Thread Rating:
  • 0 Vote(s) - 0 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5

জানা না থাকলে জেনে নিন, কোরবানির ইতিহাস

Googleplus Pint
#1
হাফেজ মোহাম্মদ ওমর ফারুক: ‘কোরবানি শব্দটি আরবি।

যার অর্থ উৎসর্গ, উপঢৌকন, সান্নিধ্য লাভের উপায়। মানুষ যা

কিছু আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে

তাকে কোরবান বলে। কোরবানি হজরত আদম (আ.)-

এর জামানায়ও চালু ছিল। পরবর্তী সব নবীদের জামানায়ও

কোরবানির প্রথা অনুসৃত হয়েছে।

হজরত আদম (আ.)-এর আমলের কোরবানি সম্পর্কে

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, আদমের দুই

পুত্রের (কাবিল ও হাবিল) বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে

যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কোরবানি

করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং

অন্যজনের কবুল হলো না। সে বলল, আমি

তোমাকে হত্যা করবই। অপরজন বলল, অবশ্যই আল্লাহ

মোত্তাকিদের কোরবানি কবুল করেন।’ (সূরা ৫ মায়িদা,

আয়াত-২৭)

আল্লাহতায়ালা হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর যে কয়টি কঠিন

পরীক্ষা গ্রহণ করেন তন্মধ্যে পুত্র ইসমাঈলকে

কোরবানির নির্দেশসংবলিত পরীক্ষা অন্যতম। নবী-

রসুলগণ নিজ নিজ মর্যাদা ও স্থান অনুযায়ী পরীক্ষার

সম্মুখীন হয়ে থাকেন। তিনি স্বপ্নযোগে নিজ

পুত্রকে কোরবানি করার নির্দেশপ্রাপ্ত হন। নবী-

রসুলগণের স্বপ্ন জাগ্রত অবস্থায় প্রাপ্ত ওহির সমতুল্য

হয়। তিনি পর পর তিন রাতে স্বপ্ন দেখেন যে,

আল্লাহতায়ালা তার পুত্রকে কোরবানি করার নির্দেশ

দিচ্ছেন। ৮ তারিখ দিবাগত রাত তথা ৯ তারিখ রাতেও একই

স্বপ্ন তিনি দেখেন। ইসলামে ওই দিনটির নামকরণ করা

হয়েছে ইয়াওমুল আরাফাহ নামে। পরের রাতেও ইবরাহিম

(আ.) একই স্বপ্ন দেখেন এবং তিনি অনুধাবন করেন

যে, এটি আল্লাহর একটি নির্দেশ। তাই এ দিনটির নামকরণ

করা হয় ইয়াওমুল নহর বা কোরবানির দিন। স্বপ্নের ভিন্নতর

ব্যাখ্যা করার অবকাশ থাকা সত্ত্বেও হজরত ইবরাহিম (আ.)

আল্লাহর নির্দেশের সামনে মাথানত করেন।

ইতিহাস ও তাফসিরভিত্তিক বিবরণ থেকে জানা যায়, হজরত

ইসমাঈল যখন তের বা তার কাছাকাছি বয়সে উপনীত হন

তখন ইবরাহিম

(আ.) সুযোগ্য পুত্রের সামনে পরামর্শ লাভের

ভঙ্গিতে বললেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি

তোমাকে জবেহ করছি। যেমন পিতা তেমন সন্তান এবং

ভাবী নবী। পিতার কথা শোনামাত্র তিনি জবাব দিলেন,

আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায়

আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। কোনো

কোনো বর্ণনা থেকে অনুমিত হয় যে, হজরত

ইবরাহিম (আ.) কোরবানি করার নির্দেশ প্রাপ্তির পর

পুত্রকে বললেন, বৎস! দড়ি ও ছুরি লও, আমরা পরিবারের

জ্বালানি কাষ্ঠ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ওই উপত্যকায় যাব।

তিনি উপত্যকার নির্জন স্থানে পৌঁছে পুত্রকে কোরবানির

বিষয়টি অবহিত করলেন। শয়তান হজরত ইবরাহিম (আ.),

ইসমাঈল (আ.) ও হাজেরা (আ.)কে প্রতারিত করার

উদ্দেশ্যে বারবার অপপ্রয়াস চালায়। ইবরাহিম (আ.) যখন

স্বীয় পুত্রকে কোরবানি করার নির্দেশপ্রাপ্ত হন তখন

শয়তান মাশআরুল হারাম নামক স্থানে ইবরাহিম (আ.)-এর

মুখোমুখি হয় এবং তিনি তাকে পরাস্ত করেন। অতঃপর

জামারাতুল আকাবায় পৌঁছে শয়তান ইবরাহিম (আ.)-কে প্রতারিত

করতে চাইলে তিনি তার প্রতি পর পর সাতটি কঙ্কর

নিক্ষেপ করে তাকে বিতাড়িত করেন। একইভাবে

জামারাতুল উসতায় এবং অবশেষে জামারাতুল কুবরায় পৌঁছে

শয়তান ইবরাহিম (আ.)-এর প্রতিবন্ধক হলে তিনি উভয়

স্থানে পর পর সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ করে

শয়তানকে বিতাড়িত করে দেন এবং আল্লাহর নির্দেশ

কার্যকর করতে উদ্যোগী হন। আজও প্রতিবছর

হাজীদের এ স্মৃতি রক্ষার্থে হজের মৌসুমে কঙ্কর

নিক্ষেপ করতে হয়।

হজরত ইবরাহিম (আ.) স্বীয় চোখ বেঁধে পুত্রের

পরামর্শ অনুযায়ী তার হাত-পা শক্ত করে বেঁধে কাত

করে শুইয়ে দিয়ে নিজ হাতে দ্রুত ছুরি চালাতে

লাগলেন। কিন্তু শত চেষ্টা সত্ত্বেও একটি পশমও

কাটতে সক্ষম হলেন না। পিতা-পুত্রের এ কঠিন পরীক্ষা

চলা অবস্থায় আল্লাহতায়ালা ডাক দিলেন হে ইবরাহিম! তুমি

তো স্বপ্নকে সত্য প্রমাণিত করে দেখালে।

আল্লাহতায়ালা পিতার ছুরি ও পুত্রের কণ্ঠনালির মাঝখানে

একটি তাম্রপাত রেখে দিয়েছিলেন। ফলে ছুরি কণ্ঠনালি

স্পর্শ করতে পারেনি। ইবরাহিম (আ.) দৃষ্টি খুলে

দেখতে পেলেন, জিবরাঈল (আ.) কর্তৃক আনীত

একটি হৃষ্টপুষ্ট দুম্বা জবেহ হয়ে গেছে।

বিশিষ্ট সীরাত বিশেষজ্ঞ ইবনে ইসহাকের বর্ণনা মতে

ইসমাঈল (আ.) পিতাকে বলেছিলেন, হে পিতা! আমাকে

জবেহ করার সময় শক্ত করে বাঁধবেন, যাতে আমার

নড়াচড়ার কারণে রক্ত আপনার শরীরে না লাগে। এতে

করে পুরস্কার ও সাওয়াব কমে যেতে পারে। কারণ

মৃত্যু খুবই কঠিন। আমি ছটফট করতে পারি। আর আপনার ছুরি

ভালো করে ধারালো করে নিন, যাতে আমার কষ্ট

লাঘব হয়। আর আমাকে কাত করে শুইয়ে দিয়ে

মুখমণ্ডল নিচের দিকে রাখবেন। কারণ আমার আশঙ্কা হয়

যে, আমার মুখমণ্ডলে আপনার দৃষ্টি পড়লে আপনার

অন্তর বিগলিত হয়ে যেতে পারে, তখন আল্লাহর

নির্দেশ পালনে তা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর

আপনি যদি ভালো মনে করেন, তাহলে আমার জামাটি

আমার মায়ের কাছে স্মৃতিস্বরূপ ফেরত দিলে তা তার

জন্য সান্ত্বনাস্বরূপ হবে। এই ছিল ত্যাগের চূড়ান্ত

নিবেদন।

একটি প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারে যে, হজরত ইবরাহিম

(আ.) তো পুত্রকে কোরবানি করার স্বপ্ন

দেখেছিলেন, অথচ তিনি তাকে কোরবানি করেননি।

তাহলে নবীর স্বপ্ন সত্য হলো কীভাবে। বস্তুত

ইবরাহিম (আ.) স্বপ্নে পুত্রকে জবেহ করতে

দেখেছিলেন। জবেহ করে তাকে শেষ করে

ফেলেছেন, এমন দেখেননি। অতএব, তিনি স্বপ্ন

বাস্তবায়িত করেছেন অর্থাৎ স্বপ্নে জবেহ করতে

দেখেছিলেন এবং বাস্তবেও তিনি ছুরি হাতে নিয়ে

পুত্রের গলায় সজোরে চালিয়েছিলেন। কিন্তু

যেহেতু তিনি জবেহ কর্ম সমাপ্ত করেছেন এ স্বপ্ন

দেখেননি, তাই বাস্তবেও জবেহ সমাপ্ত করতে

পারেননি। আল্লাহতায়ালা ইবরাহিম (আ.)-কে যতটুকু স্বপ্ন

দেখিয়েছেন, তিনি ততটুকুই বাস্তবায়িত করেছেন।-বিডি-

প্রতিদিন
Hasan
Reply


Possibly Related Threads…
Thread Author Replies Views Last Post
  যখন কোন মুসলিম নামধারী মেয়েকে বলতে শুনা যায় যে- Hasan 0 1,820 03-01-2017, 06:53 PM
Last Post: Hasan
  [ইসলামিক গল্প] নবী রাসূলগণ কাফিরদের যে অলৌকিক দৃশ্যগুলো দেখিয়েছিলেন! Hasan 0 1,619 02-24-2017, 10:15 AM
Last Post: Hasan
  [ইসলামিক গল্প] জুতা চোর (শিয়া ও সুন্নী) Hasan 0 1,585 02-24-2017, 10:15 AM
Last Post: Hasan
  [ইসলামিক গল্প] মহানবী (সা.) মৃত্যুর সময়ের একটি সত্য ঘটনা! Hasan 0 1,972 02-24-2017, 10:14 AM
Last Post: Hasan
  [ইসলামিক গল্প] ছামুদ জাতির ধ্বংস Hasan 0 1,519 02-24-2017, 10:14 AM
Last Post: Hasan
  [ইসলামিক গল্প] রুটি চোরের পরিনতি Hasan 0 1,543 02-24-2017, 10:13 AM
Last Post: Hasan
  [ইসলামিক গল্প] পিতামাতাকে অসন্তুষ্ট করার পরিণাম… Hasan 0 1,488 02-24-2017, 10:12 AM
Last Post: Hasan
  [ইসলামিক গল্প] খলিফা হারুনুর রশীদ ও এক নাস্তিকের গল্প! Hasan 0 1,478 02-24-2017, 10:11 AM
Last Post: Hasan
  ইসলাম কি একটি বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম? Hasan 0 1,565 02-24-2017, 10:11 AM
Last Post: Hasan
  মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স:) এর জান্নাত সম্পর্কে ৪০টি কথা Hasan 0 1,968 02-24-2017, 10:10 AM
Last Post: Hasan

Forum Jump:


Users browsing this thread: 1 Guest(s)