Thread Rating:
  • 0 Vote(s) - 0 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5

তুই ফেলে এসেছিস কারে মন

Googleplus Pint
#1
শুক্লপক্ষে ঢাকা শহরে তখন জ্যোৎস্না দেখা যেত। এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় তখন অনেক গাছ, একে একে নিচু বাড়িগুলো ভেঙে মাথা উঁচু দালান ওঠেনি। এখন সেখানে মাথা তুলে তাকালে আকাশ তো দেখা যায়ই না, বরং নিজের চোখই আকাশ আর দালানের এক ঘোরলাগা বিভ্রম তৈরি করে। এইসব দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগের সেই দিনগুলোতে আমরা তখন কৈশোর ও সদ্য যৌবনের অস্থিরীকৃত মাপের বাইরের বহরে নিয়ে সবে ঢাকা শহরে উপনীত হয়েছি।







এলিফ্যান্ট রোডের একটি একতলা বাড়িতে আমরা জনা দশেক থাকি। সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্যে এসেছি। কারো কারো ভাগ্যে হয়ত সে শিকে ছিঁড়বে, কারো ছিঁড়বে না। ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়ে রাজধানীর থাকার ইচ্ছে কারো কারো ভেতরে সংকল্পে রূপ নিয়েছে। সেই সংকল্প, সেই ইচ্ছে সবই আকার আর আকৃতিহীন। আকাশ আর আকৃতিহীন এই জন্যে সংকল্পকে তার প্রয়োজনীয় যত্ন দিয়ে বেঁধে দিতে হয়, এক্ষেত্রে আমাদের কারো তেমন মনোবাঞ্ছা সত্যি দানা বাঁধে না।







তবে সন্ধ্যার পরে রাতগুলো প্রথম থেকে দ্বিতীয় প্রহরে খুব মুগ্ধকর হয়ে উঠত তখন। সেটুকু তৈরি করে নিতে সত্যি কোনো প্রকার কষ্টকল্পনার প্রয়োজনই পড়ত না। সেই বয়সে কখনও কোনো কিছু কল্পনা করার সত্যি প্রয়োজনও পড়ে না। সবই যেন সাক্ষাৎ সামনে তৈরিই থাকে। কি আড্ডায় কি ঝগড়ায়। উৎসাহে কি নিরুৎসাহে। অতীত তখন প্রায় থাকেই না। ভবিষ্যৎ থাকলেও তাকে তো প্রায় দেখতেও যাওয়া যায় না। প্রতিদিন যা সঙ্গে করে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া যায় তা বর্তমান। সঙ্গে চলছে। একেবারে নিম বর্তমান তাকে সঙ্গে করে এগিয়ে যেতে যেতে যেন একপ্রকার ভবিষ্যৎ তৈরি করে নিতে হয়।







এমন একটি সময়ে, একেবারে একা একা দশটি মানুষের ভেতরে জড়িয়ে থাকা সঙ্গোপনের ভেতরে, হইচই উৎসাহ আর দিনাপানের প্রতিদিনের সম্পর্ক সংযোগের ভেতরে একদিন অস্পষ্ট অন্ধকারে সন্ধ্যার পরে গানটা প্রথম শুনি। সেই প্রথম শোনা। একেবারে হিসেব নিকেশ মিলিয়ে বলছি, সেই প্রথম শোনা- পহেলা বার। এর আগে যদি শুনে থাকি, কোনো দিন কোনো কারণে কানের একেবারে সামনে বেজে থাকে এই গান, যদি বেজেও থাকে, সত্যি শুনিনি। শুনলেও সত্যি কান তা কোনো কারণে মনে রাখেনি। মনে রাখার কোনোমাত্র কারণ আগে একবারও প্রয়োজন হয়নি। কেন হয়নি তা জানি না।







তাই আগেই বলেছি, তখন এলিফ্যান্ট রোডের আকাশে চাঁদ দেখা যেত। চাঁদ সেদিন না থাকলে আকাশের অন্ধকার বোঝা যেত। ফলে আকাশ, অন্ধকার, সন্ধ্যা উতরে যাওয়া রাত্রির সবকিছুর প্রায় অনিবার্য ফাঁক গলে সেই গান সেদিন সত্যি প্রথম সত্য হয়ে কানে বিঁধে ছিল।







মনে আছে সেদিন অন্ধকার ছিল। মনে আছে, সেই একতলার সামনের ছোট্ট বারান্দা আর এর ডানদিকে ছোটো এক চিলতে উঠোন বা সরু পথ, যে পথ ধরে বাড়িআলার মানুষজন যাতায়াত করত। সামনে আমরা বন্ধুরা আড্ডা দিতাম। তখনও হয়ত খাওয়ার সময় হয়নি। কারও একটি জানালা গলে ভেতরের বাল্বের আলো বাইরের ঘাসহীন মাটিতে পড়েছে। ভেতরে ঢুকে গেছে কেউ কেউ। বাইরে থেকে ঘুরে আসার পরে অথবা এইখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একটুক্ষণ আড্ডা দেয়ার পরে এখন তাকে কোনো প্রয়োজনে হয়ত ভেতরে যেতে হয়েছে। আর এই সময়ে এই দাঁড়িয়ে থাকা, এই আড্ডা এর ভিতরে গানটি প্রায় থামিয়ে দিল নিজেকে :







‘তুই ফেলে এসেছিস্ কারে, মন, মনরে আমার।’







আগে তাহলে সত্যি শুনিনি এই গান? নিশ্চয়ই শুনেছি। নাকি আগে কখনও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গলায় শুনিনি এই গান? তাও হয়তো নয়, নিশ্চয়ই শুনেছি। গানখানি কানের বেশ কাছেই টেপ রেকর্ডার প্লেয়ারে বাজছে। বাজিয়েছে আমাদের কেউ। হয়ত যে বাজিয়েছে এই গানটি বাজানোর নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে বাজায়নি। হয়ত এর আগে, এর আগের গান পর্যন্ত বাজিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিল এর সেই নির্দিষ্ট শ্রোতা। হয়ত ঠিক সেই সময়ে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ওই পর্যন্ত বেজেই থেমে গিয়েছিল। তারপর এখন ঘুরে এসে চালু করতেই এইখান থেকে শুরু হল।







আড্ডার অমন স্ফুর্তিময় উৎসাহ আর উৎফুল্লতার ভেতর থেকে নিজেকে টেনে সরিয়ে নিতে হল না। যেন, ‘তুই ফেলে এসেছিস কারে, মন, মনরে আমার-’ আমাকে সরিয়ে নেয়ার আগে সত্যি মুহূর্তখানেকের জন্যে কথা থেমে গিয়েছিল। তারপর যেমন কথা তেমন শুরু হতে হতেই তো পরের বাক্য : ‘তাই জনম গেল শান্তি পেলি নারে মন মনরে আমার-’ গাইতে গাইতে আড্ডায় থেকে, দাঁড়িয়ে থেকেও প্রায় স্তম্ভিত আর আড্ডায় থেকেও সত্যি আড্ডার বাইরে। ভেতরে থেকেও বাইরে- এই প্রথম ঘটতে শুরু করে! এর আগে এটি সত্যি কম ঘটেছে। হয়ত ঘটেনি। এই যে প্রথম তা ঘটেছে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গানের শেষ দিকে যেতে যেতে বুঝলাম। কারণ ততক্ষণে নিজেকে সরিয়ে এনেছি। সামনের বারান্দায় জামা-কাপড় শুকানোর দড়িতে দু’হাত রেখে সামনের রাস্তার উলটো দিকের বাড়ির সামনের আকাশে অন্ধকারে তাকিয়ে বাকিটুকু অতি দ্রুত শোনা হয়ে গেল :





যে পথ দিয়ে চলে এলি সে পথ এখন ভুলে গেলি-



কেমন করে ফিরবি তাহার দ্বারে মন, মনরে আমার॥



হয়ে,



যে পথ গেছে সন্ধ্যাতারার পারে, মন, মনরে আমার॥







জানি না প্রয়োজন ছিল কি না অথবা বুঝেই বলেছি কি না প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বললাম, কে গান বাজাচ্ছিল তা যেন প্রায় জানিই না, তাকে বললাম, ‘আর একবার বাজা গানটা-’



এই সময় আমার আবাল্যবন্ধু ছোট এসে বলল, ‘কী বাড়ির কথা মনে পড়ে?’







কিন্তু তখন ওই গান দ্বিতীয়বার শোনার ইচ্ছের কারণ এই নয়, যে সত্যি বাড়ির কথা মনে হয়েছিল, পেছনের কথা মনে পড়েছিল। তবে সবমিলে হয়ত অবস্থা এই ছিল যে, এই গানের কথায় ফেলে আসা দিনগুলো একখানে এসে যেন মিলেমিশে সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল।







একটা গান, একটি কবিতা, একটি ছড়া, কোনো গদ্যের একটি পঙ্‌ক্তি হঠাৎ ভালো লেগে যাওয়ার অনেকগুলো কারণ তো থাকতেই পারে, অনেকগুলো কারণের বাইরে হঠাৎ থাকতে পারে একটি নির্দিষ্ট কারণও। তেমন একটি কারণই হয়ত ভেতরে ভেতরে ঘটে গেছে, নিজে জানি না, কোনোভাবে তা টের পাইনি, নিজের সেই ভালোলাগার কারণটি বুঝতে পারিনি, হয়ত ভেতরে ভেতরে সে টলোমলো কি দৃঢ় পায়ে নিজের সেই ভালোলাগার মতো গুণগুলো নিয়ে ঢুকে পড়েছে অজান্তে। প্রাত্যহিক সেই দিনযাপনেই, জীবনকে যাপন করার প্রতিদিনের ছন্দেই তা প্রয়োজনীয় যোগ্যতা নিয়ে ঢুকে গেছে। ঢুকেই, ঢুকে যেতেই সে সৃষ্টি করেছে সেই তরঙ্গ, যে তরঙ্গে নিজেরও জানা হয়নি কখন এই পঙ্‌ক্তিমালা নিজের জন্যে প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।







ফলে, এই গান শুনে যেন নিজের সেই বিবরে একটুক্ষণ ঢুকে পড়া গেল। অথবা, সেইখানে ঢুকিয়ে নিয়ে গেল এই গান, প্রায় প্রত্যক্ষ অথবা অপ্রত্যক্ষ এক টানে।







ঢাকার আসবার কালে, ঢাকা যাচ্ছি, পড়তে যাচ্ছি, একটু কেতাবি কথায় যাকে বলা যায়, উচ্চ শিক্ষার্থে- সেখানে আসার আগে তো একপ্রকার পারিবারিক প্রস্তুতি থাকে। প্রতিটি পরিবারের নিজের নিজের মতো সেই প্রস্তুতি। সেখানে কোনো পরিবারের একটিমাত্র সন্তান, তাকে অত দূরে পড়তে দেয়া হবে কিনা- এই সংকট। কোথাও এই ছেলেটি পরিবারের ছোট সন্তান, বাকি ভাইবোনেরা এর আগেই পড়তে গেছে, তাই তাকে পড়তে পাঠানো হবে কিনা সেই সংকট। কোনো পরিবারের মেজো কি সেজো ছেলে, তাকে পড়তে পাঠানোর মত সঙ্গতি আছে কি নেই, সে হয় তা জানিয়েছে, তাকে শুধু ঢাকাতে পাঠানোর এই ব্যবস্থাটুকু এখন করে দেয়া হোক, ঢাকা গিয়ে সে নিজেকে চালিয়ে নেওয়ার একপ্রকার ব্যবস্থা করতে পারবে। এগুলোর কোনোটায় কেউ কেউ জয়ী হতে পারে, কেউ পারে না। সেসব সামাল দেয়ার পরে, যার যার মতন প্রস্তুতি গ্রহণের পর, অভিভাবকদের পরের চিন্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়ার আগে, ঢাকায় এরা থাকবে কোথায়? স্থানীয় সিনিয়র কি তৎপর কোনো কোনো সহপাঠীর প্রচেষ্টায় সে চিন্তাও হয়ত আপাতত উড়িয়ে দেয়া গেছে। আপাতত ঢাকায় থাকার মতো একটা আবাসন পাওয়া গেছে। সেখানেই একসঙ্গে গিয়ে উঠতে হবে। ফলে, সেই বন্ধুদের সঙ্গে পারিবারিক যোগাযোগও শেষ। এখন যাবার পালা।







বাসস্ট্যান্ডে সঙ্গে বাবা এসেছেন। একটা ট্রাংক নিয়েছি সঙ্গে। ব্যাগে জামা কাপড়। ট্রাংকে নিজের কিছু বইপত্রর। বেশির ভাগই ক্লাসের নয়। এক অর্থে প্রয়োজনীয়ও নয় এই মুহূর্তের জন্যে। কিন্তু এগুলোর অনেকগুলোই হাতছাড়া করে যাওয়া সম্ভবও নয়। কিছু পড়ছি, কিছু পড়িনি। ফলে, ব্যাগ ট্রাংক সব মিলে প্রস্তুতিটা এমন যেন পরিবার থেকে এতদিনের সম্পর্ক মোটামুটি একপ্রকার ছিন্ন করেই যাওয়া।







বাসের ছাদে ট্রাংক তোলা হয়েছে। বাস ছাড়বে এখন। জানলা থেকে বাবার মুখ দেখছি। যেন তিনিও জানেন, এই যে ছেড়ে যাচ্ছে ছেলে হয়ত আর ফিরবে না। ফিরব না এই অর্থে যে, আর হয়তো কখনও পরিবারের ভেতরে ফেরা। বরং, ছেলে যেন পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের একটি পর্যায়ের সুতো আলগা করে দিয়ে চলে যাচ্ছে। বাবার সেই মুখ। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে মায়ের মুখে এই ভাষা ছিল না। হয়ত মা সেভাবে ভাবেইনি।







কিন্তু যে কোনো যাওয়ায়, শুধু বাবামায়ের মুখই তো নয়, ছোটো ভাই বোনদের সঙ্গটুকুই তো নয়, স্থানীয় বন্ধু সহপাঠীদের প্রতিদিনের সঙ্গসুখটুকুই নয়, পরিচিত গাছগাছালি রাস্তাঘাট পুকুর নদী দালানকোঠা কতকিছুকেই তো পেছনে ফেলে চলে আসা। কোনো গোপন অনুষঙ্গ, গোপন ভালোলাগা, কোনো গোপন গলি, গোপন আড্ডা, একইভাবে প্রকাশ্য ভালোলাগা, প্রকাশ্য গলি, প্রকাশ্য অনুষঙ্গ পেছনে ফেলে চলে আসা। যদিও নিজে তো প্রায় বলতে গেলে জানিই না যে, সত্যি নিজে এইভাবে যাচ্ছি। এই যে যাচ্ছি, এই যাওয়ায় মহানগরের হাতছানি, পেছনকে তখন প্রায় অস্বীকার করে এগিয়ে যাওয়া, ফিরে না চাওয়া, ফলে পেছনকে তখন সামনে থেকে কে মনে করিয়ে দেয়, যে তুই পেছনে কী ফেলে এসেছিল কারে ফেলে এসেছিস? তখন মনকে তো প্রায় এই কথা জিজ্ঞাসা করারই সময় নেই। যা দেখি প্রতিটি জিনিসই দেখি প্রত্যক্ষে, সামনে। প্রতিদিনের প্রাত্যহিকের। ফলে, সেই সময়ে যদি এমন দুর্লভ আড্ডার মুহূর্তে বেজে ওঠে কোনো গান, যা প্রায় অশ্রুতপূর্ব। হ্যাঁ, সত্যিকারে আগে কখনওই শোনা হয়নি এই গান, শুনিনি। হয়ত জানি না, এমন একটি গান আছে রবীন্দ্রনাথের।







সত্যি কথা বলতে কি, তখন চারধারে শোনার মতো এত গান যে, রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রসংগীত সত্যি দূরে! কোনো বিরহী কাতরতার ভেতর কাজী নজরুলের কোনো গানও তো কানে বাজে না! বরং, যাবে বলি আধুনিক গান, ভারতীয় আধুনিক বাংলা গান তাই, দেশি ও হিন্দি সিনেমার গান আর এই সময়ে সবে হালে পানি পেতে থাকা ব্যান্ডের গান। সেখানে অতীতচারিতার সুযোগ কোথায়? সবই সামনে। এই যেখানে যাপন করছি প্রতিটি ক্ষণ, তাতেই বিভোর। এমনি বিভোরতার ভেতরে, এরশাদ-বিতাড়ন আর সদ্য ‘গণতান্ত্রিক’ মুক্ত পরিবেশ- এই সমস্ত কিছু এক করে কিছু গণসংগীত আর এর ভেতরের আন্দোলন বারতা একই সঙ্গে এক করে নেওয়া যায় বটে, কিন্তু একটানে নিজেকে নিজের কাছ থেকে সেই সময়ে, অমন স্বল্প জীবনে, অল্প স্মৃতির পেছনে একটু অতীত ঢুকিয়ে দেয়- সেই সাধ্য কোন্ গানের? থাকলেও, সেকথা তখন ভাবে কে? কিন্তু যেইমাত্র আমার অনুরোধে রেকর্ডটা ঘুরিয়ে আবার চালানো হলো, তখনই প্রায় একটানে ওই আঠারো উনিশ বছরের জীবনের পেছনে ফেলে আসা একখণ্ড ক্ষুদ্র অতীত, যার তখনও প্রায় কোনো মূল্য নেই নিজের কাছে, তাই এসে ধরা দিল। সামনে দাঁড়াল। দেখা দিল। অথবা দেখা দিল না। ধরা দিল না। শুধু জানতে চাইল, হে মন, কাকে তুই পেছনে ফেলে এসেছিস্। এবার শুধু যেন শুনে যাওয়ার পালা :



নদীর জলে থাকি রে কান পেতে,



কাঁপে রে প্রাণ পাতার মর্মরেতে।







সেই শহর, ফেলে আসা বাগেরহাট শহর, তার নদীর জলে সত্যি কান পেতেছি আমি, তার প্রতিটি পাতার মর্মর ধ্বনি যেন নিজের করে নিতে শুনেছি আমি দেখেওছি। সেই সবকিছু রাত্রির এই প্রথম ভাগের অন্ধকারে তাকিয়ে তাকিয়ে আমি দেখতে পেলাম। নিজের সামনে। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় তাঁর দৃঢ় গলায় গেয়ে চলছেন, রবীন্দ্রনাথের নির্দেশমতো :



মনে হয় যে পাব খুঁজি ফুলের ভাষা যদি বুঝি



যে পথ গেছে সন্ধ্যাতারার পারে মন, মন রে আমার॥







সন্ধ্যাতারা তখন আর আকাশে নেই। থাকার কথা নয়। আর কাপড় শুকনোর দড়িতে দুই হাতের ভর দিয়ে আকাশের অন্ধকারে তাকিয়ে আছি। আমার ঘাড়ে আবাল্যবন্ধু ছোটর হাত।



‘ছোট জানতে চাইলে, বাড়ির কথা মনে পড়ে?’



আমি উত্তর দিইনি। সে কথা এ গানেই বলা আছে।





প্রশান্ত মৃধা

৩১ অক্টোবর ২০১২, সিলেট
Reply


Possibly Related Threads…
Thread Author Replies Views Last Post
  [গল্প] রিফাত ও সামিয়া অসাধারন গল্প Hasan 0 2,242 01-02-2018, 05:09 PM
Last Post: Hasan
  বন্ধুত্ব Hasan 0 1,887 01-02-2018, 04:48 PM
Last Post: Hasan
  আমি আর বলবো না তুমি ভালবাস আমাকে Hasan 0 2,114 01-02-2018, 04:48 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] অতৃপ্ত মন Hasan 0 2,015 01-02-2018, 04:47 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] মহাকাল ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এক অশ্বথ বৃক্ষ! (কোন গল্প নয় । একটা অনুভূতি) Hasan 0 1,737 01-02-2018, 04:47 PM
Last Post: Hasan
  [গল্প] ভর-দুপুর Hasan 0 1,733 01-02-2018, 04:46 PM
Last Post: Hasan
  গল্প : সাদা-কালো Abir 0 1,920 01-02-2018, 04:44 PM
Last Post: Abir
  [গল্প] তিতির Abir 0 1,918 01-02-2018, 04:42 PM
Last Post: Abir
  [গল্প] গন্তব্যহীন Abir 0 1,732 01-02-2018, 04:41 PM
Last Post: Abir
  [জানা ও অজানা] ‘অশালীন’ পোশাক পরায় ফের সমালোচনায় দীপিকা Salim Ahmad 0 1,834 06-11-2017, 12:14 AM
Last Post: Salim Ahmad

Forum Jump:


Users browsing this thread: 2 Guest(s)