01-14-2017, 10:54 AM
১৯৮২ সালের ১ মার্চ তোলা শুক্র পৃষ্ঠের একটি
ছবি। যা ‘ভ্যালেরা-১৩’ এর মাধ্যমে তোলা
এবং পরবর্তীতে রঙিন করা হয়েছিল
সৌরজগতে শুক্র হল এমনই একটি গ্রহ, যা কখনোই
মানুষের পক্ষে ভ্রমণযোগ্য নয়।
এমনকি অতি শক্তিশালী রোবটিক অনুসন্ধানও
শুক্রের মাটিতে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। সর্বশেষ
রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থা পরিচালিত রোবটিক যান
‘ভেনেরা-১৩’ শুক্রের পৃষ্ঠে ভস্মীভূত হওয়ার আগে
মাত্র দুই ঘণ্টা টিকে ছিল!
নাসা গ্লেন রিসার্চ সেন্টারে কর্মরত ম্যাটেরিয়াল
সায়েন্টিস্ট এবং কেমিস্ট গুস্তাভো কস্তা বিজনেস
ইনসাইডারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘শুক্র
গ্রহের পৃষ্ঠ খুবই ক্ষয়িষ্ণু। এটা যেন পৃথিবীর
পাতালপুরীর মতো। এর পৃষ্ঠ খুবই রূঢ় প্রকৃতির।’
কস্তার দায়িত্বে গ্লেন এক্সট্রিম এনভায়রনমেন্টস
রিগ (জিইইআর) নামক প্রজেক্টে একটা ১৪ টন ওজনের
স্টিল চেম্বারের গলনের ফলে পৃথিবীতে এমন রূক্ষ্ম,
দাহ্য এবং অসহ্য পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়। নাসার
এই প্রজেক্টটি একটি বিধ্বংসী রূপ ধারণ করে।
২০০৪ সালে নাসা প্রথমবারের মতো পৃথিবীতে গ্লেন
এক্সট্রিম এনভায়রনমেন্টস রিগ (জিইইআর)
প্রজেক্টটি পরিচালনা করে। যেখানে কস্তা এবং
অন্যান্য গবেষকরা বিভিন্ন ধাতু, সিরামিক, তার,
জাল, ধাতুর লেপন, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক দ্রব্যাদি
কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করা ওই দুঃসহ পরিবেশে ছেড়ে
দিয়ে পরীক্ষা করছিলেন এগুলোর মধ্যে কোনগুলো
টিকে থাকতে পারে আর কোনগুলোই বা পুরোপুরি
ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
শুক্র গ্রহকে ‘পৃথিবীর ভয়ংকর দর্শন জমজ’ বলা হয়। এর
কারণ হল এর আকৃতি। সূর্য থেকে দ্বিতীয় নিকটবর্তী
গ্রহ শুক্রের আকৃতি প্রায় পৃথিবীর মতোই! এটি আসলে
পাথরে পরিপূর্ণ। পৃথিবীর তুলনায় ৮২ শতাংশ বেশি
ভারী এবং এর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর তুলনায় ৯০
শতাংশ। অর্থাৎ আপনার ওজন যদি পৃথিবীতে ১৫০
পাউন্ড হয় তবে শুক্রে সেটা ১৫ পাউন্ড কম অনুভূত
হবে।
তবে মজার ব্যাপার হল, শুক্রের কিছু অংশে
বসবাসযোগ্য সুস্থির আবহাওয়াও বিরাজমান। এই
গ্রহটির কক্ষের কিছু অংশে তরল অবস্থায় পানি
থাকতে পারে ধারণা করেন বিজ্ঞানীরা। কোনো
কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে, ২ বিলিয়ন বছর
আগে এখানে উষ্ণ এবং অগভীর সমুদ্রও ছিল যা ছিল
জীবনধারণের জন্য উপযোগী।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে ধীরে ধীরে গ্রহটিকে
কার্বন ডাই অক্সাইড আচ্ছন্ন করে ফেলে আর এর
অভ্যন্তরের পানি কমতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞরা এর
সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের
প্রভাবকে দায়ী করছেন।
রহস্যময় গ্রহ শুক্রের বিষয়ে এতো সব তথ্য একদিনে
মানুষের কাছে আসেনি। অনেকদিন ধরে অনেক
গবেষণা আর দু’ ডজনের মত মিশন চালানোর পরে
মানুষ জানতে পেরেছে শুক্র গ্রহ সম্পর্কে। যার মধ্যে
ছিল ৮টি অরবিটার অর্থাৎ কক্ষপথে ঘুর্ণনকারী যান
এবং ১০টি অবতরণকারী যান। বিভিন্ন সময়ে
পরিচালিত মিশনগুলো থেকে জানা যায়, শুক্রের
বায়ুমন্ডল কোনোভাবেই আমাদের বায়ুমন্ডলের মতো
নয়। গ্রহটির বায়ুমন্ডলের শতকরা ৯৭ ভাগই কার্বন ডাই
অক্সাইড। যা অত্যন্ত ঘন এবং এর অভ্যন্তরীণ
তাপমাত্রা ৮৬৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪৬২ ডিগ্রি
সেলসিয়াস)।
বিজ্ঞানী কস্তা বলেন, ‘জিইইআর এক্সপেরিমেন্ট
আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করেছে শুক্রের
ভেতরকার বায়ুমন্ডল কতটা অদ্ভুত। যা মূলত একধরনের
অত্যন্ত জটিল প্রকৃতির তরল মিশ্রণ। এই অত্যন্ত জটিল
প্রকৃতির তরল মিশ্রণ খুবই ঘন এবং একইসঙ্গে তরল ও
বায়বীয় পদার্থের মতো আচরণ করে।
তার মতে, ‘শুক্রের পৃষ্ঠে হাঁটলে আপনার মনে হবে
যেন আপনি পানিভর্তি পুকুরের মধ্য দিয়ে হেঁটে
বেড়াচ্ছেন’।
শুক্র গ্রহের বায়ুচাপ হল ৩,০০০ ফুট অর্থাৎ ৯১৪ মিটার
গভীর পানির তলার চাপের সমান! ঘন্টায় মাত্র
কয়েক মাইল বেগের গরম বাতাসের ঝাপটা আপনাকে
ঠেলে নিয়ে যেতে পারে অজানা গন্তব্যে। আর হ্যাঁ,
এই বাতাস কঠিন সীসাকে তরলে রূপান্তরিত করার
মতো যথেষ্ট গরম।
‘এই অবস্থা আসলে অনুমান করা কঠিন। আমার মনে হয়
এটা নিজেকে উত্তপ্ত প্রেসার কুকারের আটকা পড়া
অবস্থার মতো একটা ব্যাপার’- কস্তা বলেন।
কি ভাবছেন? শুক্রে ঘুরতে গিয়ে কেবল সিদ্ধ হয়েই
মরতে হবে? না, ঘটনার এখানেই পরিসমাপ্তি নয়।
শুক্রের বায়ুমন্ডলে আরো আছে অতিমাত্রায়
বিষাক্ত হাউড্রোজেন ফ্লুওরাইড, হাইড্রোজেন
ক্লোরাইড, হাইড্রোজেন সালফাইড এবং
সালফিউরিক এসিড। যা আপনার সুন্দর শরীরটাকে
নিমেষে গলিয়ে ফেলবে অথবা এদের বিষে ভরে
যাবে আপনার হাড়মাংস।
এছাড়াও পৃথিবীর মতো পানির বাষ্পে ঘনীভূত হওয়া
মেঘের বদলে শুক্রে রয়েছে সালফিউরিক এসিড
বাষ্পীভূত হওয়া মেঘ।
ছবি। যা ‘ভ্যালেরা-১৩’ এর মাধ্যমে তোলা
এবং পরবর্তীতে রঙিন করা হয়েছিল
সৌরজগতে শুক্র হল এমনই একটি গ্রহ, যা কখনোই
মানুষের পক্ষে ভ্রমণযোগ্য নয়।
এমনকি অতি শক্তিশালী রোবটিক অনুসন্ধানও
শুক্রের মাটিতে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। সর্বশেষ
রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থা পরিচালিত রোবটিক যান
‘ভেনেরা-১৩’ শুক্রের পৃষ্ঠে ভস্মীভূত হওয়ার আগে
মাত্র দুই ঘণ্টা টিকে ছিল!
নাসা গ্লেন রিসার্চ সেন্টারে কর্মরত ম্যাটেরিয়াল
সায়েন্টিস্ট এবং কেমিস্ট গুস্তাভো কস্তা বিজনেস
ইনসাইডারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘শুক্র
গ্রহের পৃষ্ঠ খুবই ক্ষয়িষ্ণু। এটা যেন পৃথিবীর
পাতালপুরীর মতো। এর পৃষ্ঠ খুবই রূঢ় প্রকৃতির।’
কস্তার দায়িত্বে গ্লেন এক্সট্রিম এনভায়রনমেন্টস
রিগ (জিইইআর) নামক প্রজেক্টে একটা ১৪ টন ওজনের
স্টিল চেম্বারের গলনের ফলে পৃথিবীতে এমন রূক্ষ্ম,
দাহ্য এবং অসহ্য পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়। নাসার
এই প্রজেক্টটি একটি বিধ্বংসী রূপ ধারণ করে।
২০০৪ সালে নাসা প্রথমবারের মতো পৃথিবীতে গ্লেন
এক্সট্রিম এনভায়রনমেন্টস রিগ (জিইইআর)
প্রজেক্টটি পরিচালনা করে। যেখানে কস্তা এবং
অন্যান্য গবেষকরা বিভিন্ন ধাতু, সিরামিক, তার,
জাল, ধাতুর লেপন, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক দ্রব্যাদি
কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করা ওই দুঃসহ পরিবেশে ছেড়ে
দিয়ে পরীক্ষা করছিলেন এগুলোর মধ্যে কোনগুলো
টিকে থাকতে পারে আর কোনগুলোই বা পুরোপুরি
ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
শুক্র গ্রহকে ‘পৃথিবীর ভয়ংকর দর্শন জমজ’ বলা হয়। এর
কারণ হল এর আকৃতি। সূর্য থেকে দ্বিতীয় নিকটবর্তী
গ্রহ শুক্রের আকৃতি প্রায় পৃথিবীর মতোই! এটি আসলে
পাথরে পরিপূর্ণ। পৃথিবীর তুলনায় ৮২ শতাংশ বেশি
ভারী এবং এর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর তুলনায় ৯০
শতাংশ। অর্থাৎ আপনার ওজন যদি পৃথিবীতে ১৫০
পাউন্ড হয় তবে শুক্রে সেটা ১৫ পাউন্ড কম অনুভূত
হবে।
তবে মজার ব্যাপার হল, শুক্রের কিছু অংশে
বসবাসযোগ্য সুস্থির আবহাওয়াও বিরাজমান। এই
গ্রহটির কক্ষের কিছু অংশে তরল অবস্থায় পানি
থাকতে পারে ধারণা করেন বিজ্ঞানীরা। কোনো
কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে, ২ বিলিয়ন বছর
আগে এখানে উষ্ণ এবং অগভীর সমুদ্রও ছিল যা ছিল
জীবনধারণের জন্য উপযোগী।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে ধীরে ধীরে গ্রহটিকে
কার্বন ডাই অক্সাইড আচ্ছন্ন করে ফেলে আর এর
অভ্যন্তরের পানি কমতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞরা এর
সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের
প্রভাবকে দায়ী করছেন।
রহস্যময় গ্রহ শুক্রের বিষয়ে এতো সব তথ্য একদিনে
মানুষের কাছে আসেনি। অনেকদিন ধরে অনেক
গবেষণা আর দু’ ডজনের মত মিশন চালানোর পরে
মানুষ জানতে পেরেছে শুক্র গ্রহ সম্পর্কে। যার মধ্যে
ছিল ৮টি অরবিটার অর্থাৎ কক্ষপথে ঘুর্ণনকারী যান
এবং ১০টি অবতরণকারী যান। বিভিন্ন সময়ে
পরিচালিত মিশনগুলো থেকে জানা যায়, শুক্রের
বায়ুমন্ডল কোনোভাবেই আমাদের বায়ুমন্ডলের মতো
নয়। গ্রহটির বায়ুমন্ডলের শতকরা ৯৭ ভাগই কার্বন ডাই
অক্সাইড। যা অত্যন্ত ঘন এবং এর অভ্যন্তরীণ
তাপমাত্রা ৮৬৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪৬২ ডিগ্রি
সেলসিয়াস)।
বিজ্ঞানী কস্তা বলেন, ‘জিইইআর এক্সপেরিমেন্ট
আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করেছে শুক্রের
ভেতরকার বায়ুমন্ডল কতটা অদ্ভুত। যা মূলত একধরনের
অত্যন্ত জটিল প্রকৃতির তরল মিশ্রণ। এই অত্যন্ত জটিল
প্রকৃতির তরল মিশ্রণ খুবই ঘন এবং একইসঙ্গে তরল ও
বায়বীয় পদার্থের মতো আচরণ করে।
তার মতে, ‘শুক্রের পৃষ্ঠে হাঁটলে আপনার মনে হবে
যেন আপনি পানিভর্তি পুকুরের মধ্য দিয়ে হেঁটে
বেড়াচ্ছেন’।
শুক্র গ্রহের বায়ুচাপ হল ৩,০০০ ফুট অর্থাৎ ৯১৪ মিটার
গভীর পানির তলার চাপের সমান! ঘন্টায় মাত্র
কয়েক মাইল বেগের গরম বাতাসের ঝাপটা আপনাকে
ঠেলে নিয়ে যেতে পারে অজানা গন্তব্যে। আর হ্যাঁ,
এই বাতাস কঠিন সীসাকে তরলে রূপান্তরিত করার
মতো যথেষ্ট গরম।
‘এই অবস্থা আসলে অনুমান করা কঠিন। আমার মনে হয়
এটা নিজেকে উত্তপ্ত প্রেসার কুকারের আটকা পড়া
অবস্থার মতো একটা ব্যাপার’- কস্তা বলেন।
কি ভাবছেন? শুক্রে ঘুরতে গিয়ে কেবল সিদ্ধ হয়েই
মরতে হবে? না, ঘটনার এখানেই পরিসমাপ্তি নয়।
শুক্রের বায়ুমন্ডলে আরো আছে অতিমাত্রায়
বিষাক্ত হাউড্রোজেন ফ্লুওরাইড, হাইড্রোজেন
ক্লোরাইড, হাইড্রোজেন সালফাইড এবং
সালফিউরিক এসিড। যা আপনার সুন্দর শরীরটাকে
নিমেষে গলিয়ে ফেলবে অথবা এদের বিষে ভরে
যাবে আপনার হাড়মাংস।
এছাড়াও পৃথিবীর মতো পানির বাষ্পে ঘনীভূত হওয়া
মেঘের বদলে শুক্রে রয়েছে সালফিউরিক এসিড
বাষ্পীভূত হওয়া মেঘ।
Hasan