতদুটো।
মুহুর্তে বদলে গেল তার সুন্দর মুখখানা।
নিষ্ঠুর ভয়ঙ্কর এক পিশাচীনিতে পরিনত
হলো সে। রাতের নিঃশব্দতা ভেদ
করে কুৎসিত ভয়ঙ্কর কন্ঠে চিৎকার
করে উঠল পিশাচীনি। তারপর মুখটা
নামিয়ে আনলো যুবকের ঘাড়ের
কাছে। সুচাঁলো দাঁতদুটো ফুটিয়ে দিল
যুবকের দপদপ করতে থাকা ঘাড়ের
রগে। তারপর অভুক্তের মতো চুষে
খেতে লাগলো যুবকের গরম তরল
রক্ত যেন অনন্তকাল ধরে ভীষন,
ভীষন পিপাসার্ত সে। ভোর হয়ে
আসছে। পার্টির লোকজন ফেরার
জন্য বাসে উঠে পড়েছে।
এঞ্জেলারা তিনবোন নিজেদের
আগের সেই সীটেই বসে
নিজেদের মধ্যে আড্ডায় জমে
উঠেছে। বাচ্চা আর যুবক- যুবতীদের
কোলাহলে মুখর হয়ে আছে বাসের
ভিতরটা। কিন্তু কেউ খেয়াল করলো না,
আসার সময় বাসটার সবগুলো আসন
একেবারে পরিপূর্ণ থাকলেও, যাওয়ার
সময় একটা আসন যাচ্ছে একদম ফাঁকা।
বাসটা রওনা হতেই জঙ্গলের ভিতর
থেকে করুন কন্ঠে বিলাপ করে উঠল
একটা নেকড়ে, যেন বিদায় জানালো
হ্যালোইনের ভয়ঙ্কর রাতটাকে।
অংশগ্রহন করতে এসেছে ওরা তিন
বোন। এঞ্জেলা, নিনা আর মিশেল। নিনা
আর মিশেল বয়সে বড়, এঞ্জেলা
ওদের অনেক ছোট। ১৬ বছরে
পড়ল এবার। বাইরের জগৎ সম্পর্কে
একেবারেই অসচেতন। দুই বোনের
সাথে এবার প্রথমবারের মতো যোগ
দিচ্ছে হ্যালোইন জঙ্গল পার্টিতে।
পার্টিতে যারা অংশগ্রহন করবে সবাই
এসে গেছে। কিছু বয়স্ক দম্পতি,
কয়েকজন ইয়াং ছেলেমেয়ে,
বাচ্চাকাচ্চা আর এঞ্জেলারা তিন বোন-
সব মিলে মোটের উপর ৩৫-৪০ জন
হবে। ঠিক রাত ১০-৩০ মিনিটে বাস
ছেড়ে দিবে।
এঞ্জেলারা তিন আসনের একটা বেঞ্চ
দখল করে বসে গেল। বাসের
মধ্যে বাচ্চাদের হৈচৈ আর অন্যান্নদের
উল্লাস চিৎকারে কান ঝালাপালা হয়ে
আসছে। অনেকেই ভ্যাম্পয়ার আর
ওয়্যারউল্ফের মুখোস পড়ে একে
অন্যকে হাস্যকর ভাবে ভয়
দেখানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এঞ্জেলা বসেছে সীটের করিডর
সাইডে। লাল একটা হুডওয়ালা গাউন তার
পরনে। চুপচাপ বসে আছে ও। ব্যাপারটা
চোখ এড়ালোনা নিনার। "কি হয়েছে
তোর," নিনা জিজ্ঞেস করলো।
এঞ্জেলা ইশারায় পিছনে বসা
ভ্যাম্পায়ারের মুখোশ পড়া এক
লোককে দেখালো, যে এক
দৃষ্টিতে এঞ্জেলার দিকে তাকিয়ে
আছে। তাকানোর ভঙ্গিটা কেমন যেন
রহস্যময়, কিছুটা ভয়ঙ্করও। নিনা
এঞ্জেলাকে লোকটার দিকে
তাকাতে মানা করলো। ছোট বোনটা
সুন্দরী, বেশ সুন্দরী। লোকজন
একটু লোলুপ দৃষ্টিতে তাকাতেই
পারে।
এতে ওদের যায় আসে না। আজ
হ্যালোইনের রাত। ওরা তিনবোন আজ
খুব এনজয় করবে, শুধু ওরা তিনজন। রাত
১২-০৪ মিনিটে বাস এসে পৌছালো
শহরের বাইরে অবস্থিত "উল্ফ
ফরেস্ট" নামক জঙ্গলের সামনে।
নেকড়ে আর ভালুকের অভয়ারন্য এই
বন। তবে ওরা বেশ ভিতরের দিকে
থাকে। জঙ্গলের এই দিকটাতে আসে
না বললেই চলে। হৈচৈ করতে করতে
সবাই বাস থেকে নেমে পড়লো।
আগে থেকেই ৪ জন লোক
পাঠানো হয়েছিল। তারা ক্যাম্পের
ব্যাবস্থা করেই রেখেছে। বয়স্ক
লোকেরা ক্যাম্প ফায়ারের ধার
ঘেষে বসলো, বাচ্চারা এদিক সেদিক
দৌড়াদৌড়ি করতে লাগলো। যুবক যুবতীরা
যুগল ভাবে ঘুরতে লাগল এদিক সেদিক।
কিন্তু ভাম্পায়ারের মুখোশ পরা রহস্যময়
লোকটাকে কোথাও দেখা গেলনা।
নিনা ওর ছোট দুই বোনকে নিয়ে
বনের ভেতর দিকে ঘুরতে বের
হলো। বিশাল এক পূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে
আকাশে।
এত সুন্দর দৃশ্ব্য আগে কখনও
দেখেনি এঞ্জেলা । আকাশ আর
পূর্ণিমার আলোয় স্নান করা জঙ্গল
দেখতে দেখতে দুই বোনের
পিছন পিছন যেতে লাগলো ও। সৌন্দর্য
দেখতে এতই ব্যাস্ত ছিল যে কখন
বোনদের ছেড়ে পথ হারিয়েছে
বুঝতে পারেনি এঞ্জেলা। যখন
বুঝতে পারলো তখন অনেক দেরী
হয়ে গেছে। চারদিকে তাকিয়ে
চমকে উঠল এঞ্জেলা। আশেপাশে
কেউ নেই। একদম নিশ্চুপ বনভূমি।
বোনদের কাছে শোনা গল্পগুলো
মনে পড়ে গেল এঞ্জেলার।
হ্যালোইনের এই রাতে জেগে
ওঠে সব দানোবেরা। ভ্যাম্পায়ার আর
ওয়্যারউল্ফরা মেতে ওঠে
রক্তখেলায়। শরীরটা একটু ছমছম
করে উঠল এঞ্জেলার। পিছনে একটা
শব্দ হতেই ঘুরে তাকালো ও।
প্রথমে কিছুই দেখতে পেল না।
ভালো করে খেয়াল করতেই
দেখলো মুখোশ পরা সেই লোকটা
একদৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
মুখোশের ভিতর থেকে লোলুপ
চোখদুটো এঞ্জেলার দিকে
তাকিয়ে নিষ্ঠুর ভঙ্গিতে হাসছে যেন।
প্রচন্ড ভয় পেল এঞ্জেলা। বুকের
ভিতর হৃৎপিন্ডটা প্রচন্ড ভাবে লাফাচ্ছে।
লোকটা ধীরে ধীরে ওর দিকে
এগিয়ে আসছে। এঞ্জেলা পিছাতে
শুরু করলো। হঠাৎ ঘুরে দৌড়াতে শুরু
কররো ও। মুখ থেকে মুখোশটা
খুলে ফেলল লোকটা তারপর পিছু নিল
এঞ্জেলার। হাটতে হাটতে অনেক
দূর এসে খেয়াল হলো এঞ্জেলা
নেই ওদের সাথে। চমকে উঠলো
ওরা দুইবোন। চারদিকে খোঁজ করতে
লাগলো এঞ্জেলার। কিন্তু কোথাও
নেই। ভয় পেয়ে গেল মিশেল।
"কোথায় যেতে পারে এঞ্জেলা?"
ভীত কন্ঠে প্রশ্ন করলো ও।
"জানিনা, বনের মধ্যে পথ হারানো
অস্বাভাবিক কিছুনা" অনিশ্চিত কন্ঠ নিনার,
"চলো আরো ভালো করে খুজে
দেখি।" খুজতে খুজতে বনের
আরো গভীরে চলে আসলো ওরা।
হঠাৎ একটা কিছুতে পা বেধে পড়ে
গেল নিনা। উঠে দাড়িয়েই তাকালো
জিনিষটার দিকে। মানুষের আকৃতির কিছু
একটা পড়ে আছে। এগিয়ে গেল ওটার
দিকে। ভালো করে তাকাতেই চিনতে
পারলো জিনিষটা। এঞ্জেলার গাউন। হুড
দিয়ে মুখটা ঢাকা। ততক্ষনে মিশেলও
চলে এসেছে। ফুঁপিয়ে কেদে
উঠল সে। পড়ে থাকা বডিটার মুখ
থেকে খুব ধীরে হুডটা সরালো নিনা।
তাকালো বডিটার মুখের দিকে। না,
এঞ্জেলা নয়। একজন যুবক ভীত
দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এঞ্জেলার
গাউনের ভিতর থেকে। "আমাকে
বাঁচাও," ফিসফিস করে বলে উঠলো
যুবকটা। "কে তুমি, কি হয়েছে
তোমার?" নিনা জিজ্ঞেস করলো। "ও,
ওই মেয়েটা..." বলে পিছন দিকে
আঙ্গুল তুললো লোকটা। ঘুরে
তাকালো নিনা আর মিশেল। পেছনে
দাড়িয়ে আছে এঞ্জেলা।
চোখে বিস্মিত দৃষ্টি। একটা হালকা নীল
রঙের টি-শার্ট আর সাদা স্কার্ট ওর
পরনে। গাউনের ভিতরে এগুলো
পড়ে ছিল সে, যেটা এখন লোকটার
গায়ে জড়ানো। এঞ্জেলার দিকে
এগিয়ে গেল নিনা। "তোমাকে
বলেছিলাম না আমাদের সাথে সাথেই
থাকতে?" "আমি পথ হারিয়ে
ফেলেছিলাম।" ভয় মিশ্রিত কন্ঠে বলল
এঞ্জেলা, "আর ঐ লোকটা.........."
"ভালোই তো," লোকটার দিকে
তাকিয়ে হাসলো নিনা, "দারুন এক সুদর্শন
যুবককে পেয়েছ তুমি। দারুন ভাগ্য
তোমার।" "কিন্তু আমি যে কিছুই পারিনা,
কোনই অভিজ্ঞতা নেই আমার।"
এঞ্জেলা বলল। "তাতে কি? আমরা সবাই-
ই নতুন ছিলাম কোন না কোন সময়। ওর
কাছে যাও, এঞ্জেলা। তোমার উষ্ণ
ছোঁয়া দাও ওকে।" একটু ভাবলো
এঞ্জেলা। তারপর ধীরে ধীরে
এগিয়ে গেল লোকটার দিকে। যুবকটা
তাকিয়ে থাকলো রূপসীনির দিকে।
এঞ্জেলা সরাসরি লোকটার শরীরের
উপর উঠে বসলো। সামান্য ভয় কাজ
করছে ওর মধ্যে। কিন্তু ভয়টা কাটিয়ে
উঠল ও। একটানে নিজের টি শার্ট টা
খুলে ফেলল। যুবকের মধ্যে আবার
সেই লোলুপতা ফিরে আসলো।
লোভনীয় চোখ নিয়ে তাকালো
এঞ্জেলার অন্তর্বাস পড়া শরীরের
দিকে। কিন্তু একি! হঠাৎ করেই যেন
এঞ্জেলার শরীরে গজাতে
লাগলো ঘন কালো লোম। ঘনঘন শ্বাস
নিতে থাকলো সে। চোখের নীল
মনি হঠাৎ পরিনত হলো হলুদ বর্ণে। ফাঁক
হয়ে গেল এঞ্জেলার মুখটা,
চোয়ালের কোনার দুই দাঁত প্রথমে
সরু আকার ধারন করলো তারপর
অনেকটা লম্বা হয়ে গেল, অনেকটা
শ্বাপদ প্রাণীর দাঁতের মতো। চাঁদের
আলোয় ঝিকিয়ে উঠলো দাঁতদুটো।
মুহুর্তে বদলে গেল তার সুন্দর মুখখানা।
নিষ্ঠুর ভয়ঙ্কর এক পিশাচীনিতে পরিনত
হলো সে। রাতের নিঃশব্দতা ভেদ
করে কুৎসিত ভয়ঙ্কর কন্ঠে চিৎকার
করে উঠল পিশাচীনি। তারপর মুখটা
নামিয়ে আনলো যুবকের ঘাড়ের
কাছে। সুচাঁলো দাঁতদুটো ফুটিয়ে দিল
যুবকের দপদপ করতে থাকা ঘাড়ের
রগে। তারপর অভুক্তের মতো চুষে
খেতে লাগলো যুবকের গরম তরল
রক্ত যেন অনন্তকাল ধরে ভীষন,
ভীষন পিপাসার্ত সে। ভোর হয়ে
আসছে। পার্টির লোকজন ফেরার
জন্য বাসে উঠে পড়েছে।
এঞ্জেলারা তিনবোন নিজেদের
আগের সেই সীটেই বসে
নিজেদের মধ্যে আড্ডায় জমে
উঠেছে। বাচ্চা আর যুবক- যুবতীদের
কোলাহলে মুখর হয়ে আছে বাসের
ভিতরটা। কিন্তু কেউ খেয়াল করলো না,
আসার সময় বাসটার সবগুলো আসন
একেবারে পরিপূর্ণ থাকলেও, যাওয়ার
সময় একটা আসন যাচ্ছে একদম ফাঁকা।
বাসটা রওনা হতেই জঙ্গলের ভিতর
থেকে করুন কন্ঠে বিলাপ করে উঠল
একটা নেকড়ে, যেন বিদায় জানালো
হ্যালোইনের ভয়ঙ্কর রাতটাকে।
Hasan