01-14-2017, 11:50 PM
'আপু, উনি বয়সে প্রায় আমার বাবার বয়সী !
ফ্যামিলিতে পরিচিত ডাক্তার বলে নির্দ্বিধায়
কাউকে সাথে না নিয়েই তার কাছে গিয়েছিলাম ।
অকারনে শরীরের এখানে ওখানে এমনভাবে স্পর্শ
করলো, লজ্জায় আমি ম্লান হয়ে গেলাম !
ডাক্তার যদি মানুষের অসহায়ত্তের সুযোগ নেয়, তবে
সাধারন মানুষ কই যাবে আপু ???'
কথা সত্যি , এবং ভাবনার !
এ লজ্জা একজন ডাক্তার হিসেবে আমার ও প্রতি
চিকিৎসকের ! squint emoticon
.................................
আমি তখন মেডিকেল ফিফথ ইয়ারের স্টুডেন্ট ।
হাসপাতালের ওয়ার্ডে ক্লিনিকাল ক্লাস হয়, আমরা
গ্রুপে গ্রুপে ক্লাস করি ।
আমাদের গ্রুপে মেয়ে ৪-৫জন বাকি সবাই ছেলে ।
সার্জারির অধ্যাপক'টি বয়স্ক ও রাশভারী ।
খেয়াল করতাম, স্যার যখনি ক্লাস নিতেন ,
মেয়েদের দিকে ঘুরে কথা বলতেন আর ছেলেরা
'হারাধন এর একটি ছেলে'র মতো এক কোনায় কিছুই
বুঝতে পারতো না ! tongue emoticon
এই ৪-৫ জন মেয়ের মাঝে দু-একজন আবার তার বেশ
পছন্দের ছিলো ! wink emoticon
ওয়ার্ডে এসেই খোঁজ করতেন, 'ওমুক কই ! আজ
আসেনি ?!'
ওমুক সামনে এসে দাঁড়াতো মুখ কাঁচুমাচু করে, আর
তিনি 'মাথার চুল হইতে পায়ের নখ অব্দি' তাহাকে
পরখ করিতেন !!!
তাহার মনের নোংরামির খোঁজ অল্পদিনেই আমরা
বুঝিয়াছিলাম, আর আফসোস করিতাম,
যে মেয়ে/মহিলা না জানিয়া তাহার নিকট সেবা
লইতে আসিবে, তাহার কি হাল হইবে ! unsure emoticon
unsure emoticon
ইসলামী ব্যাঙ্ক হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার
তখন আমি ।
একদিন ডিউটি ওটিতে ।
ফিমেল ডক্টরস রুম আলাদা, আমরা কয়েকজন ডক্টর
বসে গল্প করছি,
এমন সময় সাথে একজন মহিলাসহ হাস্পাতালের
নামকরা একজন জেনারেল সার্জন আসিলেন
আমাদের রুমে ।
মহিলা উক্ত সার্জনের বন্ধুর স্ত্রী এবং তার
ব্যাক্তিগত শারীরিক সমস্যার জন্য তাকে দেখাতে
এসেছেন ।
কোনোরকম বলা-কয়া ছাড়াই অবলীলায় সার্জন
মহিলার গোপন অঙ্গের যে পরীক্ষা করিতে শুরু
করিলেন, তাতে রোগিনী বিন্দুমাত্র অপ্রস্তুত না
হইলেও আমরা ফিমেল ডক্টররাই অপ্রস্তুত হইয়া
গেলাম !!! gasp emoticon
(ফিমেল ডক্টরস উপস্থিত থাকা অবস্থায় একজন মেল
ডক্টরের উচিত ছিলো, এই পরীক্ষা নিজে না করে
তাদের হেল্প নেওয়া)
.......................................
বড় সার্জনদের নোংরামীর গল্প বলিতে বসিলে এই
রচনা 'উপন্যাসে' রুপান্তরিত হইবে ! লোল
তাহলে, সাধারন মানুষের করণীয় কি ?
সব পুরুষ ডাক্তারই কি তাহলে তাই ??
নো !
আসুন, আমরা মেডিকেল ইথিক্স ব্যাপারে কিছু
জেনে নেই --
১। 'আপনার রোগ নির্ণয়ের জন্য আমাকে কিছু
শারীরিক পরীক্ষা করিয়া দেখিতে হইবে, এতে কি
আপনি রাজী ?' (প্রয়োজনে পরীক্ষার ব্যাখ্যা)
এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর ছাড়া পুরুষ-কিম্বা নারী
কোনো ডাক্তারই রোগী-রোগিনীর শরীর স্পর্শ
করার অধিকার রাখেন না !
২ । কোনো ডাক্তার, (তিনি যদি পুরুষ হন এবং রোগী
নারী) অন্তত একজন মহিলা সংগী, কিম্বা নার্স/
প্যারামেডিক/সাস্থ্য কর্মী/আয়া উপস্থিত ব্যাতিত,
এবং (যদি তিনি নারী ডাক্তার হন এবং রোগী পুরুষ),
অন্তত একজন পুরুষ সংগী অথবা নার্স/ওয়ার্ড বয়,
আয়া উপস্থিত ব্যাতিত .....
কোনোরকম 'শারীরিক পরীক্ষা নিরিক্ষা' করার
'অধিকার রাখেন না' !
৩। নারী রোগীর গোপন শারীরিক অংগের পরীক্ষায়,
নার্স, মহিলা ডাক্তার সাথে উপস্থিত থাকিলে,
উক্ত পরীক্ষা তাহাদের দ্বারাই করানো শ্রেয় ।
যদি তারা রোগ নির্ণয়ে ব্যারথ হন, কিম্বা রোগীনী
নিজেই পারমিশন দেন, তখন পুরুষ ডাক্তার সে
পরীক্ষা করিতে পারেন ।
মনে গাঁথুন,
ডাক্তার আপনার পরিচিত ,অপরিচিত, অর্ধপরিচিত,
সুপরিচিত, খ্যাতমান যাহাই হউক না কেনো,
প্রত্যেকের জন্যই একই নিয়ম সমানভাবে প্রযোজ্য !
......................................
উপরে সৃষ্টিকর্তা , নীচে চিকিৎসক ...
এই বিশ্বাস নিয়ে সাধারন মানুষ আমাদের কাছে
আসেন !
নোংরামি, অসভ্যতা, অনাচার, বিকৃতি সব শ্রেনী-
পেশা-সমাজ নির্বিশেষে আছে, থাকবে ।
আমরা তাদের বদলাতে পারবো না, চিরতরে নির্মূলও
করতে পারবো না !
আমরা স্রেফ সঠিক জ্ঞ্যান বিতরন করতে পারি,
সচেতনতা বাড়াতে পারি, বিশ্বাসের ভিত মজবুত
করাতে পারি ।
আসুন,
আমরা সাধারন মানুষের বিশ্বাসের ভিত নিয়ে না
খেলা করি !
চরম অসহায়ত্তের অমানবিক সুযোগ নেয়া থেকে
বিরত থাকি !
আমাদের দুহাত হোক 'সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদপুষ্ট' ,
'দ্বিতীয় ঈশ্বর' হই আমরা আমাদের প্রচেষ্টায়,
'ফেরেশতার সম্মান' নিয়ে বাঁচি ভূ-লোকে, লোকের
হৃদয়ে ! kiki emoticon
---Nazia Binte Alamgir
ফ্যামিলিতে পরিচিত ডাক্তার বলে নির্দ্বিধায়
কাউকে সাথে না নিয়েই তার কাছে গিয়েছিলাম ।
অকারনে শরীরের এখানে ওখানে এমনভাবে স্পর্শ
করলো, লজ্জায় আমি ম্লান হয়ে গেলাম !
ডাক্তার যদি মানুষের অসহায়ত্তের সুযোগ নেয়, তবে
সাধারন মানুষ কই যাবে আপু ???'
কথা সত্যি , এবং ভাবনার !
এ লজ্জা একজন ডাক্তার হিসেবে আমার ও প্রতি
চিকিৎসকের ! squint emoticon
.................................
আমি তখন মেডিকেল ফিফথ ইয়ারের স্টুডেন্ট ।
হাসপাতালের ওয়ার্ডে ক্লিনিকাল ক্লাস হয়, আমরা
গ্রুপে গ্রুপে ক্লাস করি ।
আমাদের গ্রুপে মেয়ে ৪-৫জন বাকি সবাই ছেলে ।
সার্জারির অধ্যাপক'টি বয়স্ক ও রাশভারী ।
খেয়াল করতাম, স্যার যখনি ক্লাস নিতেন ,
মেয়েদের দিকে ঘুরে কথা বলতেন আর ছেলেরা
'হারাধন এর একটি ছেলে'র মতো এক কোনায় কিছুই
বুঝতে পারতো না ! tongue emoticon
এই ৪-৫ জন মেয়ের মাঝে দু-একজন আবার তার বেশ
পছন্দের ছিলো ! wink emoticon
ওয়ার্ডে এসেই খোঁজ করতেন, 'ওমুক কই ! আজ
আসেনি ?!'
ওমুক সামনে এসে দাঁড়াতো মুখ কাঁচুমাচু করে, আর
তিনি 'মাথার চুল হইতে পায়ের নখ অব্দি' তাহাকে
পরখ করিতেন !!!
তাহার মনের নোংরামির খোঁজ অল্পদিনেই আমরা
বুঝিয়াছিলাম, আর আফসোস করিতাম,
যে মেয়ে/মহিলা না জানিয়া তাহার নিকট সেবা
লইতে আসিবে, তাহার কি হাল হইবে ! unsure emoticon
unsure emoticon
ইসলামী ব্যাঙ্ক হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার
তখন আমি ।
একদিন ডিউটি ওটিতে ।
ফিমেল ডক্টরস রুম আলাদা, আমরা কয়েকজন ডক্টর
বসে গল্প করছি,
এমন সময় সাথে একজন মহিলাসহ হাস্পাতালের
নামকরা একজন জেনারেল সার্জন আসিলেন
আমাদের রুমে ।
মহিলা উক্ত সার্জনের বন্ধুর স্ত্রী এবং তার
ব্যাক্তিগত শারীরিক সমস্যার জন্য তাকে দেখাতে
এসেছেন ।
কোনোরকম বলা-কয়া ছাড়াই অবলীলায় সার্জন
মহিলার গোপন অঙ্গের যে পরীক্ষা করিতে শুরু
করিলেন, তাতে রোগিনী বিন্দুমাত্র অপ্রস্তুত না
হইলেও আমরা ফিমেল ডক্টররাই অপ্রস্তুত হইয়া
গেলাম !!! gasp emoticon
(ফিমেল ডক্টরস উপস্থিত থাকা অবস্থায় একজন মেল
ডক্টরের উচিত ছিলো, এই পরীক্ষা নিজে না করে
তাদের হেল্প নেওয়া)
.......................................
বড় সার্জনদের নোংরামীর গল্প বলিতে বসিলে এই
রচনা 'উপন্যাসে' রুপান্তরিত হইবে ! লোল
তাহলে, সাধারন মানুষের করণীয় কি ?
সব পুরুষ ডাক্তারই কি তাহলে তাই ??
নো !
আসুন, আমরা মেডিকেল ইথিক্স ব্যাপারে কিছু
জেনে নেই --
১। 'আপনার রোগ নির্ণয়ের জন্য আমাকে কিছু
শারীরিক পরীক্ষা করিয়া দেখিতে হইবে, এতে কি
আপনি রাজী ?' (প্রয়োজনে পরীক্ষার ব্যাখ্যা)
এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর ছাড়া পুরুষ-কিম্বা নারী
কোনো ডাক্তারই রোগী-রোগিনীর শরীর স্পর্শ
করার অধিকার রাখেন না !
২ । কোনো ডাক্তার, (তিনি যদি পুরুষ হন এবং রোগী
নারী) অন্তত একজন মহিলা সংগী, কিম্বা নার্স/
প্যারামেডিক/সাস্থ্য কর্মী/আয়া উপস্থিত ব্যাতিত,
এবং (যদি তিনি নারী ডাক্তার হন এবং রোগী পুরুষ),
অন্তত একজন পুরুষ সংগী অথবা নার্স/ওয়ার্ড বয়,
আয়া উপস্থিত ব্যাতিত .....
কোনোরকম 'শারীরিক পরীক্ষা নিরিক্ষা' করার
'অধিকার রাখেন না' !
৩। নারী রোগীর গোপন শারীরিক অংগের পরীক্ষায়,
নার্স, মহিলা ডাক্তার সাথে উপস্থিত থাকিলে,
উক্ত পরীক্ষা তাহাদের দ্বারাই করানো শ্রেয় ।
যদি তারা রোগ নির্ণয়ে ব্যারথ হন, কিম্বা রোগীনী
নিজেই পারমিশন দেন, তখন পুরুষ ডাক্তার সে
পরীক্ষা করিতে পারেন ।
মনে গাঁথুন,
ডাক্তার আপনার পরিচিত ,অপরিচিত, অর্ধপরিচিত,
সুপরিচিত, খ্যাতমান যাহাই হউক না কেনো,
প্রত্যেকের জন্যই একই নিয়ম সমানভাবে প্রযোজ্য !
......................................
উপরে সৃষ্টিকর্তা , নীচে চিকিৎসক ...
এই বিশ্বাস নিয়ে সাধারন মানুষ আমাদের কাছে
আসেন !
নোংরামি, অসভ্যতা, অনাচার, বিকৃতি সব শ্রেনী-
পেশা-সমাজ নির্বিশেষে আছে, থাকবে ।
আমরা তাদের বদলাতে পারবো না, চিরতরে নির্মূলও
করতে পারবো না !
আমরা স্রেফ সঠিক জ্ঞ্যান বিতরন করতে পারি,
সচেতনতা বাড়াতে পারি, বিশ্বাসের ভিত মজবুত
করাতে পারি ।
আসুন,
আমরা সাধারন মানুষের বিশ্বাসের ভিত নিয়ে না
খেলা করি !
চরম অসহায়ত্তের অমানবিক সুযোগ নেয়া থেকে
বিরত থাকি !
আমাদের দুহাত হোক 'সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদপুষ্ট' ,
'দ্বিতীয় ঈশ্বর' হই আমরা আমাদের প্রচেষ্টায়,
'ফেরেশতার সম্মান' নিয়ে বাঁচি ভূ-লোকে, লোকের
হৃদয়ে ! kiki emoticon
---Nazia Binte Alamgir
Hasan