02-21-2017, 09:53 PM
৫ বছর বয়সের নিশো রাত ১ টায় ঘুম থেকে জেগে উঠলো পায়ের ব্যথার জন্য। তার বাবা-মা আধাঘন্টা যাবৎ তার পায়ে ম্যাসাজ করে দেয়ার পর ব্যথা কমলে সে আবার ঘুমাতে পারলো। পরদিন সকালে নিশো তার প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজগুলো করতে লাগলো যেন রাতে কিছুই হয়নি তার। এটা দেখে তার বাব-মা স্বস্তি পেলেন। কিন্তু এই ব্যথা আবারো ফিরে এলো ১ সপ্তাহ বা তার কিছুদিন পরে। এবার তার বাবা-মা অপেক্ষা করে বসে না থেকে নিশোকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন। সৌভাগ্যক্রমে নিশোর এই ব্যথাটিকে চিকিৎসক ‘গ্রোয়িং পেইন’ হিসেবে শনাক্ত করলেন। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, যখন শিশু অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন হয় গ্রোয়িং পেইন। শিশুর জন্মের সময় এবং ২ বছর বয়সের মধ্যবর্তী সময়ে এবং তারপর কৈশোরে হয় এই ব্যথা।যদিও চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে আইডিয়োপ্যাথিক নকটারনাল লিম্ব পেইন অফ চাইল্ডহুড বলা হয়। যা সাধারণত শিশুর ৩ থেকে ১২ বছর বয়সে হয়ে থাকে। শিশুর ‘গ্রোয়িং পেইন’ এর লক্ষণ, কারণ ও উপশমের উপায় জানবো এই ফিচারে।
শিশুর ‘গ্রোয়িং পেইন’ এর লক্ষণ :
উরুতে, পায়ের পেশীতে এবং হাঁটুর পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া ছাড়া আর কোন স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যায় না।এই ব্যথা সাধারণত রাতের বেলায় হয়। কোন শিশুর জন্য এই ব্যথা তীব্র হয় আবার কোন শিশুর ক্ষেত্রে হয় হালকা ধরনের। গ্রোয়িং পেইন প্রতিদিন হয় না। এই ব্যথা শিশুর সক্রিয়তার উপর প্রভাব ফেলে না। গবেষকেরা দেখেছেন যে, ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে এই ব্যথা কমতে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশু যখন কৈশোরে পদার্পণ করে তখন এই ব্যথা পুরোপুরি দূর হয়ে যায়। শিশুর এই লক্ষণগুলো দেখা গেলে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন :
- যদি শুধু ১ পায়ে ব্যথা হয়
- প্রতি রাতেই যদি ব্যথা হয়
- হাতে ও পিঠে ব্যথা হলে
- কোন আঘাতের কারণে ব্যথা পেলে
- জয়েন্ট ফুলে গেলে
- জ্বর এলে
- ওজন কমে গেলে
- ক্ষুধা কমে গেলে
- ক্লান্ত বা অবসন্ন থাকলে
যদি শিশু হাঁটতে না চায় অথবা হাঁটতে যেয়ে খোঁড়ায় বিশেষ করে সকাল বেলায়, তাহলে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। যদি তার শারীরিক পরীক্ষায় সব কিছু স্বাভাবিক থাকে তাহলে সে সম্ভবত গ্রোয়িং পেইন এর সমস্যায় ভুগছে। যদি ব্যথা ছাড়া অন্য উপসর্গগুলো থাকে তাহলে তার অন্যকোন স্বাস্থ্য সমস্যা থাকতে পারে।
শিশুর ‘গ্রোয়িং পেইন’ এর কারণ :
বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত গ্রোয়িং পেইন হওয়ার সঠিক কারণের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা দিতে পারেন নি। তারা গ্রোয়িং পেইন এর বিষয়ে বিভিন্ন মতবাদ দিয়েছেন। তার কয়েকটি হচ্ছে :
১। ভঙ্গিগত বা অর্থোপেডিক খুঁত
গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, গ্রোয়িং পেইন অঙ্গভঙ্গিগত বা অর্থোপেডিক খুঁত যেমন- ফ্ল্যাট ফুট, নক-নি, স্কলায়োসিস (এস বা সি আকৃতির বাঁকা মেরুদন্ড) এবং খারাপ ভাবে বসার ভঙ্গির কারণে হয়ে থাকে। যদিও গবেষকেরা এখনো এই বিষয়টি নিয়ে তর্কে লিপ্ত আছেন।
২। হাড়ের শক্তি কমা
কিছু গবেষক মনে করেন যে গ্রোয়িং পেইন হাড়ের শক্তি কমে যাওয়ার সাথে সম্পর্কিত। তারা দেখেন যে, যে শিশুদের জঙ্ঘাস্থির হাড়ের ঘনত্ব কম থাকে তাদের গ্রোয়িং পেইন হয়। যদিও অন্য গবেষকেরা মনে করেন যে, এই মতবাদটি কিছু শিশুর রাতে হঠাৎ ব্যথা হওয়ার বা হাতে ব্যথা হওয়ার কারণটিকে ব্যাখ্যা করেনা।
৩। মানসিক
নেতিবাচক মনোসামাজিক পরিবেশের কারণে শিশুর গ্রোয়িং পেইন এর ব্যথা হয়। জন অ্যাপলে তার গবেষণায় বলেন, শিশুর আবেগিয় সমস্যার কারণে এবং পারিবারিক স্ট্রেসের সাথে গ্রোয়িং পেইন এর সম্পর্ক বিদ্যমান।
৪। শরীরের নীচের অংশের ব্যথার সূত্রপাত
সুস্থ শিশুদের তুলনায় শরীরের নীচের অংশের ব্যথার সমস্যা থাকে যে শিশুদের তাদের হয়ে থাকে গ্রোয়িং পেইন। তাদের মাথাব্যথা ও পেটেব্যথার সমস্যাও থাকে।
৫। পারিবারিক ইতিহাস
পারিবারিক ইতিহাসও শিশুর গ্রোয়িং পেইন এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৬। ভিটামিন ডি এর ঘাটতি
অনেক শিশুদের ভিটামিন ডি এর ঘাটতির কারণে হয়ে থাকে গ্রোয়িং পেইন এর সমস্যা, বিশেষ করে শরীরের যে অংশে সূর্যের আলো পৌঁছায় না। কোরিয়ান এক গবেষণাতে ভিটামিন ডি এর ঘাটতির কারণে কোরিয়ান শিশুদের দেহের নিম্নাংশের ব্যথার প্রাদুর্ভাব হয় বলে জানা গেছে।
শিশুর ‘গ্রোয়িং পেইন’ উপশমের উপায় :
শিশুর গ্রোয়িং পেইন এর সমস্যা মারাত্মক কোন সমস্যা নয় এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এর জন্য কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু পিতা-মাতা এক্ষেত্রে যা করতে পারেন :
- শিশুর পায়ে হালকাভাবে ম্যাসাজ করে দিন
- ব্যথার স্থানে গরম সেঁক দিন
- ব্যথানাশক ঔষধ দিতে পারেন। তবে দীর্ঘদিন ব্যথানাশক ঔষধ সেবন করাবেন না।
- শিশুকে পেশীর ব্যায়াম করান দিনে দুইবার। সকালে ও রাতে ১০ মিনিট করে করান স্ট্রেচিং। এতে করে শিশুর মানসিক প্রয়োজনীয়তাও পূরণ হবে, কারণ সে আপনার কাছ থেকে অতিরিক্ত মনোযোগ পাবে।
- কী ধরনের কাজে বা ঘটনায় এ ধরনের ব্যথা বৃদ্ধি পায় তা একটি ডায়রিতে লিপিবদ্ধ করুন।
- যদি শিশুর দেহভঙ্গিতে কোন খুঁত থাকে তাহলে সাপোরটিভ ফুট-ওয়ার পড়তে দিন।
সূত্র: দ্যা হেলথ সাইট
শিশুর ‘গ্রোয়িং পেইন’ এর লক্ষণ :
উরুতে, পায়ের পেশীতে এবং হাঁটুর পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া ছাড়া আর কোন স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যায় না।এই ব্যথা সাধারণত রাতের বেলায় হয়। কোন শিশুর জন্য এই ব্যথা তীব্র হয় আবার কোন শিশুর ক্ষেত্রে হয় হালকা ধরনের। গ্রোয়িং পেইন প্রতিদিন হয় না। এই ব্যথা শিশুর সক্রিয়তার উপর প্রভাব ফেলে না। গবেষকেরা দেখেছেন যে, ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে এই ব্যথা কমতে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশু যখন কৈশোরে পদার্পণ করে তখন এই ব্যথা পুরোপুরি দূর হয়ে যায়। শিশুর এই লক্ষণগুলো দেখা গেলে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন :
- যদি শুধু ১ পায়ে ব্যথা হয়
- প্রতি রাতেই যদি ব্যথা হয়
- হাতে ও পিঠে ব্যথা হলে
- কোন আঘাতের কারণে ব্যথা পেলে
- জয়েন্ট ফুলে গেলে
- জ্বর এলে
- ওজন কমে গেলে
- ক্ষুধা কমে গেলে
- ক্লান্ত বা অবসন্ন থাকলে
যদি শিশু হাঁটতে না চায় অথবা হাঁটতে যেয়ে খোঁড়ায় বিশেষ করে সকাল বেলায়, তাহলে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। যদি তার শারীরিক পরীক্ষায় সব কিছু স্বাভাবিক থাকে তাহলে সে সম্ভবত গ্রোয়িং পেইন এর সমস্যায় ভুগছে। যদি ব্যথা ছাড়া অন্য উপসর্গগুলো থাকে তাহলে তার অন্যকোন স্বাস্থ্য সমস্যা থাকতে পারে।
শিশুর ‘গ্রোয়িং পেইন’ এর কারণ :
বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত গ্রোয়িং পেইন হওয়ার সঠিক কারণের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা দিতে পারেন নি। তারা গ্রোয়িং পেইন এর বিষয়ে বিভিন্ন মতবাদ দিয়েছেন। তার কয়েকটি হচ্ছে :
১। ভঙ্গিগত বা অর্থোপেডিক খুঁত
গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, গ্রোয়িং পেইন অঙ্গভঙ্গিগত বা অর্থোপেডিক খুঁত যেমন- ফ্ল্যাট ফুট, নক-নি, স্কলায়োসিস (এস বা সি আকৃতির বাঁকা মেরুদন্ড) এবং খারাপ ভাবে বসার ভঙ্গির কারণে হয়ে থাকে। যদিও গবেষকেরা এখনো এই বিষয়টি নিয়ে তর্কে লিপ্ত আছেন।
২। হাড়ের শক্তি কমা
কিছু গবেষক মনে করেন যে গ্রোয়িং পেইন হাড়ের শক্তি কমে যাওয়ার সাথে সম্পর্কিত। তারা দেখেন যে, যে শিশুদের জঙ্ঘাস্থির হাড়ের ঘনত্ব কম থাকে তাদের গ্রোয়িং পেইন হয়। যদিও অন্য গবেষকেরা মনে করেন যে, এই মতবাদটি কিছু শিশুর রাতে হঠাৎ ব্যথা হওয়ার বা হাতে ব্যথা হওয়ার কারণটিকে ব্যাখ্যা করেনা।
৩। মানসিক
নেতিবাচক মনোসামাজিক পরিবেশের কারণে শিশুর গ্রোয়িং পেইন এর ব্যথা হয়। জন অ্যাপলে তার গবেষণায় বলেন, শিশুর আবেগিয় সমস্যার কারণে এবং পারিবারিক স্ট্রেসের সাথে গ্রোয়িং পেইন এর সম্পর্ক বিদ্যমান।
৪। শরীরের নীচের অংশের ব্যথার সূত্রপাত
সুস্থ শিশুদের তুলনায় শরীরের নীচের অংশের ব্যথার সমস্যা থাকে যে শিশুদের তাদের হয়ে থাকে গ্রোয়িং পেইন। তাদের মাথাব্যথা ও পেটেব্যথার সমস্যাও থাকে।
৫। পারিবারিক ইতিহাস
পারিবারিক ইতিহাসও শিশুর গ্রোয়িং পেইন এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৬। ভিটামিন ডি এর ঘাটতি
অনেক শিশুদের ভিটামিন ডি এর ঘাটতির কারণে হয়ে থাকে গ্রোয়িং পেইন এর সমস্যা, বিশেষ করে শরীরের যে অংশে সূর্যের আলো পৌঁছায় না। কোরিয়ান এক গবেষণাতে ভিটামিন ডি এর ঘাটতির কারণে কোরিয়ান শিশুদের দেহের নিম্নাংশের ব্যথার প্রাদুর্ভাব হয় বলে জানা গেছে।
শিশুর ‘গ্রোয়িং পেইন’ উপশমের উপায় :
শিশুর গ্রোয়িং পেইন এর সমস্যা মারাত্মক কোন সমস্যা নয় এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এর জন্য কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু পিতা-মাতা এক্ষেত্রে যা করতে পারেন :
- শিশুর পায়ে হালকাভাবে ম্যাসাজ করে দিন
- ব্যথার স্থানে গরম সেঁক দিন
- ব্যথানাশক ঔষধ দিতে পারেন। তবে দীর্ঘদিন ব্যথানাশক ঔষধ সেবন করাবেন না।
- শিশুকে পেশীর ব্যায়াম করান দিনে দুইবার। সকালে ও রাতে ১০ মিনিট করে করান স্ট্রেচিং। এতে করে শিশুর মানসিক প্রয়োজনীয়তাও পূরণ হবে, কারণ সে আপনার কাছ থেকে অতিরিক্ত মনোযোগ পাবে।
- কী ধরনের কাজে বা ঘটনায় এ ধরনের ব্যথা বৃদ্ধি পায় তা একটি ডায়রিতে লিপিবদ্ধ করুন।
- যদি শিশুর দেহভঙ্গিতে কোন খুঁত থাকে তাহলে সাপোরটিভ ফুট-ওয়ার পড়তে দিন।
সূত্র: দ্যা হেলথ সাইট
Hasan