Thread Rating:
  • 0 Vote(s) - 0 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5

" ভালোবাসার অনেক রং "

Googleplus Pint
#1
ফারিহা তখন ক্লাস সেভেনে পড়তো।আর আমি এইসএসসি
পরীক্ষার্থী। মেয়েটাকে দেখলে বুকের ভিতরে কেমন জানি
করতো।মনে মনে ভাবতাম,হয়তো তাকে আমি ভালোবাসি।
.
ভালোবাসি,অনেক বেশি ভালোবাসি। ফারিহা আমার মামাতো
বোন।দেখতে খুব কিউট।ফারিহার সাথে আমার বিয়ে আগে
থেকেই ঠিক করা।মা আর মামা মিলে ঠিক করে রেখেছেন।
তাইতো বটগাছের ছায়ার মতো ফারিহাকে আমি আগলে রাখি।
.
আমি ভার্সিটিতে চান্স পেলাম।ভাগ্য ভালো নিজ শহরের
ভার্সিটিতেই হয়ে গেছে।ফারিহা ক্লাস এইটে।আমি একদিন ওকে
জিজ্ঞেস করলাম,
- ফারিহা আমি তোকে ভালোবাসি।(আমি)
- সেটাতো জানি শিশির ভাই।(ফারিহা)
- তুই কি কাউকে ভালোবাসিস?
- নাহ।তবে তোমাকে আমার ভীষণ ভালো লাগে।
- (মুচকি হেসে) তাই বুঝি?
.
আমার হাস্যকর মুখে দেখে ফারিহাও একটু হেসে দিলো।আমি
তার সঙ্গ দিলাম।
- শোন, এইসব ভালোবাসা বাসি পরে।আগে তোকে মন দিয়ে
লেখাপড়া করতে হবে।
- জি শিশির ভাই।
.
ফারিহাও জানতো আমি ওকে কতটা ভালোবাসি।ফারিহাও
আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসতো।মাঝে মাঝে দুজনে পার্কে
ঘুরতে যাই।দুজন দুজনের হাতটা শক্ত করে ধরতাম।যেন পৃথিবীর
কোন শক্তিই আমাদের আলাদা করতে না পারে।
.
আমার মা ফারিহার সাথে এভাবে চলাফেরা দেখে মুচকি হাসেন।
মাঝে মাঝে ফারিহাকে দেখে আম্মু ওকে বলে
- ফারিহা তৈরি থেকো,তোমাকে আমার ঘরের বউ করে নিয়ে
যাবো।
আম্মুর এমন কথায় ফারিহা লজ্জাবতীর ন্যয় লজ্জা পেয়ে
ঘরের দরজা বন্ধ করে দিতো।
আমি হাসতাম।
.
এভাবে সময় চলতে থাকলো তার আপন গতিতে। ফারিহা
এসএসসি পরীক্ষা দিলো।আমি প্রতিদিন বাইকে করে নিয়ে
যেতাম আর নিয়ে আসতাম।ফারিহা আমার পিছনে বসে নানান
রকম প্রশ্ন করেই যেতো।আর আমি হাসি মুখে উত্তর দিতাম।
.
মা বলেছিলো, ফারিহা এইসএসসি পাশ করার পর আমাদের শুভ
কাজটা শেষ করবেন।ততদিনে আমার অনার্স শেষ হয়ে যাবে।
আমি মনে মনে খুশি হতাম।কারন ফারিহা দেখতে যেমন সুন্দরী
ছিলো,তার চেয়ে বেশি সুন্দর ছিলো তার মিষ্টি কন্ঠ।
.
এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট করে কলেজে ভর্তি হলো।
প্রায়শ আমি ওকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে আসতাম।ফারিহা
আমার সাথে সব কিছু শেয়ার করতো।আর আমি আমারটাও।
.
কলেজে কয়েকটা ছেলে ফারিহাকে প্রোপজ করেছে।ফারিহার
একটাই উত্তর,
- সরি ভাইয়া,আমি বিবাহিতা।আমার স্বামী আছে।
স্বামী আছে শুনে ছেলেগুলো নাকি লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যেত।
ফারিহা আমাকে এসব বললো আর মিষ্টি হাসি হাসতো।
.
কলেজের বান্ধবীরা জানতো ফারিহা বিবাহিতা।মাঝে মাঝে ওর
বান্ধবীরা আমাকে দুলাভাইয়ের সম্মান দিতো।আমি মুচকি
হেসে তাদের ফুচকা,চটপটি খাওয়াতাম।হয়তো এসবের লোভে
বেশি করে বলতো।
.
এভাবে কলেজ লাইফটা পার করে ফেললো ফারিহা।আমিও
অনার্স কম্পিলিট করলাম।মনে মনে খুশি হলাম,কারন একটাই।
সেই শুভ দিন আগত।মাঝে মাঝে ফারিহা আমাকে লজ্জা দিতো
এই কারনে যে,আমি ওকে তুই করে বললাম।অবশ্য পরে
অভ্যাসটা পরিবর্তন করে ফেলেছিলাম।
.
মা মামার সাথে আমাদের বিয়ে নিয়ে কথা বলা শুরু করেছে।
নিজের বিয়ের কথা শুনে কিছুটা বিব্রত আমি।তবুও খুশি।সেই
খুশি চোটে ফারিহাকে ফোন দিলাম,
- আমাদের বিয়ের তারিখ ঠিক হয়ে গেছে।(আমি)
- মহারাজ কি খুব খুশি নাকি? (ফারিহা)
- কি মনে হয় তোমার?
- মনে হয়তো।চলো কালকের দিনটা সেলিব্রেট করি?
- কোথায় যাবা বলো?
- কোন অজানা রাজ্যের রাজার বাগানে।
- আচ্ছা।
.
পরদিন ফারিহাকে নিয়ে বের হলাম। বাড়ি থেকে নোটিশ দিয়ে
দিলো,"বিয়ের আগে আজকেই শেষ ঘোরাঘুরি। "
আমরা হাসিমুখে মনে নিলাম।
.
আমি ড্রাইভ করছি।ফারিহা আমার ঘাড়ে হাত দিয়ে আছে।
চুলগুলো উড়ছিলো।বেশ সুন্দর রোমান্টিক দৃশ্য।
শুধু আর কয়েকটা দিনে প্রতিক্ষা।ভাবছিলাম ফারিহাকে নিয়ে।
আর কিছু মনে নেই।শুধু একটি চিৎকার ছাড়া।
.
চোখদুটো যখন খুললাম তখন আমি হাসপাতালের বেডে।আমার
পাশে বাবা আর মা।মামা মামীও ছিলেন।
আমি দ্রুত উঠতে চাইলাম।কিন্তু ডাক্তার আমাকে নিষেধ
করলেন।আমি ইশারা দিয়ে ফারিহার কথা জানতে চাইলাম।
আমাকে বলা হলো,সেও আছে।
.
অজ্ঞান অবস্থায় ৪ দিন পার করে দিয়েছি। বারবার ফারিহার
কথা বলছিলাম।অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম।কিন্তু আমাকে
সান্তনা দিয়ে রাখা হচ্ছিলো।
.
সেদিন আমি খুব করে বায়না ধরলাম। কিন্তু কোন কাজ হলো
না।শেষে কসম কাটলাম,যদি আমাকে ফারিহার কাছে নিয়ে না
যাওয়া হয় তবে আমি পানি অবধি স্পর্শ করবে না।অবশেষে
আমাকে হুইল চেয়ারে নিয়ে যাওয়া হলো মামা বাড়িতে।
.
বাড়ির সামনে একটা নতুন কবরের জন্ম।আস্তে এগুতো
থাকলাম সামনের দিকে।কবরটার সামনে লেখা, "ফারিহা
আহমেদ"। চোখকে যেন বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।ঝরঝর
করে হাউমাউ করতে লাগলাম। আমাকে কেউ কান্না থামাতে
বাঁধা দিলেন না।কাঁদতেই থাকলাম।
.
পরে জানতে পেরেছিলাম,সেইদিন এক্সিডেন্টের সময়ই ফারিহা
মারা যায়।আমি ছিটকে অন্যদিকে চলে গেছিলাম বলে বেঁচে
গিয়েছিলাম।ট্রাক ধাক্কা দিয়েছিলো আমাদের।পরে জানতে
পারি ট্রাকের ড্রাইভার নেশা করে ট্রাক চালাচ্ছিলো।
.
ভুলতে পারি নি ফারিহাকে।সেই হাসি,সেই চেহারা সবসসয়ই
ভাসতে আমার সামনে।মাঝে মাঝে যাই সেই কবরের পাশে।
দোয়া করি।দান করি, সদকা করি ফারিহার নামে।আল্লাহ যেন
পরপারে তাকে ভালো রাখে।সেই দিবসে আমি ফারিহার হতে
চাই।যেখানে থাকবো অনন্ত কাল।
Reply


Possibly Related Threads…
Thread Author Replies Views Last Post
  MonopolyGoStickers - How to Organize and Track Your Monopoly Go Stickers Collection Emberly 0 58 04-21-2025, 03:46 PM
Last Post: Emberly
  একটি না পাওয়া ভালোবাসার সমাপ্তি Abir 15 6,597 01-31-2025, 06:02 PM
Last Post: atlas77
  [গল্প] একটা গল্প হতে পারত Abir 0 2,038 01-02-2018, 04:39 PM
Last Post: Abir
  [গল্প] তাসনিম লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে ছেলেটাকে Abir 0 2,549 01-02-2018, 04:36 PM
Last Post: Abir
  [গল্প] ছোবল Abir 0 2,125 01-02-2018, 04:34 PM
Last Post: Abir
  অজানা এক অনুভূতি লিখা: ইচ্ছে ঘুড়ি Abir 0 2,173 01-02-2018, 04:33 PM
Last Post: Abir
  লাভ ডায়রি: যে ভালোবাসায় হার মেনে যায় সব দুরত্ব Hasan 0 2,131 08-29-2017, 04:17 PM
Last Post: Hasan
  [Exclusive] ভালোবাসা অমর হয়ে রয় মোঃ আলমামুন আলম আরজু 0 2,215 03-09-2017, 11:09 AM
Last Post: মোঃ আলমামুন আলম আরজু
  গল্পঃ প্রেম নেই Hasan 0 2,667 03-01-2017, 06:48 PM
Last Post: Hasan
  গল্প: আমি নিষ্ঠুর, আমি পাষণ্ড Hasan 0 2,290 02-22-2017, 11:24 AM
Last Post: Hasan

Forum Jump:


Users browsing this thread: 1 Guest(s)