02-20-2017, 10:50 AM
উত্তর
পরামর্শ:ওয়ালাইকুম সালাম, আপু।
ভালবাসা! আপু, আমরা মানুষেরা প্রায়ই গুলিয়ে ফেলি জীবনের সম্পর্কগুলোকে। প্রায়ই ভুল অনুভবকে ভালবাসা ধরে নিই, ভুল মানুষকে ভালোবাসার পাত্র হিসেবে ধরে নিই। আর ফলাফল? কেবলই কষ্ট আর যন্ত্রণা নিজের মনের মাঝে।
আমরা প্রায় সবাই প্রেম ও ভালোবাসার মাঝে পার্থক্যটা করে উঠতে পারি না। আর এই কারণেই প্রেমে ব্যর্থতা মেনে নিতে পারি না অনেকেই। প্রেম কোন চিরকালের জিনিস নয়। প্রেমের সম্পর্ক ভাঙতে পারে, প্রেমের রূপ বদল হতে পারে, একটা মানুষ বারবার প্রেমে পড়তে পারে। কোন কোন প্রেম ভালোবাসায় রূপ নিতে পারে, কিন্তু সব প্রেমের সম্পর্কই যে ভালবাসা হয়ে উঠবে এটা কিন্তু জরুরী নয়!
তাহলে ভালবাসা কী? আর কী করে বুঝবো যে এটাই ভালবাসা?
উত্তরটি কিন্তু ভীষণ সহজ!
যে সম্পর্কটি আপনার মনের মাঝে হাজার হাজার ওয়াটের আলো জ্বেলে দেয়, সেটাই ভালবাসা। যে সম্পর্কটি আপনার জীবনের প্রতিটি ইঞ্চি আলোকিত করে তোলে, সেটাই ভালবাসা। যে সম্পর্কটি আপনাকে আরও উন্নত, আরও সফল, আরও ভালো একজন মানুষ বানিয়ে ফেলে আপনার অজান্তেই- সেটাই ভালবাসা! যে সম্পর্কটি আপনাকে ভীষণ ভাবে অনুপ্রাণিত করে নিজের যোগ্যতার চাইতেও দারুণ একটা কিছু হয়ে ওঠার জন্য, সেটাই ভালবাসা। যে সম্পর্কটি আপনার ভেতরের সব অস্থিরতাগুলোকে শান্ত করে আপনাকে ধৈর্যশীল আর সুখী মানুষ বানিয়ে দিতে পারে, সেটাই ভালবাসা!
এখন আপনি নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন, আপু-
আপনার এই বৈবাহিক সম্পর্ক কি আপনাকে সুখী করেছে? বা আপনাদের দুজনকেই কি সুখী করেছে? বিয়ের ৫ বছর পর আপনার কি মনে হয় জীবনের এই পর্যায়ে আপনি এখন সুখী ও সন্তুষ্ট মানুষ? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, আপনার স্বামীই যদি আপনার জীবনের সত্যিকারের ভালবাসা হয়ে থাকে, তাহলে আরও একবার চেষ্টা করে দেখুন মানিয়ে চলার। উত্তর যদি “না” হয়, তাহলে অযথা এই সম্পর্কের ঘানি টেনে কোন লাভ নেই! যে সম্পর্ক এত বছরেও আপানাকে সুখ-শান্তি দিতে পারেনি, সেটা ভবিষ্যতেও দেবে এমন আশা করাটা বোকামি। সন্তান তো আপনার একার নয়, তাহলে সন্তানের সব দায় আপনি একা নেবেন কেন? অন্যদিকে আপনি ও আপনার সন্তান তো নিজের উপার্জনেই চলছেন। তাহলে আর ভয়ের কী আছে!
ছেলেকে বেশি আহ্লাদ করে মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ বানিয়ে রাখা যে কেবল ছেলের ভবিষ্যৎই নষ্ট করে, আমি জানি না কেন আপনার শাশুড়ি মা সেটা বুঝতে পারছেন না। যাই হোক, একটা জিনিস জানবেন- সংসার করতে গেলে কেবল প্রেম জরুরী নয়, প্রেমের সাথে আরও অনেক কিছুই জরুরী। কিছু না ভেবেচিন্তে হুট করে আবেগের মাথায় বিয়ের সম্পর্কে জড়ানো মানে স্বেচ্ছায় ডেকে নিজের সর্বনাশ করে ফেলা। এই ভুলটি আপনি একবার করেছেন, নিজের সিদ্ধান্তে নিজের জীবনে একটা বিপর্যয় ডেকে এনেছেন। তাই এইবার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে নিজের মা-বাবা বা মুরুব্বীদের সাথে একটা আলোচনা অবশ্যই করবেন। তাঁরা যেটাকে ভালো মনে করে পরামর্শ দেবেন, সেটা ঠাণ্ডা মাথায় বিবেচনা করবেন। যেহেতু আপনি স্বামীকে ভালোবাসেন বলছেন, সেহেতু স্বামীকে আপনার কাছে নিয়ে এসে নতুন করে আবার জীবনটা শুরু করা যায় কিনা সেটাও বিবেচনা করবেন। যদিও আমার মনে হয় না সেটা সম্ভব হবে, শাশুড়ি মা যেহেতু বিধবা সেটা পারবেন না করতে। স্বামীও আসবে না।
আর পর্ন? এই জিনিসটির প্রতি আসক্তি যেহেতু আপনার বোঝানোতে যায়নি, এটার জন্য পেশাদার হেল্প নিতে পারেন। একজন সাইকোলজিসট বা কাউন্সিলারের কাছে স্বামীকে নিয়ে যান সম্ভব হলে, একইসাথে আপনিও তাঁকে বেশি বেশি সময় দিন। তাকে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিন যে তিনি এটা চালিয়ে গেলে আপনি অতি অবশ্যই তাঁকে ডিভোর্স করবেন। মানুষ মাত্রই পরিবর্তিত হতে পারে। শেষ একবার চেষ্টা করে দেখুন, হয়তো তার পরিবর্তন আসতে পারে। যদি না আসে, তিনি নিজেকে সংশোধন না করেন, তাহলে নিশ্চিত হয়ে যাবেন যে তার জীবনে আপনার মূল্য নেই। সেক্ষেত্রে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে সেটা আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে। একটা তীব্র ঘৃণার নোংরা জিনিসের সাথে সমঝোতা করে তো জীবন পার করা যায় না!
আর হ্যাঁ আপু, আপাতত তিনি হয়তো যোগাযোগ করছেন না আপনার সাথে। কিন্তু আমার মনে হয় কিছুটা সময় পার হলে হয়তো যোগাযোগ করবেন। যদি তিনি নিজে থেকে যোগাযোগ করেন সম্পর্ক রক্ষার জন্য, কেবল তখনই আপনি শেষ চেষ্টা করবেন। এর আগে নয়! যদি স্বামী নিজ থেকে যোগাযোগ করেন, বুঝবেন যে তাঁর মাঝে ন্যূনতম ভালবাসা স্ত্রী-সন্তানের জন্য আছে। তিনি আপনাদের মিস করছেন। সেক্ষেত্রে স্বামীকে শর্ত দেবেন যে পর্ন দেখা ছাড়া ও নতুন করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে জীবনটা সুন্দর করে গোছানোর জন্য। যদি তিনি আপনাদেরকে ভালোবেসে থাকেন, তিনি কাজটি করবেন। যদি না করেন, অতীত ছেড়ে সুন্দর একটা ভবিষ্যতের দিকে তিনি পা না বাড়ান, জানবেন যে এই ভদ্রলোকের সাথে আসলেই আপনি সুখী হতে পারবেন না।
পরামর্শ দিয়েছেন-
রুমানা বৈশাখী
কথাসাহিত্যিক
পরামর্শ:ওয়ালাইকুম সালাম, আপু।
ভালবাসা! আপু, আমরা মানুষেরা প্রায়ই গুলিয়ে ফেলি জীবনের সম্পর্কগুলোকে। প্রায়ই ভুল অনুভবকে ভালবাসা ধরে নিই, ভুল মানুষকে ভালোবাসার পাত্র হিসেবে ধরে নিই। আর ফলাফল? কেবলই কষ্ট আর যন্ত্রণা নিজের মনের মাঝে।
আমরা প্রায় সবাই প্রেম ও ভালোবাসার মাঝে পার্থক্যটা করে উঠতে পারি না। আর এই কারণেই প্রেমে ব্যর্থতা মেনে নিতে পারি না অনেকেই। প্রেম কোন চিরকালের জিনিস নয়। প্রেমের সম্পর্ক ভাঙতে পারে, প্রেমের রূপ বদল হতে পারে, একটা মানুষ বারবার প্রেমে পড়তে পারে। কোন কোন প্রেম ভালোবাসায় রূপ নিতে পারে, কিন্তু সব প্রেমের সম্পর্কই যে ভালবাসা হয়ে উঠবে এটা কিন্তু জরুরী নয়!
তাহলে ভালবাসা কী? আর কী করে বুঝবো যে এটাই ভালবাসা?
উত্তরটি কিন্তু ভীষণ সহজ!
যে সম্পর্কটি আপনার মনের মাঝে হাজার হাজার ওয়াটের আলো জ্বেলে দেয়, সেটাই ভালবাসা। যে সম্পর্কটি আপনার জীবনের প্রতিটি ইঞ্চি আলোকিত করে তোলে, সেটাই ভালবাসা। যে সম্পর্কটি আপনাকে আরও উন্নত, আরও সফল, আরও ভালো একজন মানুষ বানিয়ে ফেলে আপনার অজান্তেই- সেটাই ভালবাসা! যে সম্পর্কটি আপনাকে ভীষণ ভাবে অনুপ্রাণিত করে নিজের যোগ্যতার চাইতেও দারুণ একটা কিছু হয়ে ওঠার জন্য, সেটাই ভালবাসা। যে সম্পর্কটি আপনার ভেতরের সব অস্থিরতাগুলোকে শান্ত করে আপনাকে ধৈর্যশীল আর সুখী মানুষ বানিয়ে দিতে পারে, সেটাই ভালবাসা!
এখন আপনি নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন, আপু-
আপনার এই বৈবাহিক সম্পর্ক কি আপনাকে সুখী করেছে? বা আপনাদের দুজনকেই কি সুখী করেছে? বিয়ের ৫ বছর পর আপনার কি মনে হয় জীবনের এই পর্যায়ে আপনি এখন সুখী ও সন্তুষ্ট মানুষ? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, আপনার স্বামীই যদি আপনার জীবনের সত্যিকারের ভালবাসা হয়ে থাকে, তাহলে আরও একবার চেষ্টা করে দেখুন মানিয়ে চলার। উত্তর যদি “না” হয়, তাহলে অযথা এই সম্পর্কের ঘানি টেনে কোন লাভ নেই! যে সম্পর্ক এত বছরেও আপানাকে সুখ-শান্তি দিতে পারেনি, সেটা ভবিষ্যতেও দেবে এমন আশা করাটা বোকামি। সন্তান তো আপনার একার নয়, তাহলে সন্তানের সব দায় আপনি একা নেবেন কেন? অন্যদিকে আপনি ও আপনার সন্তান তো নিজের উপার্জনেই চলছেন। তাহলে আর ভয়ের কী আছে!
ছেলেকে বেশি আহ্লাদ করে মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ বানিয়ে রাখা যে কেবল ছেলের ভবিষ্যৎই নষ্ট করে, আমি জানি না কেন আপনার শাশুড়ি মা সেটা বুঝতে পারছেন না। যাই হোক, একটা জিনিস জানবেন- সংসার করতে গেলে কেবল প্রেম জরুরী নয়, প্রেমের সাথে আরও অনেক কিছুই জরুরী। কিছু না ভেবেচিন্তে হুট করে আবেগের মাথায় বিয়ের সম্পর্কে জড়ানো মানে স্বেচ্ছায় ডেকে নিজের সর্বনাশ করে ফেলা। এই ভুলটি আপনি একবার করেছেন, নিজের সিদ্ধান্তে নিজের জীবনে একটা বিপর্যয় ডেকে এনেছেন। তাই এইবার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে নিজের মা-বাবা বা মুরুব্বীদের সাথে একটা আলোচনা অবশ্যই করবেন। তাঁরা যেটাকে ভালো মনে করে পরামর্শ দেবেন, সেটা ঠাণ্ডা মাথায় বিবেচনা করবেন। যেহেতু আপনি স্বামীকে ভালোবাসেন বলছেন, সেহেতু স্বামীকে আপনার কাছে নিয়ে এসে নতুন করে আবার জীবনটা শুরু করা যায় কিনা সেটাও বিবেচনা করবেন। যদিও আমার মনে হয় না সেটা সম্ভব হবে, শাশুড়ি মা যেহেতু বিধবা সেটা পারবেন না করতে। স্বামীও আসবে না।
আর পর্ন? এই জিনিসটির প্রতি আসক্তি যেহেতু আপনার বোঝানোতে যায়নি, এটার জন্য পেশাদার হেল্প নিতে পারেন। একজন সাইকোলজিসট বা কাউন্সিলারের কাছে স্বামীকে নিয়ে যান সম্ভব হলে, একইসাথে আপনিও তাঁকে বেশি বেশি সময় দিন। তাকে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিন যে তিনি এটা চালিয়ে গেলে আপনি অতি অবশ্যই তাঁকে ডিভোর্স করবেন। মানুষ মাত্রই পরিবর্তিত হতে পারে। শেষ একবার চেষ্টা করে দেখুন, হয়তো তার পরিবর্তন আসতে পারে। যদি না আসে, তিনি নিজেকে সংশোধন না করেন, তাহলে নিশ্চিত হয়ে যাবেন যে তার জীবনে আপনার মূল্য নেই। সেক্ষেত্রে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে সেটা আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে। একটা তীব্র ঘৃণার নোংরা জিনিসের সাথে সমঝোতা করে তো জীবন পার করা যায় না!
আর হ্যাঁ আপু, আপাতত তিনি হয়তো যোগাযোগ করছেন না আপনার সাথে। কিন্তু আমার মনে হয় কিছুটা সময় পার হলে হয়তো যোগাযোগ করবেন। যদি তিনি নিজে থেকে যোগাযোগ করেন সম্পর্ক রক্ষার জন্য, কেবল তখনই আপনি শেষ চেষ্টা করবেন। এর আগে নয়! যদি স্বামী নিজ থেকে যোগাযোগ করেন, বুঝবেন যে তাঁর মাঝে ন্যূনতম ভালবাসা স্ত্রী-সন্তানের জন্য আছে। তিনি আপনাদের মিস করছেন। সেক্ষেত্রে স্বামীকে শর্ত দেবেন যে পর্ন দেখা ছাড়া ও নতুন করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে জীবনটা সুন্দর করে গোছানোর জন্য। যদি তিনি আপনাদেরকে ভালোবেসে থাকেন, তিনি কাজটি করবেন। যদি না করেন, অতীত ছেড়ে সুন্দর একটা ভবিষ্যতের দিকে তিনি পা না বাড়ান, জানবেন যে এই ভদ্রলোকের সাথে আসলেই আপনি সুখী হতে পারবেন না।
পরামর্শ দিয়েছেন-
রুমানা বৈশাখী
কথাসাহিত্যিক
Hasan