Thread Rating:
  • 0 Vote(s) - 0 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5

[গল্প] তাসনিম লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে ছেলেটাকে

Googleplus Pint
#1
তাসনিম লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে ছেলেটাকে।
বলা চলে ছেলেটার পেছন পাশটা। আরো স্পষ্ট
করে বললে বলতে হয় ছেলেটার চুলগুলো। বাসের
জানালা দিয়ে ঢোকা সকালের স্নিগ্ধ
বাতাসে তাসনিমের নিজের চুলগুলোই উড়ছে।
চোখের উপর বারবার চুল পড়ায় রীতিমত বিরক্ত
হচ্ছে সে। তবুও ছেলেটার চুলে চোখ পড়তেই বিরক্ত
উধাও হয়ে যাচ্ছে। ব্যপারটা তাসনিমের
ভালো লাগছে। "উফ"
বাড়ী থেকে আজ সকালে ফোন এসেছিলো।
জরুরী তলবে ডাকা হয়েছে তাকে। কারনটা স্পষ্ট
করে বলা না হলেও ৩ বছরের ছোট
ভাগ্নী সামিয়াকে ফোন
করে কারনটা জানতে পেরেছে তাসনিম। আজ
রাত্রে ছেলেপক্ষ তাকে দেখতে আসবে।
হঠাৎ ঝাঁকি খেয়ে বাসটা থেমে যায়।
জানতে পারে বাসের চাকা পাংচার। সারতে একটু
সময় নেবে। খুব বিরক্ত লাগে তাসনিমের।
এইতো আর মিনিট বিশেক পরেই সিরাজগঞ্জ।
প্রায় সবাই নেমে গেছে বাস থেকে। ভীড়ের
মাঝে সেই অদ্ভুত সুন্দর চুলের
অধিকারী ছেলেটাকেও দেখা যাচ্ছে। উচ্চতায়
পাঁচ ফুট নয় হবে। খারাপ না।
মনে মনে ভাবলো তাসনিম।
একা বাসে বসে থাকতে মোটেও
ভালো লাগছে না তাসনিমের।
কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না ।
কিছুক্ষণ পরই ছেলেটাকে বাসের
দিকে আসতে দেখলো সে। ছেলেটা বাসে উঠার
সময় প্রথমবারের মত স্পস্টভাবে সামন
থেকে তাকে দেখলো তাসনিম। কেমন জানি এক
অদ্ভুত মুগ্ধটা পেয়ে বসলো তাসনিমকে।
অবাক হয়ে ছেলেটাকে দেখছে তাসনিম। চোখ
দুটি এত সুন্দর কেনো। নিজেকেই প্রশ্ন
করলো তাসনিম। ওর ইচ্ছে করছে মায়াকারা ওই
গভীর চোখ দুটিতে ডুব দিতে।
তাসনিমকে অবাক করে দিয়ে তার দিকে চেয়েই
হাসছে ছেলেটা। অপ্রস্তুত হয়ে গেলো তাসনিম।
চোখ নামিয়ে নিলো।
ছেলেটা হঠাৎ তাসনিমকে উদ্দেশ্য
করে জিজ্ঞাসা করে উঠলো, 'আর খানিকটা মাত্র
পথ। তার মধ্যে একি ঝামেলা বলুন তো ?'
তাসনিম হঠাৎ এই প্রশ্ন শুনে হকচকিয়ে গেছে।
ছেলেটার কন্ঠস্বর এত চমৎকার, এত সুন্দর.......!!
কি জবাব দেবে ভেবে পেলো না তাসনিম। তার
সর্দি লেগেছে। যে বাজে শোনাচ্ছে কন্ঠস্বর। এমন
অমৃতসম কন্ঠের সামনে তার কথা বলতেও
লজ্জা লাগছে। শুধু মিষ্টি করে একটু
হেসে মাথা নামিয়ে ফেললো সে।
ছেলেটা একটু হেসে আবার বললো,
'চুলটা বেঁধে আসলেই পারতেন।'
খানিকটা লজ্জা পেয়ে আবার শুধু
মিষ্টি করে হেসে দিলো তাসনিম।
না হেসে উপায়ও নেই। মুখে তো কথা নেই ।
সর্দি যা লেগছে। বারবার টিস্যুর স্মরনাপন্ন
হতে হচ্ছে তাকে।
এর মধ্যে বাসের লোকজন আসতে লাগলো।
বেশি সময় লাগেনি বাস ঠিক করতে। বাস
আবারো চলা শুরু করলো। আবারো সেই বাতাস।
কিন্তু কেনো যেনো তাসনিম আর
তাকাতে পারছিলো না ছেলেটার সুন্দর চুলের
দিকে। বারবার হাত দিয়ে নিজের চুলগুলোই ঠিক
করতে লাগলো সে। মনে মনে ভাবলো সত্যিই
তো তাড়াহুড়ায় চুল বাঁধা হয়নি। কি রকম
বাজে দেখাচ্ছে এলোমেলো চুল কে জানে।
বাস থামলে তাসনিম
কোনোদিকে না তাকিয়ে সোজা নেমে গেলো।
রিক্সা নিয়ে বাসায় পৌছাতে পৌছাতে দুপুর
পেরিয়ে গেল। বাড়িতে পৌঁছানোর সাথে সাথেই
তার কাছে সামিয়া দৌঁড়ে এলো।
সম্পর্কে খালা ভাগ্নি হলেও বান্ধবির মতই ওদের
সম্পর্ক টা।
'জানিস আজ বাস এ এতো সুন্দর
একটা ছেলে দেখেছি,চুলগুলো কি যে সুন্দর '
একে একে পুরো কাহিনি বলল ও সামিয়া কে।
সব
শুনে সামিয়া হাসতে হাসতে গড়াগড়ি দিতে লাগল।
এতো হাসছে কেন মেয়েটা ভেবে পেল
না তাসনিম।
'পাগলের মতো হাসছিস কেন?'
'ওমা হাসব না। খালামনি আমার এই প্রথম ক্রাশ
খেয়েছে। খেল তো খেল সেদিন যেদিন
তাকে পাত্র দেখতে আসবে।হিহিহি।'
চমকে উঠল যেন তাসনিম।সত্যি তো।ছেলেটার
কথা এতোই ভাবছিল যে ভুলেই গিয়েছিল কেন
সে আজ বাড়ি এসেছে।
মনে পড়তেই নিজের ওপর রাগ লাগতে শুরু করল তার।
কেন সে বারবার ছেলেটার কথা ভাবছে।জোর
করে দুর করে দিল ছেলেটার মুখ।
----
সন্ধার কিছু আগে পাত্র পক্ষ এলো।কিছুক্ষণ পর
তাসনিম এর ডাক পড়ল নিচে।
সামিয়া তাকে হাল্কা করে সাজিয়ে দিয়েছে।
জলপাই কালার শাড়ির সাথে হাত বোঝাই
চুরি,পনিটেইল করা চুল আর কপালে ছোট্ট টিপ।
কাজল দিয়ে দিতে চেয়েছিল সামিয়া কিন্তু
তাসনিম মানা করে দেয়।কেন যেন মনে হচ্ছে আজ
তাকে কাঁদতে হবে ।
চায়ের ট্রে হাতে নিচে নামল তাসনিম।ওপর
থেকে খেয়াল করেছে তিনজন এসেছে।সামিয়ার
থেকে জানা ছেলে আর ছেলের মা বাবা।
চা নামিয়ে রেখে সালাম দিল তাসনিম। ছেলের
মা তাকে বসতে বলল।মাথা নিচু
করে বসে আছে সে।
'কেমন আছ গো মা?'
ছেলের বাবার প্রশ্নে মুখ তুলে তাকাল তাসনিম।
'জি আলহামদুলিল্লাহ ' উত্তর
করতে করতে আড়চোখে ছেলের দিকে তাকাল
তাসনিম।
চোখ স্থির হয়ে গেল তার।
এ কি দেখছে সে।এই তো সেই চুল,সেই চোখ।
হ্যাঁ বাসে দেখা সেই ছেলেটিই।
ছেলেটিও তার
দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে।
মাথা আবারো নামিয়ে ফেলল তাসনিম।
মাথা রিতিমত ঘুরছে।এ কি করে সম্ভব।এতো ভাল
ভাগ্য তার?
'মেয়ের সম্পর্কে তো সবি জানি।দেখার
বাকি ছিল শুধু দেখে নিলাম।লক্ষী মা আমাদের।
আমাদের বিশেষ কিছু আর বলার নেই।
তবে ছেলে মেয়ে যদি আলাদা কথা বলতে চায়
তবে এখন বলতেই পারে'।
ছেলের বাবার কথায় আবারো চমকে মুখ
তুলে তাকাল তাসনিম।
-----
কিছুক্ষণ পর,তাসনিম এর রুমের বারান্দায়
দাঁড়িয়ে দুজন।
'অবাক হয়েছেন আমাকে দেখে? '
-'হুম'আপনি হননি বুঝি? '
: ' না তো।প্লান করেই তো আপনার
বাসে উঠেছিলাম।এ জন্য আপনার
ভাগনি সামিয়াকে থ্যাংকস,অনেক হেল্প
করেছে আমাকে।'
হা হয়ে গেল তাসনিম। সামিয়া টা এত্তো পাজি।
কি বলবে ভেবে পেল না সে।
'চলুন নিচে যাওয়া যাক।বাতাস বইছে আর আপনার
মেবি ঠান্ডা লেগেছে।' বলতে বলতে হঠাৎ আংগুল
দিয়ে তাসনিমের চুল এলোমেলো করে দেয়
ছেলেটা।শিউরে ওঠে তাসনিম।
'আপনার এলোমেলো চুলের প্রেমে পরে গেছিলাম
তখন।মাঝে মাঝে আপনার
পরিপাটি করে আচড়ানো চুল
এলোমেলো করে দিলে কি খুব রাগ করবেন? '
উত্তরে মাথা টা হাল্কা নেড়ে নিচু হয়ে যায়
তাসনিম। ছেলেটা কি জানে তাসনিম নিজেও
ছেলেটার চুলের প্রেমে পরেছে।কেন যেন খুব
কান্না পাচ্ছে তার।আনন্দের কান্না। ভাজ্ঞিস
চোখে কাজল আঁকা হয়নি।
.
----Wamia Nahar
post:হেমন্তে বর্ষায় আমি
Reply


Possibly Related Threads…
Thread Author Replies Views Last Post
  একটি না পাওয়া ভালোবাসার সমাপ্তি Abir 14 5,006 01-11-2024, 03:42 AM
Last Post: Jennifer
  [গল্প] একটা গল্প হতে পারত Abir 0 1,894 01-02-2018, 04:39 PM
Last Post: Abir
  [গল্প] ছোবল Abir 0 1,987 01-02-2018, 04:34 PM
Last Post: Abir
  অজানা এক অনুভূতি লিখা: ইচ্ছে ঘুড়ি Abir 0 2,036 01-02-2018, 04:33 PM
Last Post: Abir
  লাভ ডায়রি: যে ভালোবাসায় হার মেনে যায় সব দুরত্ব Hasan 0 1,984 08-29-2017, 04:17 PM
Last Post: Hasan
  [Exclusive] ভালোবাসা অমর হয়ে রয় মোঃ আলমামুন আলম আরজু 0 2,080 03-09-2017, 11:09 AM
Last Post: মোঃ আলমামুন আলম আরজু
  গল্পঃ প্রেম নেই Hasan 0 2,533 03-01-2017, 06:48 PM
Last Post: Hasan
  গল্প: আমি নিষ্ঠুর, আমি পাষণ্ড Hasan 0 2,157 02-22-2017, 11:24 AM
Last Post: Hasan
  ভাল লাগায় মোড়ানো ভালবাসা Hasan 0 2,716 02-22-2017, 11:23 AM
Last Post: Hasan
  গল্প : কল্পনা বিলাস। Hasan 0 2,145 02-22-2017, 11:23 AM
Last Post: Hasan

Forum Jump:


Users browsing this thread: 1 Guest(s)