02-22-2017, 11:24 AM
গল্প: আমি নিষ্ঠুর, আমি পাষণ্ড
লেখা: Julfikar Hossen
.
বিয়ের আগের দিনের ঘটনা :
কালকে একটা মেয়ে আমাকে বলেছিল, আমি নাকি
পৃথিবীর সব থেকে নিষ্ঠুর,পাষণ্ড মানুষ। আমি কোনো
কথা বলিনি। এমন কি তার পথ চেয়ে দেখিনি, সে
কেমন ভাবে হাঁটতে হাঁটতে লোকালয়ের মাঝে
হারিয়ে গেছে। একটুও দেখতে ইচ্ছে করেনি । এটা
কি আমার নিষ্ঠুরতার পরিচয় না? যাকে নিয়ে সপ্ন
দেখেছিলাম তাকে আজ "একটি মেয়ে" সম্বোধন
করছি। এতে কি প্রমাণ হয় না আমি নিষ্ঠুর? হ্যা
আমি সত্যি নিষ্ঠুর।
.
মেয়েটি নীপা। এসেছিল পালিয়ে যাবার
জন্য,আমাকে বিয়ে করে মা বাবা, সমাজ ও সন্মান
এর কথা না ভেবে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল। আমি
না বলে দিয়েছিলাম।কারন আমি নিষ্ঠুর। আমি
হয়তো নীপাকে সুখে রাখতে পারতাম,যেমনটি সে
চেয়েছিল। কিন্তু আমি চাই না সে সুখ।যে সুখ
সমাজের চোখে খারাপ।যে সুখ জন্মদাতা বাবা
,গর্ভধারিণী মা কে কাঁদাতে পারে। যে সুখ
তিলেতিলে গোড়ে ওঠা সন্মান কে এক নিমিষে
ধূলিকণায় পরিণত করে।চাই না সে সুখ। অনেকেই
হয়তো তিরস্কার করে বলবেন.. মেয়েটিকে সপ্ন
দেখিয়েছিলি ক্যান? সপ্ন দেখানোর আগে কোথায়
ছিল তোর সমাজ চেতনা,সন্মান? এই প্রশ্নের উত্তর
আমার কাছে নেই।
তবে আমি যতেষ্ঠ চেষ্টা করেছিলাম। মা-বাবা কে
দিয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তার মা-
বাবার এক কথা "তাঁদের মেয়ের যেখানে বিয়ে ঠিক
হয়েছে, সেখানেই সুখে থাকবে।এ নিয়ে কাওকে
ভাবতে হবে না। " যাঁদের মনে মেয়ের সুখ থাকা
নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই, মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবন
নিয়ে যাদের এত বিশ্বাস। তাঁদের আর কিভাবে
আটকাব? তাঁদের বিশ্বাস কে আরও মজবুত করতে
আমি নিষ্ঠুর হয়েছি।নীপাকে বলিনি " আমি নিষ্ঠুর
না। তোমার বাসায় প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলাম।
অনেক চেষ্টা করেছি।কিন্তু তোমাকে পাই নি।
ক্ষমা করে দিও"। কঠোর ভাষায় বলেছি " যা হয়েছে,
সেটা অতীত। আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারব না।"
কথা গুলো বলার সময় আমার চোখে ভালবাসার ছাপ
ছিল না,ছিল নিষ্ঠুর একজন পুরুষের ছাপ।আমি
চেয়েছিলাম সে আমাকে ঘ্রিণা করুক,ভূলে যাক,মা-
বাবার ইচ্ছে পূরণ করুক।এতে যদি আমি নিষ্ঠুর হয়ে
থাকি, তো আমি নিষ্ঠুর।ও অনেক কেঁদেছিল ,আমি
কাঁদি নি।কাঁদতে চাই ও না।
.
বিয়ের দিনের ঘটনা :
এখন প্রায় সন্ধা।আমি দাঁড়িয়ে আছি নীপার বাসা
থেকে একটু দূরে, রাস্তার পাশে। কান্নার শব্দ শোনা
যাচ্ছে। কিন্তু এই কান্না কিছু সময়ের, কিছুদিনের।
দুঃখ গুলো জল হয়ে বের হচ্ছে। যদি সৃষ্টিকর্তা চোখ
থেকে জলের বদলে রক্ত বের হওয়ার নিয়ম করতেন,
যদি দুঃখের তীব্রতা অনুযায়ী সেই রক্ত গাঢ় হতো।
তাহলে নীপাদের চোখ দিয়ে কেমন রক্ত বের
হতো,হিসাব করা বেশ কঠিন। এমন নিয়ম হলে হয়তো
বুঝতে পারতাম নীপা আমাকে ছেড়ে সুখে থাকবে
কি-না।
.
কিন্তু আমি যদি নীপাকে নিয়ে পালাতাম তাহলে
এই দুঃখগুলো পাথর হয়ে বেধে থাকত হৃদপিন্ডের
উপরে। তখন দুঃখগুলো তরল হয়ে বের হতো না।
.
সাক, সাক করে রাস্তা দিয়ে কয়েকটা গাড়ি চলে
গেল। বুকের ভেতরে কিছু হলো কি-না বুঝতে পারলাম
না।তবে চোখ দুটো ব্যথা করছিল। কিন্তু তরল বস্তুটা
বের হলো না। কারন আমি নিষ্ঠুর, আমি পাষণ্ড।
Repost:হেমন্তে বর্ষায় আমি
লেখা: Julfikar Hossen
.
বিয়ের আগের দিনের ঘটনা :
কালকে একটা মেয়ে আমাকে বলেছিল, আমি নাকি
পৃথিবীর সব থেকে নিষ্ঠুর,পাষণ্ড মানুষ। আমি কোনো
কথা বলিনি। এমন কি তার পথ চেয়ে দেখিনি, সে
কেমন ভাবে হাঁটতে হাঁটতে লোকালয়ের মাঝে
হারিয়ে গেছে। একটুও দেখতে ইচ্ছে করেনি । এটা
কি আমার নিষ্ঠুরতার পরিচয় না? যাকে নিয়ে সপ্ন
দেখেছিলাম তাকে আজ "একটি মেয়ে" সম্বোধন
করছি। এতে কি প্রমাণ হয় না আমি নিষ্ঠুর? হ্যা
আমি সত্যি নিষ্ঠুর।
.
মেয়েটি নীপা। এসেছিল পালিয়ে যাবার
জন্য,আমাকে বিয়ে করে মা বাবা, সমাজ ও সন্মান
এর কথা না ভেবে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল। আমি
না বলে দিয়েছিলাম।কারন আমি নিষ্ঠুর। আমি
হয়তো নীপাকে সুখে রাখতে পারতাম,যেমনটি সে
চেয়েছিল। কিন্তু আমি চাই না সে সুখ।যে সুখ
সমাজের চোখে খারাপ।যে সুখ জন্মদাতা বাবা
,গর্ভধারিণী মা কে কাঁদাতে পারে। যে সুখ
তিলেতিলে গোড়ে ওঠা সন্মান কে এক নিমিষে
ধূলিকণায় পরিণত করে।চাই না সে সুখ। অনেকেই
হয়তো তিরস্কার করে বলবেন.. মেয়েটিকে সপ্ন
দেখিয়েছিলি ক্যান? সপ্ন দেখানোর আগে কোথায়
ছিল তোর সমাজ চেতনা,সন্মান? এই প্রশ্নের উত্তর
আমার কাছে নেই।
তবে আমি যতেষ্ঠ চেষ্টা করেছিলাম। মা-বাবা কে
দিয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তার মা-
বাবার এক কথা "তাঁদের মেয়ের যেখানে বিয়ে ঠিক
হয়েছে, সেখানেই সুখে থাকবে।এ নিয়ে কাওকে
ভাবতে হবে না। " যাঁদের মনে মেয়ের সুখ থাকা
নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই, মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবন
নিয়ে যাদের এত বিশ্বাস। তাঁদের আর কিভাবে
আটকাব? তাঁদের বিশ্বাস কে আরও মজবুত করতে
আমি নিষ্ঠুর হয়েছি।নীপাকে বলিনি " আমি নিষ্ঠুর
না। তোমার বাসায় প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলাম।
অনেক চেষ্টা করেছি।কিন্তু তোমাকে পাই নি।
ক্ষমা করে দিও"। কঠোর ভাষায় বলেছি " যা হয়েছে,
সেটা অতীত। আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারব না।"
কথা গুলো বলার সময় আমার চোখে ভালবাসার ছাপ
ছিল না,ছিল নিষ্ঠুর একজন পুরুষের ছাপ।আমি
চেয়েছিলাম সে আমাকে ঘ্রিণা করুক,ভূলে যাক,মা-
বাবার ইচ্ছে পূরণ করুক।এতে যদি আমি নিষ্ঠুর হয়ে
থাকি, তো আমি নিষ্ঠুর।ও অনেক কেঁদেছিল ,আমি
কাঁদি নি।কাঁদতে চাই ও না।
.
বিয়ের দিনের ঘটনা :
এখন প্রায় সন্ধা।আমি দাঁড়িয়ে আছি নীপার বাসা
থেকে একটু দূরে, রাস্তার পাশে। কান্নার শব্দ শোনা
যাচ্ছে। কিন্তু এই কান্না কিছু সময়ের, কিছুদিনের।
দুঃখ গুলো জল হয়ে বের হচ্ছে। যদি সৃষ্টিকর্তা চোখ
থেকে জলের বদলে রক্ত বের হওয়ার নিয়ম করতেন,
যদি দুঃখের তীব্রতা অনুযায়ী সেই রক্ত গাঢ় হতো।
তাহলে নীপাদের চোখ দিয়ে কেমন রক্ত বের
হতো,হিসাব করা বেশ কঠিন। এমন নিয়ম হলে হয়তো
বুঝতে পারতাম নীপা আমাকে ছেড়ে সুখে থাকবে
কি-না।
.
কিন্তু আমি যদি নীপাকে নিয়ে পালাতাম তাহলে
এই দুঃখগুলো পাথর হয়ে বেধে থাকত হৃদপিন্ডের
উপরে। তখন দুঃখগুলো তরল হয়ে বের হতো না।
.
সাক, সাক করে রাস্তা দিয়ে কয়েকটা গাড়ি চলে
গেল। বুকের ভেতরে কিছু হলো কি-না বুঝতে পারলাম
না।তবে চোখ দুটো ব্যথা করছিল। কিন্তু তরল বস্তুটা
বের হলো না। কারন আমি নিষ্ঠুর, আমি পাষণ্ড।
Repost:হেমন্তে বর্ষায় আমি
Hasan